মার্কিন দূতাবাস কর্মকর্তাদের সাথে হেফাজত নেতৃবৃন্দের বৈঠক
20 Feb, 2014
ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের দুই কর্মকর্তার সাথে বুধবার চট্টগ্রামে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
দুপুরে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কার্যালয় হাটহাজারী দারুল উলূম মাদ্রাসায় আড়াই ঘন্টাব্যাপি এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে সূত্র জানায়।
বৈঠকে মার্কিন দূতাবাসের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন, দূতাবাসের রাজনৈতিক কর্মকর্তা ক্যাথলিন গিবিলিস্কো এবং সহকারী রাজনীতি বিশেষজ্ঞ লুবাইন চৌধুরী মাসুম।
হেফাজতের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন দলের মহাসচিব আল্লামা হাফেজ মুহাম্মদ জুনায়েদ বাবুনগরী, মাওলানা আনাস মাদানী, যুগ্মমহাসচিব মাওলানা মুঈনুদ্দীন রুহী, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী, হেফাজতের আমীর মাওলানা আহমদ শফির প্রেস সেক্রেটারী মাওলানা মুনির আহমদ, কেন্দ্রীয় নেতা মাওলানা হাবীবুল্লাহ আজাদী ও মাওলানা মুজাম্মেল হক প্রমুখ।
বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া খবরে জানা গেছে, বৈঠকে মিসেস ক্যাথলিন হেফাজত নেতৃবৃন্দর কাছে সংগঠনটির ১৩ দফার আন্দোলন, নীতি আদর্শ, সাংগঠনিক তৎপরতা, গত বছরের ৫ মে শাপলা চত্বরের ঘটনাসহ বিভিন্ন বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চান।
হেফাজত নেতৃবৃন্দ এসব বিষয়ে তাদের বক্তব্য তুলে ধরার পাশাপাশি সংগঠনের অরাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ অবস্থান সম্পর্কে অবহিত করে বলেন, হেফাজতে ইসলামের তৎপরতা কাউকে ক্ষমতায় নেওয়ার জন্য বা নামানোর জন্য নয়। হেফাজতে ইসলাম মুসলমানদের ঈমান-আক্বীদার সুরক্ষার আন্দোলনের পাশাপাশি দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার জন্যই কাজ করে যাচ্ছে।
এ সময় মিসেস ক্যাথলিন শাপলা চত্বরের হতাহতের ঘটনা, পবিত্র কুরআন পোড়ানোর ঘটনা এবং সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ নিয়েও আলোচনা করেন।
হেফাজত নেতৃবৃন্দ শাপলা চত্বর এবং পবিত্র কুরআন পোড়ানোর ঘটনায় নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিচার করার জন্য সরকারের প্রতি বার বার দাবি জানানোর কথা তুলে ধরে বলেন, শাপলা চত্বরের এত বড় ভয়াবহ ঘটনার পরও সারাদেশে আমাদের বিশাল জনসমর্থন সত্ত্বেও কোন ধরণের সহিংসতায় না জড়িয়ে আমরা চরম ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছি। কারণ, আমরা কখনোই সহিংস পন্থায় দাবি আদায়ে বিশ্বাস করি না। উলামায়ে কেরাম সমাজে শান্তি ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি জোর-জুলুম, সন্ত্রাস ও দুর্নীতির বিরুদ্ধেই কাজ করে যাচ্ছে।
এ সময় মিসেস ক্যাথলিন বলেন, শাপলা চত্বরের ঘটনার সময় আমি যুক্তরাষ্ট্রে ছিলাম। পবিত্র কুরআন পোড়ানোর মতো ঘটনার সাথে হেফাজতের লোকজন জড়িত থাকতে পারে এমন অভিযোগ তখন ব্যক্তিগতভাবে আমার বিশ্বাস হয়নি।
মার্কিন দূতাবাস কর্মকর্তাদের মতবিনিময় প্রসঙ্গে হেফাজত আমীরের প্রেস সেক্রেটারী মাওলানা মুনির আহমদ জানান, আড়াই ঘণ্টা স্থায়ী বৈঠকটি সকাল ১০টায় শুরু হয়ে সাড়ে ১২টায় শেষ হয়। বৈঠক শেষে হেফাজত নেতৃবৃন্দ এবং দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের আন্তরিক আতিথেয়তা ও সহযোগিতার জন্য মার্কিন কূটনীতিক ধন্যবাদ জানান। বৈঠক শেষে দারুল উলূম হাটহাজারী মাদ্রাসার পরিদর্শন বইয়ে মিসেস ক্যাথলিন তার মন্তব্য লিখেছেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
মাওলানা মুনির আহমদ আরো জানান, মিসেস ক্যাথলিন এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম নাগরিক পরিচালিত মাদ্রাসা সম্পর্কে হেফাজত নেতৃবৃন্দ কতটা অবহিত এবং পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময়ের জন্য ক্বওমী মাদ্রাসা নেতৃবৃন্দের কোন প্রতিনিধি দল যুক্তরাষ্ট্র সফরে আগ্রহী কিনা জানাতে চান। আমরা তাদের বলেছি এ ব্যাপারে পরে অভিহিত করা হবে।
উৎসঃ শীর্ষ নিউজ
Share on facebook Share on email Share on print
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন