বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪


রাতের আঁধারে ছাত্রহলে ছাত্রী, এখনো নীরব প্রশাসন! 27 Feb, 2014
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ছাত্রদের আবাসিক হলে গভীর রাতে ছাত্রী নিয়ে আসা বিশ্ববিদ্যলয় শাখা ছাত্রলীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মহিতোষ রায় টিটোর বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। এ ঘটনায় জাবি ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে টিটোকে সাংগঠনিকভাবে বহিষ্কারের সুপারিশ করলেও প্রশাসন নীরব। এর আগেও বিশ্বদ্যিালয়ের সাংবাদিকদের উপর হামলা, রিকশাচালক ও নিরাপত্তাকর্মীকে মারধরসহ টিটোর বিরুদ্ধে একাধিক অপকর্মের অভিযোগ উঠলেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো প্রশ্রয়দাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে বারবার। জানা যায়, গত ১০ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে মীর মশাররফ হোসেন হলের ১১০নং কক্ষে ছাত্রলীগ নেতা টিটো ও কর্মী মামুন (ইতিহাস ৪০তম আবর্তন) বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রীকে নিয়ে আসেন। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাত আড়াইটার দিকে সংশ্লিষ্ট হলের প্রাধ্যক্ষ ও আবাসিক শিক্ষকরা ঘটনাস্থলে আসেন। শিক্ষকরা তাৎক্ষণিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক মজিবুর রহমানকে হলে ডাকলে তিনি এসে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করেন। তবে এসময় দোষ স্বীকার করে টিটো দাবি করেন, রাত্রীযাপন হয়নি ওই মেয়ে একাই গেস্টরুমে অবস্থান করছিল। ঘটনার আগের দিন বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বৃদ্ধ রিকশাচালকসহ দুই নিরাপত্তাকর্মীকে ব্যাপক মারধর করে ছাত্রলীগের উপ-সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক বশিরুল হক এবং অভিযুক্ত মহিতোষ রায় টিটো। এ বিষয়েও অভিযোগ করা হলে প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। নিরাপত্তাকর্মীরা বিচার চাইলে উল্টো প্রক্টর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ছাত্রলীগ নেতাদের পক্ষে সাফাই গান। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক, অরাজনৈতিক শিক্ষার্থীদের মারধর, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় হলের সিনিয়র শিক্ষার্থীকে মারধর এবং হলে মাদক সরবরাহের অভিযোগ থাকলেও এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও হল প্রশাসন টিটোর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আর তাই প্রশাসনের প্রশ্রয়ে উন্মত্ত হয়ে উঠেছেন ছাত্রলীগের এই জুনিয়র নেতা। অবশ্য অভিযুক্ত টিটো এবং আসফিকুর রেজা সাগর ইতিপূর্বে দুই সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় এক বছরের জন্য বহিষ্কৃত হয়েছিলেন। কিন্তু বহিষ্কারের ছয় মাস পর সিন্ডিকেটের অনুমোদন ছাড়াই অবৈধভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নেয়। জানা গেছে, টিটো, বসির ও সাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে রফিক-জব্বার হলের আবাসিক ছাত্র হয়েও অবৈধভাবে দীর্ঘদিন ধরে মীর মশাররফ হোসেন হলে অবস্থান করছে। অভিযোগ রয়েছে হলে মাদকের প্রধান সরবরাহকারী এই তিনজন। তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে ফাও খাওয়ারও অভিযোগ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক মজিবুর রহমানের কাছে এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের তিনি কোনো সদুত্তর দেন না। তিনি বলেন, ‘হলের প্রভোস্ট অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ অন্যদিকে মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. ওবায়দুর রহমানের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বাংলামেইলকে বলেন, ‘যারা আমাদের হলে অবৈধ্য ছাত্র ও অভিযুক্ত তাদেরকে হল থেকে বের করে দেয়ার যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সে (মহিতোষ রায় টিটো) আমাদের আবাসিক হলে যেন না থাকতে পারে এজন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরবার চিঠি দিয়েছি। আসা করি প্রশাসন এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’ এ ব্যাপারে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ আহমদ বাংলামেইলকে বলেন, ‘অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে এ ধরনের অপরাধ কর্মকাণ্ডের প্রশ্রয় দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের আরো অপরাধ করার সুযোগ সৃষ্টি করে দিচ্ছে।’ বাংলামেইল২ Share on facebook Share on email Share on print 1

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন