শনিবার, ১১ জানুয়ারী, ২০১৪


মন্ত্রী এমপিদের যত লাইসেন্স পারমিট 10 Jan, 2014
মন্ত্রী, এমপি মানেই কি সরকারের বিভিন্ন লাইসেন্স পারিমট পাওয়ার মূল দাবিদার। টিভি, ব্যাংক, বীমা, বিদ্যুৎ কেন্দ্র পাওয়ার নীতিমালা থাকেব না? গত পাঁচ বছরে সরকারের দামী সব লাইসেন্স যারা পেয়েছেন তাদের সঙ্গে প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে সরকারি দলের এমপি, বড় নেতারা কোনো না কোনোভাবে আছেন। লিখেছেন হাবিবুল্লাহ ফাহাদ সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মহিউদ্দীন খান আলমগীর গত পাঁচ বছরে বেসরকারি ব্যাংক, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কনটেইনারবাহী জাহাজের লাইসেন্স নিয়েছেন। তাঁর মতো নামে-বেনামে লাইসেন্স পারমিট নেওয়ার কাতারে সামিল ছিলেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, বন ও পরিবেশ মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ, চিফ হুইপ আব্দুস শহীদ, খুলনা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী রুহুল হকসহ মহাজোটভুক্ত দলগুলোর অনেক মন্ত্রী, এমপি। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের অনেক কেন্দ্রীয় নেতা, আওয়ামী লীগ ঘরানার ব্যবসায়ী, বুদ্ধিজীবী, পেশাজীবীরাও সামিল ছিলেন এই কাতারে। এসব ব্যবসায় জড়িয়ে গত পাঁচ বছরে অনেক মন্ত্রী-সংসদ সদস্যের সম্পদের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে দেশজুড়ে। জনপ্রতিনিধি হয়ে সরকারের সঙ্গে ব্যবসা করে মন্ত্রী-সংসদ সদস্যরা সংবিধান লঙ্ঘন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী জনপ্রতিনিধিরা সরকারের সঙ্গে ব্যবসা করলে তারা মন্ত্রী, সংসদ সদস্য হওয়ার অযোগ্য। তাদের সাংসদ পদ থাকার সুযোগ নেই। এমনকি নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ারও সুযোগ নেই। কিন্তু নির্বাচন কমিশন কেন তাদের প্রার্থী হওয়ার সুযোগ দিল তা বোধগম্য নয়। জানতে চাইলে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ-টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সরকারে থেকে মন্ত্রী-এমপিরা বেসরকারি খাতে ব্যবসার যে লাইসেন্স নিয়েছেন তা আইনগত অবৈধ। ক্রমাগত এসব দুর্নীতির কারণে বেসরকারি খাত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বেসরকারি খাতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা উৎসাহ হারাচ্ছেন। বিচারহীনতার সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে। তিনি বলেন, প্রতিযোগিতামূলক বাজার থেকে ক্রেতার অধিকার আছে উন্নতমানের পণ্যটি কেনার। কিন্তু সরকারের ক্ষমতাধররা ব্যবসায় নেমে পড়ায় প্রতিযোগিতার বাজার নষ্ট হচ্ছে। ভোক্তারা নিজেদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এভাবে চলতে থাকলে দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য খাতে দুর্নীতিকে উৎসাহিত করা হবে। সূত্রে জানা যায়, গত পাঁচ বছরে সরকার নয়টি বেসরকারি ব্যাংক, ১৬টি বীমা কোম্পানির লাইসেন্সও বেশিরভাগ দলীয় লোকজন পেয়েছেন। ৩১টি টিভি লাইসেন্সের বেশিরভাগই জুটেছে মন্ত্রী-সংসদ সদস্য ও দলীয় নেতাদের। এছাড়া ১৪টি রেডিওর অনুমোদনও দেয়া হয়েছে মহাজোট সরকারের সময়ে। বেসরকারি খাতে বিনা দরপত্রে স্থাপন হওয়া ৫৬টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের বেশ কয়েকটিও পেয়েছেন মন্ত্রী-সংসদ সদস্য ও দলের প্রভাবশালী নেতারা। নতুন জাহাজ তৈরির ৩২টি লাইসেন্সও নিয়েছেন মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের প্রভাবশালীরা। বেসরকারি ব্যাংকের অনুমোদন পেয়েছেন যারা: এবার সরকার নন-রেসিডেন্ট বাংলাদেশি (এনআরবি) মালিকানাধীন তিনটি ব্যাংক অনুমোদন পেয়েছে। বাণিজ্যিক ব্যাংক অনুমোদন পেয়েছে আরও ছয়টি। এর মধ্যে এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের চেয়ারম্যান যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা ফরাসত আলী। অন্য দুটি ব্যাংকের একটির চেয়ারম্যান যুক্তরাজ্য প্রবাসী ইকবাল আহমেদ এবং অন্যটির চেয়ারম্যান যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগে নেতা নিজামী চৌধুরী। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর পেয়েছেন ফারমার্স ব্যাংকের লাইসেন্স। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আয়কর উপদেষ্টা এম মনিরুজ্জামান খন্দকার পেয়েছেন মিডল্যান্ড ব্যাংক। জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ পেয়েছেন ইউনিয়ন ব্যাংক। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির নেতা আবদুল মান্নান চৌধুরী সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের অনুমোদন পেয়েছেন। রংপুর-৫ আসন থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এইচএন আশিকুর রহমান পেয়েছেন মেঘনা ব্যাংকের অনুমোদন। তার সঙ্গে আছেন আরেক সংসদ সদস্য নসরুল হামিদ বিপু। বীমা কোম্পানিরও মালিক মন্ত্রী-সংসদ সদস্যরা সরকারের শেষ সময়ে দেয়া হয়েছে ১৬টি বীমা কোম্পানির অনুমোদন। এর ১৪টি জীবন বীমা ও দুটি সাধারণ বীমা। এর মধ্যে লাইসেন্স পেয়েছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মেজর জেনারেল (অব.) হাফিজ মল্লিকের বেস্ট লাইফ, সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান আজিজ খানের তাইয়ো সামিট লাইফ, এপেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান সৈয়দ মঞ্জুর এলাহীর গার্ডিয়ান লাইফ, সংরক্ষিত নারী আসনে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ফরিদুন্নাহার লাইলীর জেনিথ ইসলামী লাইফ, জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদের চার্টার্ড লাইফ, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আওয়ামী লীগ নেতা মেজর (অব.) রফিকুল ইসলামের প্রটেকটিভ লাইফ, রেলমন্ত্রী মুজিবুল হকের সোনালী লাইফ, কানাডা প্রবাসী আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল আহাদের এনআরবি গ্লোবাল লাইফ, চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা এম নাসির উদ্দিনের মার্কেন্টাইল লাইফ, সিকদার গ্রুপের চেয়ারম্যান জয়নাল হক সিকদারের সিকদার ইনস্যুরেন্স কোম্পানি এবং বাংলাদেশ সেনাকল্যাণ সংস্থার সেনাকল্যাণ ইনস্যুরেন্স কোম্পানি। এছাড়া আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফের সুপারিশে ট্রাস্ট ইসলামী লাইফের লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। কোম্পানির চেয়ারম্যান অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী আওয়ামী লীগের নেতা জাকের আহমেদ ভুঁইয়া। আলফা ইসলামী লাইফের লাইসেন্স দেয়া হয়েছে নাজিমউদ্দিন আহমেদ নামের এক তৈরী পোশাক ব্যবসায়ীকে। রাজশাহী-৬ আসনের সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলমের পেছনে রয়েছেন। ডায়মন্ড লাইফ ইনস্যুরেন্সের লাইসেন্স পেয়েছেন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইসহাক আলী খান পান্না। যমুনা লাইফ ইনস্যুরেন্সের লাইসেন্স পেয়েছেন আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এবং ভৈরবের সংসদ সদস্য নাজমুল হাসানও এর সঙ্গে যুক্ত আছেন বলে জানা গেছে। এ ছাড়া স্বদেশ লাইফের লাইসেন্স পেয়েছেন শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরী। দলীয় বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম বাবু পেয়েছেন সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়। ’৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রটোকল অফিসার আলাউদ্দিন চৌধুরী নাসিম পেয়েছেন ফেনী ইউনিভার্সিটির অনুমোদন। খুলনা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক নর্থ ওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি এবং ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এনামুল হক শামীম পেয়েছেন চট্টগ্রামের পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির লাইসেন্স। ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটির মালিক মহীউদ্দীন খান আলমগীর। রাজশাহী বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর এপিএস ও ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুজ্জামান শেখরসহ কয়েকজন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা। সিলেটের গোলাপগঞ্জের নর্থ-ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইকবাল আহমেদ চৌধুরী। চুয়াডাঙ্গার ফার্স্ট ক্যাপিটাল ইউনিভার্সিটির উদ্যোক্তা সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার। কিশোরগঞ্জের ঈশা খাঁ ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সঙ্গে আছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য দুর্গাদাস ভট্টাচার্য্য। শরীয়তপুরের জেডএইচ সিকদার সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ইউনিভার্সিটির মালিক আওয়ামী ঘরানার ব্যবসায়ী জয়নুল হক সিকদার। টিভি চ্যানেলের মালিকও তারা: সরকারের সময় দেয়া ৩১টি টিভি লাইসেন্সের মধ্যে সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদার পেয়েছেন মোহনা টিভি, গাজী গোলাম দস্তগীর গাজী টিভি, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী বিজয় টিভি, বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর বেসরকারি খাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ইনডিপেন্ডেন্ট টিভি, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের ভাই সৈয়দ সাফায়েত চ্যানেল নাইন (পরে বিক্রি করে দিয়েছেন), আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলামের ভাই মোরশেদুল ইসলাম সময় টেলিভিশন, সাভার উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ঢাকা জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান হাসিনা দৌলা চ্যানেল সিক্সটিন, এফবিসিসিআইয়ের সদ্যবিদায়ী সভাপতি ও আওয়ামী ঘরানার ব্যবসায়ী একে আজাদের চ্যানেল ২৪, বস্ত্র খাতের ব্যবসায়ী ও হালে বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগ নেতা মো. হারুন-উর রশীদ এশিয়ান টিভি, সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলমের রেনেসাঁ টিভি, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক স¤পাদক সংসদ সদস্য খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর রংধনু টিভি, সংসদ সদস্য সুকুমার রঞ্জনের সুপারিশ করা নিউ ভিশন টিভি, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরীর ঢাকা বাংলা মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশনের ঢাকা-বাংলা টেলিভিশন; বন ও পরিবেশমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সুপারিশ করা গ্রিন টিভি, সাবেক প্রতিমন্ত্রী এবি তাজুল ইসলামের সুপারিশ করা তিতাস টিভি; সংসদ সদস্য ও কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমের সুপারিশ করা মিলেনিয়াম টিভি, এটিভি, যার মালিক বনানীর চেয়ারম্যানবাড়ির আব্বাস উল্লাহ শিকদার, আলোচিত বিএসবি ফাউন্ডেশনের ক্যামব্রিয়ান টিভি চ্যানেল, এটি হবে শিক্ষা চ্যানেল, যার চেয়ারম্যান হলেন এমকে বাশার; ব্যবসায়িক নেতা আনিসুল হকের মালিকানাধীন জাদু মিডিয়া লিমিটেডের জাদু টিভি, মিডিয়া বাংলাদেশ লিমিটেডের আমার গান, যার চেয়ারম্যান হলেন তরুণ দে এবং ব্রডকাস্ট ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ লিমিটেডের চ্যানেল টোয়েন্টি ওয়ান, এর সঙ্গে মহাজোটের শরিক জাসদের কয়েকজন আছেন। এছাড়া বাংলা টিভি (বাংলা টিভি লিমিটেড) নামে নতুন আরেকটি চ্যানেলের অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এই চ্যানেলের মালিক সামাদুল হক। তিনি লল্ডনে বাংলা টিভি নামে একটি চ্যানেলের কর্ণধার। আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা আবদুল মালেক উকিলের ছেলে বাহারউদ্দিন খেলনের স্ত্রীর নামে দেওয়া হয় চ্যানেল ৫২ (বায়ান্ন)। এই টেলিভিশনের লাইসেন্স। এর সঙ্গে রয়েছে বেঙ্গল গ্রুপ। বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনেও রাজনৈতিক বিবেচনা বিদ্যুতের ঘাটতি কমাতে ক্ষমতায় এসে বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে চুক্তি করেছিল মহাজোট সরকার। সেই সুযোগে নিজের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান সামিট গ্রুপের পক্ষে ছয়টি বিদ্যুৎকেন্দ্র্র স্থাপনের কাজ পান সাবেক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী ফারুক খানের বড়ভাই আজিজ খান। ছোট বড় মিলিয়ে মোট ছয়টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ পেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এর মধ্যে প্রতিটি চারশ’ মেগাওয়াট করে বিবিয়ানা-১ ও বিনিয়ারা ২ বিদ্যুৎকেন্দ্র, ৪৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার মেঘনাঘাট-২, ১০২ মেগাওয়াট ক্ষমতায় নারায়ণগঞ্জের মদনগঞ্জে, ১১৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার খুলনা কেপিসিএল, সৈয়দপুরে ১০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুকেন্দ্র উল্লেখযোগ্য। রাজশাহী-৪ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য এনামুল হকের মালিকানাধীন নর্দার্ন পাওয়ার সলিউশন লিমিটেডও (এনপিএসএল) বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ পায়। এছাড়া শিকদার গ্রুপের পাওয়ারপ্যাক হোল্ডিংসও বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ পেয়েছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা এনামুল হক শামীমের অংশীদারিত্ব রয়েছে এই প্রকল্পে। এছাড়া মিরপুরের সাংসদ আসলামুল হক আসলাম, সাবেক এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবীর নানক, হুইপ মির্জা আজমও বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের কাজ পেয়েছেন। জাহাজ নির্মাণেও পিছিয়ে নেই মন্ত্রী-সংসদ সদস্যরা জাহাজ নির্মাণ খাতেও লাইসেন্স নিয়েছেন মহীউদ্দীন খান আলমগীর, সংসদ সদস্য ও প্রধানমন্ত্রী আত্মীয় শেখ হেলাল উদ্দিন, আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক বিশেষ সহকারী আওলাদ হোসেন, জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপু। এ ছাড়া বন ও পরিবেশমন্ত্রী হাছান মাহমুদের স্ত্রী নুরান ফাতিমা ও চট্টগ্রামের সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য মাহজাবিন মোরশেদের বাবা সানাউল্লাহ চৌধুরী ও দেবর ফয়সাল মুরাদ ইব্রাহীম লাইসেন্স পেয়েছেন। টেলিযোগাযোগ খাতেও আধিপত্য টেলিযোগাযোগের আন্তর্জাতিক লং ডিস্টেন্স গেটওয়ে (আইজিডব্লিউ), আন্তঃসংযোগ এক্সচেঞ্জ (আইসিএক্স) এবং আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট গেটওয়ের (আইআইজি) এই তিন বিভাগে ৮২টি গেটওয়ে লাইসেন্স নিয়েছেন। সাবেক মন্ত্রী ফারুক খানের পরিবারিক প্রতিষ্ঠান সামিট গ্রুপ এখানেও এগিয়ে। সামিট ছাড়া ক্যাপস্টন কমিউনিকেশন্স লিমিটেড এবং ভারটেক্স কমিউনিকেশন্স লিমিটেডের নামে একাধিক লাইন্সেস নিয়েছেন মন্ত্রী। এছাড়া কয়েক হাজার কোটি টাকার বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট প্রকল্পের কনসালট্যান্ট নিয়োগের বাংলাদেশি অংশীদারও সামিট। ন্যাশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন নেটওয়ার্ক বা এনটিটিএন লাইসেন্সও পেয়েছে সামিট টেলিকমিউনিকেশন্স। এছাড়া ইন্টারন্যাশনাল টেরেস্ট্রিয়াল কেবল বা আইটিসি লাইসেন্সও পেয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। সাবেক মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের ছেলে সৌমেন সেনগুপ্ত পেয়েছেন আইজিডব্লিউ লাইসেন্স। তার প্রতিষ্ঠানের নাম সেনগুপ্ত টেলিকম। সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী আফম রুহুল হকের ছেলে জিয়াউল হক পেয়েছেন মস টেলিকমের নামে আইজিডব্লিউ লাইসেন্স। পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী দীপংকর তালুকদার নিজ নামে একাধিক ক্যাটাগরির গেটওয়ে লাইসেন্স নিয়েছেন। নিজ নামে লাইসেন্স নিয়েছেন নারায়ণগঞ্জের সংসদ সদস্য গাজী গোলাম দস্তগীর। গাজী নেটওয়ার্কের নামে তিনি পেয়েছেন আইসিএক্স লাইসেন্স। জাহাঙ্গীর কবীর নানক মেয়ে ও স্ত্রীর নামে লাইসেন্স নিয়েছেন। তাঁর প্রতিষ্ঠানের নাম রাতুল টেলিকম। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু ভিশন টেলের মালিক। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম লাইসেন্স নিয়েছেন সিগমা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের নামে। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা গওহর রিজভীর ভাই সৈয়দ জওহর রিজভীর ওয়ান এশিয়া অ্যালায়েন্স লাইসেন্স পেয়েছে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে। টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন চার ক্যাটাগরির টেলিযোগাযোগ লাইসেন্সের সবক’টিই নিয়েছেন। উৎসঃ ঢাকাটাইমস Share on facebook Share on email Share on print 10

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন