বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪


বলিউডের অন্ধকার জগৎ, যৌনতার বিনিময়ে চরিত্র
27 Feb, 2014 বলিউড বলতেই অনেকে বোঝেন রূপালী পর্দায় দেখা চাকচিক্যময় ঝলমলে জগৎ। কিন্তু এই ঝলমলে জগতের ভেতরেও যে বিভৎস অন্ধকার লুকিয়ে আছে তা হয়তো অনেকেরই অজানা। বলিউড তারকা, পরিচালক, প্রযোজকদের সঙ্গে মুম্বাইয়ের অপরাধ জগতের যোগসূত্রের খবর এখন অনেক পুরনো বিষয়। সম্প্রতি নতুন করে উঠে এসেছে ভারতীয় অর্থনীতিতে কোটি কোটি রুপির এই মহা ইন্ডাস্ট্রির আরেকটি কালো অধ্যায়।
মাদক, জুয়া ছাড়াও বলিউডে এখন যৌনতার বিনিময়ে বিক্রি হচ্ছে ছবির চরিত্র। নতুন নতুন অভিনেত্রীরা নায়িকা হওয়ার বাসনা নিয়ে এক শ্রেণীর প্রতারক দালাল, পরিচালক, প্রযোজকদের কাছে বিলিয়ে দিচ্ছে নিজের সর্বস্ব। সম্প্রতি ভারতের মিডডে পত্রিকা বলিউডের এই অন্ধকার অংশের স্বরূপ সন্ধানে একটি গোপন অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে পত্রিকার এক রিপোর্টারই অভিনেত্রীর ছদ্দবেশে কথা বলেন বিভিন্ন ছবির কাস্টিং এজেন্টদের সঙ্গে। ওই এজেন্টদের সঙ্গেই কথা বলে জানা গেছে, বলিউড ছবিতে আবেদনকারী, শিক্ষানবীশ বা অধস্তনদের কাছ থেকে প্রায় সময়ই তারা যৌন সুবিধা নিয়ে থাকেন। বিনিময়ে মেলে ক্যারিয়ারের উন্নতি বা বিভিন্ন ছবিতে নানা ছোট বড় চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ। এমনকি শুধু অভিনেতা অভিনেত্রীরাই নয়, তাদের শিকার হন ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে সংশ্লিস্ট বিভিন্ন পেশার মানুষরাও। কাস্টিং এজেন্ট আদভিন মাসির সঙ্গে ছদ্দবেশী রিপোর্টারজানা যায়, কেউ অভিনেতা অভিনেত্রী হবার আশায় বিশেষ করে মেয়েরা এসব এজেন্টদের সঙ্গে দেখা করলে প্রথমে তাদের বেশ কয়েকটি ভঙ্গিতে ছবি দিতে বলা হয়। এরমধ্যে কাউকে কাউকে অর্ধনগ্ন কিংবা বিকিনি পরিহিত ছবি দিতেও বলা হয়। ছবিগুলো তাদের পছন্দ হলেই কেবল আবেদনকারীর ডাক পরে। পত্রিকাটির চালানো অভিযানে বিজয় রাওয়াল নামে এক কাস্টিং এজেন্টের খোঁজ পাওয়া যায়। যার সঙ্গে ওই ছদ্দবেশী রিপোর্টারের কথা হয় মুম্বাইয়ের ভাইদাস হলে। সাধারণত টিভি অভিনেতা অভিনেত্রীদের নিয়ে কাজ করেন বিজয়। সে সময় বিজয় ওই ছদ্দবেশী রিপোর্টারকে গোয়ালিয়র থেকে আসা নেহা শর্মা নামের একটি মেয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। মেয়েটি অভিনেত্রী হওয়ার আশায় দেখা করেছে বিজয়ের সঙ্গে। মেয়েটিকে বিজয় বলে, ‘যদি তুমি অভিনয় করতে চাও, তাহলে কিছু ব্যপারে তোমাকে আপোস করতে হবে। যদি সেটা পারো তাহলে অপেক্ষা করছে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ।’ এরপর বিজয় ছদ্দবেশী ওই রিপোর্টারকে বলেন, ‘ঈশ্বর তোমাকে এই শরীর উপহার দিয়েছে। কিন্তু আমার সঙ্গে দেখা করার আগে তোমার একটু আবেদনময় পোশাক পড়ে আসা উচিৎ ছিল। প্রথমে তুমি টাকা কামাবে তারপর শিখবে অভিনয়।’ এমন কি সেই লোক ছদ্দবেশী ওই রিপোর্টারকে ছবিতে অভিনয়ের সুযোগের বদলে অশ্লীল ইঙ্গিতও করেন। পরিচালক সুভাষ কাপুরকে চড় মারছেন অভিনেত্রী গীতিকা তিয়াগি একই ভাবে ওই ছদ্দবেশী রিপোর্টার ময়ুর নামে এক সহকারী পরিচালক, কাস্টিং এজেন্ট জো, আদভিন মাসে, মুকেশ ঠাকুরসহ সামা খান নামে একজন নারী এজেন্টের সঙ্গেও দেখা করেন। তারাও কাজ পাইয়ে দেয়ার তাদের কিংবা ঘনিষ্ঠদের খুশি করার বিষয়টিকে ইন্ডাস্ট্রিতে খুব স্বাভাবিক বিষয় বলে বর্ণনা করেন। তাদের প্রায় সবাই কাজের বিনিময়ে ওই রিপোর্টারকে দেহ ব্যবসার প্রস্তাব দেন। এসব ক্ষেত্রে এজেন্টদের বন্ধুবান্ধব, পরিচালক, প্রযোজকদের খুশি করার জন্যও আবেদনকারীদের পাঠানো হয় বলে জানা যায়। এই বিশেষ অভিযানে উঠে আসা বিভিন্ন তথ্য ছাড়াও বলিউডে যে হরহামেশাই নতুন অভিনেতা অভিনেত্রীরা এমন যৌন হেনস্থার শিকার হন তা কিছুদিন আগেও প্রকাশ পায়। চলতি মাসের মাঝামাঝিতে শ্লীলতাহানির অভিযোগে ‘জলি এলএলবি’ ছবির পরিচালক সুভাষ কাপুরকে চড় মেরে সবার নজরে আসেন অভিনেত্রী গীতিকা তিয়াগি। এছাড়াও বেশ কয়েকবার কয়েকজন নামী পরিচালক প্রযোজকের বিরুদ্ধেও এসবে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া যায়।
শুধু যে মেয়েরাই এই যৌন হেনন্থার শিকার হন তা কিন্তু নয়। ছেলেরাও অনেক সময় এর শিকার হয়ে থাকেন। এর মধ্যে রয়েছে সমকাম, পর্নো ছবিসহ নানা রকম সমস্যা। বছর খানেক আগে তরুণ তেলেগু মডেল কৃষ্ণা মোনালা অভিযোগ করেছিলেন যে, ক্যারিয়ারের শুরুতে তাকে এক প্রযোজকের সঙ্গে বিছানায় যাবার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। উৎসঃ বাংলামেইল২৪ Share on facebook Share on email Share on print 11

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন