বৃহস্পতিবার, ৮ মে, ২০১৪


পোস্টমর্টেমে রোমহর্ষক তথ্য 08 May, 2014 নারায়ণগঞ্জের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারসহ ৭ জনকে হত্যার আগে তাদের মাথায় আঘাত করে অচেতন করা হয়। এরপর গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। হত্যার পর লাশ যাতে ভেসে না ওঠে এ জন্য পেট ফুটো করে দেয়া হয়েছিল। নিহতদের পোস্ট মর্টেম রিপোর্টে এমনই তথ্য মিলেছে। গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে পোস্টমর্টেম রিপোর্ট উপস্থাপন করা হয়। রিপোর্টের তথ্য অনুযায়ী অপহরণের রাতেই তাদের হত্যা করে নদীতে ফেলে দেয়া হয়। লাশ উদ্ধার থেকে হত্যাকা- সংঘটিত হয় ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা আগে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা সিভিল সার্জন দুলাল চন্দ্র চৌধুরীর কাছে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দাখিল করেন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক বোর্ডের প্রধান নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মো. আসাদুজ্জামান মিয়া। কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম, আইনজীবী মনিরুজ্জামান স্বপন, তাজুল ইসলাম ও ইব্রাহিমের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। লিটন ও জাহাঙ্গীরের ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্ত রিপোর্টের সূত্রমতে, ৭ জনকে অপহরণের পর পরই তাদের মাথায় আঘাত করা হয়। মাথা যাতে ফেটে না যায় এ জন্য ভারি বস্তুর সঙ্গে কাপড় পেঁচিয়ে প্রচ-ভাবে আঘাত করা হয়। এতে তারা অচেতন হয়ে পড়ে। এরপর প্রত্যেকের হাত-পা বাঁধা হয়। পরে এক এক করে গলায় রশি পেঁচিয়ে দু’দিক থেকে টান দিয়ে শ্বাসরোধ করে প্রত্যেকের মৃত্যু নিশ্চিত করে খুনিরা। লাশ যাতে ভেসে না ওঠে এ জন্য মৃতদেহের প্রত্যেকটির সঙ্গে আলাদা আলাদাভাবে পিঠ ও পেটের দিকে ১২টি করে ২৪টি ইট বেঁধে দেয়া হয় এবং প্রত্যেকের নাভির নিচে ফুটো করে দেয়া হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, লাশ ফুলে ওঠায় ওই ছিদ্র বন্ধ হয়ে যায় এবং তা ভেসে ওঠে। প্রত্যেক লাশের মাথায় রক্ত জমাট বাঁধা ছিল। বাহুতে দড়ির দাগ ছিল। শুধুমাত্র নজরুল ইসলামের একটি হাত ভাঙা ছিল। হত্যার এসব আলামত দেখে চিকিৎসকদের অনুমান পেশাদার ও প্রশিক্ষিত লোকজন এই খুনের ঘটনা ঘটিয়েছে। জেলা সিভিল সার্জন দুলাল চন্দ্র চৌধুরী জানান, ৩০শে এপ্রিল রাত থেকে সকালের মধ্যে ৭টি লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ময়নাতদন্ত করার ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা আগে তাদের হত্যা করা হয়েছে। মোট কথা অপহরণের রাতেই তাদের হত্যা করা হয় এবং লাশ ভাসিয়ে দেয়া হয়। তিনি জানান, গলায় রশি পেঁচানোর লক্ষণ পাওয়া গেছে নিহতদের শ্বাসনালি পরীক্ষা করে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন একটি বন্দর থানায় ও অপরটি জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে পাঠানো হবে। জেলা সিভিল সার্জন আরও জানান, দক্ষ পেশাদার ও প্রশিক্ষিত লোকজন ছাড়া এমন হত্যা সম্ভব নয়। লাশ উদ্ধারের সময় দেখা যায় নজরুল ইসলামের পরনে শুধু সাদা পাঞ্জাবি ছিল। বাকিদের প্রত্যেকের গায়ে ছিল গেঞ্জি। পরনে ছিল প্যান্ট। গত ২৭শে এপ্রিল দুপুরে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড থেকে অপহৃত হন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী চন্দন সরকারসহ ৭ জন। এর তিন দিন পর ৩০শে এপ্রিল শীতলক্ষ্যায় একে একে ভেসে ওঠে ৭ জনের মরদেহ। এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নূর হোসেনকে প্রধান আসামি করে মামলা করেছেন নজরুলের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম। উৎসঃ মানবজমিন

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন