শনিবার, ১১ জানুয়ারী, ২০১৪


হাসিনা-খালেদাকে ফের যুক্তরাষ্ট্রের চিঠি 11 Jan, 2014
চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসন ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের তাগিদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে চিঠি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির সিনেটের ফরেন রিলেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান রবার্ট মেনেন্ডেজ পৃথকভাবে দুই নেত্রীকে চিঠি পাঠিয়েছেন। চিঠিতে রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটানো, সহিংসতা বন্ধ ও অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনে আলোচনায় বসার তাগিদ দেয়া হয়েছে। চিঠিতে বাংলাদেশের গার্মেন্টসের শ্রম পরিবেশ উন্নয়নেরও তাগিদ দেয়া হয়। পৃথকভাবে পাঠানো ওই দুটি চিঠিতে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সম্বোধন করে লিখেছেন, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থায় আমার উদ্বেগের কথা ব্যক্ত করতে ও আপনার প্রতিপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসে পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে দেশকে এগিয়ে নেয়ার আহ্বান জানাতে লিখছি আমি। বর্তমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে এবং তা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ও অর্থনৈতিক ভবিষ্যতের ওপর দীর্ঘমেয়াদী নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তিনি লিখেছেন, ভবিষ্যত নেতৃবৃন্দকে নির্বাচিত করতে পারে, এমন একটি স্থায়ী, স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য রাজনৈতিক প্রক্রিয়া বাংলাদেশের জনগণের প্রাপ্য। নির্বাচনপূর্ব ও নির্বাচনের দিন যে সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে, তার তীব্র নিন্দা জানাই আমি। কোন পরিস্থিতিতেই সহিংসতা রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির গ্রহণযোগ্য ও বৈধ বহিঃপ্রকাশ নয়। সড়কে সহিংসতা অবশ্যই অবিলম্বে বন্ধ হতে হবে ও দলগুলোকে শান্তিপূর্ণভাবে মতামত প্রকাশের জন্য অবশ্যই রাজনৈতিকভাবে সুযোগ করে দিতে হবে। ওই চিঠিতে তিনি আরও লিখেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। আমাদের এ দুটি দেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বর্তমানে ৬০০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে এবং মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশে গুরুত্বপূর্ণ দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ করেছে। তিনি লিখেছেন, চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা অর্থনীতিতে গুরুতর প্রভাব ফেলেছে ও তা বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আস্থাকে আরও দুর্বল করে দেবে। তলানির দিকে এ ঘূর্ণায়মান এ পরিস্থিতি অবসানের লক্ষ্যে আমি দৃঢ়ভাবে আপনাকে নতুন অবাধ, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যাপারে আলোচনা শুরুর আহ্বান জানাচ্ছি। বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক পূর্বে কখনও এতোটা সুদৃঢ় ছিল না। আমরা ক্রমবর্ধমানভাবে অভিন্ন বহু স্বার্থে পরস্পরের অংশীদার। কিন্তু, বর্তমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা ও সংশ্লিষ্ট সহিংসতা আমাদের অভিন্ন অর্জনকে বিশেষভাবে হুমকির মুখে ফেলছে। একই সঙ্গে বহু ইস্যুতে যেমন- সন্ত্রাসবাদ ও পাইরেসির বিরুদ্ধে লড়াই, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা, দারিদ্র্য দূরীকরণ ও খাদ্য নিরাপত্তা ইস্যুতে আমাদের অব্যাহত অগ্রগতি হুমকির মুখে পড়ছে। আমরা বাংলাদেশে শ্রম পরিস্থিতি উন্নয়নেও একসঙ্গে কাজ করছি। অগ্নিকাণ্ড ও ভবন নিরাপত্তা ইস্যুতে অগ্রগতি হলেও, বেশ কিছু ইস্যুতে এখনও অনেক কাজ বাকি। ওই চিঠির শেষদিকে তিনি লিখেছেন, বিশ্ব বাংলাদেশের প্রতি লক্ষ্য রাখছে। আমাদের গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের দৃঢ় সমর্থক হিসেবে আমি নতুন করে আলোচনা শুরুর জন্য পুনরায় আহ্বান জানাচ্ছি, যা একটি অবাধ, নিরপেক্ষ, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পথে অগ্রসর হবে এবং যার মাধ্যমে রাজনৈতিকভাবে প্রণোদিত সহিংসতার অবসান হবে। উৎসঃ manab zamin Share on facebook Share on email Share on print

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন