প্রেমিকার সঙ্গে কথা বলতে বলতে ট্রেনের নিচে
23 Jun, 2014
প্রেমিকার সঙ্গে ফোনে কথা বলতে বলতে রেললাইনে হাঁটার সময় ট্রেনে কাটা পড়ে প্রাণ গেল এক কলেজ ছাত্রের। তার নাম ফরহাদ হোসেন সয়ন (২১)। সে উত্তরা ইউনিভার্সিটির বিবিএ ১ম বর্ষের ছাত্র। রাজধানীর বিমানবন্দর রেলগেট সংলগ্ন এলাকায় শনিবার সন্ধ্যা সাতটায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত ফরহাদের প্রেমিকা নাসরিন জানান, ফরহাদের সঙ্গে আমার ছোটবেলা থেকে পরিচয়। সম্পর্কে সে আমার মামাতো ভাই। এই পরিচয়ের মাধ্যমেই আমাদের প্রেম হয়। আমাদের মধ্যে মাঝে মধ্যে ঝগড়াও হতো। কিন্তু শনিবার ফরহাদের সঙ্গে আমার কোন ঝগড়া হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হয়ে রেললাইন দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে সে আমাকে ফোন করে। আমাদের কথাবার্তা ছিল স্বাভাবিক। সে আমার কাছে জানতে চেয়েছে আমি খেয়েছি কিনা, বাসায় কখন এসেছি এই সব। শেষের দিকে সে আমাকে বললো- আমার ফোনে টাকা নেই তুমি পারলে আমাকে ৫০ টাকা ফ্লেক্সিলোড কইরো। একথা বলার পরই ফোনটা কেটে যায়। আমি ভাবলাম, ফোনে টাকা নাই এজন্য মনে হয় ফোনটা কেটে গেছে। তখনও আমি জানি না ফরহাদ আর নেই, সে আমাকে ছেড়ে অনেক দূর চলে গেছে। গতকাল সকালে আমি জানতে পারলাম ফরহাদ ট্রেনে কাটা পড়ে মারা গেছে। নিহতের চাচা হাবিবুর রহমান জানান, ফরহাদ আমার পরিবারের সঙ্গে খিলক্ষেত নয়াপাড়ার পোর্টঘাটে ২০৯/এ নম্বর বাসায় থেকে পড়ালেখা করে। গ্রামের বাড়ি বরিশালের গৌরনদীতে। তার পিতা চুন্নু মিয়া দীর্ঘদিন ধরে কাতারে আছেন। কিভাবে এমনটা হলো তা বুঝতে পারছি না। তবে এখন শুনতে পারছি নাসরিন নামের একটি মেয়ের সঙ্গে সে ফোনে দীর্ঘদিন ধরে কথা বলে। শনিবার রাতে এই ঘটনার সময়ও ফরহাদ ওই মেয়ের সঙ্গে কথা বলছিল। তার সঙ্গে অভিমান করেই সে মারা গেল না ফোনে কথা বলায় অন্যদিকে মনোযোগ থাকার কারণে মারা গেল সে বিষয়টি নিয়ে আমরা চিন্তিত। হাবিবুর রহমান তার ছেলের বরাত দিয়ে বলেন, আমার ছেলে আর ফরহাদ একই রুমে থাকতো। সে বলেছে ফোনে কথা বলার সময় প্রায়ই তাদের মধ্যে ঝগড়া হতো এবং রাগে ক্ষোভে ফরহাদ মরে যাওয়ার কথা বলতো। রেলওয়ে থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক আলী আকবর জানান, এলাকাবাসীর কাছ থেকে সংবাদ পেয়ে গতকাল সকালে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে বলেন, ফরহাদ যখন রেললাইন দিয়ে হাঁটছিল তখন সে মোবাইল ফোনে কথা বলছিল। সেই সময়ই এই দুর্ঘটনা ঘটে। ফরহাদের পরিবারের অভিযোগ মোবাইল ফোনে যে মেয়ের সঙ্গে কথা বলছিল তার উপর অভিমান করেই সে মারা গেছে। তবে এ বিষয়ে আমরা এখনও নিশ্চিত ভাবে কিছু বলতে পারছি না। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। ফরহাদের পরিবার ময়নাতদন্তের পর লাশ তার গ্রামের বাড়ি নিয়ে গেছেন। সেখানে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
উৎসঃ মানব জমিন
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন