মঙ্গলবার, ১০ জুন, ২০১৪


এত শক্তি কোথায় পেল তালেবান? অনলাইন ডেস্ক | আপডেট: ১৩:১২, জুন ১০, ২০১৪ ০ Like ৩
পাকিস্তানের হামলার পরে ক্ষতিগ্রস্ত করাচির জিন্নাহ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পাহারা দিচ্ছেন নিরাপত্তাকর্মীরা। ছবি: এএফপিপাকিস্তানের করাচির জিন্নাহ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গত রোববার রাতের হামলার পরে পরিস্থিতি আপাতত শান্ত মনে হলেও ঝুঁকি কমেনি। হামলার দায় স্বীকার করা তালেবান জঙ্গিরা এরই মধ্যে হুমকি দিয়েছে, এর চেয়ে ভয়াবহ হামলার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে সরকারকে। এ হামলার ঘটনা এটাই প্রমাণ করে যে পাকিস্তানে তালেবান জঙ্গিরা দিন দিন শক্তিশালী হয়ে উঠছে। তারা যেকোনো সময় যেখানে-সেখানে হামলা চালানোর ক্ষমতা রাখে। গত রোববার দিবাগত রাতে করাচি বিমানবন্দর রক্তাক্ত হয়েছে জঙ্গি হামলায়। নিরাপত্তা বাহিনীর বেশে বিমানবন্দরে ঢুকে তাণ্ডব চালিয়েছে জঙ্গিরা। এ হামলায় প্রাণ গেছে ৩০ জনের। এর মধ্যে ১০ জন হামলাকারী। বিকেল চারটার দিকে বিমানবন্দরের কর্মকাণ্ড আবার স্বাভাবিক হয়ে ওঠে। নিউইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, তালেবান জঙ্গিদের এই শক্তি বৃদ্ধির পেছনের কারণ হলো, উজবেক জিহাদি ও আরও কিছু বিদেশি দলছুট জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে তাদের সখ্য। ওয়াজিরিস্তান থেকে টেলিফোনে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাকিস্তানের একজন তালেবান কমান্ডার বলেন, ‘উজবেক জঙ্গি দলের অন্যতম শাখা ইসলামিক মুভমেন্ট অব উজবেকিস্তান (আইএমইউ) আমাদের বড় শক্তি।’ তিনি বলেন, ‘ওই অভিযানে বিদেশি জিহাদিরা অংশ নেয়। ওয়াজিরিস্তানে সম্প্রতি মার্কিন সেনাবাহিনীর বিমান হামলা চালানোর শোধ নিতে এ ধরনের পাল্টা হামলা চালানো হয়েছে।’ তালেবান জঙ্গিদের পৌরাণিক দানবির সঙ্গে তুলনা করেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দপ্তরের সাবেক শীর্ষ কর্মকর্তা নাজমুদ্দিন শেখ। তিনি বলেন, ‘আমাদের সৌভাগ্য যে করাচিতে তারা সেভাবে সফল হতে পারেনি।’ আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোতে ২০০১ সালের পর থেকেই জঙ্গি দলগুলোর মধ্যে এক ধরনের জোট গড়ে উঠেছে। তালেবানদের ঘনিষ্ঠ মিত্র হাক্কানি নেটওয়ার্ক। কিন্তু হাক্কানি ছাড়াও পাঞ্জাবি, চেচেন, আরবীয়, এশীয়, আফগান তালেবানদের মধ্যে জিহাদি অর্থ, আদর্শ ও যোদ্ধাদের বিনিময়ও ঘটেছে। গত রোববার দিবাগত রাতে করাচি বিমানবন্দরে হামলার পরে পাকিস্তানের নিরাপত্তাকর্মীরা নিহত ১০ হামলাকারীর মধ্যে বেশ কয়েকজনকে উজবেক জঙ্গি হিসেবে শনাক্ত করে। পাকিস্তানের বিশ্লেষক ও প্যারেড স্কুল অব গ্লোবাল স্টাডিজ অ্যাট বোস্টন ইউনিভার্সিটির ডিন আদিল নাজাম বলেন, এ ধরনের হামলা যুদ্ধের আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয়। তিনি বলেন, তালেবান জঙ্গিদের মধ্যে এখন দলছুট অনেক জঙ্গি ঢুকে পড়েছে। তারা সরকারের সঙ্গে বিভিন্ন কৌশলে সংঘর্ষ তৈরি করছে। পরিস্থিতি এখন রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করা যায় কি না, সেটিই দেখার বিষয়। পাকিস্তানের অবসরপ্রাপ্ত কূটনীতিক শায়েখ বলেন, টিটিপি (তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান) আলোচনার সব পথ বন্ধ করে দিয়েছে। তিনি বলেন, যদি তালেবান শক্তভাবে শিকড় গেড়ে বসে, তাহলে তারা ডালপালা ছড়াবে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন