বৃহস্পতিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪


জঙ্গিবাদ নিয়ে জুমার দিন সচেতন করা হচ্ছে: ধর্মমন্ত্রী 27 Feb, 2014
সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, ধর্মীয় কুসংস্কার রোধ ও সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জুমার দিন মুসল্লিদের উদ্দেশে ঈমাম ও খতিবদের বক্তব্য দেয়ার কার্যক্রম চলছে বলে জানিয়েছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মতিউর রহমান। বৃহস্পতিবার দশম জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে সংসদ সদস্য মো. নজরুল ইসলাম সুজনের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি সংসদকে এ কথা জানান। মতিউর রহমান বলেন, “সরকার ইসলামি ফাউন্ডেশন বাস্তবায়িত ‘জঙ্গিবাদ সন্ত্রাস প্রতিরোধ ও সামাজিক সমস্য সমাধানে ইসলাম’ শীর্ষক একটি কর্মসূচির মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছে। এই কর্মসূচির আওতায় জাতীয়, বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সেমিনার ও সভা অনুষ্ঠান, পুস্তক প্রকাশ করে তা মসজিদসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বিনা মূল্যে বিতরণের ব্যবস্থা করা হয়।” মো. শফিকুল ইসলাম শিমুলের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, বর্তমান সরকারের মেয়াদে প্রতিটি উপজেলায় একটি করে আধুনিক মসজিদ নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। মুস্তফা লুৎফুল্লাহর এক প্রশ্নের জবাবে ধর্মমন্ত্রী বলেন, “চলতি অর্থবছরে প্রত্যেক সংসদ সদস্যের নির্বাচনী এলাকার মসজিদ সংস্কার ও মেরামতের জন্য এক লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং মন্দির সংস্কার ও মেরামতের লক্ষ্যে ৩০ হাজার টাকা বরাদ্দ রাখা হযেছে।” উৎসঃ নতুনবার্তা Share on facebook Share on email Share on print

অডিও >> শিক্ষাব্যবস্থা জঙ্গিবাদের ক্ষেত্র প্রস্তুত করছে : সেলিম 27 Feb, 2014
দেশে আবারো আলোচনায় জঙ্গিরা। আল কায়েদার প্রধান আয়মান আল জাওয়াহিরির নাম ও ছবিসহ ইন্টারনেটে প্রচারিত আরবি ভাষায় দেয়া এক বার্তায় বাংলাদেশে, তাদের ভাষায়, ইসলামবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ডাক দেয়া হয়েছে। এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে পুলিশের প্রিজনভ্যানে থাকা তিন জঙ্গিকে ছিনিয়ে নিলো নিষিদ্ধ ঘোষিত জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ -জেএমবি। দেশে জঙ্গি তৎপরতা ও তার মোকাবেলা নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার প্রিয়.কম কথা বলেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের সঙ্গে। এর পুরোটা রয়েছে অডিও সাক্ষাৎকারে। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম যা যা বললেন জঙ্গিবাদ রাজনৈতিক আদর্শগত সমস্যা। এর রাজনৈতিক,সামাজিক উপাদানগুলো না বুঝলে তা মোকাবেলা করা মুশকিল হবে। এটা দুর্ভাগ্য যে, আমরা জঙ্গিবাদের মতবাদ সামাজিক কর্মসূচির মাধ্যমে উৎপাটন করতে পারিনি। স্বাধীনতার পর সাংস্কৃতিক বিপ্লব জরুরি ছিলো। তা অবহেলা করা হয়েছে। ১৯৭৫ সালের পর থেকে জঙ্গিবাদের উত্থানের পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত আমরা সেই পশ্চাতমুখি ধারার মধ্যেই আছি। সবচেয়ে বড় কাজ জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জনগণকে সংগঠিত করে তোলা। রাজনৈতিক দলগুলো আগে যথাযথ ভূমিকা পালন করলে জনগণ এগিয়ে আসবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ফিরিয়ে আনাই এখন মূল কর্তব্য। একই ধারার শিক্ষা ব্যবস্থা না হলে জঙ্গিবাদ নির্মূল করা কঠিন। জামায়াত-শিবিরকে দ্রুত নিষিদ্ধ করা দরকার। সাক্ষাৎকারটি শুনতে এখানে ক্লিক করুন Share on facebook Share on email Share on print

ইনোসেন্স অব মুসলিম’ ইউটিউব থেকে সরানোর নির্দেশ 27 Feb, 2014
ইসলামবিরোধী চলচ্চিত্র ‘ইনোসেন্স অব মুসলিমস’ ইউটিউব থেকে সরিয়ে ফেলতে গুগলকে নির্দেশ দিয়েছে আমেরিকার একটি আদালত। ওই চলচ্চিত্রের এক অভিনেত্রীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার সান ফ্রান্সিসকোর একটি আদালত এ নির্দেশ দিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসলামের নবী হযরত মুহাম্মদ সা.কে কটাক্ষ করে নির্মিত বিতর্কিত চলচ্চিত্র ‘ইনোসেন্স অব মুসলিমস’-এর ভিডিও ক্লিপ ২০১২ সালে গুগলের মালিকানাধীন ইউটিউবে প্রচারের পর মুসলিম বিশ্বজুড়ে ভয়ঙ্কর দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। ওই চলচ্চিত্রের জের ধরে ২০১২ সালে লিবিয়ার বেনগাজিতে মার্কিন কনস্যুলেটে ভয়াবহ হামলার ঘটনাও ঘটে। ওই হামলায় লিবিয়ায় নিযুক্ত আমেরিকার রাষ্ট্রদূতসহ চার মার্কিন নাগরিক নিহত হন। সেসময় ভিডিওটি ইউটিউব থেকে সরিয়ে ফেলতে গুগলের প্রতি আহ্বান জানানো হলেও গুগল তা প্রত্যাখ্যান করে। কারণ হিসেবে গুগল জানায়, সিনেমাটির কপিরাইট স্বত্ত্ব একমাত্র এর প্রযোজকের এবং কেবল তিনিই পারেন সিনেমাটি ইউটিউব থেকে সরিয়ে ফেলতে। পরবর্তীতে বিতর্কিত ওই চলচ্চিত্রের অভিনেত্রী সিনডি লী গার্সিয়া ভিডিওটি ইউটিউব থেকে অপরসারণ করাতে গুগলের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তার দাবি—চলচ্চিত্রটির প্রযোজক নাকৌলা ব্যাসেলি নাকৌলা তাকে এমন একটি স্ক্রিপ্ট দিয়েছিলেন যার সঙ্গে মুসলমান সম্প্রদায় বা তাদের নবীর কোনো সম্পর্কই ছিল না। সান ফ্রান্সিসকোর আদালত আদেশে বলেছে, অভিনেত্রী গার্সিয়া তার অভিনীত অংশের কপিরাইয়ের মালিক। কারণ তিনি এমন একটি চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য রাজি হয়েছিলেন, যা নির্মিত চলচ্চিত্র থেকে ভিন্ন। আদেশের মতামত অংশে প্রধান বিচারক অ্যালেক্স কোজিনস্কি লিখেছেন, "চলচ্চিত্রে গার্সিয়া যে চরিত্রে অভিনয় করেছেন, তা অত্যন্ত আপত্তিকরভাবে উপস্থাপন করা হয়। এই চলচ্চিত্রে তার উপস্থিতি তাকে শারীরিকভাবে ক্ষতি, এমনকি মৃত্যুর হুমকির মুখে দাঁড় করিয়েছিল। এসব হুমকি এবং কপিরাইট মালিকানার বিষয়ে গার্সিয়ার বিশ্বাসযোগ্য দাবি সত্ত্বেও গুগল ইউটিউব থেকে চলচ্চিত্রটি প্রত্যাহারের বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করে।" বিতর্কিত ওই চলচ্চিত্রের প্রযোজক নাকৌলাকে ২০১২ সালের শেষ দিকে এক বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়। পাশাপাশি তাকে কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহারে পাঁচ বছরের নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। সূত্র: বিবিসি উৎসঃ নতুনবার্তা Share on facebook Share on email Share on print

বিয়ের ৩০ মিনিট পর সন্তান প্রসব! 27 Feb, 2014
প্রেমিকা হাসপাতালে। আর প্রেমিক গেছেন কেনাকাটা করতে। যেনতেন নয়, বিয়ের কেনাকাটা। তবে শুধু আংটি কিনেই সারলেন কেনাকাটা। দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছে আংটি পড়ালেন প্রেমিকার আঙ্গুলে। আর এর মাত্র ৩০ মিনিট পরেই তাদের কোলো আসল নতুন অতিথি। বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার আধা ঘণ্টার মাথায় মা হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ব্রান্ডি উয়েতজেল। দীর্ঘদিন ধরে প্রেম করলেও বাবা-মা হওয়ার ঠিক আগে বিয়ে করলেন অ্যান্ডারসন ও ব্রান্ডি উয়েতজেল জুটি। মঙ্গলবার টেক্সাস রাজ্যের ফোর্ট ওর্থের এক হাসপাতালে আধা ঘণ্টার ব্যবধানে বিয়ে ও সন্তান প্রসবের এ ঘটনা ঘটে। বিশ্বের আলোচিত বিয়ের তালিকায় স্থান না পেলেও অ্যান্ডারসন-উয়েতজেল জুটির বিয়ে বেশ সাড়া ফেলেছে। নর্থ হিলস হাসপাতালের এক নার্স জানান, ‘বাবা বেরিয়ে আসলেন এবং আমাদের বললেন তিনি বিয়ে করতে চান। প্রথম আমরা তার কথা বুঝতে পারিনি। অ্যান্ডারসন বলেন, তিনি প্রস্তাব দিয়েছিলেন। কিন্তু আংটি পরানো ছাড়াই সন্তান নেওয়ার ব্যাপারে সঙ্গীর ধারণা তার কাছে মনোঃপুত লাগেনি। গত আগস্ট থেকে অ্যান্ডারসন ও ব্রান্ডি এক সঙ্গে মেলামেশা শুরু করেন। উৎসঃ বাংলানিউজ২৪ Share on facebook Share on email Share on print

নতুন নির্বাচনের হেদায়েতকারীরা আমাদের জন্মের বিরোধী: বাদল 27 Feb, 2014
নতুন নির্বাচনের হেদায়েত করছেন এবং যারা বলছেন আমরা পথ হারিয়েছি তারা আমাদের জন্মের বিরোধীতা করেছিল। বুধবার সংসদ অধিবেশনে বক্তৃতাকালে চট্টগ্রাম ৮ আসনের সংসদ সদস্য ও জাসদ নেতা মঈনুদ্দিন খান বাদল এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, যারা আন্দোলনের নামে এদেশে ৪৯ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি করলো। পেট্রোল বোমার মরনোৎসব করলো। জনপদ জ্বালিযে দিল। রাষ্ট্রের উপর বিভৎস আক্রমণ করলো এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়া ঘুরিয়ে দিতে চাইলো। তাদের ব্যাপারে তারা এক ধরনের নিরবতা অবলম্বন করেছে। যারা সংবিধানে রচিত এই জাতি সত্ত্বার ভিত্তিকে অস্বীকার করে, যারা মাঝে মধ্যে জঙ্গিবাদের বিপক্ষে সুবচন দেন। অথচ তারাই বিশ্বের সর্বত্র জঙ্গিবাদকে উস্কে দেন। মঈনুদ্দিন খান বাদল বলেন, আজকে যারা নির্বাচনে আসেন নি তাদেরকে নির্বাচনে আসার জন্য বার বার আহবান জানানো হয়েছে। তারা আসেন নি। বরঞ্চ ভয় দেখিয়েছেন। এর বিপরীতে শেখ হাসিনা কি করতে পারতেন। নির্বাচনের পরে সমগ্র বাংলাদেশ বদলে গেছে। একটি আধুনিক দেশ হওয়ার যা কিছু লক্ষণ তা কি শেখ হাসিনা বিসর্জন দিতে পারতেন ? নারীর ক্ষমতায়ন হয়েছে, খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণতা অর্জিত হয়েছে, দারিদ্রতা সংকোচিত হয়ে ২২ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে এসবই শেখ হাসিনা সরকারের অবদান। সুতরাং এগুলোকে কি শেখ হাসিনা বিসর্জন দিতে পারেন না। উৎসঃ আমাদের সময় Share on facebook Share on email Share on print

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর একটি পুরোনো সাক্ষাৎকার 26 Feb, 2014
ওরিয়ানা ফ্যালাচি ইটালীর বিখ্যাত মহিলা সাংবাদিক। রোম থেকে প্রকাশিত ‘এল ইউরোপিও’পত্রিকার সঙ্গে তিনি দীর্ঘদিন জড়িত ছিলেন। সত্তুর দশকের প্রায় পুরো সময় জুড়ে বিশ্বের বিতর্কিত বহু রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সাক্ষাৎকার গ্রহন করে তিনি বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন। এসব সাক্ষাৎকার বিশ্বের প্রধান সকল ভাষায় অনূদিত ও পুনঃ প্রকাশিত হয়েছিল। ফ্যালাচির আক্রমণাত্মক প্রশ্ন সাংবাদিকতার নিয়ম নীতি অনুসারে বস্তুনিষ্ঠতা থেকে বহু দূরে এবং সেজন্যে তাকে সমালোচনার শিকার হতে হয়েছিল বহুবার। তিনি যাদের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন তাদের অবস্থান ও মর্যাদার প্রতি তিনি ভ্রুক্ষেপ না করে অনেক ক্ষেত্রে সীমা লংঘন করে ফেলেছিলেন। কিন্তু যে সাহসিকতার সাথে তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে একনায়কদের মুখোমুখি হয়েছিলেন এবং প্রশ্নবানে জর্জরিত করেছিলেন তা বহুল প্রশংসিত হয়েছিল। পাঠকরা যেন তার সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে সরাসরি সংশ্লষ্ট রাষ্ট্রনায়ক বা রাষ্ট্রীয় ব্যক্তিত্বের কাছে উপনীত হয়েছেন এমন একটি অনুভূতি ও আবহ সৃষ্টি করতে পারাই ওরিয়ানা ফ্যালাচির কৃতিত্ব। সেজন্যে তার নেয়া সাক্ষাৎকারগুলো বিগত প্রায় চার দশক ধরেই সমান আবেদন নিয়ে টিকে আছে। ওরিয়ানা ফ্যালাচি যাদের সাক্ষাৎকার গ্রহন করেছেন তাদের অধিকাংশই আজ আর বেঁচে নেই। কেউ অভ্যূত্থানে নিহত হয়েছেন। দেশ থেকে নির্বাসিত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। ক্ষমতা হারানোর পর উত্তরাধিকারী সরকারের আমলে আদালতের রায়ে মৃত্যুদন্ড লাভ করে পৃথিবী ত্যাগ করেছেন, এমনও আছে। বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর ফ্যালাচি স্বাধীনতা সংগ্রামের পক্ষে ও বিপক্ষে জড়িত চার ব্যক্তিত্বের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেছিলেন। তারা হচ্ছেন স্বধীনতার প্রধান নায়ক শেখ মুজিবুর রহমান, সার্বিক সমর্থন ও সহযোগিতা দানকারী ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী, স্বাধীনতার ঘোর বিরোধী পাকিস্থানের জুলফিকার আলী ভূট্টো ও যুক্তরাষ্ট্রের হেনরী কিসিঞ্জার। ১৯৭৭ সাল পর্যন্ত গৃহীত ফ্যালাচির সাক্ষাৎকারগুলো ‘ইন্টারভিউ উইথ হিস্টরী’ নামে একটি গ্রন্থে সংকলিত হয়েছে। এটিও ফ্যালাচির মূল গ্রন্থ ইতালী ভাষায় রচিত (ওহঃবৎারংঃধ পড়হ খধ ংঃড়ৎরধ)-এর ইংরেজি অনুবাদ। গ্রন্থটির বাংলা অনুবাদ ১৯৮৯ সালে ধারাবাহিকভাবে মাসিক নতুন ঢাকা ডাইজেস্টে প্রকাশিত হয়েছিল। তখন পাঠকদের মধ্যে বিপুল সাড়া জাগে, বিশেষ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রাসঙ্গিকতার কারণে এবং উপমহাদেশের তিন প্রধান রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সাক্ষাৎকারের জন্য যাদের প্রত্যেককে হত্যাকান্ডের শিকারে পরিণত হতে হয়েছে। ইন্টারভিউ উইথ হিস্টরীর মত গ্রন্থ রাজনীতি সচেতন পাঠকদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনাগত দিনগুলোতেও এর রাজনৈতিক মূল্য সমান থাকবে। ইতিহাসের স্রষ্টা ও উৎসের গুরুত্ব কখনো কমে না। — অনুবাদক রোববার সন্ধ্যা: আমি কোলকাতা হয়ে ঢাকার পথে যাত্রা করেছি। সত্যি বলতে কি, ১৮ই ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনী তাদের বেয়োনেট দিয়ে যে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে তা প্রত্যক্ষ করার পর পৃথিবীতে আমার অন্তিম ইচ্ছা এটাই ছিল যে, এই পাপিষ্ঠ নগরীতে আমি আর পা ফেলবো না। আমি এরকম একটা সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলেছিলাম। কিন্তু আমার সম্পাদকের ইচ্ছা যে, আমি যেন মুজিবের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করি। ভূট্টো তাকে মুক্তি দেয়ার পর আমার সম্পাদকের এই সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল। তিনি কি ধরনের মানুষ? আমার সহকর্মীরা স্বীকৃতি দিলো, তিনি মহান ব্যক্তি, সুপারম্যান। তিনিই একমাত্র ব্যক্তি যিনি একটি দেশকে সমস্যা থেকে মুক্ত করে গণতন্ত্রের পথে পরিচালিত করতে পারেন। আমার মনে আছে, ১৮ই ডিসেম্বর আমি যখন ঢাকায় ছিলাম, তখন লোকজন বলছিল, “মুজিব থাকলে সেই নির্মম, ভয়ংকর ঘটনা কখনোই ঘটতোনা। মুজিব ফিরে আসলে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে না” কিন্তু গতকাল মুক্তিবাহিনী কেন আরো পন্চাশ জন নিরীহ বিহারীকে হত্যা করেছে? ‘টাইম’ ম্যাগাজিন কেন তাকে নিয়ে বিরাট প্রশ্নবোধক চিহ্ন দিয়ে হেডলাইন করেছে? আমি বিস্মিত হয়েছি যে, এই ব্যক্তিটি ১৯৬৯ সালের নভেম্বরে সাংবাদিক অ্যালডো শানতিনিকে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “আমার দেশে আমি সবচেয়ে সাহসী এবং নির্ভীক মানুষ, আমি বাংলার বাঘ, দিকপাল…….. এখানে যুক্তির কোন স্থান নেই…..।” আমি বুঝে উঠতে পারিনি, আমার কি ভাবা উচিত। সোমবার বিকেল: আমি হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে এবং আমার দ্বিধাদ্বন্দ্ব দ্বিগুণের অধিক। ঘটনাটা হলো, আমি মুজিবকে দেখেছি। যদিও মাত্র কয়েক মিনিটের জন্য। সাক্ষাৎকার নেয়ার পূর্বে তাকে এক পলক দেখার সুযোগ আমি পেয়েছি। কিন্তু এই কয়েকটা মুহূর্তই আমার চিত্তকে দ্বিধা ও ধাঁধায় পূর্ণ করতে যথেষ্ট ছিল। যখন ঢাকা বিমানবন্দরে অবতরণ করি, কার সাথে আমার সাক্ষাৎ হয়েছিল? তিনি আর কেউ নন, মিঃ সরকার। আমার শেষবার ঢাকা অবস্থানকালে এই বাঙ্গালি ভদ্রলোক আমার দোভাষী ছিলেন। তাঁকে দেখলাম রানওয়ের ঠিক মাঝখানে দাঁড়িয়ে। আমি ভাবিনি, কেন? সম্ভবত এর চেয়ে ভালো কিছু তার করার ছিল না। আমাকে দেখামাত্র জানতে চাইলেন যে, আমার জন্যে তিনি কিছু করতে পারেন কিনা? তাকে জানালাম যে, তিনি আমাকে মুজিবের বাড়িতে নিয়ে যেতে পারেন কিনা। তিনি সোজা আমাকে নিয়ে রওনা হলেন এবং মিনিট পনেরের মধ্যে আমরা একটি ফটক দিয়ে প্রবেশ করলাম। ফটকে মেশিনগানধারী মুক্তিবাহিনীদের কড়া প্রহরা। আমরা খাওয়ার ঘরে প্রবেশ করে দেখলাম মুজিবের স্ত্রী খাচ্ছেন। সাথে খাচ্ছে তার ভাগনে ও মামাত ভাইবোনেরা। একটা থালায় ভাত-তরকারী মাখিয়ে আঙ্গুল দিয়ে সকলে মুখে পুরে নিচ্ছে। এদেশে খাওয়ার পদ্ধতি বুঝি এরকমই। মুজিবের স্ত্রী আমাকে আ›তরিকভাবে অভ্যর্থনা জানালেন। ঠিক তখনই মুজিব এলেন। সহসা খাবার ঘরের মুখে তার আবির্ভাব হলো। তার পরনে এক ধরনের সাদা পোশাক, যাতে আমার কাছে তাকে মনে হয়েছিল একজন প্রাচীন রোমান হিসেবে। পোশাকের কারণে তাকে দীর্ঘ ও ঋজু মনে হচ্ছিল। তার বয়স একানড়ব হলেও তিনি দেখতে সুপুরুষ। ককেশীয় ধরনের সুন্দর চেহারা। চশমা ও গোঁফে সে চেহারা হয়েছে আরো বুদ্ধিদীপ্ত। যে কারো মনে হবে, তিনি বিপুল জনতাকে নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্যতাসম্পনড়ব একজন ব্যক্তি। তিনি সু-স্বাস্থ্যের অধিকারী। আমি সোজা তার কাছে গিয়ে আমার পরিচয় পেশ করলাম এবং আমার উদ্দেশ্য তাকে ব্যক্ত করলাম। মি. সরকার ভূলুন্ঠিত হয়ে মুজিবের পদচুম্বন করলেন। আমি মুজিবের হাতে হাত মিলিয়ে করমর্দন করে বললাম, “এই নগরীতে আপনি ফিরে এসেছেন দেখে আমি আনন্দিত, যে নগরী আশঙ্কা করছিল যে আপনি হয়তবা আর কোনদিন এখানে ফিরবেন না।” তিনি আমার দিকে তাকালেন একটু উষ্মার সাথে। একটু অবজ্ঞার হাসি হেসে বললেন, “আমার সেক্রটারীর সাথে কথা বল।”আমার দ্বিধা ও সন্দেহের কারণ উপলব্ধি করা সহজ। মুজিবকে আমি জেনে এসেছি একজন গণতন্ত্রী ও সমাজতন্ত্রী হিসেবে। যখন আমি দম নিচ্ছিলাম, একজন যুবক আমার কাছে এসে বললো, সে ভাইস সেক্রটারী। বিনয়ের সাথে সে প্রতিশ্র“তি দিলো, বিকেল চারটার সময় আমি ‘সরকারী বাসভবনে’ হাজির থাকতে পারলে আমাকে দশ মিনিট সময় দেয়া হবে। তাঁর সাথে যারা সাক্ষাৎ করতে চায় তাদের সাথে সেখানেই তিনি কথা বলেন। বিকেল সাড়ে তিনটায় নগরী ক্লান্ত, নিস্তব্ধ, ঘুমন্ত মধ্যহ্নের বিশ্রাম নিচ্ছে। রাস্তায় কাঁধে রাইফেল ঝুলানো মুক্তিবাহিনী টহল দিচ্ছে। যুদ্ধ শেষ হয়েছে একমাসেরও বেশি সময় হলো। কিন্তু এখনো তাদের হাতে অস্ত্র আছে। তারা রাতদিন টহল দেয়। হাওয়ায় এলোপাথাড়ি গুলী ছুঁড়ে এবং মানুষ হত্যা করে। হত্যা না করলে দোকানপাট লুট করে। কেউ তাদের থামাতে পারছিল না-এমন কি মুজিব নিজেও না। সম্ভবত তিনি তাদের রুখতে সক্ষম নন। তিনি তৃপ্ত এজন্যে যে, নগরীর দেয়ালে দেয়ালে তার পোষ্টার সাইজের ছবিতে একাকার। মুজিবকে আমি আগে যেভাবে ভেবেছিলাম, তার সাথে আমার চাক্ষুস দেখা মুজিবকে কোনভাবে মিলাতে পারছিলাম না। সোমবার সন্ধ্যা: আমি যে তার সাক্ষাৎকার নিয়েছি এটা ছিল একটা দুর্বিপাক। তার মানসিক যোগ্যতা সর্ম্পকে আমার সন্দেহ ছিল। এমন কি হতে পারে যে, কারাগার এবং মৃত্যু সম্পর্কে ভীতি তার মস্তিষ্ককে ভীষণভাবে আলোড়িত করেছে? তার ভারসাম্যহীনতাকে আমি আর কোনভাবেই ব্যাখ্যা করতে পারিনা। একই সাথে আমি বলতে চাচ্ছি, কারাগার এবং মৃত্যুর ভয় ইত্যাদি………..সম্পর্কে কাহিনীগুলো……..আমার কাছে এখনো খুব সুস্পষ্ট নয়। এটা কি করে হতে পারে যে, তাকে যে রাতে গ্রেফতার করা হলো, সে রাতে সকল শ্রেনীর মানুষকে হত্যা করা হলো? কি করে এটা হতে পারে যে তাকে কারাগারের একটি প্রকোষ্ঠ থেকে পলায়ন করতে দেয়া হলো, যেটি তার সমাধি সৌধ হতো? তিনি কি গোপনে ভূট্টোর সাথে ষড়যন্ত্র করেছিলেন? আমি যত তাকে পর্যবেক্ষণ করেছি, ততই মনে হয়েছে, তিনি যেন কিছু একটা লুকাচ্ছিলেন। এমন কি তার মধ্যে যেসার্বক্ষণিক আক্রমণাত্মক ভাব, সেটাকে আমার কাছে তার একটি আত্মরক্ষার কৌশল বলে মনে হয়েছে। ঠিক চারটায় আমি সেখানে ছিলাম। ভাইস সেক্রটারী আমাকে করিডোরে বসতে বললেন, যেখানে কমপক্ষে পঞ্চাশজন লোকে ঠাসাঠাসি ছিল। তিনি অফিসে প্রবেশ করে মুজিবকে আমার উপ¯ি’িতর কথা জানালেন। আমি একটা ভয়ংকর হুংকার শুনলাম এবং নিরীহ লোকটি কম্পিতভাবে পুনরায় আবির্ভুত হয়ে আমাকে প্রতীক্ষা করতে বললেন। আমি প্রতীক্ষা করলাম-এক ঘণ্টা, দুই ঘণ্টা, তিন ঘণ্টা, চার ঘণ্টা – রাত আটটা যখন বাজলো, আমি সেই সংকীর্ন করিডোরে তখনো অপেক্ষামান। রাত সাড়ে আটটায় আমাকে প্রবেশ করতে বলা হলো। আমি বিশাল এক কক্ষে প্রবেশ করলাম। একটি সোফা ও দুটো চেয়ার সে কক্ষে। মুজিব সোফার পুরোটায় নিজেকে বিস্তার করে বসে আছেন এবং দু’জন স্থুলকায় দেহের মন্ত্রী চেয়ার দুটো জুড়ে বসে আছেন। কেউ দাঁড়ালো না। কেউ আমাকে অভ্যর্থনা জানালো না। কেউ আমার উপস্থিতিকে গ্রাহ্যই করলো না। মুজিব আমাকে বসতে বলার সৌজন্য প্রদর্শন না করা পর্যন্ত সুদীর্ঘক্ষণ নীরবতা বিরাজ করছিল। আমি সোফার ক্ষুদ্র প্রান্তে বসে টেপ রেকর্ডার খুলে প্রম প্রশড়ব করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। কিন্তু আমি সে সময়ও পাচ্ছিলাম না। মুজিব চিৎকার শুরু করলেন, ‘হ্যারি আপ, কুইক, আণ্ডারষ্ট্যাণ্ড? নষ্ট করার মতো সময় আমার নেই। ইজ দ্যাট ক্লিয়ার?…..পাকিস্তানীরা ত্রিশ লক্ষ লোক হত্যা করেছে, ইজ দ্যাট ক্লিয়ার’Ñআমি বললাম, “মি. প্রাইম মিনিষ্টার…..।” মুজিব আবার চিৎকার শুরু করলেন, “ওরা আমার নারীদেরকে তাদের স্বামী ও সন্তানদের সামনে হত্যা করেছে। স্বামীদের হত্যা করেছে তাদের ছেলে ও স্ত্রীর সামনে। মা বাপের সামনে ছেলেকে, ভাইবোনের সামনে ভাইবোনকে…. “মি প্রাইম মিনিষ্টার….আমি বলতে চাই…..” “তোমার কোন কিছু জিজ্ঞেস করার অধিকার নেই, ইজ দ্যাট রাইট?” “আমার প্রম প্রতিμিয়া হলো। কিন্তু একটা বিষয় সম্পর্কে আমি আরো কিছু জানতে চাই।”বিষয়টা আমি বুঝতে পারছিলাম না। “মি. প্রাইম মিনিষ্টার, গ্রেফতারের সময় কি আপনারউপরে নির্যাতন করা হয়েছিল?” “নো, ম্যাডাম নো। তারা জানতো, ওতে কিছু হবে না। তারা আমার বৈশিষ্ট্য, আমার শক্তি, আমার সম্মান, আমার মূল্য, বীরত্ব সম্পর্কে জানতো, আণ্ডারষ্ট্যাণ্ড?” তা বুঝলাম। কিন্তু আপনি কি করে বুঝলেন যে তারা আপনাকে ফাঁসিতে ঝুলাবে? ফাঁসিতে ঝুলিয়ে কি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়?” “নো, নো ডেথ সেণ্টেন্স।” এই পর্যায়ে তাকে দ্বিধাগ্রস্ত মনে হলো এবং তিনি গল্প বানাতে শুরু করলেন, “আমি এটা জানতাম। কারণ ১৫ই ডিসেম্বর ওরা আমাকে কবর দেয়ার জন্য একটা গর্ত খনন করে।” “কোথায় খনন করা হয়েছিল সেটা?” “আমার সেলের ভেতরে।” “আমাকে কি বুঝে নিতে হবে যে গর্তটা ছিল আপনার সেলের ঠিক ভিতরে?” “ইউ মিস আণ্ডারষ্ট্যাণ্ড।” “আপনার প্রতি কেমন আচরণ করা হয়েছিল মি. প্রাইম মিনিষ্টার?” “আমাকে একটা নির্জন প্রকোষ্ঠে রাখা হয়েছিল। এমনকি আমাকে সাক্ষাৎকারের অনুমতি দেয়া হতো না, সংবাদপত্র পাঠ করতে বা চিঠিপত্রও দেয়া হতো না, আণ্ডারষ্ট্যাণ্ড?” “তাহলে আপনি কি করেছেন?” “আমি অ-নে-ক চিন্তা করেছি, পড়াশুনা করেছি।” “আপনি কি পড়েছেন?” “বই এবং অন্যান্য জিনিস।” “তাহলে আপনি কিছু পড়েছেন।” “হ্যাঁ, কিছু পড়েছি।” “কিন্তু আমার ধারণা হয়েছিল, আপনাকে কোনকিছুই পড়তে দেয়া হয়নি।” “ইউ মিস আণ্ডারষ্টুড।” “তা বটে মি. প্রাইম মিনিষ্টার। কিন্তু এটা কি করে হলো যে, শেষ পর্যন্ত ওরা আপনাকে ফাঁসিতে ঝুলালো না।” “জেলার আমাকে সেল থেকে পালাতে সহায়তা করেছেন এবং তার বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছেন।” “কেন, তিনি কি কোন নির্দেশ পেয়েছিলেন?” “আমি জানি না। এ ব্যাপারে তার সাথে আমি কোন কথা বলিনি এবং তিনিও আমার সাথে কিছু বলেন নি।” “নীরবতা সত্ত্বেও কি আপনারা বন্ধুতে পরিণত হয়েছিলেন?” “হ্যাঁ, আমাদের মধ্যে বহু আলোচনা হয়েছে এবং তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে, আমাকে সাহায্য করতে চান।” “তাহলে আপনি তার সাথে কথা বলেছেন?” “হ্যাঁ, আমি তার সাথে কথা বলেছি।” “আমি ভেবেছিলাম, আপনি কারো সাথেই কথা বলেননি।” “ইউ মিস আণ্ডারষ্টুড।” “তা হবে মি. প্রাইম মিনিষ্টার। যে লোকটি আপনার জীবনরক্ষা করলো আপনি কি তার প্রতি কৃতজ্ঞতা অনুভব করেন না?” “এটা ছিল ভাগ্য। আমি ভাগ্যে বিশ্বাস করি।” এরপর তিনি ভূট্টো সম্পর্কে কথা বললেন। এসময় তার কথায় কোন স্ববিরোধিতা ছিল না। বেশ সতর্কতার সাথেই বললেন তার সম্পর্কে। আমাকে মুজিব জানালেন যে, ২৬শে ডিসেম্বর ভূট্টো তাকে খুঁজতে গিয়েছিলেন। উদ্দেশ্য তাকে রাওয়ালপিণ্ডিতে নিয়ে আসা। তার ভাষায়, “ভূট্টো একজন ভদ্রলোকের মতই ব্যবহার করলেন। তিনি সত্যিই ভদ্রলোক।” ভূট্টো তাকে বলেছিলেন যে, একটা যুদ্ধ হয়ে গেছে। অবশ্য মুজিব ব−্যাক আউট ও যুদ্ধ বিমানের গর্জন থেকে বরাবরই যুদ্ধ সম্পর্কে আঁচ করেছেন। ভূট্টো তার কাছে আরো ব্যাখ্যা করলেন যে, এখন তিনি পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট এবং তার কাছে কিছু প্রস্তাব পেশ করতে চান। আমি তাকে প্রশড়ব করলাম, “কি প্রস্তাব মি. প্রাইম মিনিষ্টার?” তিনি উওর দিলেন, “আমি কেন তোমাকে সেটা বলবো? এটা একটা ব্যক্তিগত ব্যাপার। প্রাইভেট অ্যাফেয়ার।” “আমার কাছে বলার প্রয়োজন নেই মি. প্রাইম মিনিস্টার, আপনি বলবেন ইতিহাসের কাছে।” মুজিব বললেন, “আমিই ইতিহাস। আমি ভূট্টোকে থামিয়ে বললাম, যদি আমাকে মুক্তি দেয়া না হয়, তাহলে আমি আলাপ করবোনা। ভূট্টো অত্যন্ত শ্রদ্ধার সাথে উত্তর দিলেন, আপনি মুক্ত| আপনাকে শীঘ্রই ছাড়ছিনা। আমাকে আরও দুই বা তিন দিন অপেক্ষা করতে হবে। এরপর ভূট্টো পশ্চিম পাকিস্তান ও বাংলাদেশ সম্পর্কে তার পরিকল্পনা তৈরী করতে শুরু করলেন। কিন্তু আমি অহংকারের সাথেই জানালাম, দেশবাসীর সাথে আলোচনা না করে আমি কোন পরিকল্পনা করতে পারি না।”এই পর্যায়ে তাকে আমি প্রশড়ব করলাম, “তাহলে তো যে কেউ আন্দাজ করতে পারে যে আপনাদের দুজনের আলোচনা খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে হয়েছিল।”তা তো বটেই। আমরা পরস্পরকে ভালোভাবে জানি। খুবই বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনা ছিল। কিন্তু তা হয়েছিল আমার জানার আগে যে, পাকি¯তানীরা আমার জনগনের বিরুদ্ধে বর্বরোচিত নিপীড়ন করেছে। আমি জানতাম না যে, তারা বর্বরোচিতভাবে আমার মা বোনকে হত্যা করেছে।” আমি তাকে থামিয়ে বললাম, “আমি জানি মি. প্রাইম মিনিস্টার, আমি জানি – - -।” তিনি গর্জে উঠলেন, “তুমি কিছুই জানো না; আমি তখন জানতাম না যে, তারা আমার স্থপতি, আইনবিদ, ইঞ্জিনিয়ার, বিজ্ঞানী, চিকিৎসক, আমার চাকরকে হত্যা করেছে এবং আমার বাড়ি, জমি, সম্পত্তি সবকিছু ধ্বংস করেছে, আমার……।”তিনি যখন তার সম্পত্তির অংশে পৌঁছালেন, তখন তার মধ্যে এমন একটা ভাব দেখা গেল, যা থেকে তাকে এই প্রশড়বটা আমি করার প্রয়োজনীয়তা বোধ করলাম যে, তিনি সত্যিই সমাজতন্ত্রী কি না? তিনি উত্তর দিলেন, “হ্যাঁ…….।” তার কন্ঠে দ্বিধা। তাকে আবার প্রশড়ব করলাম যে, সমাজতন্ত্র বলতে তিনি কি বোঝেন? তিনি উত্তর দিলেন, “সমাজতন্ত্র।” তাতে আমার মনে হলো, সমাজতন্ত্র সম্পর্কে আদতে তার যথার্থ কোন ধারণা নেই। এরপর ১৮ই ডিসেম্বর হত্যাযজ্ঞ সম্পর্কে তার প্রতিμিয়া জানতে চাইলে তিনি ক্ষোভে ফেটে পড়লেন। নিচের অংশটুকু হুবহু আমার টেপ থেকে নেয়া: “ম্যাসাকার ? হোয়াট ম্যাসাকার ?” “ঢাকা স্টেডিয়ামে মুক্তিবাহিনীর দ্বারা সংঘটিত ঘটনাটি।” “ঢাকা স্টেডিয়ামে কোন ম্যাসাকার হয়নি। তুমি মিথ্যে বলছো।” “মি. প্রাইম মিনিস্টার, আমি মিথ্যাবাদী নই। সেখানে আরো সাংবাদিক ও পনেরো হাজার লোকের সাথে আমি হত্যাকাণ্ড প্রত্যক্ষ করেছি। আপনি চাইলে আমি আপনাকে তার ছবিও দেখাবো। আমার পত্রিকায় সে ছবি প্রকাশিত হয়েছে।” “মিথ্যেবাদী, ওরা মুক্তিবাহিনী নয়।” “মি. প্রাইম মিনিস্টার, দয়া করে ‘মিথ্যেবাদী শব্দটি আর উচ্চারণ করবেন না। তারা মুক্তিবাহিনী। তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছিল আবদুল কাদের সিদ্দিকী এবং তারা ইউনিফর্ম পরা ছিল।” “তাহলে হয়তো ওরা রাজাকার ছিল যারা প্রতিরোধের বিরোধিতা করেছিল এবং কাদের সিদ্দিকী তাদের নির্মূল করতে বাধ্য হয়েছিল।” মি. প্রাইম মিনিস্টার, কেউ প্রমান করেনি যে, লোকগুলো রাজাকার ছিল এবং কেউই প্রতিরোধের বিরোধিতা করেনি। তারা ভীতসন্ত্রস্ত ছিল। হাত পা বাঁধা থাকায় তারা নড়াচড়াও করতে পারছিল না।” “মিথ্যেবাদী।” “শেষবারের মত বলছি, আমাকে “মিথ্যেবাদী” বলার অনুমতি আপনাকে দেবো না।” “আচ্ছা সে অবস্থায় তুমি কি করতে?” “আমি নিশ্চিত হতাম যে, ওরা রাজাকার এবং অপরাধী। ফায়ারিং স্কোয়াডে দিতাম এবং এভাবেই এই ঘৃণ্য হত্যাকাণ্ড এড়াতাম।” “ওরা সেটা করেনি, হয়তো আমার লোকদের কাছে তখন বুলেট ছিলনা।” “হ্যাঁ তাদের কাছে বুলেট ছিল। প্রচুর বুলেট ছিল। এখনো তাদের কাছে প্রচুর বুলেট রয়েছে। তা দিয়ে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত গুলী ছোঁড়ে। ওরা গাছে, মেঘে, আকাশে, মানুষের প্রতি গুলী ছোঁড়ে শুধু আনন্দ করার জন্য।” এরপর কি ঘটলো: গোটা সাক্ষাৎকারের সময়টায় যে দুইটা স্থুলকায় দেহের মন্ত্রী ঘুমুচ্ছিলেন, তারা হুড়মুড়িয়ে জেগে উঠলেন। আমি বুঝতে পারলাম না মুজিব কি বলে হুংকার করছেন। কারণ কথাগুলো ছিল বাংলায়। সোমবার রাত: গোটা ঢাকা নগরী জেনে গেছে যে মুজিব ও আমার মধ্যে কি ঘটেছে। শমশের ওয়াদুদ নামে একজন লোক ছাড়া আমার পক্ষে আর কেউ নেই। লোকটি মুজিবের বড় বোনের ছেলে। এই যুবক নিউইয়র্ক থেকে এসেছে তার মামার কাছে। তার মতে মুজিব ক্ষমতালোভী এবং নিজের সম্পর্কে অতি উচ্চ ধারণা সম্পনড়ব অহংকারী ব্যাক্তি। তার মামা খুব মেধা সম্পনড়ব নয়। বাইশ বছর বয়েসে মুজিব হাইস্কুলের পড়াশুনা শেষ করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতির সচিব হিসেবে তিনি রাজনীতিতে প্র ম প্রবেশ করেন। এছাড়া আর কিছু করেননি তিনি। কেউ কল্পনাও করতে পারেনি যে মুজিব একদিন প্রধানমন্ত্রী হবেন। ওয়াদুদের মতে, আত্মীয়স্বজনের সাথে দুর্ব্যবহারের কারণ এটা নয়। আসলে একমাত্র ওয়াদুদের মাকেই মুজিব ভয় করেন। এই দুঃখজনক আচরণের জন্য তিনি পারিবারিকভাবে প্রতিবাদ জানাবেন। সে আরো জানালো যে আমার সাথে যে র্দুব্যবহার করা হয়েছে তা সে তার মাকে বলবেন, যাতে তিনি এ ব্যাপারে মুজিবের সাথে কথা বলেন। সে আমাকে আরও বললো যে, সরকারী দফতরে গিয়ে এ ব্যাপারে আমার প্রতিবাদ করা উচিত এবং প্রেসিডেন্টের সাথে কথা বলা উচিত। কারণ প্রেসিডেন্ট খাঁটি ভদ্রলোক। মুজিব সম্পর্কে সংগৃহীত তথ্যাবলী তার জন্যে বিপর্যয়কর। ১৯৭১ এর মার্চে পাকিস্তানীদের দ্বারা সংঘটিত হত্যাকান্ডের কিছুদিন পূর্বে ইয়াহিয়া খান ও ভূট্টো ঢাকায় এসেছিলেন। ইয়াহিয়া খান তড়িঘড়ি ফিরে যান। কিন্তু ভূট্টো থেকে যান ঢাকায়। তাকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে রাখা হয়। তার রুম নম্বর ছিল ৯১১-৯১৩। ইন্টারকন্টিনেন্টালের সর্বোচ্চ তলায় তখন ভূট্টোর ভূমিকা ছিল নিরোর মতো। নগরী যখন জ্বলছিল এবং এলোপাথাড়ি গুলীবর্ষণ চলছিল, ভূট্টো তখন শরাব পান করছিলেন আর হাসছিলেন। পরদিন সকাল ৭টায় তিনি ঢাকা ত্যাগ করেন। আমি দেখেছি, যারা একসময় পাকিস্তানীদের ভয়ে ভীত ছিল, তারা এখন মুজিবকেই ভয় করে। গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা সম্পর্কে প্রচুর কথাবার্তা চলে এদেশে। কিন্তু সবসময়ই তা বলা হয় ফিসফিসিয়ে, আতংকের সঙ্গে। লোকজন বলাবলি করে যে, এই সংঘাতে মুজিব খুব সামান্যই খুইয়েছেন। তিনি ধনী ব্যাক্তি। অত্যন্ত ধনবান। তার প্রত্যাবর্তনের পরদিন তিনি সাংবাদিকদেরকে হেলিকপ্টার দিয়েছিলেন। কেউ কি জানে কেন? যাতে তারা নিজেরা গিয়ে মুজিবের সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি অবলোকন করে আসতে পারে। এখনো তিনি সমাজতন্ত্রের কথা বলেন, জাতীয়তাবাদের কথা বলেন। তিনি কি তার জমিজমা, বাড়ি, বিলাসবহুল ভিলা, মার্সিডিজ গাড়ি জাতীয়করণ করবেন? ভূট্টোর সাথে মুজিবের প্র ম সাক্ষাৎ হয় ১৯৬৫ সালে, যখন তিনি ভারতের সঙ্গে পূর্ব পাকিস্তানের সীমান্তকে অরক্ষিত রাখার কারণে পশ্চিম পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করেন। একজন নেতা হিসেবে তার মূল্য ছিল খুবই কম। তার একমাত্র মেধা ছিল মূর্খ লোকদের উত্তেজিত করে তোলার ক্ষেত্রে। তিনি ছিলেন কথামালার যাদুকর ও মিথ্যের যাদুকর – কিছুদিন আগে এক জনসভায় বক্তৃতাকালে তিনি বলেছিলেন, করাচীর রা¯তাগুলো সোনা দিয়ে মোড়া। তা দিয়ে হাঁটলে চোখ ধাঁধিয়ে যায়। অর্থনীতির কিছুই বুঝতেন না তিনি। কৃষি ছিল তার কাছে রহস্যের মতো। রাজনীতি ছিল প্রস্তুতিবিহীন। কেউ কি জানে ১৯৭০ এর নির্বাচনে তিনি কেন বিজয়ী হয়েছিলেন? কারণ সব মাওবাদীরা তাকে ভোট দিয়েছিল। সাইক্লোনে মাওবাদীদের অফিস বিধ্বস্ত হয়েছিল এবং তাদের নেতা ভাসানী আওয়ামী লীগের পক্ষে ভোট দেয়ার সিদ্বান্ত নিয়েছিলেন। জনগণকে যদি এখন পুনরায় ভোট দিতে বলা হয়, তাহলে মুজিবের অবস্থা সম্পূর্ণ ভিনড়বতর হবে, যদি তিনি বন্দুকের সাহায্যে তার ইচ্ছাকে চাপিয়ে দিতে না চান। সেজন্যেই তিনি মুক্তিবাহিনীকে অস্ত্র সমর্পণের নির্দেশ দিচ্ছেননা এবং আমাদের স্মরণ রাখতে হবে যে, রক্তপিপাসু কসাই, যে ঢাকা স্টেডিয়ামে হত্যাযজ্ঞ করেছিল, সেই আবদুল কাদের সিদ্দিকী তারই ব্যক্তিগত উপদেষ্টা। ভারতীয়রা তাকে গ্রেফতার করেছিল; কিন্তু মুজিব তাকে মুক্ত করে দিয়েছিলেন। এখন আমরা গণতন্ত্রের কথায় আসতে পারি। একজন মানুষ কি গণতন্ত্রী হতে পারে, যদি সে বিরোধিতা সহ্য করতে না পারে? কেউ যদি তার সাথে একমত না হয়, তিনি তখনই তাকে রাজাকার” বলে আখ্যায়িত করেন। বিরোধিতার ফল হতে পারে ভিনড়বমত পোষণকারীকে কারাগারে প্রেরণ। তার চরিত্র একজন একনায়কের, অসহায় বাঙ্গালীরা উত্তপ্ত পাত্র থেকে গনগনে অগিড়বকুণ্ডে পতিত হয়েছে। বাঙ্গালী রমণীদের প্রতি সম্মান জানিয়েই (আমি) বলছি, তাদের সম্পর্কে কথা না বলাই উত্তম। তিনি নারীদের পাত্তাই দেন না……। বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট আমাকে আবার মুজিবের সাথে দেখা করতে বললেন। সব ব্যবস্থা পাকা। প্রেসিডেন্ট যে প্রচেষ্টা করেছিলেন তা খুব একটা সফল হয়নি। তিনি দুজন কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছিলেন, যাতে তার নির্দেশ পালন করা হয়। মুজিবের কাছে একটা হুংকার ছাড়া তারা আর কিছু পায়নি। তবে এবার একটা করিডোরের বদলে একটা কক্ষে অপেক্ষা করার অনুমতি আমি পেলাম। আমি বিকেল ৪টা থেকে রাত নটা পর্যন্ত অপেক্ষা করলাম। একজন বয় আমার চায়ের কাপ পূর্ণ করে দিচ্ছিল এবং এভাবে আমি আঠার কাপ চা নিঃশেষ করলাম। উনিশ কাপের সময় আমি চা মেঝে ছুঁড়ে ফেলে হেঁটে বেরিয়ে এলাম। আমাকে অনুসরণ করে হোটেলে এলো মুজিবের সেμেটারী ও ভাইস সেμেটারী। তারা বললো, মুজিব অত্যন্ত μুদ্ধ হয়েছেন এবং আগামীকাল সকাল সাড়ে সাতটায় আমার সাথে দেখা করতে চান। পরদিন সকালে ঠিক সাতটায় আমি হাজির হলাম এবং সকাল সাড়ে নটায় মার্সিডিজ যোগে মুজিবের আগমন পর্যন্ত আমাকে অপেক্ষা করতে হলো। একটা কথাও না বলে তিনি অফিসে প্রবেশ করলেন। আমিও অফিসে ঢুকলাম। আমার দিকে ফিরে তিনি উচ্চারণ কররেন, “গেট আউট”। আমি কক্ষ ত্যাগ করতে উদ্যত। তিনি বললেন, “গেট ইন হিয়ার।” আমি ফিরলাম এবং তখনই তিনজন লোক পোষ্টার আকৃতির একটি ছবি (তার কাছে) নিয়ে এলো। দেখে তিনি বললেন, “চমৎকার।” এরপর তিনি বললেন, এই মহিলা সাংবাদিককে দেখাও। আমিও ‘চমৎকার’ শব্দটি উচ্চারণ করলাম। এ ছিল এক মারাত্মক ভুল। তিনি বজ্রের মতো ফেটে পড়লেন। তিনি ক্ষিপ্ত। ছবিটি ফ্লোরে ছুঁড়ে দিয়ে বললেন, “এটা চমৎকার নয়।” আমি কিছু না বুঝে নিঃশ্চুপ থাকলাম। আমি তার উত্তেজনা হ্রাস করতে সক্ষম হলাম। যেহেতু আমি ভূট্টোর সাথে তার সত্যিকার সম্পর্কটা খুঁজে পেতে চাই, সেজন্য ভূট্টো সম্পর্কে প্রশড়ব করলাম। নামটা বলার মুহূর্তেই তিনি জ্বলে উঠলেন এবং বললেন যে, তিনি শুধুমাত্র বাংলাদেশের ভবিষ্যত সম্পর্কে প্রশেড়বর উত্তর দিতে চান। আমি প্রশড়ব করলাম, “বাংলাদেশের সাথে পশ্চিমবঙ্গকে যুক্ত করার সম্ভাবনা আছে কিনা?” খানিকটা দ্বিধান্বিত হয়ে তিনি বললেন, “এ সময়ে, আমার আর কোন আগ্রহ নেই।” এই বক্তব্যে ইন্দিরা গান্ধীকেও বিস্মিত হতে হবে যে, মুজিব কোলকাতা করায়ত্ত করতে চায়। আমি বললাম, তার মানে আপনি বলতে চান, অতীতে আপনার আগ্রহ ছিল এবং ভবিষ্যতে পুনঃবিবেচনা করার সম্ভাবনা আছে।” ধীরে ধীরে তিনি উপলব্ধি করলেন যে, আমি তাকে একটা ফাঁদে ফেলতে চাচ্ছি। নিজের ভুল সংশোধন করার বদলে তিনি টেবিলে মুষ্টাঘাত করে বলতে শুরু করলেন যে, আমি সাংবাদিক নই বরং সরকারী মন্ত্রী, আমি তাকে প্রশড়ব করছিনা দোষারোপ করছি। আমাকে এখনই বের হয়ে যেতে হবে এবং পুনরায় আমি যেন এদেশে পা না দেই। এই পর্যায়ে আমি নিজের উপর সকল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললাম এবং আমার মাঝে উত্তেজনার যে ¯ূ—প গড়ে উঠেছিল তা বিস্ফোরিত হলো। আমি বললাম যে, তার সবকিছু মেকি, ভূয়া। তার শেষ পরিণতি হবে খবুই শোচনীয়। যখন তিনি রোষান্বীত মুখে আমার দিকে তাকালেন আমি দৌড়ে বেরিয়ে এলাম এবং রাস্তায় প্রম যে রিকশাটা পেলাম তাতেই চাপলাম। হোটেলে গিয়ে তড়িঘড়ি বিল পরিশোধ করলাম। সুটকেস্টা হাতে নিয়ে যখন বেরুতে যাচ্ছি, ঠিক তখন দেখতে পেলাম মুক্তিবাহিনী নিচে আমার জন্যে অপেক্ষা করছে। তারা একথা বলতে বলতে আমার কাছে এলো যে, আমি দেশের পিতাকে অপমান করেছি এবং সেজন্য আমাকে চরম মূল্য দিতে হবে। তাদের এই গোলযোগের মধ্যে পাঁচজন অস্ট্রেলিয়ানের সাহায্যে শেষমেষ আমি পালাতে সক্ষম হলাম। তারা এয়ারপোর্ট থেকে হোটেলে প্রবেশ করছিল। এয়ারপোর্টে দুজন ভারতীয় কর্মকর্তা আমাকে বিমানে উঠিয়ে নিলেন এবং আমি নিরাপদ হলাম। অনুবাদ: আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু Share on facebook Share on email Share on print 8

ভারতে এখনো রয়েছে জেরুসালেমমুখী সুপ্রাচীন মসজিদ 26 Feb, 2014
ভারতীয় উপমহাদেশের সব থেকে প্রাচীন মসজিদ কোনটি। এ প্রশ্নের জবাবে বেশির ভাগ ঐতিহাসিকই বলে থাকেন, ‘কেবলার চেরামান জুমা মসজিদ’ই উপমহাদেশের সব থেকে পুরাতন মসজিদ। এটি ৬২৯ খ্রিষ্টাব্দে নির্মিত হয়েছিল। কেরালার স্থানীয় রাজা চেরামান পেরুমল সেই প্রথম যুগেই আরব ব্যবসায়ীদের হাতে অনুমতিক্রমেই মসজিদটি নির্মিত হয়েছিল। তবে সম্প্রতি এক চাঞ্চল্যকর তথ্য আবিষ্কৃত হয়েছে। আর তা হলো পার্শবর্তী ভারতেই গুজবটি উপকূলের ভাবনগরের ঘোঘা জনপদে একটি প্রাচীন মসজিদ রয়েছে যার রুখ বা কিবলা হচ্ছে জেরুসালেমের দিকে। উল্লেখ্য, জেরুসালেমের মসজিদুল আকসাই ছিল মুসলমানদের প্রথম কিবলা। অর্থাৎ প্রথমে রাসূল হজরত মুহাম্মদ সা:-এর নেতৃত্বে মুসলমানরা জেরুসালেমের মসজিদুল আকসার দিকেই মুখ করে নামাজ পড়তেন। মদিনায় হিজরতের পর হিজরি ২ সালে কিবলা পরিবর্তন সম্পর্কে কুরআন শরীফের এক আয়াত নাজিল হওয়ার পর রাসূল সা: তাঁর সাহাবাদের নিয়ে মক্কায় অবস্থিত পবিত্র কাবা শরিফের দিকে মুখ করে নামাজ পড়া শুরু করেন। সেই থেকে সারা বিশ্বের মুসলমানরাই কাবা শরিফকে কিবলা জেনে সেদিকে মুখ করে নামাজ আদায় করে থাকেন। ভাবনগরের জেরুসালেমের দিকে মুখ করা মসজিদটির অস্তিত্ব প্রমাণ করছে ২ হিজরির আগেই হজরত মুহাম্মদ সা:-এর অনুগামীরা ব্যবসায় উপলক্ষে আরব থেকে ভারতীয় উপমহাদেশের ভাবনগর উপকূলে জাহাজে করে এসেছিলেন এবং তারাই এই প্রাচীন মসজিদটি নির্মাণ করেন। অর্থাৎ তখনো জেরুসালেমের দিকেই মুসলিমদের কিবলা ছিল এবং তা তখনো মক্কার দিকে পরিবর্তিত হয়নি। বছর কয়েক আগে গুজরাটের ভাবনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসিদ্ধ ঐতিহাসিক অধ্যাপক মেহবুব দেশাই জেরুসালেমের দিক মুখ করা এই মসজিদটির কথা প্রথম তুলে ধরেন। ভাবনগর জেলার ঘোঘা জনপদে আজো টিকে রয়েছে এই প্রাচীন মসজিদ। যদিও এই মসজিদে শত শত বছর ধরে নামাজ পড়া হয় না। ঘোঘায় আরো কয়েকটি পুরাতন ও নতুন মসজিদ রয়েছে যার সবগুলোরই রুখ হচ্ছে পবিত্র মক্কা শরিফের দিকে। জেরুসালেমের দিকে কিবলাসম্পন্ন এই মসজিদটি সম্পর্কে মাস তিনেক আগে আমাকে প্রথম জানিয়েছিলেন ‘সাহিত্যের ইয়ারবুক’-এর সম্পাদক এবং প্রখ্যাত প্রাবন্ধিক জাহিরুল হাসান। তারপরই আমি আমার গুজরাটের বন্ধু-বান্ধবের কাছ থেকে মসজিদটি সম্পর্কে খবর নেয়া শুরু করি। ইন্টারনেটেও পাওয়া যায় কিছু তথ্য। অধ্যাপক মেহবুব দেশাইয়ের অভিমত হলো, সপ্তম শতাব্দীর প্রথম দিকেই ভাবনগরের এই মসজিদটি নির্মিত হয়েছিল। তার গবেষণা মতে, মসজিদটি ১৩০০ বছরের বেশি পুরনো। এই প্রাচীন মসজিদটি স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে ‘বারওয়াদা মসজিদ’ বা ‘জুনি মসজিদ’ বলে পরিচিত। অধ্যাপক দেশাইয়ের মতে, এই মসজিদে যে আরবি ক্যালিওগ্রাফি রয়েছে তা ভারতের প্রাচীনতম। মসজিদটিতে নামাজ না হলেও বারওয়াদা জামাত মসজিদটি সুদীর্ঘকাল ধরে তত্ত্বাবধান করে আসছেন। কিন্তু এই গুরুত্বপূর্ণ মসজিদটির যে প্রতœতাত্ত্বিক রক্ষণাবেক্ষণ হওয়ার কথা তা মোটেই হচ্ছে না। ফলে এই মসজিদটি বিলুপ্তির আশঙ্কার মধ্যে রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সারা পৃথিবীতে আর কোথাও এখনো জেরুসালেমের দিকে মুখ করা মসজিদ আছে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। উল্লেখ্য, জেরুসালেম ভাবনগর থেকে উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত, আর মক্কা শরিফ অবস্থিত পশ্চিম দিকে। সমুদ্রগামী আরবরা ছিলেন দক্ষ নাবিক। তাদের দিক ভুল করার কথা নয় বলেই পর্যবেক্ষকেরা মনে করেন। ফলে এই মসজিদটিই যে ভারতের প্রাচীনতম মসজিদ সে দাবির পক্ষে যথেষ্ট যুক্তি রয়েছে। উৎসঃ নয়া দিগন্ত Share on facebook Share on email Share on print 12

রাতের আঁধারে ছাত্রহলে ছাত্রী, এখনো নীরব প্রশাসন! 27 Feb, 2014
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ছাত্রদের আবাসিক হলে গভীর রাতে ছাত্রী নিয়ে আসা বিশ্ববিদ্যলয় শাখা ছাত্রলীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মহিতোষ রায় টিটোর বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। এ ঘটনায় জাবি ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে টিটোকে সাংগঠনিকভাবে বহিষ্কারের সুপারিশ করলেও প্রশাসন নীরব। এর আগেও বিশ্বদ্যিালয়ের সাংবাদিকদের উপর হামলা, রিকশাচালক ও নিরাপত্তাকর্মীকে মারধরসহ টিটোর বিরুদ্ধে একাধিক অপকর্মের অভিযোগ উঠলেও প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো প্রশ্রয়দাতার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে বারবার। জানা যায়, গত ১০ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে মীর মশাররফ হোসেন হলের ১১০নং কক্ষে ছাত্রলীগ নেতা টিটো ও কর্মী মামুন (ইতিহাস ৪০তম আবর্তন) বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগের তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রীকে নিয়ে আসেন। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাত আড়াইটার দিকে সংশ্লিষ্ট হলের প্রাধ্যক্ষ ও আবাসিক শিক্ষকরা ঘটনাস্থলে আসেন। শিক্ষকরা তাৎক্ষণিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক মজিবুর রহমানকে হলে ডাকলে তিনি এসে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করেন। তবে এসময় দোষ স্বীকার করে টিটো দাবি করেন, রাত্রীযাপন হয়নি ওই মেয়ে একাই গেস্টরুমে অবস্থান করছিল। ঘটনার আগের দিন বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক বৃদ্ধ রিকশাচালকসহ দুই নিরাপত্তাকর্মীকে ব্যাপক মারধর করে ছাত্রলীগের উপ-সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক বশিরুল হক এবং অভিযুক্ত মহিতোষ রায় টিটো। এ বিষয়েও অভিযোগ করা হলে প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। নিরাপত্তাকর্মীরা বিচার চাইলে উল্টো প্রক্টর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ছাত্রলীগ নেতাদের পক্ষে সাফাই গান। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক, অরাজনৈতিক শিক্ষার্থীদের মারধর, নেশাগ্রস্ত অবস্থায় হলের সিনিয়র শিক্ষার্থীকে মারধর এবং হলে মাদক সরবরাহের অভিযোগ থাকলেও এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও হল প্রশাসন টিটোর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আর তাই প্রশাসনের প্রশ্রয়ে উন্মত্ত হয়ে উঠেছেন ছাত্রলীগের এই জুনিয়র নেতা। অবশ্য অভিযুক্ত টিটো এবং আসফিকুর রেজা সাগর ইতিপূর্বে দুই সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় এক বছরের জন্য বহিষ্কৃত হয়েছিলেন। কিন্তু বহিষ্কারের ছয় মাস পর সিন্ডিকেটের অনুমোদন ছাড়াই অবৈধভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নেয়। জানা গেছে, টিটো, বসির ও সাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে রফিক-জব্বার হলের আবাসিক ছাত্র হয়েও অবৈধভাবে দীর্ঘদিন ধরে মীর মশাররফ হোসেন হলে অবস্থান করছে। অভিযোগ রয়েছে হলে মাদকের প্রধান সরবরাহকারী এই তিনজন। তাদের বিরুদ্ধে রয়েছে ফাও খাওয়ারও অভিযোগ। বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অধ্যাপক মজিবুর রহমানের কাছে এসব বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের তিনি কোনো সদুত্তর দেন না। তিনি বলেন, ‘হলের প্রভোস্ট অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ অন্যদিকে মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. ওবায়দুর রহমানের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বাংলামেইলকে বলেন, ‘যারা আমাদের হলে অবৈধ্য ছাত্র ও অভিযুক্ত তাদেরকে হল থেকে বের করে দেয়ার যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সে (মহিতোষ রায় টিটো) আমাদের আবাসিক হলে যেন না থাকতে পারে এজন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরবার চিঠি দিয়েছি। আসা করি প্রশাসন এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’ এ ব্যাপারে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ আহমদ বাংলামেইলকে বলেন, ‘অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে এ ধরনের অপরাধ কর্মকাণ্ডের প্রশ্রয় দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের আরো অপরাধ করার সুযোগ সৃষ্টি করে দিচ্ছে।’ বাংলামেইল২ Share on facebook Share on email Share on print 1

বৃটেন আমেরিকার সমর্থনে হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন শেখ হাসিনা 27 Feb, 2014
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পরে বৃটেন-আমেরিকাও জানিয়ে দিয়েছে, বাংলাদেশের নবনির্বাচিত সরকারের সঙ্গে কাজকর্ম চালাতে তাদের কোনো সমস্যা নেই। আর্থিক সহযোগিতাও অব্যাহত থাকবে। তার পরেই হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিদেশ দফতর নিজের হাতে রাখার প্রয়োজন ফুরিয়েছে বলে মনে করেছেন তিনি। আর তাই গুরুত্বপূর্ণ এই মন্ত্রকের দায়িত্ব তিনি তুলে দিলেন এএইচ মাহমুদ আলীর হাতে। বৃহস্পতিবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আনন্দবাজার পত্রিকা এ সংবাদ দিয়েছে। আনন্দবাজার লিখেছে, আগের পাঁচটা বছর বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রক সামলেছেন দীপু মনি। মহিলা প্রধানমন্ত্রীর মহিলা প্রতিনিধি হিসেবে বলিয়ে-কইয়ে দীপু বিদেশে নজর কাড়লেও কয়েকটি কারণে দেশের কূটনীতিকদের বিরাগভাজন হয়ে পড়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাদের সঙ্গেও তার অনক সময়ে মতে মেলেনি। দ্রুতগতিতে কাজ করতে ভালবাসতেন দীপু। কিন্তু তার মন্ত্রকের অনেকে সেটাকেই তার প্রধান দুর্বলতা বলে মনে করতেন। তাদের মতে, কূটনীতিতে অনেক ধৈর্য প্রয়োজন। হাতুড়ি মারার আগে নজর রাখতে হয়, লোহা কখন গরম হয়ে রক্তবর্ণ ধারণ করছে। অভিযোগ, দীপু মণি অনেক সময়ে সেই ধৈর্য দেখাতে পারেননি। তিস্তা চুক্তি না-হওয়া নিয়েও তার অকারণ তাড়াহুড়োকে অনেকে দায়ী করেন। আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন তিস্তা চুক্তি নিয়ে বিরোধিতায় সরব হন, দিল্লি সেই আপত্তি দূর করতে রাজনৈতিক প্রক্রিয়া শুরু করে। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ নিজে জানান, আপত্তির যুক্তি রয়েছে। রাজ্যের সঙ্গে আলোচনায় গাফিলতি দেখিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারের অফিসারেরা। নতুন করে আলোচনা শুরুর জন্য অফিসারদের নির্দেশ দেন মনমোহন। কিন্তু তড়িঘড়ি করে যাবতীয় প্রটোকল ভেঙে দীপু মনি মহাকরণে গিয়ে মমতার সঙ্গে বৈঠকে বসেন। সেই বৈঠকের পরে তিস্তা চুক্তি নিয়ে আরও অনড় হয়ে যান মমতা। রেলমন্ত্রী হিসেবে যে মমতা বাংলাদেশে রেল-পরিকাঠামো নির্মাণে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন, সেই মমতাই বাংলাদেশের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট যে কোনও বিষয়ে একেবারে উদাসীন হয়ে যান। বাংলাদেশের অনেক কূটনীতিকই বলে থাকেন, দীপু মণি সে দিন একটু ধৈর্য দেখালে তিস্তা চুক্তি নিয়ে এত জলঘোলা হয়তো হত না। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, নির্বাচনী সরকারের মন্ত্রিসভা গঠনের সময়েই শেখ হাসিনা দীপুকে বাদ দিয়ে বার্তা দিয়েছিলেন। মাহমুদ আলিকেই তিনি বিদেশ মন্ত্রকের দায়িত্ব সঁপেছিলেন। কিন্তু নির্বাচনের পরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আমেরিকা, ব্রিটেনের মতো প্রভাবশালী শক্তি বিরোধী পক্ষের সঙ্গে সুর মিলিয়ে নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলায় বিদেশ মন্ত্রক নিজের হাতেই রাখেন হাসিনা। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশের কূটনীতিকরা নতুন সরকার সম্পর্কে আন্তর্জাতিক মহলের বিরোধিতা দূর করতে তৎপর হন। পাশে দাঁড়িয়ে তৎপর হয় নয়া দিল্লিও। যৌথ প্রয়াসে সাফল্য মেলে। একে একে সব মহলই জানিয়ে দিয়েছে, সুষ্ঠু নির্বাচন একান্তই বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। নবনির্বাচিত সরকারের সঙ্গে লেনদেনে কারও কোনও সমস্যা নেই। এমনকী আর্থিক নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়ার যে আশঙ্কা ঢাকা করছিল, তা-ও অমূলক বলে প্রমাণিত হয়েছে। আজ তাই শপথের পরে সেই এএইচ মাহমুদ আলীর হাতেই বিদেশ মন্ত্রক তুলে দিলেন হাসিনা। উৎসঃ নতুনবার্তা Share on facebook Share on email Share on print 2
স্নাতক ডিগ্রিধারীর ৪৭% বেকার
27 Feb, 2014 মীর মনিরুজ্জামান : দেশে গত এক দশকে উচ্চশিক্ষার হার বেড়েছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষায় সরকারি মনোযোগ এর কারণ। প্রতি বছর সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে প্রায় ২০ লাখ শিক্ষার্থী স্নাতক পর্যায়ে ভর্তি হন। এসব শিক্ষার্থীর মধ্যে স্নাতক ডিগ্রিধারীর ৪৭ শতাংশই বেকার। ইকোনমিস্ট ইনটেলিজেন্স ইউনিট কর্তৃক চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রকাশিত দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ‘হাই ইউনিভার্সিটি এনরোলমেন্ট, লো গ্র্যাজুয়েট এমপ্লয়মেন্ট’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। ব্রিটিশ কাউন্সিলের জন্য তৈরি ওই গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, উচ্চশিক্ষার প্রবৃদ্ধি বাড়লেও দক্ষ জনবলের তীব্র সংকট রয়েছে। শিক্ষার্থীদের ইংরেজি ভাষায় দখল কম, মৌলিক জ্ঞানের অভাব, কারিগরি জ্ঞান ও সমস্যা সমাধানে দক্ষতার দুর্বলতা থাকায় তারা জনবল সংকট পূরণে অবদান রাখতে পারছেন না। বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল ও শ্রীলংকার উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা, শিক্ষার মান এবং কর্মসংস্থান বাজারে স্নাতক ডিগ্রিধারীদের অবস্থান উঠে আসে ইকোনমিস্ট ইনটেলিজেন্সের প্রতিবেদনটিতে। এতে দেখা যায়, বাংলাদেশের ৪৭ শতাংশ স্নাতক ডিগ্রিধারী বেকার। ভারতে স্নাতক ডিগ্রিধারী বেকারত্বের হার ৩৩ শতাংশ, পাকিস্তানে ২৮ ও নেপালে ২০ শতাংশ। শ্রীলংকায় স্নাতক পাস মাত্র ৭ দশমিক ৮ শতাংশ চাকরি পান না। স্নাতক ডিগ্রিধারী শিক্ষার্থী বাড়াটা অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক হলেও তাদের কর্মসংস্থানের বিষয়টি নির্ভর করে বিনিয়োগের ওপর। এমন পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান ড. এ কে আজাদ চৌধুরী বণিক বার্তাকে বলেন, সরাসরি চাকরির ক্ষেত্র না বাড়িয়ে উচ্চশিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ালে বেকারত্ব বাড়বে। দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ বাড়লে বেকারত্বের সংখ্যা স্বাভাবিকভাবেই কমবে। ইকোনমিস্ট ইনটেলিজেন্সের ওই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, শিক্ষার গুণগত মানের অভাবে ডিগ্রিধারীরা বেকার থাকছেন। শিক্ষার্থীরা যেসব বিষয়ে পড়াশোনা করছেন, সেসব বিষয়ের চাকরির ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতা বেশি। কর্মসংস্থান বাজার যে ধরনের জ্ঞান, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা প্রত্যাশা করে, সে ধরনের যোগ্যতা বেশির ভাগ শিক্ষার্থীর নেই। প্রতিবেদনটির নানা দিক নিয়ে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা একমত পোষণ করেন। সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান আজিজ খান এ বিষয়ে বলেন, ‘প্রতিষ্ঠান চালানোর জন্য আমরা যে ধরনের ফ্রেশ গ্র্যাজুয়েট চাই, তা পাই না। বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গুণগত মানের শিক্ষা না নিয়েই তারা সার্টিফিকেট পাচ্ছেন। ডিগ্রি অর্জনের ক্ষেত্রে যে জ্ঞান আহরণ জরুরি, তা অর্জন না করেই তারা পড়ালেখা শেষ করছেন। এ কারণে তারা যোগ্য হিসেবে গড়ে উঠছেন না। সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির কারণেও ডিগ্রিধারীরা বেকার থাকছেন। সবাই কর্মকর্তার চাকরি চান, কারিগরি জ্ঞান লাভ করে ক্যারিয়ার গড়তে চান না। এ কারণেও ডিগ্রিধারীরা বেকার থাকছেন।’ বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষার্থীদের জন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যে কার্যক্রম পরিচালনা করে, তার গুণগত মান নিশ্চিত নয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে যথাযথ শিক্ষার পরিবেশ গড়ে তোলার চেয়েও মুনাফা অর্জনেই নজর বেশি। এতে শিক্ষার্থীরা দক্ষতা অর্জনে পিছিয়ে পড়েন। এজন্য দায়ী দুর্বল নিয়ন্ত্রণ। এ পরিস্থিতি উত্তরণে পুরো উচ্চশিক্ষা কার্যক্রম পুনর্বিন্যাস করার সুপারিশ করা হয় ওই প্রতিবেদনে। উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়ন প্রসঙ্গে এ কে আজাদ চৌধুরী বলেন, ‘এটি একটি ব্যাপক কর্মযজ্ঞ। মানের ক্ষেত্রে আমরা কিছুটা পিছিয়ে রয়েছি। তবে উন্নয়ন হচ্ছে। ১৯৯২ সালে কোনো ধরনের প্রস্তুতি ছাড়াই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় চালু হয়। আইন না থাকায় এর মান নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়নি। এখন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন হয়েছে। মানোন্নয়নের কাজও চলছে। ২০১৬ সালের মধ্যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার মান একটি পর্যায়ে আসবে।’ প্রতিবেদনে দেখা যায়, বাংলাদেশে ২০০২-১০ সাল পর্যন্ত চাকরি ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২২ দশমিক ১ শতাংশ। এক্ষেত্রে আইনজীবী, সিনিয়র কর্মকর্তা বা ম্যানেজার প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৬০০ শতাংশ। পেশাজীবীদের প্রবৃদ্ধি ৫০ ও কারিগরি ক্ষেত্রে পেশাজীবীদের ৪১ দশমিক ২ শতাংশ। ২০০৪ সালে বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষায় শিক্ষার্থীর ভর্তির সংখ্যা ছিল ৮ লাখ ২১ হাজার। ২০১১ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২০ লাখের ওপরে। এসব শিক্ষার্থী ব্যবসায় শিক্ষা (বিবিএ), আইন ও সামাজিক বিজ্ঞানে ডিগ্রিলাভে বেশি আগ্রহী। ২০১১ সালে ৯ লাখ ৬৯ হাজার শিক্ষার্থী এ তিন অনুষদে ভর্তি হন। এক্ষেত্রে কৃষিশিক্ষায় ভর্তি হয়েছেন মাত্র ২১ হাজার, বিজ্ঞানে ২ লাখ ৬৮ হাজার, মানবিকে ৬ লাখ ৬ হাজার, স্বাস্থ্যবিষয়ক শিক্ষায় ৪৫ হাজার ও এডুকেশনে ৩১ হাজার ৭০০ শিক্ষার্থী। কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করতে পারলে বেকারত্ব কমবে বলে মনে করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নিম্নমানের উচ্চশিক্ষার কারণে শিক্ষার্থীরা বেকার হয়ে পড়ছেন। কারিকুলাম উন্নয়নের মাধ্যমে সঠিক নজরদারি করলে এর উন্নয়ন সম্ভব। সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মানোন্নয়নে সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে। উৎসঃ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম Share on facebook Share on email Share on print

বলিউডের অন্ধকার জগৎ, যৌনতার বিনিময়ে চরিত্র
27 Feb, 2014 বলিউড বলতেই অনেকে বোঝেন রূপালী পর্দায় দেখা চাকচিক্যময় ঝলমলে জগৎ। কিন্তু এই ঝলমলে জগতের ভেতরেও যে বিভৎস অন্ধকার লুকিয়ে আছে তা হয়তো অনেকেরই অজানা। বলিউড তারকা, পরিচালক, প্রযোজকদের সঙ্গে মুম্বাইয়ের অপরাধ জগতের যোগসূত্রের খবর এখন অনেক পুরনো বিষয়। সম্প্রতি নতুন করে উঠে এসেছে ভারতীয় অর্থনীতিতে কোটি কোটি রুপির এই মহা ইন্ডাস্ট্রির আরেকটি কালো অধ্যায়।
মাদক, জুয়া ছাড়াও বলিউডে এখন যৌনতার বিনিময়ে বিক্রি হচ্ছে ছবির চরিত্র। নতুন নতুন অভিনেত্রীরা নায়িকা হওয়ার বাসনা নিয়ে এক শ্রেণীর প্রতারক দালাল, পরিচালক, প্রযোজকদের কাছে বিলিয়ে দিচ্ছে নিজের সর্বস্ব। সম্প্রতি ভারতের মিডডে পত্রিকা বলিউডের এই অন্ধকার অংশের স্বরূপ সন্ধানে একটি গোপন অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে পত্রিকার এক রিপোর্টারই অভিনেত্রীর ছদ্দবেশে কথা বলেন বিভিন্ন ছবির কাস্টিং এজেন্টদের সঙ্গে। ওই এজেন্টদের সঙ্গেই কথা বলে জানা গেছে, বলিউড ছবিতে আবেদনকারী, শিক্ষানবীশ বা অধস্তনদের কাছ থেকে প্রায় সময়ই তারা যৌন সুবিধা নিয়ে থাকেন। বিনিময়ে মেলে ক্যারিয়ারের উন্নতি বা বিভিন্ন ছবিতে নানা ছোট বড় চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ। এমনকি শুধু অভিনেতা অভিনেত্রীরাই নয়, তাদের শিকার হন ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে সংশ্লিস্ট বিভিন্ন পেশার মানুষরাও। কাস্টিং এজেন্ট আদভিন মাসির সঙ্গে ছদ্দবেশী রিপোর্টারজানা যায়, কেউ অভিনেতা অভিনেত্রী হবার আশায় বিশেষ করে মেয়েরা এসব এজেন্টদের সঙ্গে দেখা করলে প্রথমে তাদের বেশ কয়েকটি ভঙ্গিতে ছবি দিতে বলা হয়। এরমধ্যে কাউকে কাউকে অর্ধনগ্ন কিংবা বিকিনি পরিহিত ছবি দিতেও বলা হয়। ছবিগুলো তাদের পছন্দ হলেই কেবল আবেদনকারীর ডাক পরে। পত্রিকাটির চালানো অভিযানে বিজয় রাওয়াল নামে এক কাস্টিং এজেন্টের খোঁজ পাওয়া যায়। যার সঙ্গে ওই ছদ্দবেশী রিপোর্টারের কথা হয় মুম্বাইয়ের ভাইদাস হলে। সাধারণত টিভি অভিনেতা অভিনেত্রীদের নিয়ে কাজ করেন বিজয়। সে সময় বিজয় ওই ছদ্দবেশী রিপোর্টারকে গোয়ালিয়র থেকে আসা নেহা শর্মা নামের একটি মেয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। মেয়েটি অভিনেত্রী হওয়ার আশায় দেখা করেছে বিজয়ের সঙ্গে। মেয়েটিকে বিজয় বলে, ‘যদি তুমি অভিনয় করতে চাও, তাহলে কিছু ব্যপারে তোমাকে আপোস করতে হবে। যদি সেটা পারো তাহলে অপেক্ষা করছে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ।’ এরপর বিজয় ছদ্দবেশী ওই রিপোর্টারকে বলেন, ‘ঈশ্বর তোমাকে এই শরীর উপহার দিয়েছে। কিন্তু আমার সঙ্গে দেখা করার আগে তোমার একটু আবেদনময় পোশাক পড়ে আসা উচিৎ ছিল। প্রথমে তুমি টাকা কামাবে তারপর শিখবে অভিনয়।’ এমন কি সেই লোক ছদ্দবেশী ওই রিপোর্টারকে ছবিতে অভিনয়ের সুযোগের বদলে অশ্লীল ইঙ্গিতও করেন। পরিচালক সুভাষ কাপুরকে চড় মারছেন অভিনেত্রী গীতিকা তিয়াগি একই ভাবে ওই ছদ্দবেশী রিপোর্টার ময়ুর নামে এক সহকারী পরিচালক, কাস্টিং এজেন্ট জো, আদভিন মাসে, মুকেশ ঠাকুরসহ সামা খান নামে একজন নারী এজেন্টের সঙ্গেও দেখা করেন। তারাও কাজ পাইয়ে দেয়ার তাদের কিংবা ঘনিষ্ঠদের খুশি করার বিষয়টিকে ইন্ডাস্ট্রিতে খুব স্বাভাবিক বিষয় বলে বর্ণনা করেন। তাদের প্রায় সবাই কাজের বিনিময়ে ওই রিপোর্টারকে দেহ ব্যবসার প্রস্তাব দেন। এসব ক্ষেত্রে এজেন্টদের বন্ধুবান্ধব, পরিচালক, প্রযোজকদের খুশি করার জন্যও আবেদনকারীদের পাঠানো হয় বলে জানা যায়। এই বিশেষ অভিযানে উঠে আসা বিভিন্ন তথ্য ছাড়াও বলিউডে যে হরহামেশাই নতুন অভিনেতা অভিনেত্রীরা এমন যৌন হেনস্থার শিকার হন তা কিছুদিন আগেও প্রকাশ পায়। চলতি মাসের মাঝামাঝিতে শ্লীলতাহানির অভিযোগে ‘জলি এলএলবি’ ছবির পরিচালক সুভাষ কাপুরকে চড় মেরে সবার নজরে আসেন অভিনেত্রী গীতিকা তিয়াগি। এছাড়াও বেশ কয়েকবার কয়েকজন নামী পরিচালক প্রযোজকের বিরুদ্ধেও এসবে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া যায়।
শুধু যে মেয়েরাই এই যৌন হেনন্থার শিকার হন তা কিন্তু নয়। ছেলেরাও অনেক সময় এর শিকার হয়ে থাকেন। এর মধ্যে রয়েছে সমকাম, পর্নো ছবিসহ নানা রকম সমস্যা। বছর খানেক আগে তরুণ তেলেগু মডেল কৃষ্ণা মোনালা অভিযোগ করেছিলেন যে, ক্যারিয়ারের শুরুতে তাকে এক প্রযোজকের সঙ্গে বিছানায় যাবার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। উৎসঃ বাংলামেইল২৪ Share on facebook Share on email Share on print 11

মঙ্গলবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০১৪


যে ১০ টি কারণে সারা বিশ্বে পৌরুষত্ব হারাচ্ছেন পুরুষেরা! 25 Feb, 2014 নারীদের অধিকারের জন্য মানুষ অনেক অনেক বেশি সোচ্চার। এ ব্যাপারটি ভালো নিঃসন্দেহে। কিন্তু এই ভালো কাজটি করতে গিয়ে নীরবে সৃষ্টি হয়ে যাচ্ছে একটি দুঃখজনক পরিস্থিতি। কী সেই পরিস্থিতি? পৃথিবীজোড়া পুরুষেরা হারাচ্ছেন নিজেদের পৌরুষত্ব। শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিক মর্যাদার দিক দিয়ে নিজেদের পূর্ব অবস্থান হারিয়ে ফেলছেন পুরুষেরা। আসুন দেখে নেওয়া যাক সমাজ বিজ্ঞানীদের চোখে এর কারণগুলো। ১) কমে যাচ্ছে উর্বরতা ফার্টিলিটি বা উর্বরতা কমে যাওয়া আধুনিক সমাজে পুরুষদের মাঝে ক্রমাগত দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে চলেছে। স্পার্ম কাউন্ট কমে যাওয়ার এই ব্যাপারটার পেছনে কারণ হিসেবে অতিরিক্ত কীটনাশক একটি কারণ। এন্ডরফিন নামের হরমোন কমিয়ে দিতে সক্ষম রাসায়নিক যেমন বিসফেনল এ, এবং এমন অনেক রাসায়নিক, কৃত্রিম পদার্থ আমাদের খাদ্য এবং পানির উৎসে থেকে আমাদের ক্ষতি করে চলেছে প্রতিনিয়ত। ২) রাসায়নিক প্রভাবে পুরুষের মাঝে বেড়ে যাচ্ছে “নারীত্ব” ফথ্যালেট নামের এক ধরনের রাসায়নিকের সংস্পর্শে বেশি সময় কাটানোর কারণে ছেলেদের স্বাভাবিক টেস্টোস্টেরন নিঃসরণ কমে যাচ্ছে এবং যৌনাঙ্গের মাঝে দেখা দিচ্ছে অস্বাভাবিকতা। বিভিন্ন ধরনের প্লাস্টিকে এসব ফথ্যালেট পাওয়া যায়। এমনকি গর্ভে অবস্থান করার সময়ে মায়ের শরীরেও যদি এর প্রভাব পড়ে, তবে সেই বাচ্চা ছেলের মাঝে পুরুষসুলভ আচরণের ঘাটতি থাকবে। ৩) পুরুষ “রোল মডেল” এর অবক্ষয় আজ থেকে পঞ্চাশ বছর আগেও টেলিভিশনে মূল চরিত্রে দেখা যেত এমন সব পুরুষ চরিত্রকে যাদের দেখে অনুপ্রাণিত হতে পারতো তরুণ প্রজন্ম। কিন্তু এখনকার সময়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রেই পুরুষদের উপস্থাপন করা হয় মাথামোটা, কিছুটা নির্বোধ হিসেবে আবার কিছু ক্ষেত্রে তাদেরকে উপস্থাপন করা হয় যৌন নির্যাতনকারি হিসেবে। এসব দেখে যেসব ছেলেরা বড় হচ্ছে তারা মনে করছে এমন হওয়াটাই বুঝি স্বাভাবিক! ৪) “মেট্রোসেক্সুয়াল” অস্থিরতা এখনকার সামাজিক অবস্থার কারণে, ভদ্র এবং নম্র দেখানোর চেষ্টায় অনেক পুরুষই পরিণত হয়েছেন “মেট্রোসেক্সুয়াল” মানুষে। এসব পুরুষেরা একই নারীর সাথে জীবন কাটিয়ে দেওয়ার চিন্তায় শঙ্কিত হন এবং বারবার সঙ্গিনী পরিবর্তন করতে থাকেন। ফলে সমাজে সৃষ্টি হচ্ছে অস্থিরতা এবং নারীরাও জীবনে স্থায়ী হবার জন্য পুরুষ সঙ্গি খুঁজে পাচ্ছেন না। এসব পুরুষেরা একেবারেই ভুলে যান যে, অনেকগুলো সঙ্গিনীর রেকর্ড থাকা নয় বরং একজন নারীর প্রতি বিশ্বস্ত থাকাটাই আসলে পৌরুষত্বের লক্ষণ। ৫) সাংস্কৃতিক মার্ক্সবাদ ধরেই নেওয়া হয় যে সমাজে নারীর খারাপ অবস্থানের কারণ হলো আমাদের পিতৃতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা। এর পেছনে অন্য যে কারণগুলো রয়েছে তাকে সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে যাওয়া হয় এবং শুধুই পুরুষদের দোষারোপ করা হয়। ৬) “পুরুষ বেশি বেতন পায়” মিথ লিঙ্গ-বৈষম্যের কারণে নারীরা সব সময়েই পুরুষের চাইতে কম বেতন পায়- এ ধারনাটি বদ্ধমূল হয়ে গেছে আমাদের মাঝে। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, পুরুষের বেতন কিছুটা বেশি হবার পেছনে রয়েছে এমন সব কারন যেখানে বৈষম্যের কোনো চিহ্নই নেই। পুরুষেরা অনেক সময়ে রাত করে অথবা বেশ সময় ধরে কাজ করেন যা নারীদের পক্ষে সম্ভব হয় না। এক্ষেত্রে পুরুষের কিছুটা বেশি বেতন পাওয়াটাই স্বাভাবিক। এমনকি অনেক সময়ে দেখা যায়, পুরুষদের অনেক কম বেতনে অনেক বেশি খাটিয়ে নেওয়া হচ্ছে জার ফলে তাদের মধ্যে সৃষ্টি হয় চরম হতাশা। ৭) “বিশেষ সুবিধা” ফাঁদ বিভিন্ন ক্ষেত্রেই দেখা যায়, পুরুষরা নাকি “বিশেষ সুবিধা” পেয়ে থাকেন এবং এ কারণে সমাজের “সংখ্যালঘু” মানুষের ব্যাপারে তারা মোটেই চিন্তা করেন না। এই “বিশেষ সুবিধার” কোন অস্তিত্ব আসলে নেই। পুরুষ হয়ে জন্মানোর ফলে প্রকৃতি তাকে যতটা সুবিধা দেয়, তার বেশি কোনো ক্ষমতা পুরুষের থাকে না এবং তারা তেমন কোনো বিশেষ সুবিধে ভোগ করেন না। ৮) বিচার ব্যবস্থা পুরুষদের কম সুবিধা দেয় বিশেষ করে বিবাহবিচ্ছেদ এবং তার পরে সন্তানের দায়ভার নেওয়ার ব্যাপারে দেখা যায়, আদালত নারীদেরকেই সুবিধে দিয়ে থাকে। প্রাক্তন স্ত্রী সচ্ছল এবং কর্মরত হলেও দেখা যায়, তার জন্য বড় একটি অঙ্কের টাকা স্বামীকে দিয়ে যেতে হয় সর্বদা। এটা বেশি হয় পাশ্চাত্যের দেশগুলোতে। অন্যান্য ক্ষেত্রেও মেয়েদেরকে দেখা হয় “নিষ্পাপ” হিসেবে এবং পুরুষটিকে দোষী ধরে নেওয়া যায় সহজেই। ৯) “পৌরুষত্ব” হয়ে উঠেছে একটি গালি বর্তমান সময়ে পুরুষেরা নিজেদের স্বরূপ হারিয়ে ফেলছে। ধরেই নেওয়া হচ্ছে যার মাঝে পৌরুষত্ব আছে সে ভীষণ হিংস্র, বর্তমান সুন্দর-সুশীল সমাজে তার জায়গা নেই, এমনকি পেশগত ক্ষেত্রেও তাদের এসব বৈশিষ্ট্য দমিয়ে রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা করা হয়। সমাজে নারী এবং পুরুষের মাঝে যে প্রাকৃতিক পার্থক্য, তাকেও নির্মূল করার এই চেষ্টায় “পৌরুষত্ব” কথাটিই এখন আর ভালো চোখে দেখা হয় না। ১০) পুরুষের বিরুদ্ধে পারিবারিক নির্যাতন পরিবারের মানুষের থেকে নির্যাতনের শিকার হলে একজন নারী বিভিন্ন সংগঠনের কাছে সাহায্য পেতে পারেন। একটু একটু করে হলেও এই আশাজনক ব্যাপারটি আমাদের দেশেও দেখা যাচ্ছে। কিন্তু একজন পুরুষ যদি পরিবারে নির্যাতনের শিকার হয়ে থাকেন তবে তার জন্য কি আছে? বলতে গেলে কিছুই নেই। বাংলাদেশে পুরুষ নির্যাতনের ঘটনা কম হলেও সারা বিশ্বে এর অস্তিত্ব আছে, তা অনস্বীকার্য। কিন্তু এর পরেও তাদের জন্য নেই কোনো সাহায্যের সম্ভাবনা উৎসঃ প্রিয়ডটকম Share on facebook Share on email Share on print 7

ভিডিও >> আল কায়েদার বার্তা প্রচারের জন্য ৭১-এর মোজাম্মেল বাবুকে কেন গ্রেপ্তার করা হবে না : আন্দালিব পার্থ
25 Feb, 2014 বর্তমান সরকারের বক্তব্যের সৃজনশীলতা নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে। কারণ এই সরকার সবসময় ইস্যু পরিবর্তন করার রাজনীতি করে। পিলখানার ঘটনার পরপরই ইস্যু ঘুরিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার বাড়ি নিয়ে যাওয়া হল এবং একটার পর একটা যেমন- হলমার্ক, ডেসটিনি, ড. ইউনূস, পদ্মা সেতু, সমুদ্র বিজয়, গণজাগরণ মঞ্চ, হেফাজত, রানা প্লাজা ভেঙে রেশমাকে বের করা এ নিয়ে সরকারের সৃজনশীলতা অনেক ছোট হয়ে গিয়েছে বলে মšত্মব্য করেছেন বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ। তিনি সোমবার চ্যানেল আইয়ের তৃতীয় মাত্রা অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন উন্নয়ন ও জননীতি বিশেষজ্ঞ ড. চঞ্চল খান ও বাংলাদেশ উইমেনস্ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সেলিনা আহমাদ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জিল্লুর রহমান। পার্থ বলেন, বিডিআর বিদ্রোহে সরকারের সফলতা হল- অপারেশন সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়েছে কিন্তু রোগী মারা গিয়েছে। বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার সময় সরকারের বয়স মাত্র ৩ মাস এবং এই সময়ে এত বড় একটা ঘটনা ঘটবে সরকার তা আশা করেনি। তিনি আরও বলেন, পিলখানার ভেতরে বিডিয়ার বিদ্রোহের ঘটনাটা একটা জাতীয় ইস্যু এবং ক্ষমতায় যে সরকারই থাকুক না কেন প্রত্যেকেরই চোখ-কান খোলা রাখতে হবে যে এ ধরনের ঘটনা আর বংলাদেশে যেন না ঘটে। জঙ্গিবাদের উত্থান তো একটা সময় সারা পৃথিবীতে হয়েছিল এবং যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে তারা সারা বিশ্বে অবস্থান করছিল উল্লেখ করে পার্থ বলেন, বাংলাদেশে যখন জঙ্গি ছিল তখন বিএনপি সরকার ও আওয়ামী সরকার দুজনেই কৌশলে এদেরকে দমন করেছে। তিনি আরও বলেন, আল-কায়েদা শুধু বাংলাদেশের মাথাব্যাথা নয়, সারা বিশ্বের মাথাব্যাথা। আল জাওয়াহিরির ভিডিও সত্যি না, যদি সত্যি হত তাহলে সিএনএন, বিবিসি এবং বিশ্বের গণমাধ্যমে আমরা তা দেখতে পেতাম। কিন্তু এই ভিডিও আসার পর একাত্তর টিভি তা প্রচার করল এবং সবাই ধরে নিল এটা ঠিক। আর এই ভিডিওর উপর ভিত্তি করে আলোচনা শুরু করে দেয়া হল। সরকার মহল থেকে বলা হচ্ছে- জামায়াত এর সঙ্গে জড়িত, এদিকে র‌্যাব বলছে- এর সোর্স কি সেটা আমরা জানি না। পার্থ বলেন, যাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এটা শুধু দেখানোর জন্যই। সত্যি যদি গ্রেপ্তার করা হয় তাহলে একাত্তরের মোজাম্মেল বাবুকে ধরলেন না কেন তিনি তো এটার প্রচার করেছেন, সিএনএনকে, বিবিসিকে ধরলেন না কেন তারা তো আল-কায়েদা কী তা আমাদের বুঝিয়েছে। আমি মনে করি এটা সরকারের একটা ইস্যু ছাড়া আর কিছুই নয়। উৎসঃ আমাদের সময় Share on facebook Share on email Share on print

কারাগার এখন ‘জঙ্গী আস্তানা’! টনক নড়বে কবে?
25 Feb, 2014 দেশের বিভিন্ন কারাগারে আটক থাকা অবস্থায় সরকারের জ্ঞাত ও অজ্ঞাতসারে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালাচ্ছে জঙ্গী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা। একারণেই, পরিকল্পিতভাবে কাশিমপুর কারাগারে আটক থাকা তিন জঙ্গী সদস্যকে ময়মনসিংহের নেওয়ার পথে ছিনিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে পেরেছে জেএমবি। এভাবে কারাগারে আটক থাকা অবস্থায় প্রশাসনের নাকের ডগায় বসে অবাধে জঙ্গী তৎপরতা চালাচ্ছে জেএমবির জঙ্গিরা। জঙ্গিদের এমন তৎপরতার ফলে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর জঙ্গীবাদ বিরোধী সমস্ত সাফল্য মাঠে মারা পড়ছে। এছাড়া, বাংলাদেশে পুনরায় জঙ্গী উত্থানের ঝুঁকি বেড়ে চলছে। এই ঝুঁকি কতটুকু ভয়ঙ্কর হতে পারে তারই একটি লক্ষণ হচ্ছে ত্রিশালে প্রিজন ভ্যানে হামলা চালিয়ে পুলিশ হত্যা করে সাজাপ্রাপ্ত জঙ্গী সদস্যকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনাটি। বাংলাদেশে জঙ্গী নেটওয়ার্কগুলো সম্পর্কে ওয়াকিবহাল সূত্রগুলো বলছে, দেশের কারাগারগুলোতে গ্রেফতার থাকা জঙ্গী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা নির্বিঘ্নে কারাগারে থেকেই কোন জঙ্গী আক্রমণের পরিকল্পনা গ্রহণ ও তা বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারে। এছাড়া, নেতৃস্থানীর জঙ্গীদের অধিকাংশই কারাবন্দী আছে। এরা কারাগারে থেকেই খুনসহ সাংগঠনিক কার্যক্রমের তদারকি করে। একারণে, কারাগারগুলো জঙ্গী কার্যক্রমের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। ফলে, আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর তৎপরতার কারণে জঙ্গী সদস্যরা গ্রেফতার হলেও তা কোন কাজেই আসছে না। জেএমবির পাশাপাশি আরেক জঙ্গী সংগঠন হরকাতুল জিহাদের(হুজি) কার্যক্রমও পরিচালিত হয় কারাগার থেকেই। হুজি সংগঠনের প্রধান আব্দুর রব কাশিমপুর কারাগারে আটক আছে। আব্দুর রব কারাগার থেকেই সংগঠনটির সমস্ত জঙ্গী তৎপরতার সমন্বয় করেন। কারাবন্দী থেকেই আব্দুর রব, তার অন্যতম সহযোগী হুজি নেতা মশিউর রহমান ওরফে মিলন তালুকদারকে দিক নির্দেশনা দিতেন। এর ভিত্তিতেই মশিউর রহমান দেশের বিভিন্নস্থানে হুজিকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করার কাজে লিপ্ত ছিল। অনেকদিন গোপনে কাজ করার পর ২০১৩ সালের আগস্টে ৮ জন জঙ্গী সদস্যসহ মশিউর রহমান গ্রেফতার হন। একইভাবে কারাগারের ভেতরে জঙ্গী কার্যক্রমে পিছিয়ে নেই হিযবুত তাহরীরও। কারাবন্দী নেতাকর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যাওয়া ব্যক্তিদের ওপর তেমন কোন নজরদারি না থাকার সুযোগে এমন তৎপরতা চলছে। একাধিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে অভিযযোগ করা হয়েছে যে, একশ্রেণীর অসাধু কারা কর্মকর্তা কারাগারের মতো স্পর্শকাতর জায়গায় নিষিদ্ধ সংগঠনটির সাংগঠনিক কার্যক্রম চালানর সুযোগ করে দিচ্ছেন। উৎসঃ নতুন দিন Share on facebook Share on email Share on print

উইকিলিকসের তথ্য: সেনা তদন্ত দলের প্রস্তাব নাকচ করেন শেখ হাসিনা
25 Feb, 2014 ২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহের পর গঠিত সেনাবাহিনীর তদন্ত কমিটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়েছিল। এতে প্রধানমন্ত্রী ক্ষুব্ধ হন এবং তাদের ওই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। ওই বছরই ২৭শে এপ্রিল ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস এফ মরিয়ার্টির সঙ্গে এক সাক্ষাতের সময় তার কাছে এ তথ্য প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা। গত ৩০শে আগস্ট উইকিলিকস যুক্তরাষ্ট্রের যেসব কূটনৈতিক গোপন তারবার্তা প্রকাশ করেছে তাতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ২০০৯ সালের ২৫শে ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় বিডিআর সদর দপ্তরে বিদ্রোহীরা নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালায়। সেখানে হত্যা করা হয় ৫৭ সেনা অফিসার ও ১৭ জন বেসামরিক ব্যক্তিকে। এরপর ২রা মার্চ সেনাবাহিনী ২০ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। এর প্রধান করা হয় লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীকে। ওই ঘটনা তদন্তে সরকারও একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। সেনাবাহিনীর কমিটি তদন্ত করে আলাদাভাবে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মরিয়ার্টির ওই বৈঠককে উদ্ধৃত করে ওই তারবার্তায় উল্লেখ করা হয়, সেনাবাহিনীর আলাদা তদন্তের ব্যাপারে শেখ হাসিনা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। প্রাথমিকভাবে এ কমিটিকে সামরিক বিষয়-আশয়- যেমন বিদ্রোহের সময় খোয়া যাওয়া অস্ত্র ও গোলাবারুদের হিসাব বের করার মতো বিষয় তদন্তের জন্য সীমাবদ্ধ করে দেয়া হয়েছিল। শেখ হাসিনা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, কিভাবে প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের সিনিয়র কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়ে সামরিক তদন্তকারীরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠায়? এ জিজ্ঞাসাবাদের কাজ পুলিশের- এ কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি ওই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন। ওই একই বৈঠকে মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে শেখ হাসিনা বলেন, বিডিআর বিদ্রোহে তার দল থেকে সরকারে যেসব কর্মকর্তা রয়েছেন তাদের জড়িত থাকার বিষয়টি প্রকাশ করতে আটক বিডিআর সদস্যদের স্বীকারোক্তি দিতে চাপ দিচ্ছে নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। ওই বৈঠকে শেখ হাসিনা ও জেমস এফ মরিয়ার্টি বেসামরিক-সামরিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজের সঙ্গে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মরিয়ার্টি যোগ দিয়েছিলেন হাওয়াইয়ে অনুষ্ঠিত প্যাসিফিক এরিয়া স্পেশাল অপারেশন্স কনফারেন্সে। এ নিয়ে একটি নোট শেখ হাসিনাকে পড়ে শোনান মার্কিন রাষ্ট্রদূত। মরিয়ার্টি বলেন, তারা এশিয়া-প্যাসিফিক স্টোর ফর সিকিউরিটি স্টাডিজ সফর করেছেন। এ সংস্থা চায় বাংলাদেশে সরকার, সামরিক ও রাজনৈতিক নেতাদের জন্য সামরিক-বেসামরিক সম্পর্ক নিয়ে একটি ওয়ার্কশপ আয়োজন করতে। এ প্রস্তাবে সমর্থন দেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মন্ত্রিসভা বারণ করেছিল ২০০৯ সালের বিডিআর বিদ্রোহের পর পরই ১লা মার্চ ঢাকা সেনানিবাসে বিক্ষুব্ধ সেনা কর্মকর্তাদের মুখোমুখি হয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে সহকর্মী হারানোর শোকে বিহ্বল বিভিন্ন পদবির প্রায় ৫০০ বিক্ষুব্ধ সেনা কর্মকর্তার মুখোমুখি হন তিনি। মন্ত্রিসভার সদস্যরা এ বৈঠকের আগে বিপদের আশঙ্কা করে প্রধানমন্ত্রীকে সেনানিবাসে যেতে নিষেধ করেছিলেন। শুধু তা-ই নয়, উত্তপ্ত সে বৈঠক শেষ করে ঢাকা সেনানিবাস থেকে হাসিনা নিরাপদে ফিরে আসায় কেউ কেউ বিস্ময়ও প্রকাশ করেছিলেন। ২০০৯ সালের ১লা মার্চ এ গোপন তারবার্তা ওয়াশিংটনে পাঠান ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত জেমস এফ মরিয়ার্টি। এর নম্বর ঢাকা-০০০২১৩। এর বিষয়ে ‘প্রাইম মিনিস্টার মিটস আর্মি অফিসারস ইনবিড টু কুয়েল অ্যাঙ্গার ওভার হ্যান্ডলিং অব মিউটিনি’। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিকীর বরাত দিয়ে তিনি এ বার্তাটি পাঠান। গত ৩০শে আগস্ট এ তারবার্তা প্রকাশ করে উইকিলিকস। এতে আরও বলা হয়- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিডিআর বিদ্রোহের অব্যবহিত পরেই ২০০৯ সালের ১লা মার্চ ঢাকা সেনানিবাসে গিয়ে বিক্ষুব্ধ সেনা কর্মকর্তাদের মুখোমুখি হয়েছিলেন। তার সঙ্গে ছিলেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী ও নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা তারিক আহমদ সিদ্দিকী। প্রায় আড়াই ঘণ্টার ওই বৈঠকে শেখ হাসিনা প্রায় ৫০০ বিক্ষুব্ধ সেনা কর্মকর্তার মুখোমুখি হন। মরিয়ার্টি তার তারবার্তায় উল্লেখ করেন, শেখ হাসিনা এ বৈঠকে সেনা কর্মকর্তাদের তীব্র ক্ষোভের মুখোমুখি হন। উত্তেজিত কিছু সেনা কর্মকর্তা প্রধানমন্ত্রীকে নানা ধরনের কটূক্তিও করেছিলেন। তারিক আহেমদ সিদ্দিকী ওই বৈঠকে উপস্থিত আওয়ামী লীগ বিরোধী কিছু কট্টরপন্থি সেনা কর্মকর্তাকে চিনতে পেরেছিলেন। এদের মধ্যে অনেকেই চিৎকার করে নিজেদের বক্তব্য দেয়ার জন্য দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছিলেন। তবে তারিক আহেমদ সিদ্দিকী জানান, বৈঠকের পুরো সময়ই ব্যাপক উত্তেজনা থাকলেও এটি শেষ হয় শান্তিপূর্ণভাবে, মোনাজাতের মাধ্যমে নিহত সেনা কর্মকর্তাদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করা হয়। তারিক আহেমদ সিদ্দিকী জানান, সেদিন শেখ হাসিনা অক্ষত থাকায় তিনি বিস্মিত হয়েছিলেন। মরিয়ার্টির পাঠানো তারবার্তা অনুযায়ী, সেনানিবাসের সে বৈঠকে সাংবাদিকদের প্রবেশাধিকার ছিল না। তবে বিভিন্ন সূত্রের মাধ্যমে মরিয়ার্টি জানতে পেরেছেন, বৈঠকে সংক্ষুব্ধ সেনা কর্মকর্তারা এ ঘটনায় মধ্যস্থতাকারী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন ও স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানকের পদত্যাগ দাবি করেন। কিছু কর্মকর্তা বৈঠকে বিক্ষোভ প্রদর্শনও নাকি করেছিলেন। তারা বেশ কিছু চেয়ার ভাঙচুর করেছিলেন বলে জানা যায়। সেনা কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রীর কাছে ওই হত্যা ও অত্যাচারের সঙ্গে জড়িত বিডিআর সদস্যদের দ্রুত বিচারের দাবি করেন। কয়েক জন দাবি জানান, দোষীদের প্রকাশ্যে ফাঁসি দিতে হবে। রাষ্ট্রদূত মরিয়ার্টি তার তারবার্তার এক পর্যায়ে উল্লেখ করেছেন, বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় অনেক সেনা কর্মকর্তা নিহত হওয়ার পর সেনাবাহিনীর অনেক কর্মকর্তা বিশ্বাস করেন, প্রধানমন্ত্রী বিডিআর বিদ্রোহ শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সেনা অভিযানের নির্দেশ দিতে পারতেন। কিন্তু তিনি তা না করে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছিলেন। এছাড়া বিডিআর জওয়ানদের বেতন-ভাতা নিয়ে অসন্তোষ ও বিডিআরে প্রেষণে নিয়োগ পাওয়া সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখার কথাও তার সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল। বিডিআর বিদ্রোহ শুরু হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বেশির ভাগ হত্যার ঘটনা ঘটেছিল বলে মরিয়ার্টি তারবার্তায় উল্লেখ করেছেন। ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১১ ,মানবজমিন Share on facebook Share on email Share on print 1

পিলখানা ট্রাজেডি ও গোয়েন্দা ব্যর্থতা!
25 Feb, 2014 আদালতের ভাষায় সপরিবারে রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ড আমাদের সেনাবাহিনীর জন্য চিরস্থায়ী এক কলংক। আর আমাদের সেনাবাহিনীর জন্য সবচেয়ে মর্মান্তিক ইতিহাস ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারির পিলখানা ট্র্যাজেডি। দু’ ক্ষেত্রেই বারবার গোয়েন্দা ব্যর্থতার কথা এসেছে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ক্ষেত্রে সেই গোয়েন্দা ব্যর্থতা কিছুটা আলোচিত হলেও পিলখানা ট্র্যাজেডিতে তা একেবারেই অনালোচিত। সেনাবাহিনীর নিজস্ব তদন্তে অবশ্যই তা উঠে আসার কথা। কিন্তু সাধারণ মানুষ তো অবশ্যই, গণমাধ্যমেরও তা অনেকটাই অজানা। পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পর সেনাবাহিনীর সে-সময়ের কোয়ার্টার মাস্টার জেনারেল (কিউএমজি) লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর নেতৃত্বে গঠিত ২০ সদস্যের তদন্ত আদালত (কোর্ট অব ইনকোয়ারি) দীর্ঘ তদন্ত শেষে তাদের রিপোর্ট জমা দিয়েছেন। স্বাভাবিক কারণেই রিপোর্টটি সাধারণের জন্য প্রকাশ করা হয়নি। তবে বিভিন্ন সূত্রের বরাতে লেখক-সাংবাদিক মোস্তফা মল্লিক তার সদ্য প্রকাশিত ‘রক্তাক্ত পিলখানা: অপ্রকাশিত কথা অপ্রকাশিত ছবি’ বইয়ে রিপোর্টে উল্লেখ করা বিডিআর বিদ্রোহের ১১টি কারণ ও ২৭ দফা সুপারিশের কথা জানিয়েছেন। মল্লিকের বইয়ের তথ্য অনুযায়ী ওই রিপোর্টের সারমর্ম এরকম - ঘটনার সাথে সুনির্দিষ্ট কোনো রাজনৈতিক দল বা নেতার সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় নি। তবে কিছু বিডিআর সদস্য তাদের দাবি-দাওয়া আদায়ের লক্ষ্যে ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে এবং পরে কিছু বেসামরিক ব্যক্তি ও রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সেনাবাহিনীর ওপর ক্ষুব্ধ হওয়া বেসামরিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিরা বিডিআর সদস্যদের দাবি আদায়ের চেষ্টাকে নিজেদের প্রতিশোধের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে থাকতে পারেন। ঘটনার পরিকল্পনাকারী ও হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বেশিরভাগই অল্প বয়সী, সিপাহী পদবির এবং কেরানি পেশার ছিলেন। এছাড়া ঘটনার সাথে দেশি-বিদেশি কোনো জঙ্গি সংগঠনের সম্পৃক্ততার তথ্য, আলামত বা পূর্বাভাস পাওয়া যায় নি। চারশ পৃষ্ঠার ওই রিপোর্টে সারসংক্ষেপে বিদ্রোহের কিছু কারণও উল্লেখ করা হয়েছে। এসবের মধ্যে আছে: একানব্বই সালে বিদ্রোহের পর অপরাধের গুরুত্ব অনুযায়ী বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ায় তারা এ ধরনের বিদ্রোহের পুনরাবৃত্তির দুঃসাহস দেখিয়েছে। অপারেশন ডাল-ভাত কর্মসূচির কারণে বিডিআর সদস্যদের সৈনিকসুলভ আচরণের অবক্ষয় ঘটে বলেও এতে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে বিডিআরে কর্মরত সেনা সদস্যদের সম্পর্কে বিরূপ ধারণার কথাও। নির্বাচনের পর ডিএ বাবদ অর্থ প্রাপ্তিতে বিলম্ব, বিডিআরের সমস্যা সমাধানে স্বরাষ্ট্র ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের দীর্ঘসূত্রতা, বিডিআর সদস্যদের অনৈতিক সুযোগ-সুবিধায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির কথাও রয়েছে রিপোর্টে। এছাড়া বিভিন্ন ঘটনায় অভিযুক্ত বিডিআর সদস্যদের বিরুদ্ধে নমনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ, বিডিআরে কর্মরত সেনা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিডিআরের নিজস্ব অফিসারদের মাধ্যমে উস্কানি ও অসন্তোষ সৃষ্টি এবং প্রশাসনে কিছু সিনিয়র সামরিক অফিসারের পরিবার, বন্ধু-বান্ধব এবং তাদের স্টাফ অফিসারের অযাচিত হস্তক্ষেপের কারণে বিডিআর জওয়ানদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হওয়ার কথা রয়েছে এতে। একটি ঘটনার পর তার অনেক বিশ্লেষণ এবং পর্যবেক্ষণ সম্ভব। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিলো সেটা। আর সেক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা গোয়েন্দা সংস্থার। সেনাবাহিনীর তদন্ত আদালতের রিপোর্টেও বিদ্রোহ দমনে চারটি ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করতে গিয়ে গোয়েন্দা ব্যর্থতার কথা বলা হয়েছে। রিপোর্টে বলা হয়েছে: ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ও পরে বিডিআরের কিছু সদস্য কিছু সামরিক ও বেসামরিক ব্যক্তির সাথে সাক্ষাৎ করলেও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এ বিষয়ে কোনো তথ্যই জানাতে পারে নি। বিডিআরের নিজস্ব গোয়েন্দা ইউনিট (আরএসইউ) সদস্যরা বিদ্রোহের সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিলো বলে আরএসইউ থেকেও কোনো তথ্য পাওয়া যায় নি। এছাড়া বিডিআর সপ্তাহ উপলক্ষে বিভিন্ন গোয়েন্দা রিপোর্টের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী ২৪ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় যান। অথচ বিডিআর বিদ্রোহের বীজ বপন হয়েছিলো ওই ঘটনার আগেই। অন্যদিকে সাবেক সচিব আনিস উজ জামান খানের নেতৃত্বে সরকার গঠিত তদন্ত কমিটির রিপোর্টে বলা হয়েছে, প্রায় দুই মাস ধরে বিডিআর বিদ্রোহের পরিকল্পনা চলে। পরিকল্পনার বিভিন্ন পর্যায়ে ষড়যন্ত্রকারীরা ঘটনার আগে পর্যন্ত বেশ কিছু বৈঠক করে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তারা ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস এমপি, শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন এমপির বাসা এবং অফিসে গিয়ে তাদের দাবি-দাওয়ার কাগজপত্র দিয়ে আসে। সরকারের ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী পিলখানা যাওয়ার চারদিন আগে ২১ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রীকে সম্বোধন করে লিফলেট বিলি করা হয় যা বিডিআর কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। কিন্তু দেশের প্রধান গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এ লিফলেট সম্পর্কে কিছুই জানতো না। অথচ ওই লিফলেটে বলা হয়েছিলো: ‘বিডিআর বাহিনীতে ওদের (সেনাবাহিনী) দেখতে চাই না। প্রয়োজনে আন্দোলনের মাধ্যমে কুকুরের মতো সরাব’। রিপোর্টে লিফলেটটি কোনো গোয়েন্দা সংস্থা পায় নি বলা হলেও সরকারি ওই রিপোর্টেই বলা হয়েছে: ‘২৩ ফেব্রুয়ারি তারিখে বিডিআর সদস্যদের দাবি-দাওয়া সম্বলিত মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আহ্বান করা লিফলেটটি এনএসআই-এর নজরে আসে এবং তাৎক্ষণিকভাবে তারা মৌখিকভাবে আরএসইউ সদস্য মেজর মাহমুদুল হাসানকে অবহিত করে। কিন্তু বিষয়টি এনএসআই সরকারকে জানায় নি। অন্যদিকে, সরকার প্রধানের পিলখানা আগমন উপলক্ষে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তর ২২ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ তারিখে একটি প্রতিবেদন পাঠায় মহাপরিচালক, স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ)-এর কাছে। ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে, সন্ত্রাসী চক্রের সংঘবদ্ধ বা বিচ্ছিন্নভাবে আক্রমণের সুনির্দিষ্ট কোনো হুমকির আশংকা নেই। বিস্ময়করভাবে প্রতিবেদনে একথাও জানা গেছে যে, পিলখানায় এনএসআই, এসবি এবং ডিজিএফআইয়ের কোনো গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক নেই (তখন পর্যন্ত)। এ কারণে তারা ঘটনার আগে বা চলার সময় সরকারকে প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে ব্যর্থ হয়েছে। সরকারি তদন্ত প্রতিবেদনে একথাও বলা হয়েছে: কোনো সংস্থাই ঝুঁকি নিয়ে হলেও নিজস্ব সোর্সের মাধ্যমে ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানার ভেতরের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহের উদ্যোগ নেয় নি। উপরে বর্ণিত অবস্থাগুলো জাতীয় দুর্যোগকালে গোয়েন্দা সংস্থাসমূহের অদক্ষতা, অপেশাদারিত্ব ও অমার্জনীয় ব্যর্থতার চিত্র তুলে ধরেছে। পিলখানা হত্যা মামলার রায়ে রেকর্ড সংখ্যক ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ডসহ অন্যদের শাস্তি দিতে গিয়ে বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামানও বিদ্রোহ শুরু হওয়ার আগেই তা দমনে তথ্য জানাতে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ব্যর্থতার কথা বলেছেন। পিলখানায় সেদিন যারা শহীদ হয়েছেন, তারা আর কখনও ফিরে আসবেন না। সন্তানরা আর কখনও ফিরে পাবে না তাদের বাবাকে, স্ত্রী তার প্রিয়তম স্বামীকে। অনেক মা-বাবাকে পুত্রশোকের যন্ত্রণা নিয়েই কাটিয়ে দিতে হবে দীর্ঘ জীবন। যে কর্মকর্তা তার সহকর্মীর মরদেহ বহন করেছেন, সারাজীবনই তার চোখে টলমল করবে জল। হয়তো তাদের বারবারই একটা কথা মনে হয়, বাহিনীগুলোর মধ্যে যে গোয়েন্দা জাল বিছানো আছে, সেখান থেকে কেউ যদি আগাম তথ্য জানাতে পারতো তাহলে হয়তো তাদের প্রিয় মানুষটিকে এভাবে চলে যেতে হতো না। কিন্তু সেরকম কিছু হয় নি; সেটাই বাস্তবতা। তবে ভবিষ্যতে বাংলাদেশ যেন ভ্রাতৃঘাতী এমন ট্র্যাজেডি আর না দেখে সেজন্য অনেক সুপারিশের মধ্যে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে নিয়ে পরামর্শ এসেছে। সংশ্লিষ্ট সকল গোয়েন্দা সংস্থা ও তাদের কার্যপদ্ধতি ঢেলে সাজানোর জন্য কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স ফোর্স গড়ে তোলাসহ একটি সমন্বিত গোয়েন্দা কার্যক্রম গ্রহণের সুপারিশ করেছে সরকার গঠিত তদন্ত কমিটি। ওই কমিটি সুস্পষ্টভাবে বলেছে, সকল গোয়েন্দা সংস্থার দায়িত্ব ও কর্তব্য পুনর্বন্টন এবং সর্বোচ্চ পর্যায়ে একটি কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সমন্বয় কমিটি গঠনের মাধ্যমে সকল গোয়েন্দা তথ্য পর্যালোচনার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। গোয়েন্দা সংস্থা বিষয়টি যেহেতু স্পর্শকাতর, তাই এসব সুপারিশ আদৌ বাস্তবায়ন হয়েছে কি না জানা নেই। ওই ঘটনায় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ব্যর্থতার মূল্যায়নের ফলাফল এবং ভবিষ্যৎ নিয়েও সবকিছুই সাধারণের অজানা। তবে বাস্তবতা হলো, পিলখানা ট্র্যাজেডিতে স্বজনদের চোখের জল শুকিয়ে গেলেও তাদের হৃদয়ের কান্না এখনও অবিরাম জলধারা। উৎসঃ বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর Share on facebook Share on email Share on print

বিডিয়ার হত্যাকান্ডে কারা জড়িত
25 Feb, 2014 ২৫ ফেব্রুআরির পিলখানায় নারকিয় সেনা হত্যাযঙ্গের কথা আজও ভুলতে পারেনি জাতি। কি হয়েছিল সেদিন? কারা বা কাদের নির্দেশে এই হত্যাযঙ্গ সংগঠিত হয়েছিল?? .. এবার উইকিলিকসের সেই চাঞ্চল্যকর তথ্য পড়তে থাকুন>> সেনা হত্যা নিয়ে সেনাবাহিনীর গঠিত তদন্ত রিপোর্টে মোটামুটি উঠে এসেছিল সব কিছু। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হাসিনা সে তদন্ত রিপোর্ট বাতিল করে দিয়েছে। তবে অনলাইনের কল্যানে জনগণ সব জেনে গেছে ভেতরের গোপন কথা। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতিটি সৈনিক ও অফিসার জানে – কেনো, কোন্ পরিকল্পনায়, কারা পিলখানায় ৫৭ সেনা অফিসার হত্যা করেছে। সেটাই সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরা হলো। ১. RAW: ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘R&AW’এর পরিকল্পনায় ও ব্যবস্থাপনায় ”পিলখানা হত্যাকান্ড” ঘটে। এর মূল লক্ষ ছিল- পাদুয়া ও রৌমারীর ঘটনার বদলা নেয়া এবং বিডিআর বাহিনী ধংস করে দেয়া। ২০০১ সালের এপ্রিল মাসে কুড়িগ্রামের রৌমারীতে বিডিআর-বিএসএফ যুদ্ধে ১৫০ জন বিএসএফ নিহত হয়। এর আগে পাদুয়ায় নিহত হয় ১৫ বিএসএফ। বিডিআর ডিজি মেজর জেনারেল এএলএম ফজলুর রহমানের নির্দেশে ঐ যুদ্ধে অংশ নেয় বিডিআর। ঐ ঘটনার পরে ভারতীয় ডিফেন্স মিনিষ্টার জসবন্ত সিং উত্তপ্ত লোকসভায় জানান, ”এ ঘটনার বদলা নেয়া হবে।” লক্ষ করুন, ১৯৭১ সালে যে সব শর্তে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারত সামরিক সাহায্য দেয়, তার অন্যতম শর্ত ছিল “Frontier Guards will be disbanded” (CIA Report SC 7941/71). অর্থাৎ বাংলাদেশের কোনো বর্ডার গার্ড থাকবে না। কিন্তু স্বাধীনতার পরে নানা কারনে পাকিস্তান রাইফেলস বালাদেশ রাইফেলসে (বিডিআর) রূপ নেয়। বিডিআর বাহিনীটি ছিলো আধাসামরিক বাহিনী, যার মূল কমান্ড ও ট্রেনিং ছিলো সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের মত। অন্যদিকে ভারতের বিএসএফ ছিলো সিভিল বাহিনী, যাদের ট্রেনিং, জনবল সবই ছিলো নিম্নমানের। এসব কারনে বর্ডারে কোনো যু্দ্ধ হলে তাতে বিডিআর সামরিক পেশাদারিত্ব দিয়ে বিজয়ী হত। পাদুয়া-রৌমারীর বদলা নেয়ার জন্য বিডিআর বাহিনী ধংস করার পরিকল্পনা করে ভারত। এ লক্ষে ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারী সময়টিকে বেছে নেয়া হয়- যখন হাসিনার নতুন সরকারের ক্ষমতা গ্রহনের পর পর নাজুক সময়। অনেকেই মনে করেন, ভারতীয় পরিকল্পনায় নির্বাচন ছাড়া অপ্রত্যাশিত পদ্ধতিতে হাসিনাকে ক্ষমতায় বসানোর নানা শর্তের মধ্যে একটি গোপন শর্ত থাকতে পারে “বিডিআর ধংস করা।” চুড়ান্ত রিস্ক থাকা স্বত্ত্বেও হাসিনাকে তা মেনে নিতে হয়। পরিকল্পনা অনুযায়ী বিডিআর সৈনিকদের দাবীদাওয়ার আড়ালে মুল প্লানটি বাস্তবায়নের জন্য মোট ৬০ কোটি রুপী বরাদ্দ করে ভারত। এর মধ্যে পিলখানায় ১৫ থেকে ১৭ কোটি টাকা বিলি হয়, যাতে প্রতিটি অফিসারের মাথার বদলে ৪ লক্ষ টাকা ইনাম নির্ধারন করা হয়। ১৯ ও ২১ ফেব্রুয়ারী ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার বাছাই করা ১৫ জন শুটারকে বাংলাদেশে প্রবেশ করানো হয়, যারা পশ্চিম বঙ্গ সরকারের পাঠানো (প্রেমের নিদর্শন) ১ লক্ষ মিষ্টির সাথে বাংলাদেশে ঢুকে। একজন বেসামরিক দর্জি’র কাছ থেকে বিডিআর এর পোশাক বানিয়ে বিডিআর সপ্তাহ উপলক্ষে পিলখানায় উপস্থিত থাকে শুটাররা। তাদের দায়িত্ব ছিলো লাল টেপওয়ালা (কর্নেল ও তদুর্ধ) অফিসারদের হত্যা করা। তারা একটি বেডফোর্ড ট্রাক ব্যাবহার করে ৪ নং গেইট দিয়ে প্রবেশ করে ২৫ তারিখ সকালে। ঘটনার দিন সকাল ১১টায় বাংলাদেশের কোনো সংবাদ মাধ্যম জানার আগেই ভারতের “২৪ ঘন্টা” টিভিতে প্রচার করা হয় জেনারেল শাকিল সস্ত্রীক নিহত। অর্থাৎ মূল পরিকল্পনা অনুসারেই খবর প্রচার করে ভারতীয় গণমাধ্যম! পরিকল্পনা ব্যর্থ হলে বা আর্মির পদক্ষেপে শেখ হাসিনার জীবন বিপন্ন হলে তাকে নিরাপদে তুলে নিয়ে যাওয়ার জন্য ভারতীয় ৩০ হাজার সৈন্য, ছত্রীবাহিনী ও যুদ্ধবিমান আসামের জোরহাট বিমানবন্দরে তৈরী রেখেছিলো ভারত। বিদ্রোহের দিন ভারতের বিমান বাহিনী IL-76 হেভি লিফ্‌ট এবং AN-32 মিডিয়াম লিফ্‌ট এয়ারক্রাফট নিয়ে বাংলাদেশ সরকারকে পূর্ণ সহায়তা দিতে পুরোপুরি প্রস্তুত ছিলো। ঐসময় প্রণব মুখার্জীর উক্তি মিডিয়ায় আসে এভাবে, “এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশকে সব ধরণের সহায়তা দিতে ভারত প্রস্তুত। … আমি তাদের উদ্দেশ্যে কঠোর সতর্কবাণী পাঠাতে চাই, যারা বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে, তারা যদি এ কাজ অব্যাহত রাখে, ভারত হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না, প্রয়োজনে সরাসরি হস্তক্ষেপ করবে।” ২. শেখ হাসিনা : ভারতের এই পরিকল্পনাটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবহিত করা হয় বেশ আগেই। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের নিমিত্তে ঘটনার ১ সপ্তাহ আগে তড়িঘড়ি করে প্রধানমন্ত্রীকে সুধাসদন থেকে সরিয়ে যমুনা অতিথি ভবনে নেয়া হয়, কেননা পিলখানার ডেঞ্জার এরিয়ার মধ্যে ছিল ওটা। রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনার মেরামত শেষ না হওয়া স্বত্ত্বেও ভারতের সিগনালে খুব দ্রুততার সাথে হাসিনাকে সুধাসদন থেকে সরানো হয়। এটা এক অসম্ভব ঘটনা। পিলখানা হত্যাকান্ডের পরিকল্পনায় বিরাট সংখ্যায় সেনা অফিসার হত্যা করা হবে, যেটা ১৯৭৫ সালে তার পিতৃ হত্যার একটা বদলা হিসাবে হাসিনার কাছে সুখকর ছিলো। এর মাধ্যমে বিডিআর নিশ্চিহ্ন হবে, টার্গেট করে বিপুল সংখ্যক সেনা অফিসার হত্যা করা হলে তাতে মূল সেনাবাহিনীর কোমর ভেঙ্গে যাবে। গোয়েন্দা খবর পেয়ে ২৫ তারিখে পৌনে ন’টার মধ্যেই এনএসআই ডিজি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করে- “পিলখানায় বিদ্রোহ হচ্ছে। ” প্রধানমন্ত্রী নিরব থাকেন! আক্রমনের পরে অফিসারদের SOS পেয়ে সকাল ১০টার মধ্যে র‌্যাবের একটি দল, এবং ১০.২৫ মিনিটে সেনাবাহিনীর একটি দল পিলখানার গেটে পৌছায়। কিন্তু শেখ হাসিনা কোনো অভিযান চালানোর অনুমতি দেয়নি। আশ্চয্যজনকভাবে তিনি সময় ক্ষেপন করতে থাকেন। আর এর মধ্যে ঘটতে থাকে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ। খেয়াল করুন, সেনা অফিসাররা কোনো প্রতিরোধ করেনি, কাজেই কি কারনে বিডিআর সৈনিকরা অফিসারদের হত্যা করবে? এটা ছিল সুপরিকল্পিতভাবে সেনা অফিসার হত্যাকান্ড। সারাদিন হত্যাকান্ড চালানোর সুযোগ দিয়ে বিকালে শেখ হাসিনা হত্যাকারীদের সাথে বৈঠক করে তাদের সাধারন ক্ষমা ঘোষণা করেন। কিন্তু তিনি একবারও জানতে চাননি, ডিজি শাকিল কোথায়? কি বিস্ময়!! জেনারেল জাহাঙ্গীরের তদন্ত কমিটি শেখ হাসিনাকে জিজ্ঞাসাবাদের সুপারিশ করেছিল, যার ফলে হাসিনা ক্ষেপে গিয়ে ঐ রিপোর্ট ধামাচাপা দেন। ৩. গোয়েন্দা সংস্থা: ঢাকার দৈনিক প্রথম আলোর এক সাংবাদিক ঘটনার আগের দিন এটা জানার পর সে এনএসআইকে এই মর্মে অবহিত করে যে, পিলখানা য় বিদ্রোহের প্রস্তুতি চলছে যার সাথে বিডিআর ও আওয়ামীলীগের নেতারা জড়িত। এনএসআই থেকে উক্ত সাংবাদিককে বলা হয় বিষয়টা চেপে যেতে। ২৪ তারিখে প্রধানমন্ত্রীর পিলখানায় যাওয়ার আগের দিন পিলখানা অস্ত্রাগার থেকে ৩টি এসএমজি খোয়া যায়। তখন সেনা অফিসারদের দায়িত্ব দেয়া হয় অস্ত্রাগার পাহারায়। যদিও প্রধানমন্ত্রীর সফরের সময় উচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও গোয়েন্দাগিরি বহাল থাকে। নূন্যতম কোনো বিচ্যুতি ঘটলে প্রোগ্রাম বাতিল হয়। এত কিছু সত্তেও ২৪ তারিখে প্রধানমন্ত্রী সেখানে যান। মূলত: বিদ্রোহের আগাম বার্তা সেনাপ্রধান ম্ইন, ডিজিএফআই প্রধান মোল্লা ফজলে আকবর (ইনি হাসিনার এক সময়ের প্রেমিক ছিলেন), এনএসআই প্রধান মেজর জেনারেল মুনির, সিজিএস মেজর জেনারেল সিনা জামালী, বিডিআর কমিউনিকেশন ইনচার্জ লেঃ কর্নেল কামরুজ্জামান, ৪৪ রাইফেল’এর সিও শামস, মুকিম ও সালাম-এর জানা ছিল। কেননা ২৫ তারিখের আগেই দাবী দাওয়ার লিফলেটের কপি ডিজি শাকিল, এনএসআই ও সরকারের কাছে পৌছে। এমনকি মাঠ পর্যায়ের বহু সেক্টর কমান্ডাররা জানত, ২৫ তারিখে একটা ঘটনা ঘটবে। পরিকল্পনামত প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে ২৪ তারিখে জানিয়ে দেয়া হয়, প্রধানমন্ত্রী ২৬ তারিখের নৈশভোজে যাচ্ছেন না। এমন ঘটনা অতীত কখনও কখনো ঘটেনি! ৪. জেনারেল মইন উ আহমেদ: তৎকালীন সেনাপ্রধান ও ১/১১র প্রধান কুশীলব। ২০০৮ সালের গোড়ার দিকে ভারত সফর করে মইন চেয়েছিলেন পূর্ন ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য ভারতীয় সমর্থন। ভারত রাজী হয়নি, বরং আ’লীগকে ক্ষমতায় আনার লক্ষে মইনকে কাজ করতে বলে, বিনিময়ে সেফ প্যাসেজ পাবে কুশীলবরা। উপায়ান্তর না দেখে মইন রাজী হয় এবং ২৯ ডিসেম্বর পূর্বপরিকল্পিত ফলাফলের নির্বাচনে ক্ষমতার পালবদল ঘটায়। মইনের বদলে আসেন হাসিনা! ওয়ান ইলেভেনের খলনায়করা যে সব রাজনীতিবিদদের অত্যাচার করেছে, তাদের বিচারের জন্য ফেব্রুয়ারীর দ্বিতীয় সপ্তাহে সংসদে প্রবল দাবী ওঠে। তখন সেনাবাহিনীর চাপের মুখে জেনারেল মইন নিজে দেখা করেন প্রধানমন্ত্রী হাসিনার সাথে সংসদ অফিসে। এরপর শেখ হাসিনা ধমকে দেন মখা আলমগীর, আবদুল জলিলদের, যাতে করে সেনাবাহিনীর বিচারের দাবী আর না তুলে। হাসিনা এ সময় হুশিয়ার করেন, “কিভাবে ক্ষমতায় এসেছি, সেটা কেবল আমিই জানি।” অন্যদিকে ঐ সময়ই ভারত তার প্লানমত এগিয়ে যায় বিডিআর অপারেশনে। মইনকে বলা হয় প্রয়োজনীয় সাপোর্ট দিতে। মইন তার দু’বছরের অপকর্মের স্বাক্ষী আর্মি অফিসারদের আগে থেকেই পোষ্টিং দিয়ে জড়ো করে বিডিআরে। এদের নিধন করা হলে মইনের অপকর্মের সাক্ষী আর পাওয়া যাবে না। ফলে মইনের বিরাট প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল এই হত্যাযজ্ঞ। অন্যদিকে এত সেনা অফিসার নিহত হলে ১/১১ নিয়ে সেনাবাহিনী তথা মইনের বিরুদ্ধে রাজনীতিবিদরা আর মুখ খুলবে না। এতকাল আর্মির রদ্দিমালগুলো যেতো বিডিআরে। কিন্তু এবারে দেখা যায় ভিন্ন চিত্র- পরিকল্পিতভাবে অনেক চৌকশ অফিসার একসাথে পাঠানো হয় বিডিআরে। পিলখানা হত্যাকান্ডের মাত্র ২ মাস আগে গুলজারকে ষ্টান্ড রিলিজ করে বিডিআরে যোগ দিতে বাধ্য করা হয়। রাইফেলস সপ্তাহের আগেই কানাঘুসা শুরু হয়- ২৫ তারিখে বিদ্রোহ হবে। তাই অনেক অফিসার নানা অযুহাত দিয়ে ছুটিতে চলে যায়। সেনাপ্রধান মইনের পিলখানা হত্যাকান্ডে সরাসরি জড়িত ছিল, যার প্রমান মেলে ঘটনার সাথে সাথেই আক্রান্ত ডিজি শাকিল ও অফিসাররা মইনকে ফোনে জানায়। মইন আশ্বাস দেন সেনা পঠাচ্ছি। অথচ তিনি কোনো ব্যবস্থা নেন নি, সময় ক্ষেপন করে হত্যার সুযোগ তৈরী করে দেয়। ম্ইন চলে যায় যমুনায় প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেখা করতে। তেজগাওয়ে এয়ারফোর্স রেডি, আর্মি রেডি সেনিাবাসে। কিন্তু হুকুম আসে না। বিকালে কিছু সেনা ও যানবাহন ধানমন্ডি পর্যন্ত পৌছে গেলেও অপারেশনের অনুমতি দেয়নি হাসিনা ও ম্ইন। ঘটনার ৪ দিন পরে ১ মার্চে হাসিনা সেনাকুঞ্জে গেলে মইন সেনা অফিসারদের ব্যাপক অসন্তোষের মুখে পরেন। এমনকি নিহতদের জানাজার সময় মইনকে চেয়ার তুলে মারতে যায় কেউ কেউ। উল্টো, সেনাকুঞ্জে যে সব সেনা অফিসার বিচার চেয়ে জোর গলায় বক্তৃতা করেছিল, প্রতিবাদ করেছিল- ভিডিও দেখে দেখে এমন প্রায় দু’শ জনকে চাকরীচ্যুত করেছে মইন অনেক অফিসারকে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র মামলায় কারাদন্ডও দেয়া হয়েছে। ৫. সজীব ওয়াজেদ জয়: শেখ হাসিনার এই পুত্রটি আগে থেকেই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর উপর ক্ষিপ্ত ছিলো। ২০০৮ সালের নির্বাচনের দেড় মাস আগে (১৯ নভেম্বর) হাসিনার উপদেষ্টা ও পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয় তার Stemming the Rise of Islamic Extremism in Bangladesh শীর্ষক নিবন্ধে উল্লেখ করেন, জোট সরকারের আমলে সেনাবাহিনীতে ৩০% মাদ্রাসার ছাত্ররা ঢুকানো হয়েছে। এদের নির্মুল করে সেনাবাহিনী পূনর্গঠন করতে হবে। পিলখানায় বিপুল সেনা অফিসার হত্যা করা হলে সেনাবাহিনীতে ব্যাপক সংস্কার করা সহজ হবে, এবং নতুন নিয়োগ করা যাবে- এমন বিবেচনায় জয় ভারতীয় প্রস্তাবটি গ্রহন করেন। পিলখানা হত্যার পরে জয় দুবাই যান এবং সেখানে ঢাকা থেকে আগত হত্যাকারীদের নগদ পুরস্কৃত করেন বলে খবর প্রকাশ। ৬. শেখ ফজলে নূর তাপস: হাসিনার ফুফাত ভাই শেখ ফজলুল হক মনির ছেলে এই তাপস। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট ঘটনায় তার পিতা নিহত হয়। তাপস ঢাকা-১২র নির্বাচন করতে গিয়ে বিডিআর এলাকায় ৫ হাজার ভোট প্রাপ্তির লক্ষে ৪৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি তোরাব আলী’র মাধ্যমে বিডিআর নেতাদের সাথে যোগাযোগ করে। তাপসকে নিশ্চয়তা দেয়া হয় যে, বিডিআর সকল সদস্য নৌকায় ভোট দিবে। তার বদলে তাপস আশ্বাস দিয়েছিল বিডিআরের দাবী দাওয়া মেনে নেয়ার ব্যবস্থা করবে। তাপসের বাসায় (স্কাই ষ্টার) বিডিআরের প্রতিনিধিরা এ নিয়ে একাধিক বৈঠক করে। এমনকি দাবীদাওয়া পুরন না হওয়ায় পিলখানা বিদ্রোহের আগের দিন তাপসকে সম্ভাব্য বিদ্রোহের কথা জানানো হয়। তাপস তাতে সম্মতি দেয় এবং তাদের সার্বিক সহায়তার আশ্বাস দেয়। পিতৃহত্যার প্রতিশোধ নেয়ার জন্য তাপসও এই ষড়যন্ত্রকে কার্যকর হিসাবে মনে করে। ২৪ ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যায় ফজলে নুর তাপসের ধানমন্ডিস্থ বাসায় ২৪ জন বিডিআর হত্যাকারী চুড়ান্ত শপথ নেয়। তোরাব আলী ও তার ছেলে লেদার লিটন পরিকল্পনাকারীদেরকে গোপন আস্তানা ও যাবতীয় সহায়তা প্রদান করে। বিডিআর বিদ্রোহের পরের দিন বিকালে শেখ তাপসের ঘোষনা প্রচার করা হয়, যাতে করে পিলখানার ৩ মাইল এলাকার অধিবাসীরা দূরে সরে যান। আসলে এর মাধ্যমে খুনীদের নিরাপদে পার করার জন্য সেফ প্যাসেজ তৈরী করা হয়েছিল। তাপসের এহেন কর্মকান্ডের বদলা নিতে তরুন সেনা অফিসাররা পরবর্তীতে তাপসের ওপর হামলা করে, কিন্তু ব্যর্থ হয়। পরে ৫ চৌকস কমান্ডো অফিসার চাকরীচ্যুত হয়ে কারাভোগ করছে। বিডিআর বিদ্রোহ নিয়ে সেনা তদন্ত এড়াতে তাপস কিছুদিন গা ঢাকা দেয় বিদেশে। ৭. মীর্জা আজম: যুবলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক এই হুইপটি পিলখানার ঘটনাকালে বিদ্রোহীদের সাথে সেল ফোনে কথা বলতে শুনা যাচ্ছিল। সে হত্যাকারীদের সুনির্দিষ্টভাবে নির্দেশ দেয় কর্নেল গুলজারের চোখ তুলে ফেলতে এবং দেহ নষ্ট করে ফেলতে (এর অডিও রেকর্ড আছে), কেননা র‌্যাবের পরিচালক কর্নেল গুলজারের নেতৃত্বে জেএমবির প্রধান শায়খ আবদুর রহমানকে ধরা হয়েছিল ও পরে ফাঁসি দেয়া হয়। শায়খ রহমান ছিল মির্জা আজমের দুলাভাই। আজম এভাবেই দুলাভাই হত্যার বদলা নেয় গুলজারকে হত্যা করে, এমনকি তার লাশও জ্বালিয়ে দেয়া হয়। এছাড়াও ২০০৪ সালে নানক-আজমের ব্যবস্থাপনায় শেরাটন হোটেলের সামনে গানপাউডার দিয়ে দোতলা বাসে আগুন লাগিয়ে ১১ বাসযাত্রী পুড়িয়ে মারার ঘটনা তদন্ত করে এই গুলজারই নানক-আজমকে সম্পৃক্ত করে। এর প্রতিশোধেই গুলজারে শরীর এমন ভাবে নষ্ট করা হয়, যেনো কেউ চিনতে না পারে। ১৫ দিন পরে ডিএনএ টেষ্ট করে চিহ্নিত করা হয় গুলজারের লাশ। ৮. জাহাঙ্গীর কবির নানক: এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী। উনি বিডিআরের ঘাতকদের নেতা ডিএডি তৌহিদের ক্লাশমেট। বিডিআর ট্রাজেডির আগে থেকেই তৌহিদ যোগাযোগ রাখত নানকের সঙ্গে। ঘটনার দিন ২০৪ মিনিট কথা বলে তৌহিদ-নানক। ২৫ তারিখ বিকালে পিলখানার বিদ্রোহীদের নিয়ে শেখ হাসিনার কাছে গিয়ে মিটিং করিয়ে নিরাপদে ফেরত পাঠায় সে। ডিএডি তৌহিদকে বিডিআরের অস্থায়ী ডিজি ঘোষণা করে নানক। কর্নেল গুলজার হত্যায় মীর্জা আজমের সাথে নানক সরাসরি জড়িত। কেননা, র‌্যাবের পরিচালক গুলজারই তদন্ত করে উদঘাটন করে- শেরাটনের সামনে দোতলা বাস জ্বালিয়ে ১১ যাত্রী হত্যা করা হয় নানকের নির্দেশে। ২৫ তারিখে বেঁচে যাওয়া লে: কর্নেল মঞ্জুর এলাহী পালিয়ে ছিল ম্যানহোলে। তার স্বজনরা এসএমএস মারফত খবর পেয়ে নানকের সাহায্য চায়। উদ্ধার করার বদলে ঐ অফিসারটিকে খুঁজে বের করে হত্যা করায় নানক। এটা সেনানিবাসের সবাই জানে। সেনাবাহিনীর তদন্ত পর্ষদ এড়াতে তদন্তের সময় নানক হঠাৎ বুকের ব্যথার অযুহাতে চিকিৎসার কথা বলে অনেকদিন সরে থাকে সিঙ্গাপুরে। এ নিয়ে সেনা অফিসারদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় ব্রিগেডিয়ার হাসান নাসিরকে চাকরীচ্যুত করে হাসিনা। ৯. সাহারা খাতুনঃ সুপরিকল্পিত বিডিআর ধংসযজ্ঞ সংগঠনের নিমিত্ত ভারতের পরামর্শে হাসিনার কেবিনেটে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী নিয়োগ করা হয় অথর্ব সাহার খাতুনকে। বিদ্রোহের দিন কোনো তৎপরতা ছিলো না সাহারার। বরং সেনা অভিযান ও পিলখানায় র‌্যাব ঢোকার অনুমতি চাইলে সাহারা খাতুন ‘না’ করে দেন। বিকালে বিদ্রোহীদের সাথে করে প্রেস ব্রিফিং করে এই মন্ত্রী। অথচ ডিজি শাকিলের কোনো খোঁজ নেয়ার চেষ্টা করেননি। কারন সে সব জানত। বিদ্রোহীদের সাথে সমঝোতার পরে রাতে তিনি পিলখানায় যেতে চাননি। বরং আইজি নূর মোহাম্মদ তার মেয়েকে পিলখানা থেকে উদ্ধারের জন্য একাই অভিযান চালাতে উদ্যত হলে ঠেলায় পরে সাহারা যান পিলখানায়, তাও প্রধানমন্ত্রীর বুলেটপ্রুফ গাড়িতে চড়ে। তিনি বিডিআর অফিসারদের পরিবার পরিজন উদ্ধার না করে কেবল আইজিপি নুর মোহাম্মদের কন্যাকে উদ্ধার করেন। অথচ বাকী পরিবার ঐ রাতের আঁধারে নির্যাতিত হয়। সাহারা খাতুনের সাথে প্রধানমন্ত্রীর মেডিকেল টীমের এম্বুলেন্স ও রেড ক্রিসেন্টের এম্বুলেন্স পিলখানায় ঢুকে। এরপরে পিলখানার বাতি নিভিয়ে ঘাতকদের ঐ এম্বুলেন্সে করে পিলখানার বাইরে নিরাপদ যায়গায় সরানো হয়। তখনও অনেক অফিসার আহত হয়ে পিলখানা নানাস্থানে লুকিয়ে ছিলো। কিন্তু সাহারা এদের উদ্ধার করেনি। কর্নেল এমদাদ, কর্নেল রেজা্, আফতাব ও কর্নেল এলাহীকে সাহারা পিলখানা ত্যাগ করার পরে হত্যা করা হয়। ১০. শেখ সেলিম: শেখ হাসিনার ফুফাত ভাই। ১৫ আগষ্ট ১৯৭৫ ঘটনায় সে ধরা পরেও রহস্যজনকভাবে বেঁচে যায়, কিন্তু তার ভাই শেখ মনি নিহত হয়। সেনাবাহিনীর ওপরে তারও রাগ ছিলো প্রচন্ড। তা ছাড়া ১/১১র পরে সেনারা ধরে নিয়ে যায়ে এই সেলিমকে, এবং ডিজিএফআই সেলে ব্যাপক নির্যাতন করে শেখ হাসিনার অনেক গোপন কথা, চাঁদাবাজি, বাসে আগুণ দেয়া সংক্রান্ত জবানবন্দী আদায় করে। এতে করে সেনাবাহিনীর ঐ সেটআপের উপর তার রাগ ছিল। বিডিআরের ঘটনার আগে বিদ্রোহী দলটি কয়েকদফা মিটিং করে শেখ সেলিমের সাথে। ১৩ ফেব্রুয়ারীতে শেখ সেলিমের বনানীর বাসায় এ ধরনের একটি মিটিং হয় বলে সেনা তদন্তে প্রমান পাওয়া গেছে। ১১. সোহেল তাজ: স্বরাষ্ট্রপ্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজ ষড়যন্ত্রের পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত ছিল। শেখ সেলিমের বাসায় অনুষ্ঠিত মিটিংয়ে সোহেল যোগ দেয়। বিদেশী হত্যাকারীদেরকে নিরাপদে মধ্যপ্রাচ্য, লন্ডন ও আমেরিকায় পৌছানোর দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল সোহেল তাজকে। জনগনকে ধোকা দেয়ার জন্য প্রচার করা ঘটনার সময় তাজ আমেরিকায় ছিল। এটি সম্পুর্ন মিথ্যা কথা। সে সময়ে তাজ ঢাকায়ই ছিল। ২৮ ফেব্রুয়ারী সন্ধায় সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে কয়েকজন হত্যাকারীসহ তাকে সিলেটে নিয়ে যাওয়া হয়, এবং সে রাতেই তাজ ওসমানী বিমানবন্দর থেকে হত্যাকারীদের সাথে নিয়ে বিদেশের পথে যাত্রা করে। সেই হেলিকপ্টারের একজন পাইলট ছিল লেঃ কর্নেল শহীদ। যাকে পরে হত্যা করা হয়, টাঙ্গাইলে রহস্যজনক হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মেজর জেনারেল রফিকুল ইসলামের সাথে। এছাড়া বিমানের বিজি ফ্লাইট ০৪৯ দু’ঘন্টা বিলম্ব করে চারজন খুনী বিডিআরকে দুবাইতে পার দেয়া হয়। এ খবরটি মানবজমিন ছাপে ৩ মার্চ ২০০৯. ১২. কর্নেল ফারুক খান: তিনি ছিলেন পিলখানা বিদ্রোহের ঘটনা তদন্তের লক্ষে গঠিত ৩টি কমিটির সমন্বয়কের দায়িত্বে। জনগণকে ধোকা দেয়ার জন্য প্রথমেই তিনি ঘোষণা করেন, পিলখানার ঘটনায় ইসলামী জঙ্গীরা জড়িত। এটা খাওয়ানোর জন্য সোবহান নামে এক লোককে ব্যবহারের চেষ্টা করা হয়। পরে কুলাতে না পেরে সেখান থেকে সরে আসেন। সেনাবাহিনীর তদন্তে অনেক সত্য কথা উঠে আসলেও তা আলোর মুখ দেখেনি এই ফারুক খানের জন্য। ধামাচাপা দেয়া হয় মূল রিপোর্ট। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে মূল রিপোর্ট বদল করে গোজামিলের রিপোর্ট তৈরী করান ফারুক খান। ১৩. হাজী সেলিম: লালবাগ এলাকার আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি। বিডিআর হত্যাকান্ডের সময় তিনি খুনীদের রাজনৈতিক সাপোর্ট দিয়েছেন। ফেব্রুয়ারীর মাঝামাঝি সময়ে হাজী সেলিম বেশ কিছু গোলাবারুদ ক্রয় করে, যা ভারতীয় খুনীরা প্রথমে ব্যবহার করে। ঘটনার দিন দুপুরে হাজী সেলিমের লোকেরা বিডিআর ৪ নং গেটে বিদ্রোহীদের পক্ষে মিছিল করে। ২৫ তারিখ রাতের আঁধারে পিলখানার বাতি নিভিয়ে দেয়াল টপকে সাধারন পোষাক পরে বিদ্রোহীরা লালবাগ এলাকা দিয়ে পালিয়ে যায় হাজী সেলিমের সিমেন্ট ঘাটকে ব্যবহার করে। হাজী সেলিমের সন্ত্রাসীরা স্থানীয় জনগনকে সেখান থেকে সরিয়ে রাখে। একটি বেসকারী টিভি চ্যানেল ২৫ তারিখ রাত ১টার সংবাদে উক্ত ঘটনার খবর প্রচার করে। সেই রিপোর্টে ঘটনার কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য তুলে ধরে, যাতে বলা হয় যে, বেশ কিছু স্পীডবোর্টকে তারা আসা যাওয়া করতে দেখেছে; কিন্তু তারা কাছাকাছি যেতে পারেনি যেহেতু আওয়ামীলীগের কিছু কর্মীরা তাদেরকে সেদিকে যেতে বাধা দেয়। ১৪. তোরাব আলী ও তার ছেলে লেদার লিটন: আওয়ামীলীগের ৪৮ নং ওয়ার্ডের সভাপতি। ২৮ ডিসেম্বর নির্বাচনের আগে এ্বই তোরাব আলী বিডিআর বিদ্রোহীদের পরিচয় করিয়ে দেয় এমপি তাপসের সাথে। মূল পরিকল্পনায় তোরাব আলীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয় স্থানীয় লজিষ্টিক সম্বয় সাধনের জন্য। তার বাড়িতেও বিদ্রোহীদের মিটিং হয়েছে। সে মূলত অবৈধ অস্ত্রের ডিলার। তার ছেলে সন্ত্রাসী লেদার লিটনের মাধ্যমে বিদ্রোহী বিডিআরদের পালিয়ে যাবার ব্যবস্থা করে। এ সংক্রান্ত খরচাদি আগেই তাকে দেয়া হয়। উক্ত লিটনকে ২ মাস আগে তাপস ও নানক জেল থেকে ছাড়িয়ে আনে। ২৫ ফেব্রুয়ারী রাত ৭টা থেকে ৯টার মধ্যে স্পীড বোটযোগে হত্যাকারীদের বুড়িগঙ্গা নদী পার করিয়ে দেয় লেদার লিটন। ১৫. মহিউদ্দিন খান আলমগীর: পিলখানার ঘটনার সময় এই সাবেক আমলা ও জনতার মঞ্চের প্রতিষ্ঠাতা মখা মেতে উঠেন বিভৎস উল্লাসে। বার বার ফোন করে খোঁজ নেন বিদ্রোহীদের কাছে, এর অডিও রেকর্ড আছে। এমনকি নিহতদের লাশ গোপন করার জন্য এসিড দিয়ে পুড়িয়ে দেয়ার হুকুমদাতা ছিলেন তিনি। যার বদৌলতে তাকে পরে প্রমোশন দেয়া হয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীতে। ১৬. হাসানুল হক ইনু: বাংলাদেশের রাজনীতির অন্ধকার গলির নেতা। তিনি ১৯৭৫ সালে অনেক সেনা অফিসার হত্যা করেছেন কর্নেল তাহের বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড থেকে। ১৯৭৫ সাল থেকে অদ্যাবধি দেশে সংঘটিত সকল সামরিক অভ্যুত্থানে তার যোগসাজস রয়েছে। পিলখানা হত্যাযজ্ঞের সময় তিনি তার ঘনিষ্ট বিডিআরদের ফোন করে হত্যায় উৎসাহ যুগিয়েছেন, এবং তাদের পরামর্শ দিয়েছেন কি করে লাশ গোপন করতে হবে। পাঁচ বছর হয়ে গেছে ৫৭ সেনা অফিসার সহ ৭৭ মানুষ হত্যার। বিডিআর বাহিনী বিলুপ্ত করা হয়েছে। ভারতীয় সহায়তায় বিজিবি গঠন করা হয়েছে, যারা এখন বিএসএফের সাথে ভাগাভাগি করে ডি্উটি করে! কয়েক হাজার বিডিআর সদস্যকে কোমরে দড়ি লাগিয়ে বিচারের প্যারেড করানো হয়েছে। জেল হয়েছে সবার। অন্যদিকে রাঘব বোয়লদের বিরুদ্ধে সাক্ষী গায়েব করতে ৫৩ জন বিডিআরকে পিটিয়ে হত্ো করা হয়েছে। কিন্তু ৫৭ সেনা হত্যার বিচার এখনো বাকী। যেনো তেনো কোনো বিচার চায়না সেনাবাহিনী। তাই হত্যা মামলাও আগাচ্ছে না। যতদিন লাগে লাগুক, হয় কঠিন বিচার হবে, নয়ত বদলা হবে, এটাই তাদের চাওয়া।। Share on facebook Share on email Share on print 8

সাবেক ডিজির স্ত্রীকে হত্যার রোমহর্ষক বর্ণনা]
25 Feb, 2014 সিপাহী ইব্রাহিম পিলখানা হত্যা মামলার ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। বিডিআর বিদ্রোহের পর গ্রেপ্তার হন তিনি। এরপর তিনি বিডিআরের তত্কালীন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদের স্ত্রীকে হত্যার দায় স্বীকার করেন। আদালতেও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তাঁর জবানবন্দিতে ওই দিনের নির্মমতার ও বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনার বাস্তব দৃশ্য ফুটে ওঠে। জবানবন্দির অংশবিশেষ হুবহু তুলে ধরা হল: সিপাহী মো. ইব্রাহিম ২০০৯ সালের ১২ মে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দেন। ইব্রাহিম জবানবন্দিতে বলেন, 'আমি ২০০৪ সালের আগস্টে বিডিআর এ ভর্তি হই। প্রক্ষিণের পর আমি ২০০৫ সালের জানুয়ারি মসে পিলখানার ৪৪ ব্যাটালিয়নের যোগ দেই। আমি ব্যাটালিয়নের ব্যারাকে থাকতাম। ২০০৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি তারিখে প্রধানমন্ত্রীর প্যারেডে আমি দর্শক হিসেবে উপস্থিত ছিলাম। তারপর সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত দরবার হলের স্টেজ সাজানোর কাজ করি। কাজ শেষে আমি রাতে সৈনিক লাইনে থাকি। পরের দিন ২৫ ফেব্রুয়ারি দরবার হলে ছবি তোলার দায়িত্ব আমার ছিল। তাই ঐ দিন সকাল ৮টার সময় আমি ৪৪ ব্যাটালিয়নের অফিসে যাই এবং সেখান থেকে সরকারি ক্যামেরা নিয়ে দরবার হলে যাই।' জবানবন্দিতে আরও বলা হয়, 'ডিজি স্যার ৯টায় দরবারে আসেন। ডিজি স্যার ১৫/১৬ মিনিট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বক্তৃতা করার পর যখন ডালভাত অপারেশন নিয়ে কথা বলতে শুরু করেন তখন স্টেজের বাম পার্শ্বে রান্না ঘরের পাশ দিয়া ১৩ রাইফেল ব্যাটালিয়নের সিপাহী মাঈন এসএমজি নিয়ে দেৌড়ে স্টেজে উঠে ডিজি স্যার-এর দিকে অস্ত্র তাক করে। সাথে সাথে ৪৪ রাইফেল ব্যাটালিয়নের সিপাহী কাজল রাইফেল নিয়ে একই দিক দিয়া স্টেজে উঠে। সিপাহী কাজল ডান হাত উঁচু করে বিডিআর সবাই এক হও বলে স্লোগান দেয়। সিপাহী মঈন তখন কাঁপতে কাঁপতে অস্ত্র নিয়ে মাটিতে পড়ে যায়। এর কিছুক্ষণ পর ২/৩ জন বিডিআর রাইফেল হাতে একই দিক দিয়ে স্টেজে উঠে আসে। তখন আমি স্টেজের এক কোনায় পিলারের সাথে দাঁড়ানো। কর্নেল মজিবুল হক ও কর্নেল আনিসুর রহমান ডিজি স্যারকে রক্ষা করার জন্য স্টেজে উঠে আসে। তখন একজন বিডিআর জওয়ান রাইফেলের বাট দিয়া কর্নেল আনিসুরকে মারলে তিনি স্টেজে পড়ে যান। এরকম অবস্থায় দরবার হলে থাকা সকল আর্মি অফিসার, ফোর্স জেসিও দাঁড়িয়ে যায়। হঠাত্ স্টেজের উপর ৩/৪ রাউন্ড গুলি হয় ফাকা গুলি। দরবারের সব বিডিআর যারা নিচে বসা ছিল, যারা পেছনে চেয়ারে ছিল সবাই দৌড়ে পালাতে থাকে। ডিজি স্যার তখন সকল সিএসএমদেরকে নিজ নিজ ফোর্সকে সামলানোর নির্দেশ দেন এবং পৃথক পৃথক দরবার নিয়ে দাবি-দাওয়া শোনার নির্দেশ দেন। গুলির শব্দে অনেক অফিসার দরবারের স্টেজের পেছনের পর্দার আড়ালে লুকান আবার অনেক অফিসার দরবার হল থেকে পালিয়ে যান। তারপর ৪৪ রাইফেল ব্যাটালিয়নের সিপাহী সেলিম স্টেজের বাম পাশ দিয়া স্টেজে উঠে আসে। সে হ্যান্ডমাইক দিয়ে পর্দার আড়ালে থাকা-লুকিয়ে থাকা অফিসারদেরকে বের হতে বলে। সে ইংরেজিতে বলে- 'অল অফিসার্স ওয়ান লাইনে ফালন।' সে ইংরেজিতে আরও কিছু বলে। আমি সব বুঝি নাই। জানালা দিয়া দরবার হলের বাহিরে কেনো গেঞ্জি এবং অস্ত্র হাতে অনেক বিডিআর জওয়ানকে দেখি। সিপাহী সেলিমের এনাউন্সে প্রথমে তিন জন মহিলা অফিসার ৪/৫ জন পুরুষ অফিসার বের হয়। তারপর আস্তে আস্তে ডিজি, ডিডিজি, সেক্টর কমান্ডারগণসহ আনুমানিক ১৫/১৬ জন অফিসার বের হয়। সিপাহী সেলিম সব অফিসারদেরকে বলে 'গো ওয়ান বাই ওয়ান'। দরবারের ভিতরে তখন ২০/২২ জন অস্ত্রধারী বিডিআর এবং অস্ত্র ছাড়া আরও কয়েকজন বিডিআর সব অফিসারদেরকে লাইন ধরে পশ্চিম দিকের গেইটের দিকে নিয়া যায়। বাহিরে তখন প্রচুর গোলাগুলি হচ্ছিল। আমি তখন স্টেজের সামনে ছিলাম। অস্ত্রের মুখে অফিসারদের লাইনের প্রথমে ডিজি তারপর সেন্ট্রাল এস,এমসহ অন্য অফিসাররা ছিলেন। অফিসারদের লাইন যখন বের হচ্ছিল, দরজার কাছে আসতেই ব্রাশ ফায়ার হয়। সাথে সাথে ডিজি স্যার, সেন্ট্রাল এস,এম পড়ে যায়। এরপর আবার অনেক গুলি হয়-ব্রাশ ফায়ার হয়। তখন ৫/৬ জন অফিসার পড়ে যায়। তারপর সিপাহী সেলিম আমাকে একটা রাইফেল দিয়ে গুলি করতে বলে। আমি তখন দক্ষিণ গেইটের কাছে। দরবারের ভিতরের দক্ষিণ দিকের গেইট। তারপর আমি রাইফেল দিয়ে একজন অফিসারকে গুলি করি। সে পড়ে যায়। আমি এই অফিসারের নাম জানি না। তারপর অস্ত্র সেখানে ফেলে ৪৪ রাইফেল ব্যাটালিয়নের অফিসে চলে যাই। সেখানে প্রায় ১১টা পর্যন্ত থাকি। বাহিরে গাড়ি দিয়ে মাইকিং করে সবাই অস্ত্র নিতে বলে। কোন বিডিআর অস্ত্র ছাড়া থাকলে তাকে গুলি করে মারা হবে। আমি তখন অফিস হতে বের হয়ে সেন্ট্রাল কোয়ার্টার গার্ড-এ যাই। অস্ত্র আনার জন্য। আমি একটা রাইফেল এবং ২০ রাউন্ড গুলি নেই। অস্ত্র নিয়ে আমি হাটতে হাটতে সদর ব্যাটালিয়নের অফিসের সামনে আসলে ১৫/২০ জন সশস্ত্র বিডিআরকে দেখি। এর মাঝে আমি ৪৪ ব্যাটালিয়নের সিপাহী সেলিম, সিপাহী আলতাফ, সিপাহী হাবিব, সিপাহী ওবায়দুরকে চিনতে পারি। প্রায় সাড়ে ১১টার দিকে আমি, সিপাহী সেলিম, সিপাহী হাবিব, সিপাহী আলতাফ, সিপাহী ওবায়দুর, সিপাহী শাহীনসহ ১৫/২০ জন বিডিআর ডিজি স্যারের বাংলোতে যাই। বাংলোর গেইটের সামনে ভবন গার্ড হাবিলদার বাবুল বাধা দিলে সিপাহী সেলিম পায়ে গুলি করে বাবুলকে ফেলে দেয়। বাংলাতো গুলি। ফাঁকা ফায়ার করতে থাকি। আমি ২ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করি। ডিজি ম্যাডাম (নাজনীন শাকিল শিপু) দোতলা হতে নেমে আসেন। পড়নে ম্যাক্সি ছিল। ম্যাডামকে সিঁড়িতে হাবিব, আলতাফ, সেলিম আর ২/৩ জন ধরে ফেলে এবং মুখ বেধে ফেলে। আমি আর ওবায়দুর পাশে দাঁড়াইয়া ছিলাম। তারপর ম্যাডামকে কুক হাউজে নিয়ে সিপাহী হাবিব, সিপাহী সেলিম, সিপাহী ওবায়দুর, আমিসহ ৩/৪ জন মিলে লাঞ্ছিত করি। এরপর ২ জন সিপাহী দোতালায় উঠে গিয়ে ফাঁকা ফায়ার করে এবং জিনিসপত্র তছনছ করে। এরপর আরও ২/৩ জনসহ আমি দোতালায় যাই। গিয়ে দেখি ৩ জন বিডিআর ১৫/২০ বছরের একটি মেয়েকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করতেছে। মেয়েটির কান্নাকাটির জন্য আমি দুই রাউন্ড গুলি করি। মেয়েটি মারা যায়। হঠাৎ নিচে গুলির শব্দ পাই। নিচে নেমে দেখি ম্যাডামকে গুলি করে হত্যা করা হয়। সিপাহী সেলিমসহ আরও ২/৩ জন গুলি করে।' উৎসঃ কালের কন্ঠ Share on facebook Share on email Share on print 4