মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০১৪


শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চ নিয়ে যা বললেন আসিফ মহিউদ্দিন
28 Jan, 2014 কাদের মো্ল্লার ফাঁসির দাবিতে শাহবাগ গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম আহবায়ক ও ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিন জার্মান রেডিও ডয়চে ভেলের কাছে শাহবাগ আন্দোলন নিয়ে তার অভিজ্ঞতার কথা বলেছেন। ব্লগার আসিফ শাহবাগ আন্দোলন নিয়ে যা বলেছেন তার কিছু অংশ পাঠকদের জন্য প্রকাশিত হলো। আন্দোলনটা ‘খেয়ে ফেলেছে' জার্মানির বিলেফেল্ড শহরে রবিবার দুপুরে ডয়চে ভেলের মুখোমুখি হন ব্লগার আসিফ মহিউদ্দীন৷ বিলেফেল্ড তখন তুষারের চাদরে ঢেকে আছে৷ আসিফের জন্য এই অভিজ্ঞতা একেবারেই নতুন৷ শীতটাও এখন অসহনীয় পর্যায়ে রয়েছে৷ কিন্তু শুভ্র তুষার কিংবা ঠান্ডার চেয়ে শাহবাগ নিয়েই কথা বলতে বেশি আগ্রহী ছিলেন তিনি৷ তাঁর মতো আরো অনেক ব্লগারের আহ্বানে ২০১৩ সালের পাঁচ ফেব্রুয়ারি ঢাকার শাহবাগ চত্বরে সমবেত হন কয়েক হাজার মানুষ৷ একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে শুরু হওয়া এই আন্দোলন দ্রুতই গণআন্দোলনে রূপ নেয়৷ শাহবাগের এই আন্দোলনকে সাংস্কৃতিক বিপ্লব মনে করেন আসিফ মহিউদ্দীন৷ তিনি বলেন, "জনগণের সাংস্কৃতিক মানের উন্নয়ন ঘটেছে৷ জনগণের রাজনৈতিক চেতনা তৈরি হয়েছে৷ এই বিষয়টি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ৷ সবচেয়ে বড় কথা, তরুণরা উজ্জীবিত হয়েছে৷ সেই দিক থেকে শাহবাগ আন্দোলন সফল৷" তবে হতাশাও রয়েছে৷ শাহবাগ আন্দোলন খুব বেশি দিন ব্যাপক জনসমর্থন ধরে রাখতে পারেনি৷ বরং এই নিয়ে রাজনীতি হয়েছে প্রচুর৷ তিনি বলেন, "আমরা যখন শাহবাগ আন্দোলন শুরু করি, তখন আমাদের স্বপ্ন ছিল বিশাল৷ আমরা মনে করেছিলাম, বাংলাদেশকে পাল্টে দেবো৷ নতুন বাংলাদেশের জন্ম হবে৷ কিন্তু রাজনৈতিক দল এবং আমাদের রাজনীতিক নেতারা আসলে আমাদের আন্দোলনটা খেয়ে ফেলেছে৷" সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়ানোর অভিযোগ শাহবাগ আন্দোলনের এক পর্যায়ে বিভিন্ন মহল থেকে বাংলা ব্লগারদের ‘ইসলাম ধর্ম বিরোধী নাস্তিক' হিসেবে আখ্যা দেয়ার চেষ্টা শুরু হয়৷ বিশেষ করে ব্লগার আসিফ মহিউদ্দীনসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে উগ্র ইসলামপন্থিরা প্রচার করতে থাকেন, তাঁরা লেখালেখির মাধ্যমে সুনির্দিষ্টভাবে ইসলামধর্মে বিশ্বাসীদের আঘাত করেছেন৷ আসিফের নাম এক্ষেত্রে সর্বাগ্রে ছড়িয়ে পড়ে৷ তিনি বলেন, "আমাদের রাষ্ট্র ব্যবস্থার উপর ধর্ম যখন আগ্রাসন চালায়, আমাদের ভাষার উপরে যখন ধর্ম আগ্রাসন চালায়, যখন সংস্কৃতির উপর আগ্রাসন চালায়....যেমন ধরেন শহিদ মিনারে ফুল দেয়া যাবে না৷ এ ধরনের একটি প্রচার ইসলামপন্থিরা করে থাকে৷ কিন্তু আমি কেন শহিদ মিনারে ফুল দিতে পারবো না? "আমার অধিকার আছে শহিদ মিনারে ফুল দেয়ার৷ এটা ইসলামবিরোধী বলে প্রচারণা চালায় তারা৷ আমরা যখন এর বিরুদ্ধে কথা বলি, তখন আমাদের বলা হয় সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ ছড়াচ্ছি আমরা৷" উল্লেখ্য, গত বছরের শুরুতেই দুর্বৃত্তের আঘাতে গুরুতর আহন হন ব্লগার আসিফ মহিউদ্দীন৷ অসুস্থ শরীরেই ফেব্রুয়ারিতে যোগ দেন শাহবাগ চত্বরে, যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে আন্দোলনে৷ এরপর কারাভোগ৷ তিনি এখন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের আমন্ত্রণে জার্মানিতে অবস্থান করছেন৷ DW Share on facebook Share on email Share on print

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন