সোমবার, ১২ মে, ২০১৪


সাত খুন: অভিযুক্তদের ব্যাংক হিসাবে অস্বাভাবিক লেনদেন 12 May, 2014 নারায়ণগঞ্জের সেভেন মার্ডারের সঙ্গে যাদের জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে তাদের ব্যাংক হিসাবে লেনদেনে অস্বাভাবিকতা পেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই খুনের আগে ও পরে ঘটনায় অভিযু্ক্ত এবং তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি(স্ত্রী, সন্তান, ভাই, বোন, বাবা, মা ইত্যাদি) ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবে বিচ্ছিন্নভাবে টাকা জমা দেয়া ও উঠানোর ঘটনা ঘটেছে। যা গত ছয়মাসে এইসব ব্যাংক হিসাবে হয়নি। খুনের ঘটনার পর নিহত কমিশনার নজরুলের শ্বশুর শহীদ চেয়ারম্যান অভিযোগ করেন র‌্যাব-১১ অধিনায়ক তারেক সাঈদ মোহাম্মদ ৬ কোটি টাকা নিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। আর এই অর্থ সরবরাহ করেছে এই হত্যা মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেন। শহীদ চেয়ারম্যান দাবি করেন ‍খুন করানোর জন্য টাকা লেনদেন হয়েছে ব্যাংকের মাধ্যমে। শহীদ চেয়ারম্যানের এই দাবির পর বাংলাদেশ ব্যাংক হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে যারা অভিযু্ক্ত তাদের এবং তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের খোঁজ নিতে শুরু করে। ৬ মে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রথম এই নিয়ে তদন্ত শুরু করে। কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংকে এ নিয়ে পরিদর্শন চালানো হচ্ছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র নির্বাহী পরিচালক ম. মাহফুজুর রহমান প্রাইমনিউজ.কম.বিডিকে বলেন, ‘অভিযু্ক্ত এবং তাদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের যতগুলো ব্যাংক হিসাব চিহ্নিত করা গেছে সেগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক তদন্ত করছে। ইতিমধ্যে যে তদন্ত হয়েছে, তাতে দেখা গেছে কিছু হিসাবে নারায়ণগঞ্জের ঘটনার আগে ও পরে ছোট-বড় লেনদেন হয়েছে। তবে এই লেনদেনের সঙ্গে ঘটনার কোনো সম্পৃ্ক্ততা আছে কি না তা এনখও নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি। লেনদেনগুলোকে কি সন্দেহজনক বা অস্বাভাবিক মনে হয়েছে কি না জানতে চাইলে মাহফুজুর রহমান বলেন, যেহেতু বিষয়টি এখনও প্রমাণিত না, সেহেতু লেনদেনগুলোকে আমরা এই মুহূর্তে সন্দেহজনক বা সন্দেহজনক নয় কোনোটাই বলবো না। কর্নেল তারেক সাঈদ ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠানের লেনদেনে কোনো ধরনের অস্বাভাবিকতা পাওয়া গেছে কি না তা জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘কোনো সুনির্দিষ্ট হিসাব সম্পর্কে আমি কোনো মন্তব্য করবো না। এই ঘটনাটির সঙ্গে ব্যাংক লেনদেনের অভিযোগ ওঠায় বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করছে। এখনও তদন্ত শেষ হয়নি। তদন্ত শেষে প্রয়োজনে গণমাধ্যমকে আনুষ্ঠানিকভাবে সব জানানো হবে। কোনো কোনো ব্যাংকে, কার কার কতগুলো হিসাব তদন্ত করা হয়েছে সেবিষয়ে তিনি কোনো তথ্য দেননি। তদন্ত দলের একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা কয়েটি একাউন্ট দেখেছি, যেখানে এই ঘটনার আগে ও পরে যে ধরনের লেনদেন হয়েছে, গত ছয় মাসে তা হয়নি। এই খুনের সঙ্গে সম্পৃকক্ততার অভিযোগে র‌্যাব-১১ এর সাবেক কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মোহাম্মদ, মেজর আরিফ হোসেন এবং নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এমএম রানাকে চাকরি থেকে অবসরে পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে তারেক সাঈদ ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনামন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার মেয়ে জামাই। গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করা হয়। তিন দিন পর শীতলক্ষ্যা নদীতে তাদের লাশ ভেসে ওঠে। লাশ উদ্ধারের আগের দিন তারেক সাঈদকে র‌্যাব-১১ এর অধিনায়কের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে সেনাবাহিনীতে পাঠানো হয়েছিল। এরপর নিহত নজরুলের শ্বশুর শহীদুল ইসলাম অভিযোগ করেন, নারায়ণগঞ্জের আরেক কাউন্সিলর নূর হোসেন ও তার সহযোগীদের কাছ থেকে ছয় কোটি টাকা নিয়ে র‌্যাব সদস্যরা তার জামাতাসহ সাতজনকে ধরে নিয়ে হত্যা করেছে। ওই অভিযোগ ওঠার পর গত ৭ মে সাঈদসহ র‌্যাব-১১ এর ওই তিন কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে অকালীন অবসরে পাঠানো হয়। উৎসঃ প্রাইমনিউজবিডি

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন