Way To Jannah
Skip to content
প্রথম পাতা
মৌলিক বিষয়সমুহ
আক্বীদা
অনলাইনে কুরআন
কুরআন
সুন্নাহ
শিরক
বিদআত
অন্যান্য বিষয়
ডাউনলোড
আমাদের সম্পর্কে
আপনার লেখা জমা দিন
পার্বত্য চট্টগ্রামে মুসলিমদের খ্রিষ্টান বানাচ্ছে খ্রিস্টান মিশনারীরা
By WaytoJannah জুন 27, 2014
0
পার্বত্য চট্টগ্রামে অপ্রতিরুদ্ধ খ্রিস্টান মিশনারিরা
বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামে অপ্রতিরুদ্ধ খ্রিস্টান মিশনারিরা, তাদের প্রভাব এতটাই বেশি যে, অনেক সময় প্রশাসনকেও পাত্তা দিতে চায় না। এ প্রসঙ্গে সাম্প্রতিক একটি ঘটনা উল্লেখ্য, ঘটনাটি ঘটেছে গত ১৫ মার্চ ২০১৪ বান্দরবান জেলায়। পার্বত্যনিউজসহ দুই-একটি অনলাইন মিডিয়ায় খবরটি যেভাবে এসেছে তার সারমর্ম হলো- ‘বান্দরবান ফাতিমা রানী চার্চ-এ মহিলা হোস্টেলের মেয়েদেরকে মিশনের ফাদার ও ব্রাদার কর্তৃক যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এরা সবাই বান্দরবান ডনবস্কো উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম থেকে ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী। গত ১৫ মার্চ ৭১ জন ছাত্রী নদীতে গোসল করার নামে হোস্টেল থেকে বের হয়ে পালিয়ে গেলে ঘটনাটি জানতে পারে স্থানীয়রা। দুর্গম পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসকারী দরিদ্র পিতা-মাতা বুক ভরা আশা নিয়ে তাদের সন্তানদের জেলা সদরে উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি করায়। এ সন্তানরা একদিন শিক্ষিত হয়ে মা-বাবা ও সমাজের মুখ উজ্জ্বল করবে। এমন প্রত্যাশায় পাহাড়ের দূরপল্লীর মেয়েরা ডনবস্কো উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ফাতিমা রানী চার্চ-এর হোস্টেলকেই নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে বেছে নেয়। গত ১৫ মার্চ ৭১ জন ছাত্রী হোস্টেল থেকে পালিয়ে যায়। হোস্টেল থেকে পালিয়ে যাওয়া ছাত্রীদের কেউ কেউ আশ্রয় নেয় তাদের নিকট আত্মীয় ও বান্ধবীদের বাড়িতে। কর্তৃপক্ষ কিছু কিছু ছাত্রীদের হোস্টেলে ফিরিয়ে আনলেও তাদের সাথে কথা বলার সুযোগ দেয়নি মিডিয়াকর্মী এবং প্রশাসনকে।’
ওপরের ঘটনার মধ্যে লুকিয়ে থাকা খ্রিস্টান মিশনারিদের অপ্রতিরুদ্ধ প্রভাব সম্পর্কে কোনো আঁচ করতে পারছেন কি? একটু ভেবে দেখুন, এত বড় একটি ঘটনা অথচ বাংলাদেশের মূল ধারার কোনো গণমাধ্যমে তা খবর হয়ে এলো না! কিন্তু আমরা যদি অন্যদিকে তাকাই তা হলে কী দেখতে পাই? এদেশের কোনো মহিলা মাদরাসার হোস্টেল, এতিমখানা কিংবা কোন কিশোর উন্নয়ন কেন্দ্র থেকে যদি একই ধরনের অভিযোগে ৫ জন ছাত্রীর পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটত, তাহলে আমাদের মিডিয়া সে ঘটনাকে কতটা রসিয়ে রসিয়ে ফলাও করে প্রচার করত! অনেকে হয়তো ফলোআপ নিউজ করে করে ওই প্রতিষ্ঠানেরই বারোটা বাজিয়ে দিত। আর এর জন্য তাদের তথ্য প্রমাণেরও খুব একটা প্রয়োজন হতো কি? অথচ কী অদ্ভূত ঘটনা, মিশনারিদের একটি হোস্টেল থেকে ৭১ জন ছাত্রীর পালিয়ে যাওয়ার ঘটনার সংবাদও চেপে গেল বাংলাদেশের মিডিয়া! শুধু মিডিয়া নয়, প্রশাসনও চেপে গেছে বিষয়টি। শুনেছি, প্রথম দিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্ত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল, কিন্তু তদন্ত কর্মকর্তারা হোস্টেল কর্তৃপক্ষের ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারেননি। চার্চ কর্তৃপক্ষ এ ক্ষেত্রে প্রশাসনকে কোন সহায়তা করারই প্রয়োজন মনে করেননি।
মিডিয়া এবং প্রশাসনকে পাত্তা না দিয়ে এত বড় একটি ঘটনা ধামাচাপা দেয়াটা কি সহজ কথা? মোটেই না, বরং এটা প্রমাণ করে যে, বাংলাদেশের মিডিয়া এবং প্রশাসনকে গুরুত্ব না দিয়েই অনেক কিছু করার মতো প্রভাব শক্তি আছে এই মিশনারিদের।
ফাতিমা রানী চার্চের ঘটনাটি তদন্ত হওয়া দরকার
ডেইলি মেইলের বরাত দিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে গত ১৮ জানুয়ারি ২০১৪ প্রকাশিত একটি সংবাদ থেকে জানা যায়, “মাত্র দুই বছরে শিশু যৌন নির্যাতনের অভিযোগে বিভিন্ন চার্চের চারশ’ যাজককে বরখাস্ত করেছিলেন পোপ ষোড়শ বেনেডিক্ট। ২০১১-১২ বছরে এসব যাজকদের বরখাস্ত করা হয় বলে ভ্যাটিকানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। জেনেভায় জাতিসংঘের শুনানিতে অংশ নিয়ে ভ্যাটিকানের ক্যাথলিক চার্চ এ তথ্য প্রকাশ করে। ১৬ জানুয়ারি ২০১৪ তারা সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘের শুনানিতে অংশ নেয়। প্রকাশিত তথ্যে দেখা গেছে, আগের বছরগুলোর তুলনায় শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতনের ঘটনা বেড়ে গেছে। ২০০৮-০৯ বছরে একই অপরাধে ১৭১ জন যাজককে বরখাস্ত করা হয়েছিল।”
এই সংবাদটি থেকে আমরা কী জানতে পারলাম? চার্চের দায়িত্বে থাকা ফাদার কিংবা ব্রাদারগণ কর্তৃক যৌন নির্যাতনে ঘটনা নতুন কিছু নয়। আর এটা অপরাধযোগ্য বিষয়, তাই এর জন্য নির্যাতনকারীদের শাস্তিও ভোগ করতে হয়। শুধু তাই নয়, এর জন্য জাতিসংঘ বা অন্যকোনো দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষের কাছে চার্চ কৈফিয়ত দিতেও বাধ্য। এটাই যদি বাস্তবতা হয়, তাহলে বান্দরবানের ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়া হলো কেন, এমন প্রশ্ন করা কি অমূলক হবে? যদিও বান্দরবান ফাতিমা রানী চার্চ-এ মহিলা হোস্টেলের মেয়েদেরকে মিশনের ফাদার ও ব্রাদার কর্তৃক যৌন হয়রানির অভিযোগটি এখনও প্রমাণিত নয়, কিন্তু যেহেতু ৭১ জন ছাত্রীর পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে এবং এর জন্য ফাদার ও ব্রাদারদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে, তাই চার্চের স্বার্থেই এর সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া আবশ্যক।
অপ্রতিরুদ্ধ খ্রিস্টান ধর্মে ধর্মান্তকরণ
বান্দরবান জেলার একটি চার্চের অধীনে মহিলা হোস্টেলে মেয়েদের নির্যাতিত হওয়ার বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু এ জেলাটি তো খ্রিস্টান অধ্যুষিত না, তাহলে এখানে চার্চ এলো কোথা থেকে? আর ফাদার-ব্রাদারদের দ্বারা মেয়েদের নির্যাতিত হওয়ার ঘটনাই-বা ঘটে কী করে? এটা সত্য যে, পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসীদের মধ্যে এক সময় কেউ খ্রিস্টান ছিলেন না। বান্দরবানসহ তিন জেলার ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর অধিবাসীরা ছিলেন মূলত বৌদ্ধ, হিন্দু এবং প্রকৃতিপূজারি। কিন্তু ব্রিটিশরা উপমহাদেশে আসার সময় তাদের সাথে সাথে খ্রিস্টান মিশনারিরাও এসেছে। মিশনারিরা শুরুতে সমতল-অসমতল সকল অঞ্চলের মানুষের মধ্যেই খ্রিস্ট ধর্ম প্রচারে উদ্যোগী হন। কিন্তু এক পর্যায়ে তারা বুঝতে পারেন যে, সমতলে বসবাসকারী অপেক্ষাকৃত অগ্রসর জনগোষ্ঠীকে ধর্মান্তরিত করার চেয়ে পাহাড়ি অঞ্চলে বসবাসকারী উপজাতীয় জনগোষ্ঠীকে ধর্মান্তরিত করাটা অনেক সহজ এবং নিরাপদ। তাই তারা বাংলাদেশের যেখানেই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর দেখা পেয়েছে, সেখানেই আস্তানা গেড়েছে। সেই দৃষ্টিকোণ থেকেই তারা তিন পার্বত্য জেলায় বসবাসকারী পাহাড়ি জনগোষ্ঠীগুলোকে ধর্মান্তরিত করার টার্গেট করে। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন এনজিও এবং দাতা সংস্থার সহায়তায় তারা পাহাড়ি জনগোষ্ঠীগুলোকে নানা সুযোগ-সুবিধা দিয়ে প্রলুব্ধ করে খ্রিস্টান ধর্মে ধর্মান্তর করা শুরু করে। মিশনারিদের প্রচেষ্টায় আজকের বাস্তবতা হলো, পার্বত্য চট্টগ্রামের শুধু বান্দরবান নয়, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি এমনকি কক্সবাজারের সীমান্ত এলাকাগুলোতে বসবাসরত কোনো কোনো ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শতভাগ এবং কোনো কোনো জনগোষ্ঠীর আংশিক জনসংখ্যা ইতোমধ্যে খ্রিস্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়ে গেছে। ধর্মান্তরিত খ্রিস্টানদের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকায় প্রভাব বাড়ছে মিশনারিদেরও। রাঙ্গামাটি এবং খাগড়াছড়িতেও মিশনারিদের প্রভাব বিদ্যমান তবে বর্তমানে বান্দরবানে অপ্রতিরুদ্ধ খ্রিস্টান মিশনারিরা।
মিশনারিদের এই প্রভাবের গভীরতা ঠিক কতটা, তা বোঝা যাবে বাংলাদেশ ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এক রিপোর্টের সূত্র ধরে ২০১১ সালের ১০ আগস্ট দৈনিক ইনকিলাবে “খ্রিস্টান বানানো হচ্ছে উপজাতীয়দের” শিরোনামে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে। প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ৪৫টি উপজাতির অস্তিত্ব রয়েছে। এর মধ্যে তিন পার্বত্য জেলায় রয়েছে ১৪টি উপজাতি। এসব উপজাতির ৩০.৫৭ ভাগ চাকমা, ১৬.৬০ ভাগ মারমা, ৭.৩৯ ভাগ ত্রিপুরা, ৬.১৬ ভাগ অন্যান্য উপজাতি। অবশিষ্টরা বাঙালি। পার্বত্যাঞ্চলের প্রধান এ তিনটি উপজাতির মধ্যে প্রথাগতভাবে বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী বেশি। দ্বিতীয় অবস্থানে সনাতন বা হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। গত দুই দশকে এসব জেলায় খ্রিস্টান ধর্মের বিস্তার ঘটেছে অবিশ্বাস্য দ্রুততার সঙ্গে। গত জুন (২০১১) মাসে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় কোরআন শিক্ষা ও বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্র সম্প্রসারণের সম্ভাব্যতা যাচাই, তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ সংক্রান্ত সুপারিশ প্রণয়ন কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী, বান্দরবান জেলায় এখন মুসলমান ১ লাখ ৪৭ হাজার ৬২ জন। খ্রিস্টান ১ লাখ ৩ হাজার ৯৯৭ জন। বৌদ্ধ ৩০ হাজার ৫৪৬ জন। হিন্দু ১০ হাজার ৭৯৬ জন। দু’দশক আগে এ জেলায় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা সংখ্যার দিকে দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও এখন তারা তৃতীয় স্থানে চলে এসেছে। খ্রিস্টান ধর্মানুসারীদের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে দ্বিতীয়।’
মুসলিমদেরকেও খ্রিস্টান বানানো হচ্ছে
বান্দরবান জেলার পরিসংখ্যান থেকেই দেখা যাচ্ছে, যে অঞ্চলে এক সময় খ্রিস্টান ধর্মানুসারীদের কোনো অস্তিত্বই ছিল না, সেখানে আজ মিশনারিদের তৎপরতায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী তথা উপজাতীয়দের সর্বাংশে খ্রিস্টানকরণ প্রায় সম্পন্ন। শুধু তাই নয়, অপ্রতিরুদ্ধ খ্রিস্টান মিশনারিরা অসহায় দরিদ্র মুসলিম পরিবারগুলোকেও খ্রিস্টান বানানোর মিশন নিয়ে মাঠে নেমেছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনটিতে এ ব্যাপারে বলা হয়েছে, বান্দরবান রুমা উপজেলার গেলাইঙ্গা, রেমাকৃপাংশা, ফাইন্দু ইউনিয়নে খ্রিস্টান, বৌদ্ধ ও কিছু হিন্দু পরিবার বাস করত। অথচ মারমা ও বোম উপজাতি অধ্যুষিত রুমা উপজেলার এখন ৬০ ভাগ জনসংখ্যাই খ্রিস্টান। অন্যদিকে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সংখ্যা ক্রমশই কমছে। রুমা বাজার থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে আশ্রম পাড়ায় একবার ৪-৫টি ত্রিপুরা পরিবার ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হয়। আর্থিক অনটনে পড়ে তারা মুসলমানদের সাহায্যপ্রার্থী হলে আশানুরূপ সাড়া পায়নি। এ সুযোগে জাইনপাড়াস্থ খ্রিস্টান মিশনারি চার্চ তাদের খ্রিস্টান ধর্মে দীক্ষিত করে। রুমা উপজেলার এসব নওমুসলিমদের অপ্রতিরুদ্ধ খ্রিস্টান মিশনারিরা বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিয়েই বশে এনেছে, তাদেরকে খ্রিস্টান বানিয়েছে। কারণ, কোনো উপজাতি ইসলামের সাম্য ভাতৃত্বের আদর্শে মুগ্ধ হয়ে স্বেচ্ছায় ইসলাম গ্রহণ করেছে, এমন খবর যদি মিশনারিরা পায় তাহলে তারা যেন অনেকটা উন্মাদ হয়ে উঠে। ছলে-বলে কিংবা কলে-কৌশলে যেভাবেই হোক তাদেরকে খ্রিস্টান বানাতে সচেষ্ট হয়। এ ক্ষেত্রে পাহাড়ি বিভিন্ন সংগঠন এমনকি রাষ্ট্রীয় বাহিনীকেও তারা কাজে লাগাতে পিছপা হয় না। ২০১৩ সালের রাঙ্গামাটি জেলার কিছু নওমুসলিমের ক্ষেত্রে এমন ঘটনাই ঘটেছে।
ঘটনাটি নিম্নরূপ- ‘গত ২ জানুয়ারি ২০১৩ ঢাকার বাসাবোর একটি মাদরাসায় হানা দিয়ে পুলিশ ৫ জন উপজাতীয় নওমুসলিম অভিভাবক এবং তাদের ১৬ সন্তানকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে তাদের ইসলাম গ্রহণের এফিডেভিট ও অন্যান্য বৈধ কাগজপত্র দেখে পুলিশ ১১ শিক্ষার্থী ও তাদের ৫ অভিভাবককে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ৫ জন ছাত্র আগে থেকেই মাদরাসায় পড়তো বলে তাদের অভিভাবক সাথে ছিল না। অভিভাবক আসা পর্যন্ত তাদের তেজগাঁও ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখে পুলিশ। পরে অভিভাবকরা তাদের আনতে গেলে ত্রিপুরা স্টুডেন্টস ফোরামের সদস্য পরিচয়ে কতিপয় উপজাতীয় লোক তেজগাঁও থানার সীমার সামনে থেকে মাদরাসায় যেতে না দিয়ে তাদের জোর করে ধরে নিয়ে যায়। উপজাতীয় এসব লোক অভিভাবক ও তাদের সন্তানদের মাদরাসায় যেতে না দিয়ে খ্রিস্টান ক্যাথলিক চার্চ নিয়ন্ত্রিত একটি এনজিও সংস্থার কাছে দিয়ে দেয়। জানা গেছে, উক্ত ক্যাথলিক চার্চ নিয়ন্ত্রণ করেন রোজালিন ডি কস্তা।’
এছাড়া একই সময়ে গাজীপুরের মিয়াপাড়ায় দারুল হুদা মাদরাসা থেকেও উপজাতীয় নওমুসলিম ছাত্রদের ধরে নিয়ে মিশনারিদের হাতে তুলে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসব উপজাতীয় নওমুসলিম রাঙ্গামাটি জেলার বিলাইছড়ি উপজেলার দুমদুমিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তারা ছিলেন ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের লোক। আর এসব উপজাতীয় নওমুসলিম ছাত্রদের মাদরাসা থেকে গ্রেফতার করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে কর্মরত উপজাতীয় কমান্ডারগণ। বাংলাদেশ একটি সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের দেশ। সেই দেশে নওমুসলিমদের মাদরাসা থেকে ধরে খ্রিস্টান চার্চের আওতায় নিয়ে যাওয়ার স্পর্ধা এরা পেল কোথায়? তাও আবার রাষ্ট্রীয় বাহিনীর সহায়তা নিয়ে?
পার্বত্য জনগণের দারিদ্র্যের সুযোগ নিয়ে তাদের ধর্মান্তরিত করার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে মিশনারি প্রভাবিত এনজিওগুলো। স্বাস্থ্যসেবা ও মানবসেবার নাম করে এসব এনজিও তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। সেবার আড়ালে তাদের একটাই লক্ষ্য, অন্যান্য ধর্মের অনুসারীদের খ্রিস্টান ধর্মে দীক্ষিত করা। তিন পার্বত্য জেলা তথা রাঙ্গামাটি, বান্দরবান এবং খাগড়াছড়ি জেলায় এক সময় বৌদ্ধ, মুসলিম ও হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক বেশি থাকলেও বর্তমানে খ্রিস্টান ধর্মের অনুসারীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। যা উপরের পরিসংখ্যান থেকে সহজেই অনুমেয়। এর পেছনে যেসব এনজিও ভূমিকা রাখছে বলে অভিযোগ আছে তার মধ্যে রয়েছে- অ্যাডভানটেজ ক্রুশ অব বাংলাদেশ, হিউম্যানিট্রেইন ফাউন্ডেশন, খ্রিস্টান কমিশন ফর ডেভলপমেন্ট বাংলাদেশ (সিসিডিবি), ইভানজেলিক্যাল খ্রিস্টান ক্রুশ, ডানিডা, ওয়ার্ল্ড ভিশন, কৈনানিয়া, শান্তিরানী ক্যাথলিক চার্চ, গ্রিন হিল, গ্রামীণ উন্নয়ন সংস্থা (গ্রাউস), মহামনি শিশু সদন, জাইনপাড়া আশ্রম, তৈদান, আশার আলো, তৈমু প্রভৃতি। এনজিওগুলোর নানা প্রলোভনে পড়ে দলে দলে ধর্মান্তরিত হচ্ছে পাহাড়ি উপজাতীয় জনগোষ্ঠী। ফলে অপ্রতিরুদ্ধ খ্রিস্টান মিশনারিরা আরোও বেশি তৎপর হয়ে উঠছে।
এছাড়াও ইউএনডিপি ও ইউনিসেফের যৌথ অর্থায়নে পরিচালিত বিভিন্ন রেজিস্টার্ড ও নন রেজিস্টার্ড এনজিওর মাধ্যমে আর্থসামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের আড়ালে মূলত খ্রিস্ট ধর্মে ধর্মান্তরিত করার কর্মকাণ্ড চালানো হচ্ছে। একই সাথে এসব এনজিও প্রতিনিয়ত উপজাতীয়দের বাঙালিবিদ্বেষী হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছে। ফলে উপজাতীয়দের মধ্যে খ্রিস্টান ধর্মে দীক্ষিত হওয়ার হার আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে বোম, মারমা প্রভৃতি উপজাতীয় লোকদের মধ্যে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীর সংখ্যা দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে।
মুসলিম এবং রাষ্ট্রবিরোধী প্রচারণা
বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত বৌদ্ধ এবং হিন্দুরা যে হারে খ্রিস্টান ধর্মে দীক্ষিত হচ্ছে তা চলতে থাকলে অদূর ভবিষ্যতে এ অঞ্চলে বৌদ্ধ জনসংখ্যা শূন্যের কোঠায় নেমে এলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। অথচ বৌদ্ধ ধর্মের ধারক-বাহকরা তাদের ধর্মের ওপর এই হুমকির বিষয়ে একেবারেই উদাসীন অথবা সব কিছু জেনে-শুনেও অজ্ঞাত কারণে নীরব ভূমিকা পালন করছেন। বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতা এবং পাহাড়ি বিভিন্ন সংগঠনের নেতারাও তাদের ধর্মের ওপর খ্রিস্টান ধর্মের থাবার ভয়াবহতা উপলব্ধি করতে পারছেন না। বরং তারা মিশনারিদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে উল্টো মুসলমানদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে বেড়াচ্ছেন। বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন সভা, সমাবেশ, সেমিনারে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগোষ্ঠীগুলোকে জোর করে মুসলমান বানানো হচ্ছে বলে বাংলাদেশ সরকার, সেনাবাহিনী এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশবিরোধী প্রচারণার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে বিভিন্ন সময় পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে এনজিও এবং দাতাসংস্থার সাথে সংশ্লিষ্ট একাধিক বিদেশি নাগরিককে বের করে দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে। কিন্তু তারপরও এদের দৌরাত্ম্য থামেনি, বরং দিন দিন বাড়ছে। অনেক সময় পর্যটকের ছদ্মবেশেও বিদেশি নাগরিকরা পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জনগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে বাঙালি মুসলমান ও বাংলাদেশ বিদ্বেষী মনোভাব উস্কে দিয়ে খ্রিস্টান ধর্ম প্রচারের কাজে নেমে পড়েন। এমন অভিযোগের ভিত্তিতেও পাহাড় থেকে বিদেশি নাগরিকদের বিভিন্ন সময় বহিষ্কৃত হতে হয়েছে। কিন্তু তাতেও তাদের তৎপরতা কমেনি
পার্বত্য চট্টগ্রামের খ্রিস্টানাইজেশনের উদ্দেশ্য
ইতিহাসের নানা ঘটনার পরিক্রমায় এটা স্পষ্ট যে, ব্রিটিশ আমল থেকেই বাংলাদেশের তিন পার্বত্য জেলা এবং এর সংলগ্ন মায়ানমারের কিছু পার্বত্য এলাকা ও ভারতের ‘সেভেন সিস্টার’ খ্যাত রাজ্যগুলোর সমন্বয়ে খ্রিস্টান অধ্যুষিত একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা ছিল। পশ্চিমাদের এই কল্পিত রাষ্ট্র বঙ্গোপসাগরের তীর থেকে শুরু করে চীনের সীমানা পর্যন্ত বিস্তৃত। এ কারণেই এই অঞ্চলে বসবাসরত পাহাড়ি জনগোষ্ঠীগুলোকে স্থানীয় সমতলবাসীদের থেকে সুপরিকল্পিতভাবে বিচ্ছিন্ন রেখে মিশনারিদের দ্বারা খ্রিস্টান বানানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল বহু আগে থেকেই। ১৯০০ সালে ব্রিটিশরা যে হিল ট্র্যাক্টস রেগুলেশন অ্যাক্টের মাধ্যমে পাহাড়ি জনগণকে স্থানীয় বাঙালি জনগণ থেকে বিচ্ছন্নকরণ করে তার মূলেও ছিল তাদের সেই পরিকল্পিত রাষ্ট্র গঠনের ইচ্ছা। এটা করা হয়েছিল মূলত স্থানীয় বাঙালিদের থেকে পাহাড়িদের বিচ্ছিন্ন রেখে তাদেরকে খ্রিস্টান ধর্মে দীক্ষিত করা সহজ হবে এই আকাক্সক্ষায়। কিন্তু প্রথম দিকে খ্রিস্টান ধর্মে ধর্মান্তকরণ প্রক্রিয়ায় ছিল ধীর গতি। তাই ব্রিটিশরা তাদের এই কল্পিত রাষ্ট্রের দ্রুত এবং সফল বাস্তবায়নের জন্য ১৯৪৭ সালে উপমহাদেশ ছেড়ে যাওয়ার সময়েও এই অঞ্চলটিকে ভারত কিংবা পাকিস্তান কারও অধীনেই না রাখার পক্ষপাতি ছিল। তাদের ধারণা ছিল যে, এই অঞ্চলটি ভারত কিংবা পাকিস্তানের অংশ না হলে এখানকার স্থানীয় জনগোষ্ঠীগুলোর পক্ষে সফল এবং কার্যকর রাষ্ট্র ব্যবস্থা গঠন সম্ভব হবে না। এই সুযোগে ব্রিটিশরাই আবার ত্রাণকর্তা হিসেবে হাজির হয়ে নিজেদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নকে তরান্বিত করতে পারবে। যাই হোক, সে সময় তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন না হলেও তারা যে থেমে নেই সেটাই এখন দৃশ্যমান।
সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তারা যে তৎপর তা তাদের কর্মকাণ্ড দেখলেই বোঝা যায়। কারণ একদিকে তারা যেমন স্থানীয় পাহাড়ি জনগোষ্ঠীগুলোকে খ্রিস্টান বানাতে উঠেপড়ে লেগেছে, তেমনি তারা এসব জনগণকে বাঙালি মুসলমান, বাংলাদেশ সরকার এবং সেনাবাহিনী বিদ্বেষী করে তুলছে। একই সাথে ‘আদিবাসী’ কনসেপ্ট, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীগুলোকে স্থানীয় সর্বাধিক প্রচলিত ভাষার পরিবর্তে মাতৃভাষায় শিক্ষিত করার কনসেপ্ট দিয়ে রাষ্ট্র এবং স্থানীয় জনগণ থেকে তাদের বিচ্ছিন্ন রাখার মিশন বাস্তবায়ন করছে। অন্যদিকে যেসব জনগোষ্ঠীর বর্ণমালা নেই তাদের ভাষাকে রোমান হরফে লেখার প্রচলন করা হচ্ছে, যাতে এসব জনগোষ্ঠীর যোগাযোগটা সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্র এবং তার জনগণের সাথে না হয়ে পশ্চিমাদের সাথেই ঘনিষ্ঠ হয়, বিশেষ করে যারা রোমান হরফ ব্যবহার করে তাদের সঙ্গে হয়। পশ্চিমাদের আশীর্বাদপুষ্ট মিশনারিদের এই অপতৎপরতা যে শুধু বাংলাদেশের তিন পার্বত্য জেলায় সীমিত তা কিন্তু নয়, একই মিশন নিয়ে তারা কাজ করছে মায়ানমার এবং ভারতের সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলোতেও।
একই সাথে তারা এসব অঞ্চলের জনগণের মধ্যে আন্তঃযোগাযোগ বাড়ানোর চেষ্টাও করছে। ভিন্ন দেশের সীমানায় বসবাস করছে একই জনগোষ্ঠীর লোকজনদের ক্ষেত্রে তাদেরকে বিশেষ বিশেষ সংগঠনের আওতায় সংগঠিত করা হচ্ছে। বাংলাদেশ এবং ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বসবাসরত চাকমা এবং ত্রিপুরাদেরকে সমন্বিত করে ইতোমধ্যে একাধিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। অপরদিকে এসব অঞ্চলে যেসব মিশনারিরা তৎপরতা চালাচ্ছে তারাও দুর্গম ও অরক্ষিত সীমান্ত দিয়ে ভিসা-পাসপোর্ট ছাড়াই এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাতায়াত করে তাদের মধ্যে আন্তঃযোগাযোগ প্রতিষ্ঠা করছে। একবার মায়ানমার থেকে এভাবে কয়েকজন মিশনারি বান্দরবানে প্রবেশের ঘটনা জানাজানি হয়ে যাওয়ায় বেশ তোলপাড় হয়েছিল। কিন্তু দুর্গম অঞ্চলের সীমান্ত অরক্ষিত থাকায় সব খবর তো প্রশাসনের পক্ষে রাখাও সম্ভব না, তাই এমন ঘটনা হরহামেশায় ঘটলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং তার সংলগ্ন মায়ানমার ও ভারতের রাজ্যগুলোর এ চিত্রকে পূর্বতিমুর এবং দক্ষিণ সুদানের ইতিহাস এবং ঘটনা চিত্রের সাথে মিলিয়ে দেখলে, আশা করি সম্ভাব্য পরিণতি সম্পর্কে আর কাউকে বুঝিয়ে বলতে হবে না।
খ্রিস্টানাইজেশনের মূল টার্গেট ভারত এবং চীন
বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামে অপ্রতিরুদ্ধ খ্রিস্টান মিশনারিরা এবং খ্রিস্টানাইজেশন শুধু বাঙালি মুসলমান এবং বাংলাদেশের সমস্যা এটা ভাবলে বোকামি হবে। হ্যাঁ, বাঙালি মুসলমান এবং বাংলাদেশের জন্য এটা একটা বিরাট সমস্যা; তবে এ সমস্যা থেকে রেহাই পাবে না ভারত, মায়ানমার; এমনকি চীনের জন্যও এটা আতঙ্কজনক একটি বার্তা। ধারণা করা যায়, ভারত শুরুতে এটাকে শুধু বাংলাদেশের সমস্যা মনে করেছিল। তাই তারা এটাকে আরও উস্কে দেওয়ার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামের উগ্রপন্থী সশস্ত্র সংগঠনগুলোকে আশ্রয়, অস্ত্র, ট্রেনিং দিয়ে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করে রেখেছিল। কিন্তু এতে তাদের হিতে বিপরীত হয়েছে। বাংলাদেশের চাকমা প্রাধান্য বিশিষ্ট সশস্ত্র সংগঠন শান্তিবাহিনীকে তাদের দেশের আশ্রয় দেয়ার ফলে সেদেশের চাকমাদের সাথে এদের যোগাযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। গড়ে উঠেছে যৌথ সংগঠন, যাদের দৃশ্যমান লক্ষ্য আন্তঃসাংস্কৃতিক যোগাযোগ বাড়ানো হলেও, তাদের ভবিষ্যৎ এবং মূল লক্ষ্য হলো একটি বৃহত্তর স্বাধীন চাকমা ল্যান্ড প্রতিষ্ঠা করা। ভারত সরকার বিষয়টি বুঝতে পেরেই ১৯৯৭ সালে তড়িঘড়ি করে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে একটি অসমচুক্তি করিয়ে দিয়ে এই চাকমাদের ভারত থেকে তাড়িয়েছে।
কিন্তু একবার যে যোগাযোগ প্রতিষ্ঠা হয়েছে, তা চাইলেই নিঃশেষ করে দেয়া যায় না। এ ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। দুই দেশের চাকমাদের মধ্যে বিভিন্ন উপলক্ষে যোগাযোগ এখন নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা দুই দেশের সরকারেরই জানা আছে। অন্যদিকে এমএন লারমা চীন সফর করে এসে শান্তবাহিনী প্রতিষ্ঠা করেছিল বলে চীন এদের প্রশ্রয় দিয়েছে অথবা এদের অপকীর্তির ব্যাপারে নীরব ভূমিকা পালন করেছে। কিন্তু বর্তমানে যে হারে এই অঞ্চলের উপজাতীয় জনগণ খ্রিস্টান হচ্ছে তা থামানো না গেলে ভারত কিংবা চীনের জন্যও তা মাথাব্যথার কারণ হতে বাধ্য। কারণ এই অঞ্চল খ্রিস্টান প্রধান অঞ্চলে পরিণত হলে এদের যোগাযোগ ভারত কিংবা চীনের পরিবর্তে পশ্চিমাদের সাথেই বেশি ঘনিষ্ঠ হবে। আর সেটা হলে বর্তমান বিশ্বের উদীয়মান সুপার পাওয়ার চীন এবং ভারতের জন্য তা অস্বস্তির কারণ হতে বাধ্য।
আর বর্তমানে মায়ানমারের যেসব বৌদ্ধরা মুসলিমদের হত্যা করে উল্লাস করছে তাদের জন্য অশনি সঙ্কেত হয়ে আসবে এই খ্রিস্টানরাই। একই সাথে বাংলাদেশের পার্বত্যাঞ্চলে যেসব বৌদ্ধ পণ্ডিতরা বর্তমানে বিভিন্ন স্থানে বড় বড় কিংয়া বানিয়ে জায়গা দখলে ব্যস্ত আছেন, আর কয়েক দশক পরে তারা তাদের এসব মন্দিরের সেবা করার জন্য কোনো পূজারি পাবেন কিনা তাতেই সন্দেহ আছে।
অতএব, পার্বত্য চট্টগ্রামে অপ্রতিরুদ্ধ খ্রিস্টান মিশনারিরা এবং খ্রিস্টানাইজেশন সমস্যা শুধু বাংলাদেশের সমস্যা নয়। এটা মায়ানমার, ভারত এবং চীনের অখ-তা ও নিরাপত্তার জন্যও হুমকিস্বরূপ। সর্বোপরি এখানে বৌদ্ধ ধর্মের অস্তিত্ব বিলুপ্তির কারণও হতে পারে এটা। তাই পারস্পারিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করে এই সমস্যাকে যৌথভাবে মোকাবিলা করতে হবে। সংশ্লিষ্ট সকলকেই বুঝতে হবে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে বাঙালিমুক্ত পার্বত্য চট্টগ্রাম গড়ার প্রেসক্রিপশনের অন্তর্নিহিত অর্থ কী। কেনই বা তারা বাঙালিদের জন্য সকল প্রকার রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা বন্ধ করে দেয়ার পরামর্শ দেয়? কেনই বা তারা ‘আদিবাসী’ কনসেপ্ট নিয়ে এত মাতামাতি করে, রাষ্ট্রকে অনৈতিক চাপ প্রয়োগ করে তা বাস্তবায়ন করতে চায়?
সৈয়দ ইবনে রহমত
লেখক : সাংবাদিক ও গবেষক
সূত্র
( লেখাটি ঈষত পরিবর্তিত )
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন