শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪


এক যুগ ধরে কোমায় ধর্ষিতা তরুণী
February 22, 2014 | Filed under: প্রতিবেশী | Posted by: নিউজ ডেস্ক/মেহা rape-indiaপ্রতিবেশী ডেস্ক নিউজ ইভেন্ট ২৪ ডটকম ফ্যালফ্যাল করে কতক্ষণ তাকিয়ে থাকা যায়! এক মিনিট, দু’মিনিট? বাগুইআটির এক ধর্ষিতা তরুণী তাকিয়ে আছেন বারো বছর৷ ধর্ষণের পর সিলিং ফ্যানের পাখায় দড়ি দিয়ে ঝুলে পড়েছিলেন৷ কিন্তু বেঁচে যান৷ মরেও যান বোধহয়৷ কোমা থেকে বেরিয়ে বলতে পারেননি, ‘আমি ধর্ষকের শাস্তি চাই৷’ বলতে পারেননি৷ কিন্ত্ত বলেন যেন রোজই৷ তরুণীর বাবা-মায়ের কথায়, ‘ওর চোখের দিকে তাকালেই বুঝতে পারি, ও যেন বলতে চাইছে, শাস্তি চাই, শাস্তি চাই৷ কিন্ত্ত বলতে পারে না৷ চোখে এসে ঠেলা মারে কত না-বলা কথা৷ ও কি কোনওদিন কথা বলবে! কোনওদিন?’ জানালা দিয়ে বয়ে যায় মাঘের হাওয়া৷ যার শাস্তি চান, সে ঘুরে বেড়াচ্ছে দিব্যি৷ ধর্ষিতা গৃহবন্দি৷ অথচ অভিযুক্ত আশমানের পাখি৷ গ্রেপ্তার হওয়ার দু’দিন পরেই সে জামিন পায়৷ তরুণীর বাবা গ্রহরত্ন বিক্রি করেন, মা শেখান গান৷ যা আয় হয়, তাতে কোর্ট-কাছারির খরচ ওঠে না৷ চিকিত্‍সার খরচও দেদার৷ লাখ তিনেক টাকা পেলে স্টেম সেল থেরাপি করে চেষ্টা করা যেত৷ কিন্তু অত টাকা পাবেন কোথায়? তরুণী তাই ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকেন৷ মুম্বাইয়ের হাসপাতালে ৪১ বছর ধরে কোমায় অরুণা শানবাগ৷ তিনিও ছিলেন লালসার শিকার৷ অরুণার পরিজনেরা স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন করেছিলেন৷ কিন্তু বাগুইআটির পশ্চিম নারায়ণতলার বাসিন্দারা তা চান না৷ সকলেই চান, বছর তেত্রিশের তরুণী সেরে উঠুন৷ তরুণীর বাবা বলেন, ‘বারো বছর হয়েছে৷ দরকার হলে জীবনভর লড়ব৷ রাজ্য সরকারের কাছে সাহায্য চেয়েছিলাম৷ পাইনি৷ রাজ্যপালকে চিঠি দিয়েছি৷ তিনি নিশ্চয় আমাদের ব্যথা বুঝবেন৷’ মেয়ের চিকিত্‍সার খরচ জোগাতে গিয়ে নিজের ব্যবসা লাটে উঠেছে৷ এখন অন্যের হয়ে গ্রহরত্ন বিক্রি করেন৷ ২০০২ সালের ৭ জুলাই৷ তরুণী তখন কলেজ ছাত্রী৷ ওইদিন দুপুরে তাঁর মা একটি গানের অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য স্বামীর সঙ্গে কলকাতায় প্রিন্সেপ ঘাটে আসেন৷ কিন্ত্ত তাল কেটে যায় হঠাত্‍৷ বাড়ি থেকে ফোন, মেয়ে ঝুলে পড়েছে৷ দু’জনেই বাড়ি ফিরে দেখেন, বাগুইআটি থানার পুলিশ মেয়েকে নামিয়ে নিয়ে যাচ্ছে এনআরএস হাসপাতালে৷ সেখান থেকে স্থানীয় একটি নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়ার পথেই ওই তরুণী কার্যত কোমায় চলে যান৷ পরে মেডিকেল টেস্টে জানা যায়, তিনি ধর্ষিতা৷ প্রতিবেশীরা দেখেছিলেন, তরুণীর সহপাঠী দেবজিত্‍ চৌধুরী তখন ঘরে হাজির৷ পুলিশ ঘর থেকে বেশ কিছু চিঠি উদ্ধার করে৷ তাতে নাকি জানা যায়, দু’জনের ‘ঘনিষ্ঠ’ সম্পর্ক ছিল৷ মেয়েটিকে দেওয়া ছেলেটির বেশ কিছু হুমকি চিঠিও মেলে৷ মেয়েটির পরিবার থানায় অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ ধর্ষণের মামলা রুজু করে৷ দেবজিত্‍‌কে গ্রেফতার করা হয়৷ কিন্তু মাত্র দু’দিন৷ জামিন পেয়ে যায় দেবজিত্‍৷ তার আইনজীবী আদালতে জানান, ওদের রেজিস্ট্রি করে বিয়ে হয়েছিল৷ খুচরো ঝগড়ার জেরেই আত্মহত্যার এই চেষ্টা৷ তরুণীর বাবা অবাক৷ তাঁর কথায়, ‘বিয়ে হয়েছে? অথচ আমরাই জানি না! শুধু চিঠি দেখে কী ভাবে প্রমাণ হল, ওদের বিয়ে হয়েছিল? মামলাটি আর আদালতে ওঠেনি৷ কিছুদিন আগে মামলাটি সম্পর্কে জানতে চেয়ে আদালতে চিঠি দিই৷ কিন্তু আমাদের জানানো হয়, ফাইলই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না৷’ শুক্রবার রাজা রাজেন্দ্রলাল মিত্র রোডে গিয়ে অবশ্য দেবজিতের খোঁজ মেলেনি৷ তরুণীর বাবা আর পেরে উঠছেন না৷ মাসে ছ-সাত হাজার টাকার ওষুধ৷ কোথায় মিলবে টাকা?’ কিছুদিন আগে তিনি জানতে পারেন, ধর্ষিতাদের ক্ষতিপূরণ দেবে রাজ্য সরকার৷ মহাকরণে গিয়ে নারী কল্যাণমন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রের দেখা করেন৷ পরে শশী পাঁজার সঙ্গেও কথা হয়৷ কিন্তু শুধুই প্রতিশ্রুতি৷ আর কিছু জোটেনি৷ নিউজ ইভেন্ট ২৪ ডটকম/২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪/১৮.০০/মেহেদী হাসান - See more at: http://www.newsevent24.com/2014/02/22/%e0%a6%8f%e0%a6%95-%e0%a6%af%e0%a7%81%e0%a6%97-%e0%a6%a7%e0%a6%b0%e0%a7%87-%e0%a6%95%e0%a7%8b%e0%a6%ae%e0%a6%be%e0%a7%9f-%e0%a6%a7%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%b7%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a6%be-%e0%a6%a4/#sthash.pRdMEThJ.dpuf

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন