বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪


বাংলাদেশ নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র!
20 Feb, 2014 বাংলাদেশ নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। একদিকে চলছে সরকার উৎখাতের আন্দোলন পরিকল্পনা, অন্যদিকে চলছে সরকারের উপর আগাম নির্বাচন করানোর ব্যাপারে চাপ বাড়ানো, সেই সঙ্গে সরকারকে বিভিন্ন ভাবে বেকাদায় ফেলানোর চেষ্টা। পাশাপাশি সরকারকে নানা মুখে চাপে ফেলে এই বছরের মধ্যেই নির্বাচন করানোর জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। এছাড়াও মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারের ইসুø নিয়ে ডেনমার্কের এটি আদালতেও মামলা করার প্রস্তুতি চলছে। এই জন্য ইতোমধ্যে ফান্ড সংগ্রহ করা হয়েছে বলেও জানা গেছে। বিচার বন্ধ করার ব্যবস্থা করা সহ সেখানে সরকারের বিরুদ্ধে মামলাও করা হতে পারে। সূত্র জানায়, চলমান অবস্থায় এটা নিয়ে দেশ বিদেশে বিভিন্ন মহলে নানাভাবে কাজ করছে। এদিকে এই সরকার যাতে পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকতে না পারে সেটা নিয়ে বিভিন্ন দিক থেকেও চেষ্টা চলছে। যদিও বাংলাদেশ নিয়ে ষড়ন্ত্রের কথা আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বার বারই বলেছেন। সবাইকে সতর্ক থাকতেও বলেছেন। এর আগের মেয়াদেও তিনি বহুবার সতর্কবাণী দিয়েছেন। এখনও ষড়যন্ত্র বন্ধ হয়নি সেটা তিনি জানেন বলেই সব ধরনের ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করার চেষ্টা করছেন। এগিয়ে যেতে চাইছেন। এই সরকার স্বৈরাচারী সরকার এমন অভিযোগ এনেই ১৯ দলীয় জোট চাইছে যে কোন ভাবেই হোক এই সরকারকে ক্ষমতা সরিয়ে, তারা আগাম নির্বাচন করিয়ে ক্ষমতাসীন হবে। এই ক্ষমতাসীন হওয়ার জন্য তারা আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর সহায়তা চাইছে। এই অবস্থায় বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে সুসংহত ও টেকসই করার জন্য পশ্চিমা শক্তিগুলো দ্রুত রাজনৈতিক সংকট সমাধানের জন্য ও গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য নির্বাচনের কথা বলছেন। কিন্তু সরকার তাদের কথায় কর্ণপাত করছেন না। সরকার জোর করেই ক্ষমতায় পাঁচ বছর টিকে থাকতে চাইছেন। এই জন্য সব রকম চেষ্টা করছেন। বিএনপিকে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না। সরকারের এই মনোভাবটা তারা ভালভাবে নিচেছন না। তাদের কাছে ভিন্ন রকম খবর থাকার কারণেই তারা দ্রুত এই দেশে সব দলের অংশ গ্রহণের নির্বাচন চাইছে। তা যত দ্রুত সম্্‌ভব। সরকার অবশ্য এর কোন গুরুত্ব দিচ্ছে না। এদিকে বিএনপি এখন তাদের বাস্তব রাজনৈতিক অবস্থান বুঝতে পারছে। সেই বিবেচনা করে তারা নির্বাচনে না গেলে ভুল করেছে এটা মনে করছে না কিন্তু এরপরও তারা মনে করছে যে আন্দোলন করেই তাদেরকে সফল করতে হবে। এই আন্দোলন করার জন্য তাদেরকে আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর সমর্থন নিতে হবে। সেই হিসাবে তারা সমর্থনও পেয়েছে। এখনও পাচ্ছে। এই অবস্থায় তারা চেষ্টা করে যাচ্ছে। অন্য দিকে সরকার বিএনপিকে নির্বাচনের বাইরে রেখে ও এককভাবে নির্বাচন করে ক্ষমতায় থাকার জন্য চেষ্টা করলেও সরকারকে নানাভাবেই টেনশনে রাখতে চাইছে বিভিন্ন শক্তি। সরকারের ভেতরে উদ্বেগ রয়েছে। উপরে উপরে যেমনই সব স্বাভাবিক থাক না কেন ভেতরে সমস্যা অনেক। পরিস্থিতি সামাল দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী, গওহর রিজভী, তোফায়েল আহমেদ, শাহরিয়ার আলম, ও বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতরাও এনিয়ে সরকারের নিêেদশ মোতাবেক কাজ করছেন। সরকারও বুঝতে পেরেছে সংবিধান রক্ষা করার নাম করে নিয়ম রক্ষার নির্বাচন করে পাঁচ বছর শেষ পর্যন্ত টানা যাবে না। এই জন্য আগাম নির্বাচনের আভাস দিলেও তা শর্ত সাপেক্ষে হতে পারে। বাংলাদেশ,মিয়ানমার, ভারত, পাকিস্তানের রাজনীতি ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে কাজ করে অষ্ট্রেলিয়ার একটি সংস্থা। ওই সংস্থার একজন দায়িত্বশীল প্রতিনিধি জানান, বাংলাদেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হতে পারে। আমাদের কাছে হংকং ও ওয়াশিংটন ভিত্তিক সূত্রে খবর রয়েছে, মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার নিয়ে ও জামায়াত নিষিদ্ধ করার বিষয়ে সরকার যে ভাবে কাজ করছে এতে করে অসন্তুষ্ট জামায়াত। আর তারা অসন্তুষ্ট হলেও এখন চুপচাপ আছে মনে করার কারণ নেই। কারণ তারা বসে নেই। তারা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন ভাবে যোগাযোগ রক্ষা করছেন। বিভিন্ন মহলে যোগাযোগ করছেন। মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ছাড়াও বিভিন্ন মুসলিম সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন। নেটওয়ার্ক গড়ে তুলছেন। বাংলাদেশে তাদের উপর নির্যাতন হচ্ছে, যুদ্ধাপাধীদের বিচার যথাযথ নিয়ম মেনে হচ্ছে না। আন্তর্জাতিক মান রক্ষা হচ্ছে না। সেই সঙ্গে আব্দুল কাদের মোলস্নার ফাঁসির আদেশ দেয়া ও তা কার্যকর করা নিয়েও অনেক তথ্য আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার কাছে জামায়াত নেতারা দিয়েছেন। তারা তাদের সহায়তা চেয়েছে এই সব বন্ধ করার জন্য। এই জন্য বেশ কয়েকটি দেশে জামায়াতের নেতারা এক হয়ে সাংগঠিনকভাবে জামায়াতের পক্ষে কাজ করছেন বলে ওই সূত্র দাবি করেন। তিনি বলেন, আমরা গবেষণা করি। আমাদের তথ্য উপাত্ত আসে বিভিন্ন সোর্সে। সেখান থেকে আরো বলা হয়েছে বাংলাদেশের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার জন্য যে চেষ্টা করা হচ্ছে এতে করে সমস্যা হতে পারে। তারা অনেক বড় অংকের টাকাও সংগ্রহ করেছে সরকারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলে আমরা জানতে পেরেছি। তিনি বলেন, জামায়াত চাইছে বাংলাদেশে মানবতাবিরোধী যে বিচার হচ্ছে তা বন্ধ করতে। ওই বিচার যে সঠিকভাবে সরকার করছে না। রাজনৈতিকভাবে করছে সেটাও বোঝানোর জন্য চেষ্টা করছে। তাদের পক্ষে অনেক বড় বড় লবিং এক হওয়ার চেষ্টা করছেন। কারণ ওই সব শক্তির কাছে খবর দেয়া হয়েছে বাংলাদেশে মুলমান ও ঈমানদার মানুষ বিভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে সরকার ও সরকারি বাহিনী দ্বারা। জামায়াত নিষিদ্ধ করে সরকার এই দেশে মুসলমানদের কোনঠাসা করতে চাইছে, এই সব তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। এই অবস্থায় তারা বিভিন্ন দিক থেকে বাংলাদেশ সরকারের উপর চাপ তৈরি করার জন্য কাজ করছে। তাদের পক্ষে অনেক লবিস্টও কাজ করছেন। ওই সূত্র দাবি করেন, সরকার পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার বিষয়ে যতখানি আত্নবিশ্বাসী ঠিক ততখানি আত্নবিশ্বাস শেষ পর্যন্ত ধরে রাখতে পারবে কি না কিংবা সরকারকে নির্বিঘ্নে পাঁচ বছর সময় পার করতে দিবে না এটা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। কারণ সরকারকে তারা নানা ভাবেই সমস্যায় ফালানোর চেষ্টা করছে। সরকারের অনেক ভুল রয়েছে বলেও তিনি জানান। তিনি বলেন, ভারতের নির্বাচনে নতুন সরকার আসলে তারা বর্তমান সরকারের মতো বাংলাদেশের সরকারকে অকুণ্ঠ সমর্থন নাও দিতে পারে। অন্য দিকে আমারা জানতে পেরেছি মিয়ানমারে অং সাং সূচি ক্ষমতাসীন হতে পারেন। ওই দুই দেশে সরকার পরিবর্তন হলে এখানেও প্রেক্ষাপট পরিবর্তন হবে। এদিকে বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানায়, এপ্রিলের পর সরকারের উপর পশ্চিমা আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর চাপ আরো বাড়বে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি সুবিধা দেয়া না দেয়া নিয়ে নানা শর্ত জুড়ে দিয়েছে। আর এই সব শর্ত বাংলাদেশেকে পূরণ করারও বাধ্যবাধকতা দেয়া হয়েছে। যদিও সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ মনে করেন যে, বাংলাদেশে জিএসপি সুবিধা পাওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের শর্ত পূরণ করেছে। কিন্তু মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজিনা সম্প্রতি তার সঙ্গে দেখা করে তাকে জানিয়ে দিয়েছেন তারা কি চাইছেন। এবং জিএসপি সুবিধা পেতে হলে কি কি করতে হবে। এদিকে তিনি এটাও বলেছেন যে, বাংলাদেশ সম্পর্কে এখন তারা কি ভাবছেন। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থা আগের যে অবস্থান ছিল এখনও আমরা সেই অবস্থানে রয়েছি। কোন পরিবর্তন হয়নি। তিনি আবারও বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চাইছে যত দ্রুত সম্্‌ভব সরকার বিএনপির সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচন সম্পন্ন করবে। এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো একই নীতি অনুসরণ করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তারা জিএসপি সুবিধা বহাল রেখেছে তবে তা বাতিল করার মতো সিদ্ধান্তæ নিতে পারে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এপ্রিলের বৈঠকৈর পর জিএসপি সুবিধা না দিলে সার্বিক পরিস্থিতি আরো জটিল হবে। পশ্চিমা প্রভাবশালী আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর কাছে খবর রয়েছে বাংলাদেশের এক দলীয় নির্বাচন বেশিরভাগ জনগণ মেনে নেয়নি। জনগণের মধ্যে এনিয়ে ক্ষোভ রয়েছে, তবে তা প্রকাশ করছেন না। তারা আরো জানতে পেরেছেন যে, বিএনপি একটি বড় রাজনৈতিক দল একে বাদ দিয়ে নির্বাচন করা সরকারের ঠিক হয়নি। এখন বাংলাদেশে বিএনপি ক্ষমতার কোন অংশে না থাকার কারণে ও সরকারের বিএনপি দমনের কারণে সরকারেরই বেশি ক্ষতি হচ্ছে। কারণ বিএনপির সঙ্গে রয়েছে জামায়াতে ইসলামী। তারা বিএনপির সব আন্দোলন ও কর্মসূচী সফল করেছে। এরপর পাশাপাশি নিজেদের আন্দোলনও সফল করেছে। তবে কাদের মোলস্নার ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ার পর ও মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় ফাঁসির আদেশ হওয়ার পর তারা তাদের অবস্থান পরিবর্তন করেনি কিন্তু কৌশল পরিবর্তন করেছেন। সরকার যাতে আর কোন মানবতাবিরোধী অপরাধীর বিচার করতে না পারে ও তা কার্যকর করতে না পারে সেই চেষ্টা তারা করছেন। এছাড়াও সরকার আদালতের মাধ্যমে কিংবা নির্বাহী কোন আদেশ দিয়েও জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে না পারে সেই ব্যাপারেও চেষ্টা করে যাচ্ছে। সরকার জামায়াতকে নিষিদ্ধ করাতে চাইছে। তবে সেটা করা সঠিক হবে বলে মনে করছে না। এই জন্য কোন ঝুঁকি না নিয়ে আদালতের মাধ্যমেই কাজটা করাতে চাইছেন। এই অবস্থায় সরকারও জামায়াতকে আগামী দিনে খুব বেশি শক্তি সঞ্চয় করার সুযোগ দিতে রাজি নয়। অন্য দিকে যে কোন ভাবেই সরকার মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার করা ও তাদের বিরুদ্ধে আদালত যে রায় দিবে তা কার্যকর করার জন্য চেষ্টা করেই যাচ্ছেন। এটা সরকারের জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ হলেও সরকার তা করতে চাইছেন। এদিকে জামায়াত তা ঠেকানোর জন্য চেষ্টা করছেন। তারা আন্তর্জাতিকভাবে ব্যবস্থা নিতে চাইছেন। তারা ডেনমার্কের একটি আদালতেও এই ব্যাপারে আইনী ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছেন। আইনী সহায়তার জন্য বিপুল পরিমাণ টাকা প্রয়োজন তা বিভিন্ন দেশের জামায়াত নেতারা ও সংগঠনের তরফ থেকে সহায়তা করা হবে বলে জানা গেছে। এদিকে কবে নাগাদ ডেনমার্কের আদালতে মামলা হতে পারে জানতে চাইলে সূত্র জানায়, দিনক্ষণ এখনই বলতে পারবো না, তবে ষড়যন্ত্র হচ্ছে এটাই বলতে পারি। এদিকে হেফাজতে ইসলামীর সমাবেশে যোগ দেয়া নেতা কর্মীদের উপর ২০১৩ সালের ৫মে যে ঘটনা মতিঝিল চত্বরে ঘটেছে এটা নিয়ে তারাও বসে নেই। তারা তাৎক্ষনিকভাবে সরকারের বিরুদ্ধে তেমন কিছু করতে না পারলেও এই দেশে যে মুসলমানদের উপর নির্যাতন হচ্ছে সেটা নিয়ে কথা বলছেন। এনিয়ে তারাও আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য চেষ্টা করছেন। তারাও বিভিন্ন মহলে সমর্থন আদায় ও সহায়তা পাওয়ার জন্য চেষ্টা করছেন। সূত্র জানায়, জামায়াত ও হেফাজতে ইসলাম এবং বিএনপি এখনই সরকারের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলনে নামবে এমন নয়। তারা সময় নিচ্ছে। প্রত্যেকেই আন্তর্জাতিক সহায়তা কামনা করছেন। বিএনপির লড়্গ্য সব দলের অংশগ্রহণে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন করানো। সেটা এই বছরের মধ্যেই। তা করে ক্ষমতাসীন হওয়া, বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে যাতে সরকার কোন ব্যবস্থা নিতে না পারে তা নিশ্চিত করা। তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারেও কাজ চলছে। জামায়াত কাজ করছে যাতে করে সরকার জামায়াতে নিষিদ্ধ করতে না পারে, বিএনপি জোট থেকে বের করতে না পারে, মানবতাবিরোধি অপরাধে জামায়াতের আর কোন নেতার বিচার করে রায় কার্যকর করতে না পারে, সেই চেষ্টা করা। আর হেফাজতে ইসলামীও কাজ করছে তাদের ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়ন ও তাদের প্রতি সরকার যে নির্যাতন করেছে এর বিচার চাওয়া। তারা সবাই নিজ নিজ এজেন্ডা নিয়ে কাজ করলেও তাদের লড়্গ্য সবার এক। তা হচ্ছে এই সরকারকে ক্ষমতাচুøত করা। সরকার যে সব কাজ করছে তা বন্ধ করা। এদিকে সরকারে বিরুদ্ধে বিভিন্ন মহলে অপপ্রাচারও চালানো হচ্ছে। এতে করে তারাও সরকার বিরোধী মনোভাব পোষণ করছে। এই সব ঝামেলা সরকারকে পোহাতে হচ্ছে। সরকারের তরফ থেকে আন্তর্জাতিক মহলের সবাইকে বোঝানোর চেষ্টা চলছে যে বাংলাদেশে কোন মুসলমানের উপর অবিচার ও নির্যাতন করা হচ্ছে না, মানবতাবিরোধী অপরাধে কোন নেতাদের হয়রানি করা হচ্ছে না। রাজনৈতিকভাবেও বিচার করা হচ্ছে না। বিচার করা হচ্ছে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষভাবে। আন্তর্জাতিক আদালতে আসামীকে আইনী সব ধরনের সহায়তা পাওয়ার জন্য আইনের সুযোগ রয়েছে। এছাড়াও সরকারকে আরো বোঝাতে হচ্ছে যে তারা জামায়াতকে নিষিদ্ধ করছে না। এনিয়ে আদালতে মামলা চলছে যা করার আদালতই করবে। সরকারের কিছুই করার নেই। সরকারের তেমন ইচ্ছে থাকলে সরকার যে কোন সময়ে করতে পারত। সরকার তা চাইছে না। এদিকে হেফাজতের উপর নির্যাতনের বিষয়েও কথা বলতে হচ্ছে। সেখানে কোন মুসলমানের উপর নির্যাতন করা হয়নি, তাও বলা হচ্ছে। যে সব ছবি প্রকাশ করা হচ্ছে তাও সত্য নয় বলা হচ্ছে। এই ব্যাপারে সরকারের একজন প্রতিমন্ত্রী বলেন, হেফাজতে ইসলামীর সমাবেশে রাতে যে হামলার কথা বলা হচ্ছে ও যে সব ছবি দেখানো হয়েছে ওই সব কথা সত্য নয়। কারণ পরে আমরা খবর নিয়ে জানতে পেরেছি ওই সব ছবি এটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের ছবি। কিন্তু তারা সেটিকে ব্যবহার করেছে। তিনি আরো দাবি করেন, ওই সব ছবি প্রচার করে বাংলাদেশের সরকারকে ইসলাম বিদ্বেষী বলে প্রচার করা হয়েছে। এই অবস্থায় মুসলিম বিশ্বের যে সব দেশে ও সংগঠন যারা জামায়াত ও হেফাজতীদের পক্ষে কাজ করছেন তারা এই সরকারকে সহ্য করতে পারছেন না। সরকারের বিরুদ্ধে কাজ করার জন্য সব ধরনের সহায়তা দিতে যাচ্ছেন। সেটা আইনী সহায়তা থেকে শুরু করে সব ধরনের সহায়তা। আর এটা বুঝতে পারছেন পশ্চিমা শক্তিগুলো। তারা মনে করছেন, ওই সব শক্তি যদি জামায়াত ও হেফাজতকে সব ধরনের সহায়তা দেয় তাহলে এখানে একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতির তৈরি হতে পারে। সেটা হলে বাংলাদেশের অবস্থা অনেক খারাপ হতে পারে। এতে করে তাদের জন্য কাজ করা সমস্যা হয়ে যাবে। পশ্চিমা শক্তিগুলো মনে করে বাংলাদেশে যাতে কোন ভাবেই ইসলামী রাষ্ট্র কায়েম হতে না পারে কিংবা সেই ধরনের সুযোগ তৈরি না হয়। তেমন হওয়ার কোন সুযোগও তারা দিতে চাইছে না। এই অবস্থায় তারা চাইছে বাংলাদেশে যে কোন ভাবেই হোক গণতান্ত্রিক সরকারাই ক্ষমতাসীন থাক। সেটা বিএনপি কিংবা আওয়ামী লীগ যে দলই থাক না কেন। তবে এই দলের কোন দল সংসদের বাইরে থাকা ঠিক হবে না। সেটা থাকলেই গণতন্ত্র বিনষ্ট হওয়ার সম্্‌ভাবনা তৈরি হবে। এই অবস্থায় তারা চাইছে যত দ্রুত বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ বিএনপির সঙ্গে সংলাপে বসে তাদের মধ্যে আলোচনা করে একটি সমাধানে এসে নির্বাচন দিবে। সব দলের অংশ গ্রহণের মাধ্যমে যে দলই সরকার গঠন করুক না কেন তারা তাদের সঙ্গেই কাজ করবেন। তারা চেষ্টা করে যাচ্ছে। সরকারি সূত্র বলছে, যত কারণই থাক না কেন আগাম নির্বাচনের কোন সম্্‌ভাবনা নেই। কারণ সরকার পাঁচ বছর ক্ষমতাসীন থাকতে পারবে সেই সুযোগ রয়েছে। তাহলে সরকার কেন সেটা হাতছাড়া করবে। এদিকে সরকারের একজন মন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন দিক থেকে ষড়যন্ত্র হতেই পারে। তবে আমি মনে করি সরকারের বিরুদ্ধে যতই ষড়যন্ত্র হোক না কেন বিদেশিদের কথায় কোন কাজ হবে না। দেশে সংবিধান অনুযায়ী সব হবে। এটা বিদেশিরা বললো তোমরা নির্বাচন করো, আর সরকার করলো বিষয়টা এমন হওয়া উচিত হবে না। এটা করলে আগামী দিনে সমস্যা বাড়বে। তাই আমি মনে করি সরকারকে এই মেয়াদ পূরণ করতে হবে। বিএনপি শেখ হাসিনার শর্ত মেনে আলোচনায় আসলেই সমাধান হতে পারে। তারাতো তা আসছেন না। এদিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের একজন উপদেষ্টা বলেন, সরকার যেটা করছে এটা ঠিক করছে না। সরকারই দেশটাকে বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। এই দেশে গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন সরকারকে দিতেই হবে। তারা পাঁচ বছর পর নির্বাচন দেয়ার যে স্বপ্ন দেখছে আমরা তা পূরণ হতে দেব না। এর আগেই আন্দোলন শুরু হবে। এপ্রিলের পরই আবার আন্দোলন আসছে। এই সময় আন্দোলনের জন্য কেন বেছে নেয়া হলো এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তখন বিএনপির কাউন্সিল হয়ে যাবে। এছাড়াও বেশ কয়েকমাস লাগাতার আন্দোলনের কারণে জনগনের সমস্যা হয়েছে। এপ্রিলের পর আন্দোলন হলে তারাও একটু গুছিয়ে নিতে পারলো। সেই সঙ্গে এখন ভারতে যে সরকার আছে তারা ওই সময়ে থাকবে না। সেখানে নির্বাচন হবে। নতুন সরকার আসবে। সেখানে সরকার পরিবর্তন হলে বাংলাদেশের ব্যাপারেও ভারত সরকারের মনোভাব পরিবর্তন হবে। এই সরকার বাংলাদেশে এক তরফা নির্বাচনের জন্য যত বেশি উৎসাহ দিয়েছে অন্যদল আসলে এটা অন্তত দিবে না। তারা চাইবে সব দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণেযাগ্য নির্বাচন। তখন এখানে আন্দোলন করতেও সুবিধা হবে। এছাড়াও বিএনপির আরো নানা হিসাব নিকাশ রয়েছে সেই সব করেই এগুতে হচ্ছে। উৎসঃ আমাদের সময় Share on facebook Share on email Share on print

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন