শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী, ২০১৪


ফেব্রুয়ারি ১, ২০১৪ তে ১২:২০ পিএম পার হয়ে যাচ্ছে বিয়ের বয়স? 97 0 Google +0 0 Print Friendly and PDF একটা বয়স পর্যন্ত বিয়ে না করলে সম্মুখীন হতে হয় নানা রকম সমস্যার। বিশেষ করে মেয়েদের। একজন পুরুষ অনেক বয়স পর্যন্ত বিয়ে না করলেও তাকে যতটা না প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়, তারচেয়ে শতগুণ বেশি হতে হয় নারীকে। সেই সঙ্গে পোহাতে হয় নানা রকম সমস্যা। নারী-পুরুষ উভয়কেই সইতে হয় সামাজিক গঞ্জনা, শুনতে হয় কটু কথা, ভুগতে হয় বিষণ্নতায়। একজন মানুষ নানা কারণে বিয়ে না করে থাকতে পারেন। মনের মতো সঙ্গী খুঁজে না পাওয়া, বিয়ের বন্ধনে বিশ্বাস না থাকা, আবার অনেক সময় অনবরত বিয়ের সম্পর্কে ভাঙ্গন দেখতে দেখতে বীতশ্রদ্ধ হয়েও অনেকে বিয়ে না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন। কিন্তু একটু বেশি বয়স হয়ে যাওয়ার পরই শুরু হয় যন্ত্রণা। কী করে সামলাবেন এসব? প্রতিটা মানুষেরই রয়েছে নিজের উসুলে জীবনযাপন করার অধিকার। তাহলে কেন একজন মানুষকে মুখোমুখি হতে হয় এত সমস্যার? আর কী-ই বা তার সমাধান? সামাজিক গঞ্জনা অবিবাহিতদের আপনজনেরাও কখনো কখনো কটু কথা শোনায়। তার জন্য সমাজে সম্মানহানি হচ্ছে এমন কথাও বলেন। তাদের গণ্য করা হয় অলক্ষুণে হিসেবে। বিশেষ করে নানা সামাজিক আনুষ্ঠানিকতায় অবিবাহিত বেশি বয়সী নারীরা তাই বাদ পড়ে যান। এছাড়াও নানা দুর্ভোগের কারণ হিসেবে দোষ দেয়া হয় তাদের।যে যাই বলুক না কেন, ভেঙে পড়বেন না। সমাজ যেহেতু আপনার সমস্যা বোঝার চেষ্টা করছে না, তাই আপনারও দরকার নেই তাদের কথা শোনার। বরং এসব গঞ্জনায় কান দিয়ে না দিয়ে নিজের কাজ করে চান। কুৎসা রটনা একটা সময় পার করে যাবার পর অবিবাহিত নারী ও পুরুষদের নামে ছড়াতে থাকে নানা ধরনের কুত্সা। স্বাভাবিকভাবেই এগুলোর বেশির ভাগ হয় মিথ্যা। যেমন: হয়তো প্রেমে অসফল হয়েছে, তার মাথায় সমস্যা আছে কিংবা পরকীয়া আছে ইত্যাদি।একজন মানুষের ওপরে স্বাভাবিকভাবেই বিষয়গুলো চাপ ফেলে। মাথা গরম করে মেজাজ খারাপ করাটাও খুবই স্বাভাবিক। তবে পরামর্শ হলো যে, যেকোনো পরিস্থিতিতে মাথা ঠাণ্ডা রাখুন। তর্ক করলে বা রাগারাগি করলে অপরপক্ষ আরো সুযোগ পেয়ে বসবে। এসব কথায় কান না দিয়ে শক্ত থাকুন। চিনে রাখুন সুযোগসন্ধানীদের আপনার বিয়ে না করার ব্যাপারটির সুযোগ নিতে পারে অনেকেই। বিশেষ করে বিত্তশালীদের ক্ষেত্রে সমস্যা হয় বেশি। একজন বিত্তশালী অবিবাহিত অথচ বয়স্ক পুরুষের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার চেষ্টা করতে পারে কমবয়সী লোভী নারীরা। তারা বিয়ে করবে না, স্বার্থ উদ্ধার হয়ে গেলে ছেড়ে রেখে চলে যাবে। আবার একজন অবিবাহিত নারীর সুযোগ নিতে পারে অনেক কুরুচিসম্পন্ন পুরুষ। এসব সুবিধাভোগী মানুষদের কাছ থেকে সতর্ক থাকুন। অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী হোন আমাদের সমাজে আর্থিক নিরাপত্তার জন্য মেয়েরা সাধারণত বাবা, ভাই বা স্বামীর ওপর নির্ভর করে থাকে। বিয়ে না করার সিদ্ধান্ত নিলে প্রথমেই যে কাজটি করতে হবে তা হলো অর্থনৈতিকভাবে নিজেকে সাবলম্বী করে তুলতে হবে যেন কারো কাছে হাত পাততে না হয়। কারণ যখনই আপনি কারো ওপর অর্থনৈতিকভাবে নির্ভর করবেন, সে আপনাকে কথা শোনানোর সুযোগটা পেয়ে যাবে। বিশেষ করে এ কথাটি শুনতে হবে যে, স্বামী থাকলে তো আর কারো কাছে চাইতে হতো না এবং এ কথাটা শুনতে অবশ্যই খারাপ লাগবে। তাই নিজেকে করে তুলুন অর্থনৈতিকভাবে সামলম্বী। ভবিষ্যতের চিন্তা করুন মানুষের বিয়ে করার অনেকগুলো কারণের মধ্যে একটি হচ্ছে ভবিষ্যতে সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে নিরাপদ থাকা। ভবিষ্যতে সাধারণ সন্তানরাই এ নিরাপত্তাগুলো পিতা-মাতাকে দিয়ে থাকে। অবিবাহিত থাকলে যেহেতু আপনার সন্তান-সন্ততি থাকবে না সেহেতু আপনি এই সুবিধাটুকু পাবেন না। আপনার ভবিষ্যতের কথা ভাবতে হবে আপনাকেই। উপার্জন করুন এবং ব্যয় করুন চিন্তাভাবনা করে। সঞ্চয় করুন এমনভাবে যাতে আপনার ভবিষ্যৎ থাকে অর্থনৈতিকভাবে নিরাপদ। নিজের অবস্থানটাও পাকাপোক্ত করুন। এতে সামাজিকভাবেও নিরাপদ থাকবেন। শারীরিক সমস্যায় সতর্ক হোন bou2অবিবাহিত বেশি বয়সী নারীদের দেখা দিতে পারে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা। এর মধ্যে হরমোনের সমস্যা ও স্তন টিউমার অন্যতম। পুরুষদেরও হতে পারে নানা ধরনের রোগ। তাই ছোটখাট অসুখ-বিসুখকেও হেলাফেলা করবেন না। কারণ ছোট সমস্যা থেকে দেখা দিতে পারে বড় ধরনের সমস্যা। নিজের শরীরের যত্ন নিন। নিয়ম মেনে চলুন। নিয়মিত নিজের ডাক্তারি পরীক্ষা করান। দূর করুন নিঃসঙ্গতাবোধ অবিবাহিত থাকার একটা সমস্যা হলো একটা সময়ে গিয়ে নিঃসঙ্গতা আঁকড়ে ধরে। বিয়ের করার কথা একেবারেই মন থেকে দূর করে দেবেন না। যদি কখনো মনের মতো সঙ্গী বা সঙ্গিনীর দেখা পান তাহলে অবশ্যই বিয়ে করার কথা ভাবুন, সেটা যত বয়সেই হোক না কেন! আপনার যদি সামর্থ্য থাকে তাহলে কোনো শিশুকে দত্তক নিতে পারেন। এতে আপনার নিঃসঙ্গতা যেমন দূর হবে, তেমনি শিশুটি হবে আপনার বেঁচে থাকার অবলম্বন। এছাড়া বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে যোগ দিতে পারেন। এতেও আপনার সময় বেশ ভালো কেটে যাবে। বিডি টুয়েন্টিফোর লাইভ ডট কম/সজিব/স.স. ১২:২০ পিএম - See more at: http://bd24live.com/992/%e0%a6%aa%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%b9%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a7%87-%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%9a%e0%a7%8d%e0%a6%9b%e0%a7%87-%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%af%e0%a6%bc%e0%a7%87%e0%a6%b0-%e0%a6%ac%e0%a6%af/#sthash.mlytpTAv.dpuf

দোজখে পুড়ছেন মার্ক্স-এঙ্গেলস’ নিউজ ডেস্ক, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 2014-02-01 10:59:40.0 BdST Updated: 2014-02-01 11:14:37.0 BdST দার্শনিক কার্ল মার্কস, ফ্রেডারিক এঙ্গেলসের সঙ্গে যুগোশ্লাভিয়ার সাবেক কমিউনিস্ট নেতা যোসিপ ব্রজ টিটো (মার্শাল টিটো) দোজখের আগুনে পুড়ছেন। মন্টিনেগ্রোর একটি গির্জার দেয়ালে আঁকা একটি চিত্রে এমনটিই প্রদর্শন করা হচ্ছে। Print Friendly and PDF 0 1 762 এ বিষয়টি দেশটিতে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে বলে শুক্রবার জানিয়েছে বিবিসি। মন্টিনেগ্রোর রাজধানী পডগোরিকায় নতুন তৈরি করা গির্জাটি ইতোমধ্যেই এর জমকালো নকশার জন্য সমালোচনার মুখে পড়েছে। দোজখে মার্ক্স, এঙ্গেলস- গির্জার দেয়ালে এমন চিত্র দেখার পর সমালোচকরা এখন বলছেন, রাজনীতিতে নাক গলানো গির্জাটির উচিত হয়নি। কমিউনিস্ট যুগোশ্লাভিয়ার অংশ থাকার সময় মন্টিনেগ্রোয় মার্ক্স ও এঙ্গেলসের দর্শন পড়া বাধ্যতামূলক ছিল। এ বিষয়ে দ্রাগান নামের গির্জার এক কর্মকর্তা বলেন, “মার্ক্স, এঙ্গেলস এবং টিটো বলকান অঞ্চলে কমিউনিস্ট শয়তানের উদাহরণে পরিণত হয়েছেন। তাই চিত্রকর যেভাবে তাদের দেখেন তা প্রকাশ করার স্বাধীনতা তাকে দেয়া উচিত।” এরপর তিনি যোগ করেন, “তবে কে দোজখে যাবে আর কে বেহেশতে যাবে, গির্জার নামে তা বিচার করার তিনি কেউ নন।” দেয়ালচিত্রটির (ফ্রেসকো) শিল্পীর নাম প্রকাশ করা হয়নি। দেয়ালচিত্রটি রাখা হবে কিনা তা নিয়ে ইতোমধ্যে গির্জায় আগতদের মধ্যে দুটি পক্ষ তৈরি হয়েছে। আইনজীবী র্যাদি স্টানকোভিচ বলেন, “ধর্মনিরপেক্ষ বিশ্বে গির্জার অনুপ্রবেশ করা ঠিক না এবং কে দোজখে ও কে বেহেশতে যাবে তা ঠিক করাও তাদের কাজ না।” অপরদিকে মিলোস নামের একজন বলেন, “কমিউনিস্টরা অনেক পাপ করেছে। মার্ক্স, এঙ্গেলসের দর্শনের নামে তাদের অনুসারীরা অনেক মানুষকে খুন করেছে।” মন্টিনেগ্রোর আরেকটি গির্জার দেয়ালচিত্রে হিটলার, লেনিন ও টিটোকে যিশুর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতাকারী জুডাসের সঙ্গে দেখানো হয়েছে।

ভারতের কর্পোরেটগুলোতে মুসলমানদের জায়গা নেই
31 Jan, 2014 প্রফেসর মুশিরুল হাসান ভারতের প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ। তার বাবা মুহিবুল হাসানও ছিলেন খ্যাতনামা ইতিহাসবিদ। জন্ম ১৯৪৯ সালের ১৫ আগস্ট। আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ করেন ১৯৬৯ সালে। পরে ক্যামব্রিজ ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি করেন। কর্মজীবনে শিক্ষকতাকেই পেশা হিসেবে বেছে নেন। ছিলেন দিল্লির বিশ্ববিদ্যালয় জামিয়া মিল্লিয়া ইসলামিয়ার ভাইস চ্যান্সেলর। ২০১০ সালে ন্যাশনাল আরকাইভস অব ইন্ডিয়ার মহাপরিচালক করা হয় তাকে। তিনি পদ্মশ্রী। ভারত বিভাগ নিয়ে মুশিরুল হাসানের কাজ উল্লেখ করার মতো। সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে তার লেখা রেফারেন্স হিসেবে উল্লেখ করা হয়। ভারতের রাজনীতিতে সাম্প্রদায়িকতা, মুসলমান সমাজের সমস্যা, বামপন্থার ব্যর্থতা ইত্যাদি নিয়ে তার একটি একটি সাক্ষাৎকার আজ প্রকাশিত হয়েছে ভারতের একটি দৈনিকে। প্রফেসর মুশিরুল হাসানের সাক্ষাৎকারটি এখানে তুলে ধরা হলো: প্রশ্ন: আমরা কি বলতে পারি ভারতীয় উপমহাদেশের সমাজ ও রাজনীতি সাম্প্রদায়িকতার প্রশ্নটির মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছে, এবং সেটাই এই উপমহাদেশের রাষ্ট্রগুলির সামনে একটা বড় বিপদ৷ মুশিরুল হাসান: আমি আপনার সঙ্গে একমত নই৷ আমি মনে করি ভারতের সমাজ ও রাজনৈতিক ব্যবস্থা মোটামুটি অসাম্প্রদায়িক৷ ধর্মনিরপেক্ষ৷ নরেন্দ্র মোদী ও দক্ষিণপন্থী হিন্দুত্ববাদীদের উত্থান সত্ত্বেও আমি এটাই মনে করি৷ দেখুন ভারত বিশাল দেশ৷ তা ছাড়া এ মুহূর্তে এ দেশের বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন পরিবর্তন ঘটছে৷ তার উপর ভিত্তি করে কোনো সাধারণ সিদ্ধান্তে পৌঁছানো ঠিক হবে না৷ আমার মনে হয় ২০১৪-র (লোকসভা) নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে৷ প্রশ্ন: কিন্ত্ত বাংলাদেশ যদি দেখি, সেখানে কিছু মানুষের ফাঁসির দাবিকে কেন্দ্র করে একটা মূলত শহুরে আন্দোলন তৈরি হয়েছে এবং যার প্রতিক্রিয়ায় গ্রামে ও মফস্বলে ইসলামি মৌলবাদীদের শক্তি এককাট্টা হচ্ছে৷ হিন্দু-বৌদ্ধদের বিরুদ্ধে দাঙ্গা হচ্ছে৷ পাকিস্তানে উগ্র ইসলামি শক্তির সমর্থন পেয়েছে নওয়াজ শরিফ সরকার৷ ভারতে নরেন্দ্র মোদী বি জে পি-র হাল ধরেছেন৷ সব মিলিয়ে আমরা কি একটা উদ্বেগজনক সাম্প্রদায়িক ভবিষ্যতের দিকে চলেছি? মুশিরুল হাসান: এই যে ক'টি প্রবণতার উল্লেখ আপনি করলেন তার সব ক'টিই নিশ্চিত ভাবে অশুভ৷ দক্ষিণপন্থী হিন্দুত্ববাদ, দক্ষিণপন্থী ইসলামি শক্তি বা শ্রীলঙ্কায় দক্ষিণপন্থী বৌদ্ধদের উত্থান - এ সবই অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়৷ কিন্ত্ত, দেখুন, আমাদের এই সব সমাজে সরকার পরিচালনার গুণগত মান উন্নত না হলে এই সমস্যার সমাধান হবে না৷ বিগত পঞ্চাশ-ষাট বছরের সরকার পরিচালনার ক্ষেত্রে ব্যর্থতাকেই আমি এই সব সমস্যার মূল হিসেবে দেখি৷ এবং এই ব্যর্থতার অঙ্গ অবশ্যই এই সব সমাজে ক্রমবর্ধমান বৈষম্য৷ দরিদ্রের অবস্থার একেবারেই উন্নতি হয়নি৷ আর তা যখন হয় না, তখন তাদের হতাশা এই সব প্রবণতার রূপ নিয়ে প্রকাশ পায়৷ প্রশ্ন: আপনি এই প্রবণতাগুলিকে মানুষের দারিদ্রের সঙ্গে যুক্ত করছেন? মুশিরুল হাসান: এবং তার সঙ্গে সরকারি ব্যর্থতা৷ প্রশ্ন: কিন্ত্ত আপনার কি মনে হয় না এর ফলে বামপন্থী শক্তিগুলির একটা সার্বিক উত্থান হওয়া উচিত ছিল? কিন্ত্ত আমরা বামপন্থীদের পশ্চাদপসরণ দেখেছি৷ মুশিরুল হাসান: সেটা সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়৷আমি দুটো বিষয়কে জুড়তে চাইছি৷ প্রথমত, এই সরকার পরিচালনার ব্যর্থতা ও অধিকাংশ মানুষের দুর্দশা সত্ত্বেও মূলধারার বামপন্থীরা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন, এবং তার ফলেই উগ্র বামপন্থার উত্থান৷ প্রশ্ন: আপনার কী মত? মুশিরুল হাসান: আমি মনে করি তারা (মূলধারার বামেরা) বেশ কিছু ভুল করেছেন৷ সে কথা তারা স্বীকারও করেছেন৷ এর মধ্যে কৌশলগত ভুল আছে৷ এর মধ্যে আছে ভ্রান্ত ধারণা যার উপর ভিত্তি করে তারা ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছেন৷ ভারতীয় বামপন্থীদের ক্ষেত্রে আমি বলব সোভিয়েত ইউনিয়ন ও যাকে বলা যায় বামপন্থী বিশ্ব কাঠামোর পতন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ এখানে বামপন্থা হয়তো জোরদার ভাবে বেঁচে থাকত যদি একটা আন্তর্জাতিক বামপন্থী আন্দোলন জীবিত থাকত৷ প্রশ্ন: দক্ষিণ আমেরিকায় তো আছে৷ মুশিরুল হাসান: হ্যাঁ ওখানে বামপন্থার পুনরুত্থান ঘটেছে৷ তবে আমি মনে করি ভারতে বামপন্থার ভাগ্য অন্য অনেক দলের সঙ্গে বা সমাজের বিভিন্ন ঘটনার সঙ্গে যুক্ত৷ লাতিন আমেরিকায় কিন্ত্ত (বামপন্থীদের সঙ্গে অন্য দলের) প্রতিযোগিতার জায়গাটা বিশেষ ছিল না৷ তা ছাড়া সেখানে বামপন্থার উত্থানের একটা কারণ অবশ্যই মার্কিন নীতি৷ প্রশ্ন: আপনি বলছেন দক্ষিণপন্থী সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থানের প্রধান কারণ সার্বিক উন্নয়ন ঘটাতে সরকারের ব্যর্থতা এবং গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির বিভিন্ন তাত্ক্ষণিক প্রতিক্রিয়া৷ যেমন? মুশিরুল হাসান: ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলিও বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক শক্তির নানা দাবির মুখে কিছু কিছু বিষয়ে আত্মসমর্পণ করেছে৷ এমনকী বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর সঙ্গে তারা আলাপ আলোচনাও চালিয়েছে৷ যাদের বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তি বলা যেতে পারে তাদের সঙ্গেও তারা (ধর্মনিরপেক্ষ দলেরা) যোগাযোগ রেখেছে৷ রাজনৈতিক দলগুলি মনে করেছে তাদের সঙ্গে একটা সমঝোতায় আসা প্রয়োজন৷ প্রশ্ন: সেটা কী তাহলে এই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার অন্তঃসারশূন্যতার ইঙ্গিতবাহী? মুশিরুল হাসান: না৷ তা আমি বলব না৷ এর অন্য অনেক জোরের জায়গা আছে৷ সার্বিক ভাবে এই সমাজ অসাম্প্রদায়িক, যদি ধর্মনিরপেক্ষ নাও হয়৷ প্রশ্ন: একটা বিষয়ের প্রতি আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করি - ফতোয়া৷ আমার মনে পড়ছে ধরুন মহান আমির খুসরুর সেই লাইন: আমি প্রেমের কাফের, মুসলমানিতে আমার কোনো কাজ নেই৷ বা কবিদের কবি বলে পরিচিত মীর তকি মীর-এর সেই পংক্তির কথা: মন্দিরের দুয়ারে বসে তিলক কেটেছি, কবেই তো ছেড়েছি ইসলাম৷ তাদের বিরুদ্ধে, তাদের শুধরে দিতে ফতোয়া জারি হয়েছে এমন তো কখনও শুনিনি৷ ফতোয়ার ব্যাপারটা আসলে কী? মুশিরুল হাসান: প্রথম কথা এই সব (ফতোয়ার খবর) এখন অনেক বেশি প্রকাশিত হচ্ছে৷ এবং সে সব খুব বাড়িয়ে বাড়িয়ে লেখা হয়৷ কে যে কী জারি করছে কার হয়ে, আমরা জানতে পারি না৷ মুসলমানদের সমালোচনা করার একটা অস্ত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে ফতোয়া৷ আমি বলছি না ফতোয়া দেয়া হয় না৷ এর মধ্যে কিছু কিছু ফতোয়া জারি করা যে উচিত হয়নি তা-ও নয়৷ কিন্ত্ত আমি মনে করি এই বিষয়টাকে মুসলমানদের সমালোচনা করার জন্যে, তাদের খারাপভাবে দেখানোর জন্যে ব্যবহার করা হয়৷ আমাদের সমাজে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বা আর এস এস-এর মতো সংগঠনও আছে৷ তারা কী প্রচার করেন এবং কার্যক্ষেত্রে কী করেন তা খেয়াল করুন৷ কিন্ত্ত ফতোয়ার মতো এমন কোনো বিভাগ নেই যা এক কথায় তাদের মৌলবাদ, তাদের গোঁড়ামি প্রকাশ করতে পারে৷ আছে কী? (হাসতে হাসতে) সে রকম একটা কিছু তৈরি করতে পারলে বেশ হয়৷ আমার মনে হয় প্রত্যেক সমাজেই আধ ডজন খানেক পাগল থাকে৷ এই একশো তিরিশ কোটির দেশে কিছু ছিটগ্রস্ত মানুষ আছেন, যারা ফতোয়ার কার্যকারিতায় বিশ্বাস করেন৷ আমি মনে করি না এদের উপর বেশি গুরুত্ব দেয়া উচিত৷ এবং গোটা (মুসলমান) সম্প্রদায়কে এই দিয়ে বিচার করা উচিত নয়৷ প্রশ্ন: মুসলমান সম্প্রদায়ের মধ্যে এর গুরুত্ব কতটা? মুশিরুল হাসান: আমার মনে হয় না খুব একটা গুরুত্ব আছে৷ দেখুন, মানুষ ব্যক্তিগত জীবনে এভাবে বাঁচে না৷ ভারতীয় সংবিধানের সব ধারা কি কেউ তার প্রাত্যহিক জীবনে মেনে চলেন? চলেন না৷ কিছু মানুষ কোনো স্থানীয় মোল্লার ফতোয়া মেনে চলতে পারেন৷ কিন্ত্ত বাগদাদ বা কায়রোতে জারি করা ফতোয়ার (এখানে) অধিকাংশ মানুষের কাছে কোনো মানেই হয় না৷ একেবারে ধর্মীয় বিষয়ে (ফতোয়া) হলে হয়তো কিছুটা মানে আছে৷ আবার এটাও ঠিক যে মুসলমান সমাজ বিভিন্ন স্তরে এত বিভক্ত, যেমন আপনি যদি শিয়া হন, আল আজহার-এর ফতোয়ার কোনো মানেই নেই৷ আপনি যদি হানাফি হন তাহলে কোম-এর ফতোয়ার কোনো মানেই নেই৷ বরেলভিরা আলাদা৷ দেওবন্দিরা আলাদা৷ এই সূক্ষ্ম বিষয়গুলো ভুললে চলবে না৷ প্রশ্ন: এই প্রসঙ্গে বলি, সালমান রুশদি নিজেই বলেছেন যে তাকে গত বছর এখানে বইমেলায় আসতে দেয়া হয়নি৷ এবং তার পরেই অনেকে এখানে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে মুসলমান তোষণের অভিযোগ তুলেছেন... মুশিরুল হাসান: ঠিক সেই কথাই তো আমি বলছিলাম৷ মুসলমান সম্প্রদায় সম্পর্কে এবং তাদের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে রাজনৈতিক নেতাদের কিছু কিছু ধারণা আছে৷ এই ধারণাগুলোকে এবার আমাদের চ্যালেঞ্জ করা দরকার৷ কারণ ধারণাগুলো ভ্রান্ত৷ আপনি মনে করেন সালমান রুশদি ভারতে আসলে মুসলমানরা অপ্রসন্ন হবেন৷ চেষ্টা করে দেখুন৷ তাকে আসতে দিন৷ ঝুঁকিটা নিন৷ হয়তো দেখবেন কিছুই হয়নি৷ দশ জন বা কুড়ি জন বা একশো জনও বিক্ষোভ দেখালে, সেটাতে রাজনীতিকরা অভ্যস্ত৷ কিন্ত্ত এ থেকে অধিকাংশ রাজনৈতিক নেতা যে সিদ্ধান্তে উপনীত হন সেটা ভুল৷ প্রশ্ন: মুসলমানদের প্রতি কি বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়? মুশিরুল হাসান: অবশ্যই করা হয়৷ কলকাতার মুসলমান অধ্যুষিত বড়ো বড়ো এলাকাগুলির দিকে একবার তাকান৷ এভাবে কি মানুষ বাস করতে পারে? পৃথিবীর কোথাও করে? তাদের জন্য আজ পর্যন্ত কোনো সুযোগ-সুবিধার বন্দোবস্ত করা হয়েছে? মোটেই হয় নি৷ কারণ তারা মুসলমান৷ এবং গরিব মুসলমান৷ বাস্তব এটাই যে মুসলমান এলাকায় নাগরিক পরিষেবা প্রায় নেই বললেই চলে৷ একই শ্রেণির মুসলমান ও হিন্দুরা যে ভাবে বসবাস করেন তার মধ্যে তুলনা করুন৷ তা হলেই পার্থক্যটা বুঝতে পারবেন৷ বহু শহরেই এটা আমি দেখেছি৷ এ নিয়ে আমি পড়াশুনা করেছি৷ লিখেওছি৷ তবে, কলকাতা নিয়ে এ রকম কথা আগে বলিনি৷ প্রশ্ন: পশ্চিমবেঙ্গর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইমামদের জন্য বিশেষ ভাতার ব্যবস্থা করেছেন৷ সরকারের এই সিদ্ধান্তে আপনার প্রতিক্রিয়া কী? মুশিরুল হাসান: এ সব রাজনৈতিক সুবিধাবাদী পদক্ষেপ৷ এতে মুসলমান সম্প্রদায়ের কোনো উপকার হবে না৷ শুধু ইমামদের জন্য ভাতা কেন? মুসলমান মহিলাদের জন্য নয় কেন? রাষ্ট্রের কাছ থেকে তাদের তো অনেক বেশি সাহায্য দরকার৷ যদি সত্যি কোনো বিশেষ সুযোগ সুবিধা দিতে হয় তা হলে তা দেওয়া উচিত মুসলমান মেয়েদের৷ তাদের শিক্ষার জন্য৷ সে কাজটা করুন৷ ইমামদের ভাতা দেয়া মুসলমান সম্প্রদায়ের পিছিয়ে পড়ার সমস্যার কোনো সমাধান হতে পারে না৷ প্রশ্ন: গুজরাটে নরেন্দ্র মোদীর রাজনৈতিক সাফল্য এবং তার ভিত্তিতেই জাতীয় স্তরে তার উত্থান৷ এ বিষয়টাকে আপনি কী চোখে দেখছেন? মুশিরুল হাসান: দেখুন, এ দেশের কর্পোরেট দুনিয়া বরাবরই প্রতিক্রিয়াশীল৷ এবং অত্যন্ত গোঁড়া৷ এবং বলতেই পারি তারা অত্যন্ত মুসলমানবিরোধী৷ বড়ো বড়ো কর্পোরেটগুলিতে মুসলমানদের সংখ্যা দেখুন৷ প্রায় নেই বললেই চলে৷ কাজেই কর্পোরেট সেক্টর মোদীকে বেশ পছন্দ করে৷ সংবাদমাধ্যমও সেটাই করছে৷ অনেক কিছু ঘটছে তার কারণ, সংবাদমাধ্যমের উপর কর্পোরেট দুনিয়ার ব্যাপক প্রভাব৷ কাজেই যে মূল কথাটা আমি বলতে চাই তা হলো সংবাদমাধ্যম আর কর্পোরেট সেক্টরের একটা গাঁটছড়া, যেটা গড়ে উঠেছে বিভিন্ন সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিষয়ে এই দুইয়ের মতাদর্শগত অবস্থানের একটা মেলবন্ধনের মধ্যে দিয়ে৷ প্রশ্ন: আপনার মতে নরেন্দ্র মোদীর মতাদর্শগত অবস্থানটা কী? মুশিরুল হাসান: আমি নরেন্দ্র মোদীকে আধা ফ্যাসিস্ট মনে করি৷ বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে আসার পর নরেন্দ্র মোদী যে সব বক্তব্য রেখেছেন আমার এই ধারণাকে আরও বদ্ধমূল করেছে৷ আপনি যদি তার বক্তব্য, তার কাজের ধরন, তার দম্ভ, তার ভারতীয় সংবিধানে উল্লিখিত মূল্যবোধগুলি অস্বীকার করার প্রবণতা, ভালো করে দেখেন, সেগুলো পর্যালোচনা করেন, তা হলেই বুঝতে পারবেন তার মতাদর্শগত চিন্তার মধ্যে একটা আধা ফ্যাসিবাদ রয়েছে৷ কাজেই আমি তার কাছ থেকে খুব একটা সঙ্গতিপূর্ণ কোনো বিশ্ববীক্ষণ আশাও করি না৷ দেখুন ইউরোপে কী হচ্ছে- উগ্র দক্ষিণপন্থা ফিরে আসছে৷ সেই প্রবণতা এদেশেও দেখা যাচ্ছে৷ আমি আশা করি, মানুষ এই বিভেদমূলক রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করবেন৷ আশা করি, 'মোদী ফেনোমেনা' বলে যেটা চালানো হচ্ছে তা প্রত্যাখ্যান করার মতো শক্তি ও দায়বদ্ধতা রাজনৈতিক দলগুলিরও রয়েছে৷ আমি মনে করি, স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় সমাজে সংবাদমাধ্যম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল৷ সে সময় সংবাদমাধ্যম সমাজের মধ্যে ঐক্য স্থাপনে সাহায্য করেছিল৷ কিন্ত্ত এখন তা ক্রমাগত বিভেদ সৃষ্টি করার কাজে নিয়োজিত হচ্ছে এবং ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্রের ক্ষতিসাধন করছে৷ আপনি যদি সংবাদমাধ্যমের অতীত ও বর্তমান ভূমিকা তুলনা করে দেখেন, তা হলেই পার্থক্যটা বুঝতে পারবেন৷ প্রশ্ন: রাজনৈতিক প্রসঙ্গে আসি, এক দিকে ইউপিএ সরকার, যার বিরুদ্ধে সরকারি ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ ব্যর্থতার অভিযোগ৷ অন্য দিকে বিজেপি যার বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িকতার অভিযোগ৷ আর এক দিকে বেশ কিছু ছোটো ছোটো রাজনৈতিক দল যাদের অধিকাংশের বিরুদ্ধেই চরম দুর্নীতির অভিযোগ৷ ভারতীয় ভোটারদের সামনে বিকল্পটা কী? মুশিরুল হাসান: যাই বলুন না কেন, স্থানীয় দলগুলির নেতারা নিজের নিজের এলাকায় অত্যন্ত জনপ্রিয়৷ জাত-পাত ও স্থানীয় রাজনীতির উপর ভিত্তি করা একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থায় বিকল্প কী হতে পারে সেটা আপনি বা আমি ঠিক করব না৷ সে বিকল্প খুব সোজাসাপটাও হবে না৷ এই জোট রাজনীতির যুগে বিকল্পের মধ্যে বৈচিত্র প্রতিফলিত হতে বাধ্য৷ দেখুন নীতীশ কুমারের সরকারের সঙ্গে কিন্ত্ত বি জে পি-র বহু দিন একটা জোট ছিল৷ মুসলমানরা সেটাকে খুব একটা খারাপ চোখে নেয়নি৷ আশা করি, নির্বাচন এবারে মোদীর সব আশা চিরকালের মতো শেষ করে দেবে৷ প্রশ্ন: মূলধারার বামপন্থীদের অবস্থা খারাপ কিন্ত্ত আমরা দেখছি রাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ভারতের মূল ভূখণ্ডের একটা বড়ো জায়গা জুড়ে মাওবাদী উগ্র বামপন্থীরা নিজেদের প্রভাব বিস্তার করেছে৷ আপনার প্রতিক্রিয়া? মুশিরুল হাসান: দেখুন, এ সবই বৈষম্যজনিত ক্ষোভের প্রকাশ৷ রাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জ করা কোনো কাজের কথা নয়৷ রাষ্ট্র একটা বাস্তব৷ সেই বাস্তবকে মেনে নিতে শিখতে হবে৷ রাষ্ট্রের সঙ্গে দরাদরি করতে হবে৷ নিজেদের অনুগামীদের উপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলার এর থেকে ভালো আর কোনো পদ্ধতি নেই৷ প্রশ্ন: একটা অভিযোগ প্রায়ই ওঠে৷ মুসলমানরা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কাঠামোয় কাজ করতে পারেন না৷ অনেকের মতে, তত্ত্বে যাই বলা থাক না কেন, দু-একটি রাষ্ট্র ছাড়া বাস্তবেও এটাই দেখা গিয়েছে৷ আপনার কী প্রতিক্রিয়া? মুশিরুল হাসান: আমার প্রতিক্রিয়া হবে একটি পাল্টা প্রশ্ন- মুসলমানদের কি কখনও গণতান্ত্রিক কাঠামোতে কাজ করতে দেওয়া হয়েছে? ঔপনিবেশিক সরকার তো আর গণতন্ত্র দিতে পারে না৷ ১৯৫০-এর দশক অবধি বহু মুসলমান রাষ্ট্রই ঔপনিবেশিক শাসনাধীন ছিল৷ কাজেই আমরা খুব বেশি হলে পঞ্চাশ বছরের কথা বলছি তাই নয় কি? মাত্র ছয় দশকের অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে এত বড়ো একটা কথা বলা হচ্ছে৷ মনে রাখতে হবে, ঔপনিবেশিক শাসন ও ঔপনিবেশিকতার বিরুদ্ধে সংগ্রামের ধরনও বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন ছিল৷ ইসলাম ও গণতন্ত্র একসঙ্গে চলতে পারে না, এ কথাটা সর্বৈব মিথ্যা৷ মালয়েশিয়ায় গণতন্ত্র কাজ করে, ইন্দোনেশিয়ায় করে, বাংলাদেশে করে৷ ইরানে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল৷ কিন্ত্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার ক্ষতি করেছে৷ মিশরে গামাল আবদেল নাসের গণতান্ত্রিক নেতা ছিলেন৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেখানেও সমস্যার সৃষ্টি করেছে৷ ঐতিহাসিক কারণেই আরব দেশগুলিকে এর মধ্যে ধরছি না৷ কারণ, সেগুলি তৈরি হয়েছে আদিবাসী সমাজ থেকে অথবা রাজতন্ত্র থেকে৷ এখন আবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের আগলে রেখেছে৷ সৌদি আরবে গণতন্ত্রের কোনো সম্ভাবনাই নেই৷ কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আছে৷ কাজেই আমরা এই প্রশ্নগুলি কেন তুলি না? কেবল ভুল প্রশ্নগুলি তুলি৷ প্রশ্ন হল, আন্তর্জাতিক সমাজ সৌদি আরব বা কুয়েতের মতো দেশকে কখনও গণতান্ত্রিক হতে দেবে কি না৷ যতক্ষণ পর্যন্ত এই সব রাজ্যে তেল আছে, ততক্ষণ অন্তত নয়৷ উৎসঃ নতুন বার্তা Share on facebook Share on email Share on print 4

জানুয়ারিতেই ৫৬৮ জন হত্যাকান্ডের শিকারঃ মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্ট
31 Jan, 2014 চলতি জানুয়ারি মাসে সারা দেশে মোট ৫৬৮টি হত্যাকা ৈসংঘটিত হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ১৮ জনের বেশি হত্যাকাÐের শিকার হয়েছেন। পুরো মাসে রাজনৈতিক সহিংসতায় নিহত হয়েছেন ২৯ জন এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছেন ২৩ জন। এছাড়া গুপ্ত হত্যার শিকার হয়েছেন ৬৫ ব্যক্তি। মানবাধিকার সংগঠন ‘বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন’র এক অনুসন্ধানী রিপোর্টে এমন তথ্য উঠে এসেছে। রিপোর্টে বলা হয়, এ ধরনের অব্যাহত হত্যাকা ৈঅবশ্যই আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি বলে বর্ণনা করা যায়। বৃহস্পতিবার কমিশনের পরিচালক অ্যাডভোকেট এ কে আজাদ এ সংক্রান্তô সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়েছেন। এতে বলা হয়, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা ও পৌরসভার শাখা থেকে পাঠানো তথ্য এবং বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে কমিশনের ডকুমেন্টেশন বিভাগ অনুসন্ধান কার্য সম্পন্ন করে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জানুয়ারি মাসে ধর্ষণের কারণে হত্যার শিকার হয়েছেন ২ জন, যৌন নির্যাতনে হত্যার শিকার হয়েছেন ১ জন, যৌতুকের কারণে ৩ জন, পারিবারিক সহিংসতায় ৫১ জন, সামাজিক সহিংসতায় ১২৫ জন, সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় ১ জন, রাজনৈতিক কারণে ২৯ জন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ২৩ জন, চিকিৎসকের অবহেলায় ৩ জন, অপহরণের পর ১৩ জন, গুপ্ত হত্যায় ৬৫ জন ও রহস্যজনক মৃতুø হয়েছে ৩৬ জনের। এছাড়া পরিবহণ দুর্ঘটনায় ১৯৫ জন নিহত হয়েছেন এবং আত্মহত্যা করেছেন ২১ জন। এ মাসে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৮টি। এনডি Share on facebook Share on email Share on print 3

দেশ ও দেশের বাইরে হেফাজতে ইসলাম নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে
01 Feb, 2014 হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী বলেছেন, বর্তমানে দেশ ও দেশের বাইরে হেফাজতে ইসলাম নিয়ে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র চলছে। এ ষড়যন্ত্র রুখে দেয়ার ব্যাপারে হেফাজতের কর্মী-সমর্থকদের সজাগ থাকতে হবে। তিনি গতকাল বাদ জুমা ফটিকছড়ি উপজেলার নাজিরহাট বড় মাদরাসায় দুই দিনব্যাপী ইসলামি সম্মেলনের শেষ দিনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন। আল্লামা শফী বলেন, ঈমান-আকিদা ও ইসলামের ইজ্জত রার জন্য আমাদের আরো বেশি ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকতে হবে। ওলামাদের চলমান নাস্তিক্যবাদবিরোধী আন্দোলনে আমাদের বহুমুখী অর্জন রয়েছে। সবচেয়ে বড় অর্জন হচ্ছে, ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিক্যবাদী শক্তির বিপরীতে আমাদের জোরালো অবস্থান। এই বার্তা তাদের কাছে পৌঁছাতে পেরেছি। তিনি আরো বলেন, সনদ ছাড়া হক্কানি ওলামাদের আল্লাহ যে সম্মান দিয়েছেন, তা রাজা-বাদশার চেয়েও বড় মর্যাদার। কওমি মাদরাসার শিাব্যবস্থায় সরকার যে শিা সনদ দেয়ার কথা বলছে, আমরা সেই সনদ নেবো না। আলেম-ওলামাদের দাবি-দাওয়া না মেনে এমন সনদ কোনো কাজে আসবে না। মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা মুহাম্মদ ইদ্রিসের সভাপতিত্বে সম্মেলন পরিচালনা করেন হাফেজ মুহাম্মদ ইদ্রিস। এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন হেফাজতের মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরী এবং দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা সেলিম উল্লাহ। সমাবেশে দলের মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, এ দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমান ১৩ দফা ঈমানি দাবিতে ঐক্যবদ্ধ। আগেও বলেছি ৯০ ভাগ মুসলমানের এই দেশে ঈমান আকিদা ও ইসলামের বিপে এবং ধর্মদ্রোহীদের পে এভাবে অবস্থান নিয়ে কেউ মতায় টিকতে যেমন পারবে না, তেমনি মতায় যেতেও পারবে না। উৎসঃ নয়া দিগন্ত Share on facebook Share on email Share on print

ঢাকায় ডিভোর্সে এগিয়ে মেয়েরা
01 Feb, 2014 স্বামী আমার। ফোন করলে আমাকে ফোন করবে। কিন্তু তা না করে আগে তার ভাই-বোনকে ফোন করে কথা বলে। পরে আমার সঙ্গে। এটা স্ত্রীর প্রতি অবহেলা। এ অবহেলা মেনে নেয়া যায় না। তার সঙ্গে ঘর করা যায় না। অতএব ডিভোর্স। সামান্য এ কারণে একটি সংসার ভেঙে খান খান। এরকম তুচ্ছ ঘটনায় ভেঙে যাচ্ছে- অনেকের ঘর। এ ক্ষেত্রে মেয়ে পক্ষ থেকেই ডিভোর্সের ঘটনা ঘটছে বেশি। এমনই এক ঘটনা রাজধানীর এক তরুণ ব্যবসায়ীর। দু’বছর আগে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন বনানী এলাকার বাসিন্দা প্রেমিকাকে। বিদূষী সুন্দরী ওই স্ত্রীর কোনও চাওয়া অপূর্ণ রাখেনি তার স্বামী। হানিমুন করেছেন মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডে। শপিংয়ের খরচ বাবদ প্রতি মাসে স্ত্রীকে মোটা অংকের টাকাও দিতেন। তবে ব্যবসায়িক কারণে সব সময় একসঙ্গে সময় কাটানো, ঘুরে বেড়ানো হতো না। এ থেকেই স্ত্রীর খারাপ ব্যবহারের শিকার হন ওই তরুণ। এ অবস্থায় ছেলে বন্ধুদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে সালমার। সালমা চলে যান পিতার বাসা লালমাটিয়ায়। দীর্ঘদিন এভাবেই ঝুলে থাকে তাদের সম্পর্ক। একপর্যায়ে ডিভোর্সের মাধ্যমে সমাপ্তি ঘটে এ সম্পর্কের। মানসিক নির্যাতন ও দূরত্ব, পরকীয়া, অর্থনৈতিক চাহিদা ইত্যাদি কারণে রাজধানীতে আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে ডিভোর্সের হার। শতকরা ৬৬ ভাগ ডিভোর্সই দেয়া হচ্ছে স্ত্রীদের পক্ষে থেকে। ডিভোর্স বেশি ঘটছে উচ্চবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তদের মধ্যে। সিটি করপোরেশনের হিসাব অনুযায়ী গত বছর রাজধানীতে ডিভোর্সের ঘটনা ঘটেছে ৮২১৪ দম্পতির। এর আগে ২০১২ সালে ৭৬৭২ দম্পতির মধ্যে ডির্ভোস হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ৬১০ দম্পতির ডিভোর্স হয়েছে। তার মধ্যে ৪২৬ ডিভোর্সই ঘটেছে স্ত্রী কর্তৃক। ঢাকা সিটি করপোরেশন উত্তরের গুলশান, বনানী, মহাখালী, বাড্ডা, মগবাজার, রামপুরা নিয়ে অঞ্চল-৩। এ এলাকায় গত বছরে ৫৯৮ দম্পতির মধ্যে ডিভোর্স হয়েছে। এর মধ্যে স্বামী ডিভোর্স দেয় ২৩৫ এবং স্ত্রী দেয় ৩৬৩টি। রাজধানীর সূত্রাপুর, বংশাল, নবাবপুর, কাপ্তান বাজার, নাজিরাবাজার ও লালবাগের অর্ধেক নিয়ে গঠিত ঢাকা সিটি করপোরেশন দক্ষিণের অঞ্চল-৪। এই এলাকায় গত বছরের জানুয়ারি থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ২৫৮ দম্পতির মধ্যে ডিভোর্স হয়েছে। এর মধ্যে স্ত্রীর পক্ষ থেকে ১৭৩ এবং ৮৫ ডিভোর্স হয়েছে স্বামীর পক্ষ থেকে। তার আগের বছর একই এলাকায় ২৯১ দম্পতির মধ্যে ডিভোর্স হয়েছে। এর মধ্যে ১৮৪ ডিভোর্স হয়েছে স্ত্রীর পক্ষ থেকে। সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, মেয়েরা আগের চেয়ে অনেক স্বাধীন ও স্বনির্ভর হচ্ছে। তাই আগের মতো মুখ বুঝে নির্যাতন সহ্য করতে চান না বলেই বাড়ছে ডিভোর্সের সংখ্যা। ঢাকা সিটি করপোরেশন অঞ্চল-৪ এর প্রশাসনিক কর্মকর্তা মুহাম্মদ রিয়াজুল হোসেন জানান, আঙ্কাজনকভাবে বিবাহ-বিচ্ছেদ ঘটছে। বেশি সংসার ভাঙছে তুচ্ছ কারণেই। তা মেয়ের পক্ষ থেকেই বেশি ঘটছে। ডিভোর্সের কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা গেছে, নানা তথ্য। দীর্ঘ ২৭ বছরের দাম্পত্য জীবনের অবসান ঘটিয়েছেন রাজধানীর মগবাজারের হলি ফ্যামেলি রেড ক্রিসেন্টের একজন কনসালট্যান্ট। দীর্ঘদিন থেকেই স্বামীর মানসিক নির্যাতনে অতিষ্ঠ ছিলেন তিনি। স্বামীর সন্দেহ প্রবণতা ছিল প্রখর। তাই শেষ পর্যন্ত সংসার ভাঙতে হয়েছে। ১৯৮৬ সালের ২৪শে ডিসেম্বর রাজধানীর বারিধারার পার্ক রোড এলাকার একজনের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল এ চিকিৎসকের। তাদের সংসারে দুটি সন্তানও রয়েছে। ডিভোর্স প্রসঙ্গে কোন মন্তব্য করতে চাননি এ চিকিৎসক। তবে তার এক ঘনিষ্ঠ সহকর্মী জানান, শুরু থেকেই মানসিকভাবে দু’জনের মধ্যে দূরত্ব ছিল। অন্যদিকে, স্বামীর পরকীয়া আসক্ততা, মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ এনে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ভেঙেছেন ধানমন্ডি এলাকার বাসিন্দা রাফিজা ফারজানা। মেয়েদের পক্ষ বিবাহ-বিচ্ছেদ বেশি হওয়া প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সালমা আক্তার বলেন- ‘নারীরা আগের চেয়ে শিক্ষিত, সচেতন ও স্বনির্ভর। ফলে তাদের স্বাধীনতা বেড়েছে। আগে মুখ বুঝে স্বামীর নির্যাতন সহ্য করলেও এখন তারা করছেন না।’ এছাড়া পেশাগত কারণও রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নারীরা সারা দিন অফিসে বা কারখানায় কাজ করেন। আবার বাসার কাজও করেন। বাচ্চা দেখাশুনা করেন। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই স্বামীর কোন সহযোগিতা পান না। এতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। তাই নারীরা হয়তো ভাবেন আলাদা থাকাই ভালো।’ স্ত্রীর পক্ষ থেকে বিবাহ বিচ্ছেদের আরও একটি কারণ দেনমোহর পরিশোধ সংক্রান্ত ভুল ধারণা। দু’বছর আগে স্বামীকে ডিভোর্স দিয়েছেন রাজধানীর মগবাজার এলাকার জেসিকা নওরিন। তিন বছরের সংসার জীবনে স্বামীর মানসিক নির্যাতনে অসহ্য হয়েই তিনি সংসার ভঙেন। নওরিন বলেন, ‘স্বামী কখনই ডিভোর্স দিতো না। কারণ, ডিভোর্স দিলেই তাকে দেনমোহরের টাকা গুণতে হতো। এজন্য আমিই ডিভোর্স দিয়েছি।’ এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হুমায়ূন কবীর বলেন, ‘ডিভোর্স যেই দিক দেনমোহর স্বামীকে পরিশোধ করতে হবে। এজন্য পারিবারিক আদালতে স্ত্রীকে মামলা করতে হবে। এমনকি স্ত্রী ডিভোর্সের পর গর্ভজাত বাচ্চার ভরণপোষণ দাবি করতে পারবেন। এগুলো তার অধিকার।’ গত বছরের শেষ দিকে প্রবাসী স্বামীকে ডিভোর্স দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকা। পারিবারিকভাবে বিয়ে হলেও স্বামীর পরিবারের অন্য সদস্যরা ওই শিক্ষিকাকে মেনে নেননি। বিয়ের পর কয়েক মাস স্বামীর সঙ্গে ভালো সম্পর্ক থাকলেও তা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। একপর্যায়ে শিক্ষিকা অনুভব করেন তার স্বামীও তাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। দেশের বাইরে থেকে পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে তার স্বামীর নিয়মিত ফোনে যোগাযোগ হলেও স্ত্রীর সঙ্গে হতো কম। এসব কারণেই ক্ষোভ বাড়তে থাকে স্ত্রীর। একপর্যায়ে প্রবাসী স্বামীকে ডিভোর্স দেন তিনি। আবার স্ত্রীর প্রতি অবাধ্যতা ও বেপরোয়া চলাফেরার অভিযোগ এনে ডিভোর্স দিয়েছেন উত্তরার তিন নম্বর সেক্টরের এক বাসিন্দা। তিনি অভিযোগ করেন, তার স্ত্রী বেপরোয়া চলাফেরা করতেন। ধর্মীয় অনুশাসনের তোয়াক্কা করতেন না। এ কারণেই গত ৮ই জানুয়ারি স্ত্রীকে ডিভোর্স দেন তিনি। প্রেমিকের সঙ্গে বিয়ে না দিয়ে পারিবারিক সিদ্ধান্তে অন্যত্র বিয়ে দেয়ার ফলেও ডিভোর্স দেয়ার ঘটনা ঘটছে। এরকম অভিযোগ এনে বিয়ের ৭-৮ মাসের মধ্যেই সংসার ভেঙেছেন কলাবাগানের গ্রীণ রোড এলাকার মনির। গত বছরের ৩রা ফেব্রুয়ারিতে বিয়ের পর ২৩শে নভেম্বর স্ত্রীকে ডিভোর্স দেন তিনি। স্ত্রীর পক্ষ থেকে ডিভোর্সের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, অনেকেই স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক ও মারধরের অভিযোগ করেন। গত বছরের ৭ই মে স্ত্রী নুরুন নাহারকে ডিভোর্সের নোটিশ দেন রাজধানীর দক্ষিণ খানের মধ্য আজমপুর জালাল আহমেদ স্মরণি এলাকার মকবুল হোসেন। স্ত্রীর প্রতি তার অভিযোগ স্বামীর অবাধ্য ও বেপরোয়া চলাফেরা। এ দম্পতির বিয়ে হয় ২০০১ সালের ২৯শে জানুয়ারি। ১৩ বছরের দাম্পত্য জীবনে তাদের রয়েছে এক পুত্র ও এক কন্যা। স্বামীর ডিভোর্সের নোটিশ পাওয়ার পর যৌতুক ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগে পারিবারিক আদালতে মামলা দায়ের করেন নুরুন নাহার। তিনি দাবি করেন, বিয়ের সময় বর মকবুলকে নগদ দুই লাখ টাকাসহ মোট ১০ লাখ টাকা যৌতুক দিয়েছেন তার পরিবার। পরে জমি ক্রয় ও বাসা নির্মাণের জন্য ৮ লাখ টাকা দিয়ে সহযোগিতা করা হয় তাকে। পরে আরও যৌতুক দাবি করে তার স্বামী। যৌতুক দিতে অসম্মতি জানালেই তিনি তালাকের নোটিশ দেন। একপর্যায়ে গত বছরের ২১শে আগস্ট আদালতের মাধ্যমে এ দম্পতির বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। উৎসঃ মানবজমিন Share on facebook Share on email Share on print 7

নিরক্ষর মানুষের তালিকায় শীর্ষে ভারত
01 Feb, 2014 জনসংখ্যায় বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ ভারত। জনাধিক্যের বিচারে চীনের পরেই এর অবস্থান। গত এক দশকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারতের অগ্রগতি উল্লেখযোগ্য হলেও সাক্ষরতার ক্ষেত্রে ভারতের পিছিয়ে পড়া দেশটির সামগ্রিক অগ্রগতিতে বড় ধরণের ক্ষতের সৃষ্টি করেছে। জাতিসংঘের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের সবচেয়ে বেশি নিরক্ষর মানুষের দেশও ভারত। এই সংখ্যা ইউরোপের মোট জনসংখ্যার প্রায় সমান। ২০১৩-১৪ বছরের এডুকেশান ফর অল গ্লোবাল মনিটরিং শিরোনামের প্রতিবেদনটি থেকে জানা গেছে ভারতে প্রাপ্ত বয়স্ক প্রায় ২৯ কোটি মানুষ এখনো নিরক্ষর। বিশ্বের নিরক্ষর মানুষের ৩৭ শতাংশই ভারতে বসবাস করেন। উন্নয়নশীল ভারতের জন্য নিরক্ষর মানুষের এই জনমিতি বড় উদ্বেগের। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে ১৯৯১ সালে ভারতে সাক্ষতার হার ছিল ৪৭ শতাংশ। ১৯৯৬ সালে দেশটিতে সাক্ষতার হার বেড়ে দাঁড়ায় ৬৩ শতাংশে। কিন্তু ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার এতটাই অনিয়ন্ত্রিত যে সাক্ষরতার হার বাড়লেও দেশটির নিরক্ষর মানুষের সংখ্যায় তেমন কোনো হেরফের হয়নি। জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের মহিলারা এতটাই বৈষম্যের শিকার যে ২০৮০ সালের আগে দেশটির সব মহিলার সাক্ষরজ্ঞান হয়ে ওঠার কোনো সম্ভাবনা নেই। প্রতিবদেনে মন্তব্য করা হয়েছে ভারতের মহিলারা যেদিন সবাই শিক্ষিত হয়ে উঠবেন সেদিন দেশটিতে শিশু মৃত্যুর হারেও উন্নতি করবে। শিশু মৃত্যুর হারে এখনো ভারত বিশ্বের কয়েকটি শীর্ষ দেশের তালিকায় রয়েছে। এমনটি উপমহাদেশে বাংলাদেশের অনেক নীচে অবস্থান করছে। ভারতে এত নিরক্ষর মানুষ কেন? জাতিসংঘের প্রতিবেদনে তাও বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এর অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে শিশু শিক্ষার মানের অবনতিকে। শিক্ষার পরিকাঠামো থেকে দক্ষ শিক্ষকের ঘাটতির কারণে ভারতের গ্রামীণ স্কুলগুলিতে পড়ালেখা হয় না। ভারতের এই চিত্রটি খুবই প্রকট। ভারতের ধনী রাজ্যগুলির তুলনায় অপেক্ষাকৃত গরীব রাজ্যগুলির শিক্ষার চিত্রটি খুবই আরো উদ্বেগের। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে দারিদ্র্যতার কারণে ভারতের ২৮টি রাজ্যের মধ্যে উত্তর প্রদেশ ও মধ্য প্রদেশে শিশুদের স্কুল ত্যাগের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এই দুটি রাজ্যে পঞ্চম শ্রেণীতে উঠার আগেই অর্ধেক শিশু স্কুল ত্যাগ করতে বাধ্য হয়। সামন্ত প্রথার সমাজ ব্যবস্থায় ভারতের উত্তর প্রদেশ, মধ্য প্রদেশ, ঝাড়খন্ড, বিহার, ছত্রিশগড় প্রভৃতি রাজ্যে শিশু শিক্ষার পরিস্থিতির সঙ্গে আফ্রিকার অনেক দেশের পরিস্থিতির তুলনা করা হয়েছে প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশের কাতারে আসতে ভারত নানামুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করলেও শিক্ষার ক্ষেত্রে দেশটির সাফল্য এখনো অনেক সমকাতারের দেশের পেছনে। এজন্য জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি দেশটির শিশু শিক্ষার মান বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে। দারিদ্র্য কমানোর কাজটিও করতে হবে ভারতকে যদি তারা এই বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে চায়। উল্লেখ্য বর্তমানে ভারতের জনসংখ্যা ১২৭ কোটির উপরে। চীনের জনসংখ্যা ১৩৩ কোটি। উৎসঃ রাইজিংবিডি Share on facebook Share on email Share on print 2

এবার ২১ আগষ্ট গ্রেনেড হামলার বিচার
01 Feb, 2014 এবার ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচারকাজ শেষ করতে চায় সরকার। এ জন্য স্বাভাবিক গতিতে মামলার কাজ এগিয়ে নিতে যেসব বাধা ছিল, তা দূর করার চেষ্টা চলছে। পাবলিক প্রসিকিউটররা নারকীয় এ হামলা মামলার বিচার প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রতার কারণগুলো সুনির্দিষ্ট করে তা সমাধানের দিকে এগিয়ে নিচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চাঞ্চল্যকর দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার বিচারের রায় হয়েছে গত বৃহস্পতিবার। গুরুত্ব বিবেচনায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নারকীয় ২১ আগস্টে হত্যাযজ্ঞের বিচার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে নিতে সব সংকট দূর করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে অভিযোগপত্রের সব সাক্ষীর সাক্ষ্য নাও নেওয়া হতে পারে। মামলার অভিযোগ প্রমাণে যতজন প্রয়োজন, ততজনের সাক্ষ্য নেওয়া হবে। আর এ সংখ্যা ২৫ থেকে ৩০ জন হতে পারে। এ ছাড়া এ মামলার আসামির বিরুদ্ধে অন্য জেলায় ভিন্ন কোনো মামলা থাকলে ওই জেলার সঙ্গে সমন্বয় করে মামলার তারিখ নির্ধারণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যাতে ২১ আগস্টের মামলার নির্ধারিত দিনে অন্য কোনো মামলার তারিখ না থাকে। তাহলে আসামিকে অন্য জেলায় যেতে হবে না। এমন পরিস্থিতিতে মামলার বিচার প্রক্রিয়া খুব শীঘ্রই শেষ হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে বলে আশা মামলা সংশ্লিষ্টদের। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনার জনসভায় গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন প্রাণ হারান। আহত হন পাঁচ শতাধিক ব্যক্তি। চিরদিনের জন্য পঙ্গুত্বের অভিশাপ বয়ে বেড়াচ্ছেন অনেকে। শেখ হাসিনা অল্পের জন্য প্রাণে রক্ষা পেলেও একটি কানের শ্রবণশক্তি হারান তিনি। জানা গেছে, জঘন্যতম ঘটনার ইতিহাস সৃষ্টিকারী এই গ্রেনেড হামলার বিচার গত বছর শেষ করার ইচ্ছা থাকলেও নানামুখী সংকটের কারণে তা করতে পারেনি তৎকালীন মহাজোট সরকার। ধীরগতিতে মামলার প্রক্রিয়া এগোতে থাকায় বিচারকাজের অগ্রগতি হয় সামান্যই। এতে বিচারের প্রতীক্ষায় থাকা আহত ও নিহতদের পরিবারের স্বজনদের মাঝে এ নিয়ে ছিল শুধু হতাশা। আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চার্জশিটে অতিরিক্ত সাক্ষীর নাম উল্লেখ থাকায় মামলার বিচার প্রক্রিয়া ধীরগতিতে চলে। এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির (অপরাধ তদন্ত বিভাগ) বিশেষ পুলিশ সুপার আবদুল কাহ্হার আকন্দ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, প্রসিকিউশন আইনজীবী কোনো সাক্ষীকে গুরুত্বহীন মনে করলে তার সাক্ষ্য নাও নিতে পারেন। এ ক্ষমতা তার রয়েছে। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিশেষ এজলাসে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচার চলছে। অতিরিক্ত সাক্ষী এবং আসামিদের অন্য মামলায় বিভিন্ন জেলায় নিয়ে যাওয়ার কারণে ২১ আগস্ট মামলার বিচার প্রক্রিয়া চলছিল ধীরগতিতে। সরকার পক্ষের আইনজীবীরা বলেন, এ মামলায় যারা আসামি তারা সারা দেশে বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর মামলার আসামি। কাজেই দেশের অন্যান্য আদালতেও আসামিদের নেওয়া হয়। ফলে ২১ আগস্ট হামলার বিচারিক ট্রাইব্যুনালের পক্ষে টানা বিচারকাজ চালানো সম্ভব হয়নি। জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নানসহ তার সহযোগীরা দেশের বিভিন্ন স্থানে বোমা হামলার সঙ্গে জড়িত। সেখানকার মামলায়ও তাদের হাজির করা হয়। আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত। আবদুস সালাম পিন্টু নারায়ণগঞ্জে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে বোমা হামলা মামলার আসামি। চট্টগ্রামের দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার কারণে এতদিন লুৎফুজ্জামান বাবরকে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হতো। তবে এখন এ মামলায় তাকে আপাতত যেতে হবে না চট্টগ্রামে। বিশেষ পিপি অ্যাডভোকেট আবু আবদুল্লাহ ভুঁইয়া আরও বলেন, এ ছাড়া আসামি পক্ষেরও মামলার বিচার বিলম্বিত করার একটা প্রবণতা রয়েছে। মামলার দীর্ঘসূত্রতার ব্যাপারে সরকারপক্ষের প্রধান কেঁৗসুলি সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেন, কেবলমাত্র মাজেদ বাটের স্ত্রী কাকনের সাক্ষ্য নেওয়ার জন্য আসামি পক্ষের আইনজীবীদের বিরোধিতার জন্য ৯৯ কার্যদিবস ব্যয় হয়েছে। মুফতি হান্নানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৬৮, আবদুর রউফের জন্য ১০ কার্যদিবস ব্যয় হয়েছে। এ জন্যই মামলার বিচারিক কার্যে সময় লাগছে। তবে মামলা-সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বাকি সাক্ষীদের মধ্যে মামলা প্রমাণের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বর্তমান ও সাবেক এমপি-মন্ত্রীসহ আরও ২৫ থেকে ৩০ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হতে পারে। আসামিপক্ষের আইনজীবী এম নজরুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত নেওয়া সাক্ষীদের জবানবন্দী অনুযায়ী মামলা প্রমাণিত হয়নি। এখনো মামলার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের সাক্ষ্য নেওয়া হয়নি। আবার বর্তমানে একজন সাক্ষীর একই সঙ্গে দুটি মামলায় সাক্ষ্য নেওয়া হচ্ছে, যা কোনোভাবেই বৈধ নয়। তবে সরকারপক্ষের আইনজীবীদের দাবি, ইতোমধ্যে মামলার অন্যতম আসামি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু এবং হরকাতুল জিহাদের (হুজি) নেতা মুফতি হান্নান, আবু তাহের, তাজউদ্দিন, মাজেদ বাটসহ জঙ্গি নেতাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য-প্রমাণ উঠে এসেছে। মামলার আসামি পক্ষের এক আইনজীবী অভিযোগ করে বলেন, সরকার তড়িঘড়ি করে বিচারকাজ শেষ করতে চায়। যুক্তি হিসেবে তিনি বলেন, আগে সপ্তাহে এক দিন আদালতে এ মামলার বিচারকাজ হতো, তা এখন সপ্তাহে তিন দিন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের মতে, নারকীয় ২১ আগস্টের এ হামলার তদন্ত করতে গিয়ে সাত বছর ধরে ঘুরপাক খেতে হয়েছে পুলিশকে। এ সময়ে তদন্ত হয়েছে তিনবার। আর তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন করা হয় ছয়বার। মহাজোট সরকার আমলে সিআইডির সম্পূরক অভিযোগপত্রে বলা হয়, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে হত্যা ও আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করতেই ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট স্মরণকালের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। অভিযোগপত্রে সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীসহ নতুন করে ৩০ জনকে আসামি করা হয়। নতুন করে ৩০ জনকে অন্তর্ভুক্ত করায় এ মামলার আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় ৫২। ২০০৮ সালের ১১ জুন দেওয়া প্রথম চার্জশিটে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের (হুজি) নেতা মুফতি হান্নান, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ২২ জনকে আসামি করা হয়েছিল। সূত্র জানায়, আগের অভিযোগপত্রে হামলায় ব্যবহৃত আর্জেস গ্রেনেডের উৎস, মজুদ, সরবরাহকারী, পরিকল্পনাকারীদের নাম স্পষ্টভাবে উল্লেখ ছিল না। অধিকতর তদন্তে বেরিয়ে আসে আর্জেস গ্রেনেড পাকিস্তান থেকে আনা হয়েছে। তা পাকিস্তানি নাগরিক মজিদ বাটের মাধ্যমে সংগ্রহ করে সাবেক মন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু ও তার ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন হামলাকারীদের মধ্যে বিতরণ করেছেন। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার ৫২ আসামির মধ্যে সাবেক মন্ত্রী জামায়াত নেতা আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, হুজি নেতা মুফতি আবদুল হান্নানসহ ২৫ জন আসামি কারাগারে আটক আছেন। এ ছাড়া বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, বিএনপির সাবেক এমপি কাজী মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদসহ ১৯ জন আসামি রয়েছেন পলাতক। অন্যদিকে লে. কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, সাবেক আইজিপি মো. আশরাফুল হুদা, শহিদুল হক ও খোদা বঙ্ চৌধুরী এবং মামলাটির তিন তদন্ত কর্মকর্তা সাবেক বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, সিআইডির সিনিয়র এ এস পি মুন্সী আতিকুর রহমান, এ এস পি আবদুর রশীদ ও সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার আরিফুল ইসলাম জামিনে রয়েছেন। ৬ জন আইও : গ্রেনেড হামলার পর মতিঝিল থানার উপ-পরিদর্শক ফারুক হোসেন, আওয়ামী লীগ নেতা আবদুল জলিল ও সাবের হোসেন চৌধুরী পৃৃথক তিনটি মামলা করেন। সূত্র জানায়, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় মোট তিন দফা তদন্তে ছয়বার তদন্ত কর্মকর্তাকে (আইও) পরিবর্তন করা হয়। প্রথম তদন্ত হয় বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে, কিন্তু কোনো প্রতিবেদন দাখিল হয়নি। বরং মামলাটিকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার জন্য জমজমাট জজমিয়া নাটক সাজানো হয়। গত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে নতুন তদন্তে সিআইডির এ এস পি ফজলুল কবীর ২০০৮ সালের ১১ জুন অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ওই অভিযোগপত্রে মুফতি হান্নানসহ ২২ জনকে অভিযুক্ত করা হলেও গ্রেনেডের উৎস ও মদদদাতাদের শনাক্ত করা হয়নি। বর্তমান সরকার আমলে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পর আদালত মামলার বর্ধিত তদন্তের আদেশ দেন। ২০০৯ সালের ১৩ আগস্ট তদন্ত শুরু করেন সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আবদুল কাহ্হার আকন্দ। ১৩ দফা সময় বাড়িয়ে ২০১১ সালের ৩ জুলাই সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার মধ্য দিয়ে ভয়ঙ্কর গ্রেনেড হামলার তদন্ত শেষ হয়। প্রথম অভিযোগপত্রে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগ নেতা আমির হোসেন আমুসহ ৪০৮ জনকে সাক্ষী করা হয়েছিল। আলামত জব্দ দেখানো হয়েছিল ৬৯ ধরনের। বিচারের অগ্রগতি : ২০১২ সালের ১৯ মার্চ তারেক রহমান, হারিছ, মুজাহিদসহ জোট সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী ও নেতা এবং বেশ কয়েকজন জঙ্গি নেতা-কর্মীসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এর আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নান ও জোট সরকারের উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। বিচার শুরুর পর গত ২১ মাসে বাদীসহ ৭৩ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ সম্ভব হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের সূত্রে জানা গেছে, আরও ২৫ থেকে ৩০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ প্রয়োজন হতে পারে। উৎসঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন Share on facebook Share on email Share on print

চলমান রাজনীতি পর্যবেক্ষণে ইসলামী দলগুলো 01 Feb, 2014 নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ৩৯টি রাজনৈতিক দলের ১২টিই ইসলাম ধর্মভিত্তিক। নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের বাইরে দেশে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ইসলামী দল ও সংগঠন কতগুলো তার কোনো পরিসংখ্যান নেই। এ সংগঠনগুলোর মধ্যে বর্তমানে সবচেয়ে শক্তিশালী হেফাজতে ইসলাম। ১২টি নিবন্ধিত ধর্মীয় দলের মধ্যে একমাত্র তরীকত ফেডারেশন দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। তাও আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকে। নির্বাচনে অংশ না নিলেও বসে নেই ধর্মীয় অন্য দলগুলো। তারা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি। অবস্থা বুঝেই নেবে সিদ্ধান্ত। দলগুলোর বর্তমান অবস্থা কী? সামগ্রিক বিষয়ে কথা হলে অধিকাংশ ধর্মীয় নেতার অভিযোগ, বর্তমান সরকারের গত মেয়াদে সংবিধানের মূলনীতি থেকে আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। জাতীয় শিক্ষানীতিতে ধর্মীয় শিক্ষাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। আদালত নির্দেশ দিয়েছেন বোরকা পরা বাধ্যতামূলক করা যাবে না। নারীনীতিতে কোরআনবিরোধী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাই এ সরকারের সঙ্গে নেই তারা। সরকার পতনে সময়মতো তারাও মাঠে নামবে। উপজেলা নির্বাচনকে গুরুত্ব দিচ্ছে জামায়াত : বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৯-দলীয় জোটের অন্যতম প্রধান শরিক দল জামায়াতে ইসলামী। জোটগতভাবে নির্বাচন করায় জামায়াতও রয়ে যায় নির্বাচনের বাইরে। কিন্তু আসন্ন উপজেলা নির্বাচনকে গুরুত্ব দিচ্ছে দলটি। এ লক্ষ্যে ১৯-দলীয় জোটে সমঝোতায়ও পেঁৗছেছে দলটি। সূত্র জানায়, নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রথম দফায় সারা দেশের ৯৭টি উপজেলায় নির্বাচন হবে। এর মধ্যে ৭১ উপজেলায় ১৮ দলের আর ২৬ উপজেলায় জামায়াতের প্রার্থী থাকছে। এ জন্য নির্বাচনী খরচ হিসেবে মোটা অঙ্কের বাজেট ঠিক করেছে জামায়াত। এ ছাড়াও জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের বিচার, দলের নিবন্ধন বাতিল, মামলাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে সমস্যাগ্রস্ত দলটি সরকারের কর্মকাণ্ড পর্যালোচনা করছে। সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য সরকারের পতনকেই একমাত্র পথ ভাবছে। এ জন্য সময় বুঝে ব্যবস্থা নেবে দলটি। সংগঠন শক্তিশালীকরণে জোর দিচ্ছেন চরমোনাই পীর : প্রধান দুই জোটের বাইরে ধর্মীয় অন্যতম শক্তিশালী দল মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ায় দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়নি তারা। বর্তমানে চরমোনাই পীর ও তার দলের নেতা-কর্মীরা বর্তমান সংসদ ভেঙে প্রতিনিয়ত নতুন নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার দাবি জানাচ্ছেন। পাশাপাশি সংগঠনকে শক্তিশালী করতে কাজ করে যাচ্ছেন। এ জন্য সারা দেশে তৃণমূলের ভিত মজবুত, জানবাজ কর্মী তৈরি করতে কর্মশালা ও সাংগঠনিক তালিম চালিয়ে যাচ্ছেন। দলের প্রচার সম্পাদক আহমদ আবদুল কাইয়ূম জানান, দুই জোটের বাইরে রাজনীতিতে গুণগত মান অর্জন করে আদর্শিক পরিবর্তনের মাধ্যমে ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য ইসলামী আন্দোলন কাজ করে যাচ্ছে। পাশাপাশি উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকেও ইসলামী আন্দোলন গুরুত্ব দিচ্ছে। এমনকি নতুন তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচনের দাবিতেও মাঠে থাকবেন তারা। জামায়াত নিষিদ্ধ চায় তরীকত : জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধের জন্য আইনি এবং রাজপথে লড়াই করে যাচ্ছে নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারীর নেতৃত্বাধীন তরীকত ফেডারেশন। জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হয়েছে তরীকতের দায়ের করা মামলায়। সংগঠনের মহাসচিব এম এ আউয়াল এমপি বলেন, জামায়াত-শিবির সন্ত্রাসী-জঙ্গিবাদী দল। দলটি নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। এ জন্য আগামী দুই মাসব্যাপী সারা দেশে গণসংযোগ, সভা-সমাবেশ, পথসভা, ঢাকা মহানগরীর কাউন্সিল ও ঢাকায় জাতীয় মহাসমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দলকে সারা দেশে আরও শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। হেফাজত নিয়েই ব্যস্ত খেলাফত আন্দোলন : মাওলানা শাহ আহমাদুল্লাহ আশরাফের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন হেফাজত নিয়েই ব্যস্ত। শাহ আহমাদুল্লাহ আশরাফ হেফাজতে ইসলামের উপদেষ্টা। সংগঠনটির মহাসচিব মাওলানা জাফরুল্লাহ খান হেফাজতের ঢাকা মহানগরীর যুগ্ম আহ্বায়ক। সংগঠনের বিস্তৃতি ঘটাতে ব্যস্ত খেলাফত মজলিস : দুই জোটের বাইরে আরেকটি অন্যতম শক্তিশালী ধর্মীয় দল মরহুম শায়খুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হকের প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। নির্বাচনে অংশ না নিলেও বর্তমানে সংগঠনকে শক্তিশালী এবং বিস্তৃতি দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছড়িয়ে দিতে চাচ্ছে দলটি। জানতে চাইলে খেলাফত মজলিসের বায়তুলমাল সম্পাদক আতাউল্লাহ আমিন জানান, সারা দেশের আনাচে-কানাচে সংগঠনকে ছড়িয়ে দিতে চলছে কর্মসূচি। উপজেলা নির্বাচনে দলীয়ভাবে কোনো সিদ্ধান্ত নেই। তবে বেশ কয়েকজন নিজ উদ্যোগে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। ১৯ দলে সক্রিয় যারা : জামায়াত ছাড়াও ১৯ দলের শরিক ধর্মীয় দল মাওলানা মুহাম্মদ ইসহাকের নেতৃত্বাধীন খেলাফত মজলিস, মরহুম মুফতি আমিনীর ইসলামী ঐক্যজোট, আল্লামা শায়খ আবদুল মোমিনের জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ ও এ এইচ এম কামরুজ্জামান খানের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল) ১৯ দলের সব আন্দোলন কর্মসূচির সঙ্গে থাকবে। এগুলো নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত দল। এইচ এম এম কামরুজ্জামান খান বলেন, ১৯-দলীয় জোটে সক্রিয় তার দল। জোটের প্রধান বেগম খালেদা জিয়া যে কর্মসূচি ঘোষণা করেন তা অনুসরণ করেন তারা। এ ছাড়াও দল শক্তিশালী করার জন্য সারা দেশে কর্মসূচি অব্যাহত আছে। তিনি বলেন, সরকার পতনে বেগম জিয়ার নেতৃত্বে এক দফার আন্দোলনে যাচ্ছেন তারা। জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের প্রচার সম্পাদক মাওলানা ওয়ালিউল্লাহ আরমান জানান, ১৯-দলীয় জোটের শরিক হিসেবে সব কর্মসূচিসহ ইমান-আকিদা রক্ষার জন্য আন্দোলন চলছে, চলবে। খেলাফত মজলিসের দফতর সম্পাদক আবদুল জলিল জানান, সরকারের পতন ঘটানোর জন্য চূড়ান্ত আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। ইসলামী ঐক্যজোটের প্রচার সম্পাদক মাওলানা ওয়াছেল জানান, নিজস্ব কর্মসূচি চলছে, জোটের কর্মসূচিতেও থাকব। অন্যান্য : এ ছাড়াও সৈয়দ বাহাদুর শাহ মুজাদ্দেদীর নেতৃত্বাধীন জাকের পার্টি, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টও সংগঠন গোছানোর কাজে ব্যস্ত। উৎসঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন Share on facebook Share on email Share on print 3

বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০১৪


দশ ট্রাক: সেই রাতের কথা
মিন্টু চৌধুরী ও মিঠুন চৌধুরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম Published: 2014-01-30 10:17:01.0 BdST Updated: 2014-01-30 16:38:11.0 BdST Previous Next দশ বছর আগে চট্টগ্রামের সিইউএফএল জেটিঘাটে বিপুল পরিমাণ আধুনিক মারণাস্ত্র ও গোলাবারুদের চালান আটকে দেয়ার যে ঘটনাটি ঘটে, তার শুরুটা হয়েছিল অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তির ফোনে। Print Friendly and PDF 2 1 902 Related Stories গুলি থেকে রকেট লঞ্চার, সবই ছিল ট্রাকে 2014-01-29 22:16:07.0 দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার আসামি যারা 2014-01-29 21:55:34.0 ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা: আসামি ঘাটশ্রমিক থেকে মন্ত্রী 2014-01-29 21:53:44.0 ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল, মধ্যরাত। কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে রাষ্ট্রায়ত্ত সিইউএফএলের সংরক্ষিত জেটিঘাটে অতি গোপনে ট্রলার থেকে নামিয়ে ট্রাকে তোলা হচ্ছিল বাক্সভর্তি অস্ত্র। ঠিক তখন প্রায় এক কিলোমিটার দূরে নদীর উত্তর পাড়ে বন্দর পুলিশ ফাঁড়ির ফোন বেজে ওঠে। সেই রাতে ঘটনাস্থলে ছিলেন কর্ণফুলী থানার বন্দর পুলিশ ফাঁড়ির সেসময়ের হাবিলদার গোলাম রসুল, ফাঁড়ির ইনচার্জ সার্জেন্ট মো. আলাউদ্দিন ও পতেঙ্গা থানার কয়লার ডিপো পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট হেলাল উদ্দিন। তিনজনই পরে আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে সেই রাতের ঘটনার বর্ণনা দেন। ২০১২ সালের ৩০ অক্টোবর আদালতে দেয়া সাক্ষ্যে হাবিলদার গোলাম রসুল বলেন, রাত আনুমানিক পৌনে ১১টায় ফাঁড়িতে একটি টেলিফোন এলে তিনি নিজের পরিচয় দেন। “তখন ওই প্রান্ত থেকে বলে- হাবিলদার সাহেব, সিইউএফএল জেটিঘাটে গিয়ে দেখেন ক্রেনের সাহায্যে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ট্রাকে লোড করা হচ্ছে। কে কথা বলছে নাম-ঠিকানা জিজ্ঞেস করলে সে কিছু না বলে ফোন রেখে দেয়।” সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি টেলিফোনে সার্জেন্ট আলাউদ্দিনকে জানান হাবিলদার রসুল। ফাঁড়ি থেকে বেরিয়ে ঘটনাস্থলের দিকে রওনা হওয়ার পর পথেই সার্জেন্ট আলাউদ্দিনের সঙ্গে দেখা হয়। এরপর আলাউদ্দিনের মোটর সাইকেলে চড়েই দুজন রওনা হন ঘাটের দিকে। গোলাম রসুল আদালতে বলেন, জেটিঘাটে পৌঁছে অনেক লোকজন, বাক্স ভর্তি দুটি ট্রলার, সাতটি ট্রাক ও একটি ক্রেন দেখতে পান। ক্রেন দিয়ে ট্রলার থেকে নামিয়ে বাক্সগুলো তোলা হচ্ছিল ট্রাকে। “শ্রমিকদের জিজ্ঞেস করলে তারা বলে- এগুলো মেশিনারি পার্টস। মালিক আশেপাশেই আছে।” কিন্তু রসুল আর আলাউদ্দিন অনেক খুঁজেও জেটিঘাটে মালামালের মালিককে পাননি বলে আদালতকে জানান। ২০১২ সালের ২৯ আগস্ট আদালতে দেয়া সাক্ষ্যে সার্জেন্ট আলাউদ্দিন বলেন, মালিককে খুঁজে না পেয়ে তিনি ফোন করেন পুলিশের তৎকালীন উপ-কমিশনার (ডিসি, বন্দর) আবদুল্লাহ হেল বাকীকে। “ডিসি বলেন, কোনো ট্রাক যেন মালামালসহ ঘাট থেকে বের হতে না পারে। কয়লার ডিপো ফাঁড়ির সার্জেন্ট হেলাল উদ্দিন ও কর্ণফুলী থানার ওসি আহাদুর রহমানকে ঘটনাস্থলে পাঠাচ্ছি।” রাত ১২টা ১০মিনিটে বেতার যন্ত্রে আবদুল্লাহ হেল বাকীর নির্দেশ পেয়ে ঘটনাস্থলে যান সার্জেন্ট হেলাল উদ্দিন, যোগ দেন রসুল আর আলাউদ্দিনের সঙ্গে। ঘাটের কাছেই এক চায়ের দোকানের সামনে সাত-আট জনের জটলা দেখতে পেয়ে এগিয়ে যান তিন পুলিশ সদস্য। সে সময় ওই জটলার মধ্য থেকে দুই ব্যক্তি এগিয়ে এসে সার্জেন্ট আলাউদ্দিনের সাথে কথা বলেন। আদালতে দেয়া সাক্ষ্যে আলাউদ্দিন বলেন, ওই দুইজনের মধ্যে একজন নিজেকে হাফিজুর রহমান ও অন্যজন উলফা নেতা আবুল হোসেন বলে পরিচয় দেয়। “হাফিজুর রহমান আমাকে রেগে গিয়ে বলেন- এগুলো অস্ত্র ও গোলাবারুদ। সরকারের সকল এজেন্সি এ বিষয়ে অবগত আছে। তোরা এখান থেকে চলে না গেলে তোদের ক্ষতি হবে।” এরপর হাফিজুর মোবাইলে কোনো এক ব্যক্তিকে ফোন করেন এবং স্যার সম্বোধন করে বলেন- “এখানে কিছু পুলিশ আছে, তাদের চলে যেতে বলেন।” সার্জেন্ট আলাউদ্দিন বলেন, “এরপর আমার দিকে মোবাইল এগিয়ে দিয়ে হাফিজুর বলে- ‘কথা বল, তোর বাবা এনএসআইয়ের ডিজির সাথে’।” আলাউদ্দিন কথা বলতে রাজি না হলে আবুল হোসেন বলেন, “তোরা এখান থেকে চলে যা। পরে জানতে পারবি আমি কে?” হাফিজুর ও আবুল হোসেনের হুমকিতে ‘বিচলিত’ হয়ে একটু দূরে গিয়ে আবার উপ-কমিশনার আবদুল্লাহ হেল বাকীকে ফোন করেন সার্জেন্ট আলাউদ্দিন। বাকী তাকে বলেন, জেটিঘাট থেকে যাতে কোনো ট্রাক বের হতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এর কিছুক্ষণ পর আরো পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন কর্ণফুলী থানার ওসি আহাদুর রহমান। হাফিজুর ও আবুল হোসেন ওসির সঙ্গে কথা বলে নিজেদেরই অস্ত্রের মালিক বলে দাবি করেন। ওসিসহ পুলিশ সদস্যের দেখে ঘাটের শ্রমিকরা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ পাঁচজনকে আটক করে। এরপর আবদুল্লাহ হেল বাকীর নেতৃত্বে পুলিশের আরো একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তবে এর ফাঁকে সরে পড়েন হাফিজুর। সার্জেন্ট হেলাল উদ্দিন আদালতে বলেন, “আবুল হোসনকে নিয়ে আমি ও সার্জেন্ট আলাউদ্দিন ডিসি মহোদয়ের কাছে যাই। একটু দূরে গিয়ে ডিসি আবুল হোসেনের সঙ্গে আলাপ করতে থাকেন। তখন আবুল হোসেন মালামাল ছেড়ে দেয়ার জন্য চাপ দেয়।” আবুল হোসেনের সঙ্গে কথা শেষ করে ডিসি আবদুল্লাহ হেল বাকী আবার পুলিশ সদস্যদের কাছে এসে কথা বলতে থাকেন। এর কিছুক্ষণ পর আবুল হোসেনও সরে পড়েন। ভোরের দিকে আটক দশ ট্রাক সমপরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ নগরীর দামপাড়া পুলিশ লাইনে নিয়ে আসা হয়। এনএসআইয়ের সাবেক উপ-পরিচালক (টেকনিক্যাল) মেজর (অব.) লিয়াকত হোসেনই ঘটনার রাতে নিজেকে আবুল হোসেন পরিচয় দেন বলে আদালতে দাবি করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কামাল উদ্দিন আহাম্মদ। গ্রেপ্তারের পর চট্টগ্রাম কারাগারে করা টিআই প্যারেডে মেজর (অব.) লিয়াকতকে ওই রাতের আবুল হোসেন বলে শনাক্ত করেন দুই পুলিশ সদস্য। তদন্তে দেখা যায়, চীনে তৈরি এসব অস্ত্র ও গোলাবারুদ সমুদ্রপথে ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ‘উলফা’র জন্য আনা হয়েছিল; বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল এই চালান। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলের ওই ঘটনায় অস্ত্র এবং বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা দুটি মামলায় তখনকার শিল্পমন্ত্রী জামায়াতে ইসলামীর আমীর মতিউর রহমান নিজামী, বিএনপি নেতা ও তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর এবং রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআই’র সাবেক দুই প্রধানসহ মোট ৫২ জনকে আসামি করা হয়।

নারী নিজেও ধর্ষণের জন্য দায়ী!

পোশাক-আশাক, তাদের আচরণ ও দৃষ্টিভঙ্গিও ধর্ষণের জন্য সমানভাবে দায়ী বলে অভিযোগ করেছেন ভারতের মহারাষ্ট্র রাজ্যের নারী নেত্রী আশা মির্জা।

বুধবার রাজ্যের ক্ষমতাসীন ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির (এনসিপি) নারী সদস্যদের এক সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এ অভিযোগ করেন তিনি। নারী অধিকার কমিশনের সদস্য আশা এনসিপির প্রভাবশালী নেত্রীও।

ধর্ষণের জন্য নারীদের আচরণ ও দৃষ্টিভঙ্গির কঠোর সমালোচনা করে আশা মির্জা বলেন, রাত ১১টার সময় কেন সিনেমা দেখতে যেতে হবে দিল্লির চলন্ত বাসে গণধর্ষণের শিকার ওই মেডিকেল ছাত্রীকে? কেন নিস্তব্ধ সন্ধ্যায় মুম্বাইয়ের জনশূন্য কারখানায় একজন নারী হয়ে ছবি তুলতে যেতে হবে গণধর্ষণের শিকার ওই ফটোগ্রাফারকে?

তিনি বলেন, মূলত নারীর পোশাক, দৃষ্টিভঙ্গি ও আচরণই তাদের এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি করার জন্য অনেকাংশে দায়ী। কোনো নারীরই উচিত নয়, এমন কোনো পোশাক পরা বা এমন কোনো আচরণ করা অথবা এমন কোনো দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করা যাতে পুরুষরা ধর্ষণে উন্মত্ত হয়।

আশা যখন সম্মেলন মঞ্চে এ কথাগুলো বলছিলেন তখন তার সঙ্গে ছিলেন এনসিপি’র প্রধান শারদ পাওয়ারের কন্যা সুপ্রিয়া শিউলা।

সম্মেলনে আশার কোনো বক্তব্যেরই প্রতিবাদ করেননি সুপ্রিয়া। এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আশা দলের একজন জ্যেষ্ঠ নেত্রী ও নারী অধিকার আন্দোলনের কর্মী। তার প্রতি সম্মান রাখতেই কোনো কথা বলিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

যেভাবে ধরা পড়ে ১০ ট্রাক অস্ত্রের চালান
বিশেষ প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম | আপডেট: ১১:১৯, জানুয়ারি ৩০, ২০১৪ ১ চট্টগ্রাম ইউরিয়া সার কারখানার ঘাটে ১০ ট্রাক অস্ত্র ও গোলাবারুদের চালান আটকের পর পুলিশ লাইন মাঠে সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। ছবিটি ২০০৪ সালের ২ এপ্রিল তোলা। ছবি: প্রথম আলোচট্টগ্রাম ইউরিয়া সার কারখানার ঘাটে ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল রাতে অস্ত্র আটকের ঘটনা ছিল অনেকটা আকস্মিক। পুলিশের দুই কর্মকর্তার সঙ্গে ক্ষমতার দাপট দেখাতে গিয়ে বিপদে পড়ে অস্ত্র পাচারকারীরা এবং আটক হয় বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র। অস্ত্র খালাসের সময় ঘটনাস্থলে প্রথম উপস্থিত সার্জেন্ট আলাউদ্দীন ও সার্জেন্ট হেলালউদ্দীন ভূঁইয়াসহ পুলিশের একাধিক সদস্য এবং একাধিক ঘাটশ্রমিকের সঙ্গে দীর্ঘ আলাপচারিতায় এ তথ্য জানিয়েছেন তাঁরা। প্রথম আলোর সঙ্গে আলাদাভাবে কথা বলার সময় তাঁরা বিস্তারিত জানান ১ এপ্রিলের রাতে অস্ত্র আটকের ঘটনা। ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল রাত ১০টার দিকে চট্টগ্রামের বন্দর পুলিশ ফাঁড়ির হাবিলদার গোলাম রসুলের টেলিফোন পেয়ে সর্বপ্রথম ঘটনাস্থলে পৌঁছান ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সার্জেন্ট আলাউদ্দীন ও কয়লার ডিপো ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সার্জেন্ট হেলাল উদ্দীন ভূঁইয়া। এই টেলিফোন পাওয়ার আধঘণ্টা আগে সার্জেন্ট আলাউদ্দীন ঘটনাস্থলের পাশের খেয়াঘাট থেকে নৌকা নিয়ে পার হয়ে ওপারের কয়লা ডিপো হয়ে বাসায় ফিরছিলেন। ঘটনার মাত্র চার দিন আগে হেলালকে বন্দর ফাঁড়ি থেকে কয়লার ডিপোতে এবং আলাউদ্দীনকে কয়লার ডিপো থেকে বন্দর ফাঁড়িতে বদলি করা হয়। এ কারণে তাঁদের বাসা পাল্টানো সম্ভব হয়নি। সিইউএফএল এবং কয়লার ডিপো পুলিশ ফাঁড়ির অবস্থান কর্ণফুলী নদীর উত্তর-দক্ষিণ পারের বিপরীতে। পুলিশের এই দুই কর্মকর্তা চাকরিতে একই ব্যাচের হওয়ায় তাঁদের মধ্যে আগে থেকেই বাড়তি সখ্য ছিল। ঘটনাস্থলে পুলিশের সংশ্লিষ্ট সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বন্দর ফাঁড়ির দায়িত্ব শেষ হওয়ার আগেই সাদা পোশাকে সিইউএফএল ঘাটের পাশের খেয়াঘাট দিয়ে একটি নৌকায় নদী পার হন সার্জেন্ট আলাউদ্দীন। তখন ঘাটে কোনো ট্রলার ছিল না। তবে অস্ত্র আটক মামলার আসামি দীন মোহাম্মদ, আবুল কাশেম মধু, আরজু পাগলাসহ অন্যরা ঘাটে ছিলেন। সার্জেন্ট আলাউদ্দীনকে ঘাটে দেখে দীন মোহাম্মদ নদী পারাপারের জন্য একটি নৌকা ঠিক করে দেন। এই নৌকায় ওপারে পৌঁছে ঘাটের পাশে সার্জেন্ট হেলালের সঙ্গে দেখা হওয়ার পরপরই বন্দর ফাঁড়ি থেকে হাবিলদার গোলাম রসুল মুঠোফোনে সার্জেন্ট আলাউদ্দীনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। গোলাম রসুল জানান, সিইউএফএল ঘাটে অস্ত্র নামছে বলে এক ব্যক্তি টেলিফোনে জানিয়েছে। পরপর দুবার ফোন পেয়ে হেলালকে সঙ্গে নিয়ে আলাউদ্দীন একই নৌকায় কর্ণফুলী নদী পাড়ি দিয়ে ছুটে যান সিইউএফএল ঘাটে। সার্জেন্ট হেলাল আগে এখানে দায়িত্ব পালনের কারণে ঘাটের অনেকেই তাঁর পরিচিত ছিলেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ছাড়াই হেলালকে সঙ্গে আনার এটাও অন্যতম কারণ ছিল বলে আলাউদ্দীন জানান। দুই সার্জেন্ট এ পারে আসার পর দেখেন, দুটি ট্রলার ঘাটে নোঙর করা অবস্থায় আছে। বড়টি ঘাটের পাশে এবং অন্যটি সেটার গায়ে লাগানো। এরপর দুই সার্জেন্ট ট্রলার দুটিতে কী হচ্ছে, তা দেখতে যান। তাঁরা দেখেন, কিছু শ্রমিক বড় ট্রলার থেকে কাঠের বাক্সগুলো ক্রেনের সাহায্যে ঘাটে রাখা ট্রাকে তুলে দিচ্ছেন। সার্জেন্ট হেলাল কর্মরত শ্রমিকদের মধ্যে তাঁর পূর্বপরিচিত শ্রমিকসর্দার আরজু পাগলাকে দেখতে পেয়ে এসব মালামাল কার, তা জানতে চান। আরজু পাগলা জানান, মালের মালিক ঘাটে আছে। এরপর দুই সার্জেন্ট ঘাটে গিয়ে মালিককে খোঁজাখুঁজি শুরু করলে হাফিজ ও আবুল হোসেন (একজন শীর্ষস্থানীয় উলফা নেতা) জানান, তাঁরাই মালের মালিক। কোনো ভণিতা না করেই তাঁরা স্পষ্ট জানান, ‘ট্রলার দুটিতে অস্ত্রশস্ত্র আছে। প্রশাসনের সবাই বিষয়টি জানে।’ একপর্যায়ে পুলিশের দুই সার্জেন্টের সঙ্গে আবুল হোসেনকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে হাফিজ বলেন, ‘উনি উলফার নেতা, অস্ত্র তাঁদেরই।’ এসব অস্ত্রের কোনো বৈধ কাগজপত্র আছে কি না, তা পুলিশের দুই কর্মকর্তা জানতে চাইলে খেপে যান হাফিজ। উত্তেজিত হয়ে তিনি বলেন, ‘কিসের কাগজ, এই অস্ত্র আসার খবর সরকারের উচ্চপর্যায়ের সবার জানা আছে, এগুলো নামাতে বাধা দিলে আপনার ক্ষতি হবে।’ জানা গেছে, পুলিশ ও অস্ত্র খালাসকারীদের মধ্যে এভাবে তর্ক শুরু হলে ঘাটের শ্রমিকেরা একে একে সরে পড়তে থাকেন। ঘাটশ্রমিকদের বলা হয়েছিল, পুলিশের বাধা তো দূরের কথা প্রয়োজনে কোস্টগার্ড এসে এগুলো খালাসে সাহায্য করবে। একপর্যায়ে অস্ত্র খালাসের কাজও সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। ইতিমধ্যে খবর পেয়ে হাবিলদার গোলাম রসুলের নেতৃত্বে বন্দর ফাঁড়ির সব সদস্য, কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহাদুর রহমান, ঘাটের আনসারসহ আরও অনেকে ঘাটে এসে জড়ো হন। নিজেদের শক্তি বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি বুঝতে পেরে তখন দুই সার্জেন্ট অস্ত্র খালাসকারীদের সঙ্গে দরকষাকষির চেষ্টা চালান। কিন্তু হাফিজ টাকা দিয়ে সমঝোতার চেষ্টার পরিবর্তে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কথা বলে পুলিশের ওপর চাপ সৃষ্টির চেষ্টা অব্যাহত রাখেন। এ সময় তিনি মুঠোফোনে ক্রমাগত বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ করছিলেন। একপর্যায়ে হাফিজ তাঁর মুঠোফোনটি সার্জেন্ট আলাউদ্দীনকে দিয়ে বলেন, ‘তোর বাপের সঙ্গে কথা বল, ডিজিএফআইয়ের বড় অফিসার লাইনে আছে।’ কিন্তু সার্জেন্ট আলাউদ্দীন ভয় পেয়ে ওই ফোনে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান। তিনি পাল্টা বলেন, ‘আমি এবার তোমার বাপকে খবর দিচ্ছি। দেখি তোমাকে কে বাঁচায়?’ এরপর হেলালের সঙ্গে পরামর্শ করে আলাউদ্দীন ডিসি-পোর্টকে মুঠোফোনে অস্ত্র খালাসের বিষয়টি জানান। একই সঙ্গে তিনি কয়লার ডিপোর সার্জেন্ট হেলালসহ আশপাশের সব ফাঁড়ি থেকে পুলিশ পাঠানোর আবেদন জানান। ডিসি-পোর্ট আবদুল্লাহ হেল বাকি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে তাঁকে আশ্বস্ত করেন। এরপর ডিসি-পোর্ট আশপাশের সবাইকে ঘটনাস্থলে যাওয়ার বার্তা দিয়ে নিজেও আসছেন বলে জানান। ইতিমধ্যে হাফিজের সঙ্গে থাকা উলফা নেতা আবুল হোসেন নিজের মুঠোফোনে কারও সঙ্গে কথা বলে সার্জেন্ট আলাউদ্দীনকেও কথা বলার অনুরোধ করেন। আলাউদ্দীন ফোন ধরলে অপর প্রান্ত থেকে এক ব্যক্তি নিজের পরিচয় প্রকাশ না করে বলেন, ‘দেখুন, আমরা ১৯৭১ সালে আপনাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে অনেক সহায়তা করেছি। এসব অস্ত্রশস্ত্রও আপনাদের মতো আমাদের একটি স্বাধীন ভূখণ্ড সৃষ্টির কাজে লাগবে, আপনাদের কোনো ক্ষতি হবে না।’ এসব অস্ত্র নামানোর কাজে বাধা না দেওয়ার জন্যও তিনি অনুরোধ করেন। এ সময় সেখানে উপস্থিত পুলিশের সদস্যরা তাঁদের পরিচিত অন্যান্য পুলিশ, বিডিআর, কোস্টগার্ডসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন সদস্যের মুঠোফোনে খবর দেন। খালাসকারীরা যাতে কোনোভাবেই পার পেয়ে যেতে না পারে, সে জন্য এটা করা ছাড়া অন্য কোনো উপায় ছিল না বলে সার্জেন্ট আলাউদ্দীন জানান। উপস্থিত পুলিশের একাধিক সদস্য জানান, হাফিজ ও তাঁর সঙ্গী বাদানুবাদের একপর্যায়ে পুলিশের দলকে একটি বড় অঙ্কের টাকা দেওয়ারও প্রস্তাব করেন। কিন্তু ততক্ষণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় পুলিশ টাকা নিতে রাজি হয়নি। জানা গেছে, এর ঘণ্টা খানেকের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে শুরু করেন। রাতেই বিষয়টি এমনভাবে জানাজানি হয়ে যায় যে, তখন আর কোনোভাবেই তা চেপে যাওয়ার কিংবা অস্ত্রবোঝাই ট্রাকগুলো ও ট্রলার দুটি ছেড়ে দেওয়া সম্ভব ছিল না। এ কারণে ১০ ট্রাক অস্ত্র আটকের সিদ্ধান্ত নিতে প্রশাসন অনেকটা বাধ্য হয় বলে জানা যায়। (অনুসন্ধানী এই প্রতিবেদনটি ২০০৯ সালের ৫ মার্চ ‘প্রথম আলো’য় প্রকাশিত হয়েছিল। পাঠকদের আগ্রহের কথা বিবেচনা করে কিছু পরিমার্জন করে প্রতিবেদনটি আবার প্রকাশ করা হলো)

বিলবোর্ডেও অর্ধনগ্ন প্রিয়াংকা চোপড়া
January 30, 2014 | Filed under: সংস্কৃতি-বিনোদন | Posted by: নিউজ ডেস্ক/এনইউ প্রিয়াঙ্কা চোপরা প্রিয়াঙ্কা চোপরা নিউজ ইভেন্ট ২৪ ডটকম এবার প্রিয়াংকা চোপড়াকে দেখা যাবে অর্ধনগ্ন অবস্থায়। তবে কোন সিনেমায় নয়, বিলবোর্ডে। চলচ্চিত্রের পাশাপাশি বড় বড় ব্র্যান্ডের মডেল হিসেবে প্রিয়াংকা নিয়মিত কাজ করে আসছেন। প্রিয়াংকা তার ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই বিজ্ঞাপনে কাজ করছেন। বর্তমানে বিভিন্ন চ্যানেলে তার একাধিক বিজ্ঞাপনের প্রচার চলছে। প্রথমবারের মত প্রিয়াংকা অন্তর্বাস সামগ্রীর ব্র্যান্ডের মডেল হিসেবে কাজ করেছেন। এক সাক্ষাৎকারে একথা প্রিয়াংকা নিজেই জানিয়েছেন। এরই মধ্যে তিনি অংশ নিয়েছেন এই আন্তর্জাতিক অন্তর্বাস সামগ্রীর ফটোসেশনে। বিভিন্ন অন্তর্বাস পরে খোলামেলা হয়ে তিনি ক্যামেরার সামনে হাজির হয়েছিলেন। এই অন্তর্বাস ব্র্যান্ডটির লঞ্চিংয়ের দিন থেকে ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের বিলবোর্ডে প্রিয়াংকার এই খোলামেলা ছবিগুলো ঠাঁই পাবে। দর্শক তাকে দেখতে পাবে অর্ধনগ্ন অবস্থায়। এ প্রসঙ্গে প্রিয়াংকা জানান, আন্তর্জাতিক মানের এই অন্তর্বাস ব্র্যান্ডটির মডেল হতে পেরে বেশ ভাল লাগছে। এদিকে জানা গেছে, এ ব্র্যান্ডটির লঞ্চিংয়ের দিন একটি নাইটি পরে মঞ্চে ক্যাটওয়াক করবেন প্রিয়াংকা চোপড়া । নিউজ ইভেন্ট ২৪ ডটকম/৩০ জানুয়ারি, ২০১৪/১০:৫২/এনইউ

প্রকাশ : ৩০ জানুয়ারি, ২০১৪ ১৫:১৩:৪৩আপডেট : ৩০ জানুয়ারি, ২০১৪ ১৫:২৯:৩৫
লক্ষ্মীপুরে দিন-দুপুরে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ স্থানীয়রা জানিয়েছেন, লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার মোল্লারহাট বাজারে বৃহস্পতিবার দুপুরে এই ঘটনা ঘটেছে। রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার মোল্লারহাট বাজারে বৃহস্পতিবার দুপুরে তৃতীয় শ্রেণির এক স্কুলছাত্রী (১০) ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।লক্ষ্মীপুরে দিন-দুপুরে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ বাজারের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, সরফ আলী হাওলাদার (২৫) নামে এক বখাটে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হাওলাদার ভ্যারাইটিজ স্টোরে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তারা বিষয়টি শুনেছেন। বাজারের ইত্যাদি ভ্যারাইটিজ স্টোরের মালিক হারুন হাওলাদার সমকালকে জানান, দুপুর ২টার দিকে ওই স্কুলছাত্রী সরফ আলীর দোকানে যায় খাতা কিনতে। এসময় সরফ আলী কৌশলে তাকে তার দোকানের পেছনের রুমে নিয়ে ধর্ষণ করে। তখন তার চিৎকারে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এগিয়ে গেলে দোকান ফেলে পালিয়ে যায় সরফ। পরে তারা তাকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে রায়পুর থানার ওসি রূপক কুমার সাহা সমকালকে বলেন, বিষয়টি আমরা শুনেছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। - See more at: http://www.samakal.net/2014/01/30/36249#sthash.h6Rzj776.dpuf

বুধবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০১৪

5/17 ২০০৪ সালের ২ এপ্রিল চট্টগ্রামের সিইউএফএল জেটি থেকে দশ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধারের পর দামপাড়া পুলিশ লাইন মাঠে নেয়া হচ্ছে। ছবি: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
২০০৪ সালের ২ এপ্রিল চট্টগ্রামের সিইউএফএল জেটি থেকে দশ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধারের পর দামপাড়া পুলিশ লাইন মাঠে নেয়া হচ্ছে। ছবি: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
২০০৪ সালের ২ এপ্রিল চট্টগ্রামের সিইউএফএল জেটি থেকে দশ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধারের পর দামপাড়া পুলিশ লাইন মাঠে নামানো হচ্ছে। ছবি: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
২০০৪ সালের ২ এপ্রিল চট্টগ্রামের সিইউএফএল জেটি থেকে দশ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধারের পর দামপাড়া পুলিশ লাইন মাঠে নামানো হচ্ছে। ছবি: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
২০০৪ সালের ২ এপ্রিল চট্টগ্রামের সিইউএফএল জেটি থেকে দশ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধারের পর দামপাড়া পুলিশ লাইন মাঠে নামানো হচ্ছে। ছবি: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
২০০৪ সালের ২ এপ্রিল চট্টগ্রামের সিইউএফএল জেটি থেকে দশ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধারের পর দামপাড়া পুলিশ লাইন মাঠে নামানো হচ্ছে। ছবি: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
11/17 চট্টগ্রামে দশ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধারের একদিন পরে ২০০৪ সালের ২ এপ্রিল চট্টগ্রামের দামপাড়া পুলিশ লাইন মাঠ থেকে তোলা ছবি। ছবি: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
12/17 চট্টগ্রামে দশ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধারের একদিন পরে ২০০৪ সালের ২ এপ্রিল চট্টগ্রামের দামপাড়া পুলিশ লাইন মাঠ থেকে তোলা ছবি। ছবি: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
চট্টগ্রামে দশ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধারের একদিন পরে ২০০৪ সালের ২ এপ্রিল চট্টগ্রামের দামপাড়া পুলিশ লাইন মাঠ থেকে তোলা ছবি। ছবি: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
চট্টগ্রামে দশ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধারের একদিন পরে ২০০৪ সালের ২ এপ্রিল চট্টগ্রামের দামপাড়া পুলিশ লাইন মাঠ থেকে তোলা ছবি। ছবি: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
চট্টগ্রামে দশ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধারের একদিন পরে ২০০৪ সালের ২ এপ্রিল চট্টগ্রামের দামপাড়া পুলিশ লাইন মাঠ থেকে তোলা ছবি। ছবি: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
চট্টগ্রামে দশ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধারের একদিন পরে ২০০৪ সালের ২ এপ্রিল চট্টগ্রামের দামপাড়া পুলিশ লাইন মাঠ থেকে তোলা ছবি। ছবি: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
চট্টগ্রামে দশ ট্রাক অস্ত্র উদ্ধারের একদিন পরে ২০০৪ সালের ২ এপ্রিল চট্টগ্রামের দামপাড়া পুলিশ লাইন মাঠ থেকে তোলা ছবি। ছবি: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
২০০৪ সালের ২ এপ্রিল চট্টগ্রামের দামপাড়া পুলিশ লাইন মাঠে উদ্ধার হওয়া অস্ত্র পরিদর্শন করছেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। ছবি: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
২০০৪ সালের ২ এপ্রিল চট্টগ্রামের দামপাড়া পুলিশ লাইন মাঠে উদ্ধার হওয়া অস্ত্র পরিদর্শন করছেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। ছবি: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
২০০৪ সালের ২ এপ্রিল চট্টগ্রামের দামপাড়া পুলিশ লাইন মাঠে উদ্ধার হওয়া অস্ত্র পরিদর্শন করছেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। ছবি: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
3/17 ২০০৪ সালের ২ এপ্রিল চট্টগ্রামের দামপাড়া পুলিশ লাইন মাঠে উদ্ধার হওয়া অস্ত্র পরিদর্শন করছেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। ছবি: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
২০০৪ সালের ২ এপ্রিল চট্টগ্রামের দামপাড়া পুলিশ লাইন মাঠে উদ্ধার হওয়া অস্ত্র পরিদর্শন করছেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। ছবি: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০১৪


৫ বস্তা টাকা নিয়ে দু’দিন ধরে না খেয়ে ব্যাংক ডাকাত প্রধান ! 28 Jan, 2014 পাঁচ বস্তা টাকা পাহারা দিয়েছেন দু’দিন ধরে। এই সময়ে তার নাওয়া খাওয়া কিছুই হয়নি। পেটে পড়েনি এক ফোটা দানাপানিও। এতে ভীষণ দূর্বল হয়ে পড়েছেন হাবিব ওরফে সোহেল। সোহেলকে চিনতে পাঠকদের অসুবিধা হবার কথা নয়। সোহেল হচ্ছে কিশোরগঞ্জের সোনালী ব্যাংক ডাকাতির প্রধান আসামী। মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে রাজধানীর শ্যামপুর বালুর মাঠের ৮ নম্বর রোডের তনি ভিলার তিন তলা থেকে র‌্যাব সদস্যরা তাকে লুণ্ঠিত টাকা এবং এক সহযোকীকে গ্রেফতার করে। র‌্যাবের মুখপাত্র এটিএম হাবিবুর রহমান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শ্যামপুর বালুর মাঠ এলাকার একটি সাত তলা ভবনের তিন তলা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় ওই বাসা থেকে লুন্ঠিত পাঁচ বস্তা টাকাও উদ্ধার করা হয়েছে। এই টাকার ওজন প্রায় ১২ মন। তবে লুন্ঠিত ১৬ কোটি ৪০ লাখ টাকার মধ্যে কত টাকা উদ্ধার করা হয়েছে, তা তাৎক্ষণিকভাবে তা গুনে দেখা হয়নি বলে জানান তিনি। উৎসঃ রাইজিংবিডি Share on facebook Share on email Share on print

যে সূক্ষ্ম চালে হিন্দি সিরিয়াল ধ্বংস করে দিচ্ছে আপনার জীবন!
28 Jan, 2014 সন্ধ্যার পরে কোনো কিছুইতেই আর মন বসে না। ঠিক সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত দুনিয়ার সব কাজকর্ম বাদ দিয়ে একটাই কাজ হলো ‘হিন্দি সিরিয়াল’ দেখা। প্রতিদিনই নতুন নতুন পর্ব আর ঘটনার চমকের কারণে নেশা হয়ে গিয়েছে সিরিয়ালের। এক দিন দেখতে না পারলেই মনটা খারাপ হয়ে যায়। তখন বান্ধবীদের থেকে ঘটনা শুনে নিতে হয় অথবা পুনঃপ্রচার দেখতে হয়। এমন ভয়ংকর নেশায় মত্ত হয়ে আছে বাংলাদেশের অধিকাংশ নারী। স্টার প্লাস, স্টার ওয়ান কিংবা জি টিভিতে চলা এই সিরিয়ালগুলো নারীদের কাছে খুবই জনপ্রিয়। এমনকি অনেক পুরুষও আজকাল দেখছেন এসব সিরিয়াল। ঢাকার পাশাপাশি মফস্বলেও ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়েছে এই আসক্তি। আর হিন্দি সিরিয়ালের বিষাক্ত ছোবলের ভয়ঙ্কর প্রভাব পড়ছে আমাদের সমাজের উপরে। আসুন জেনে নেয়া যাক হিন্দি সিরিয়ালের সেই বিরূপ প্রভাব গুলো, যা মূলত ধ্বংস করছে আপনার জীবন! ১)সংসারে ‘কুটনামি’ করে অশান্তি বৃদ্ধি করা যে সূক্ষ্ম চালে হিন্দি সিরিয়াল ধ্বংস করে দিচ্ছে আপনার জীবন! হিন্দি সিরিয়ালের মূল উপাদান নিঃসন্দেহে কুটনামি। প্রতিদিনই সিরিয়ালে দেখানো হচ্ছে শাশুড়ি-বৌ এর কুটনামি, দুই জা এর কুটনামি কিংবা পরিবারের অন্যদের সংগে ষড়যন্ত্র ও কুটনামি। সিরিয়ালে দেখানো এসব ঘটনা ‘স্লো পয়জন’ এর মত কাজ করছে নারীদের ওপর। নিজের অজান্তেই কুটনামি করা শিখে ফেলছেন নারীরা। এক পর্যায়ে মনের বিকৃতির কারণে কুটনামি করেই বিকৃত রূচির বিনোদন পাচ্ছেন আমাদের সমাজের কিছু সংখ্যক হিন্দি সিরিয়াল প্রেমী নারী। ২)সাধারণ বিষয়কেও জটিল মনে করে মানসিক চাপে ভোগা হিন্দি সিরিয়ালে অনেক সাধারণ একটি বিষয়কেও জটিল করে দেখানো হয়। আর তাই যারা নিয়মিত হিন্দি সিরিয়াল দেখে তাদের কাছে খুব সহজ, সাধারণ একটি বিষয়কেও অনেক বেশি জটিল ও কুটিল মনে হতে থাকে। ফলে অযথাই মানসিক চাপ বৃদ্ধি পায় তাদের। ৩)অন্যের সম্পর্কে আলোচনা-সমালোচনা করা হিন্দি সিরিয়ালের দেখা দেখি একের কাছে অন্যের সমালোচনা করার প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে সমাজে। বান্ধবীদের কাছে, বোনদের কাছে কিংবা অন্য কারো কাছে সমালোচনা করে আনন্দ পাচ্ছে নারীরা। কে কী পোশাক পরছে, কার কত টুকু সম্পত্তি আছে, কার সন্তান আছে কার নেই ইত্যাদি অনধিকার চর্চার অভ্যাস বাড়ছে। ৪)ভারতীয় সংস্কৃতির বিরূপ প্রভাব যে সূক্ষ্ম চালে হিন্দি সিরিয়াল ধ্বংস করে দিচ্ছে আপনার জীবন! আমাদের দেশের বিয়ের অনুষ্ঠান, জন্মদিন, পূজা, ঈদ, সম্পর্ক সব কিছুতেই পড়েছে হিন্দি সিরিয়ালের প্রভাব। হিন্দি সিরিয়ালের দেখা দেখি অনেক বেশি জাঁকজমকপূর্ন অনুষ্ঠান করা কিংবা ভারতীয় প্রথা অনুসরণ করার কারণে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে নিজস্ব দেশীয় সংস্কৃতি। ৫)অতিরিক্ত সাজ পোশাক ও মেকআপ করার প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়া হিন্দি সিরিয়ালের নায়িকারা মেকআপ করে ঘুমাতে যায়, ঘুম থেকে ওঠে,শপিং যায়। এমনকি গোসল করে আসার পরেও মেকআপ করা থাকে। আর তাই হিন্দি সিরিয়াল আশক্ত নারীদের মধ্যেও অতিরিক্ত মেকআপ করা ও হিন্দি সিরিয়ালের নায়িকাদের মত দামী দামী জবরজং সাজ পোশাক পড়ার প্রবণতা লক্ষ্য করার মত বাড়ছে। ৬)লোক দেখানো কাজ করা কার কত দামী শাড়ি আছে, অমুক সিরিয়ালের নায়িকার স্টাইলের শাড়ি, তমুক সিরিয়ালের নায়িকার গলার হার ইত্যাদি হিন্দি সিরিয়ালের ভক্ত নারীদের ধ্যান-জ্ঞান হয়ে দাঁড়িয়েছে। কার চাইতে কে বেশি খরচ করে এসব কিনতে পারবে ও বান্ধবীদেরকে দেখাতে পারবে না নিয়ে রীতিমত প্রতিযোগিতা হয় নিজেদের মধ্যে। অসুস্থ এই প্রতিযোগিতায় যারা হেরে যায় তাদেরকে কটাক্ষ করতেও দ্বিধা করে হিন্দি সিরিয়াল আসক্ত এই নারীরা। ৭)পরকীয়ার প্রবণতা যে সূক্ষ্ম চালে হিন্দি সিরিয়াল ধ্বংস করে দিচ্ছে আপনার জীবন! হিন্দি সিরিয়ালে অহরহই যে বিষয়টি দেখাচ্ছে তা হলো পরকীয়া। প্রতিটি সিরিয়ালেই পরকীয়া হলো ঘটনার একটি মূল উপাদান। নৈতিকতা বিরোধী এই সম্পর্ক অতিরিক্ত দেখার কারণে বেশ স্বাভাবিক মনে হচ্ছে গৃহিণীদের কাছে। তাই একটু সুযোগ পেলেই পরকীয়ায় লিপ্ত হচ্ছে অনেক নারী। এমনকি অনৈতিক শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে যাচ্ছে অনেক নারী। ৮)পড়াশোনায় ক্ষতি স্কুল, কলেজ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়া অনেক মেয়েরা ও কিছু সংখ্যক ছেলেরাও হিন্দি সিরিয়ালে আসক্ত। প্রতিদিন পড়াশোনার মূল সময়টি তারা নষ্ট করে হিন্দি সিরিয়াল দেখে। তাদের মা, নানি, দাদিরাও সেই সময়ে বসে সিরিয়াল দেখে বলে সন্তানদেরকে মানা করতে পারে না। ফলে তাদের পরীক্ষার ফলাফল খারাপ হচ্ছে এবং অনেক ক্ষেত্রে কম বয়সেই ঝরে পড়ছে পড়াশোনা থেকে। উৎসঃ আলোকিত Share on facebook Share on email Share on print 4

বাংলাদেশী গণতন্ত্রের নতুন মডেল
27 Jan, 2014 নয়া এক গণতন্ত্র আমরা পেয়েছি বিতর্কিত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর। বিশ্বের কোথাও এ ধরনের গণতন্ত্র এ মুহূর্তে চালু নেই। পশ্চিমা গণতন্ত্রের জন্মদাতারা বেঁচে থাকলে হয়তো তারা বড্ড বেশি লজ্জা পেতেন। কারণ, প্রচলিত ধারার গণতন্ত্রের সংজ্ঞার সঙ্গে বাংলাদেশী গণতন্ত্রের কোন মিল নেই। অদ্ভুত কিসিমের এই গণতন্ত্রে কোন ভোটের প্রয়োজন হয় না। সংসদেও দরকার হয় না বিরোধী দলের। বিরোধী নেত্রী আছেন। আছেন তার দলের মন্ত্রীরা। দলের প্রধান সরকারের বিশেষ দূতও। সরকার আর বিরোধীদলকে আলাদা করে দেখার কোন সুযোগ নেই। কথা হচ্ছে জটিল এক নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমরা এটা অর্জন করেছি। পশ্চিমা গণতন্ত্রের প্রতি আমাদের অবিচল আনুগত্য আর নেই। কারণ, আমরা নিজেরা নয়া এক মডেল তৈরি করেছি। এখন সংবিধান সংশোধন করে নিলেই সব মামলা চুকে যায়। বুদ্ধিজীবীরা সমানেই টিভির টকশোতে নয়া সব তত্ত্ব হাজির করছেন। বলছেন এটাই গণতন্ত্র। কে ভোট দিতে গেল আর না গেল তা দেখার সুযোগ বা সময় কোথায়? ভোটের বাক্স ছিল। দাওয়াতও দেয়া হয়েছিল ভোটারদের। নিরাপত্তাও ছিল। কেউ যায়নি তাতে কি? শাসন কায়েম হয়ে গেছে। বিদেশ থেকে স্বীকৃতিও এসে গেছে। তাই আসুন আমরা সবাই যোগ দেই গার্ডেন উৎসবে। যদিও সবার জন্য দরজা খোলা নয় এই উৎসবে। যারা সহযাত্রী তারাই যোগ দেবেন বা দিয়েছেন। আগে ব্যতিক্রম থাকতেন নিরাপত্তা বসরা। এবার তারাও কোরাসে যোগ দিয়েছেন। খানাপিনায় অংশ নিয়ে তৃপ্তির ঢেকুর তুলেছেন। বলেছেন, বাড়তি মজা দেখছি। আগে আমাদেরকে কেন দূরে ঠেলে রাখা হতো। এটাইতো ভাল। সবাই মিলেমিশে এক পতাকাতলে যোগ দিলে দেশে শান্তি আসবে। ভিন্ন মতের কি প্রয়োজন? ওরা তো গাড়ি পোড়ায়, রাস্তা অবরোধ করে। কথায় কথায় হরতাল ডাকে। জ্বালাও পোড়াও ছাড়া ওদের যেন আর কোন কাজ নেই। একদা আমজনতার আওয়াজ অন্য স্রোতে বেশি ছিল। এখন ঠিক হয়ে যাবে। আমরা ওদেরকে ঘুম পাড়িয়ে রাখার ওষুধ পেয়ে গেছি। দেখছেন না জেলায় জেলায় থানায় থানায় কিভাবে নতুন শব্দে ঘুম ভাঙে। কেউ জাগে, কেউ চিরদিনের জন্য ঘুমিয়ে যায়। নয়া মডেল দরকার। জয়তু সরকার প্রধান। তিনি নয়া মডেল দিয়েছেন। আসাদরা গাদ্দাফিরা কোন মডেল দিতে পারেনি। তারা বন্দুকের জোরে ক্ষমতা টিকে ছিল বা আছে। এখানে তো সংসদ বহাল। বিরোধীদলও থাকছে। একটু অন্যরকম আর কি? সরকার আর বিরোধীদল একযোগে কাজ করবে। বিরোধী মতের কি প্রয়োজন। অযথা বাড়তি টেনশন। কথার যুদ্ধ। জনগণকে উসকে দিয়ে ফায়দা নেয়ার চেষ্টা। বাংলাদেশী নতুন মডেলে এর কোন জায়গা নেই। ধীরে ধীরে এই জঞ্জাল সাফ করতে হবে। বিরোধী মতের আপাতত কোন দরকার নেই। ভবিষ্যতে দেখা যাবে। পশ্চিমা দুনিয়ার কয়েকজন চেঁচামেচি করবে। পরে ঠিক হয়ে যাবে। আর ওরা কি চায়। ব্যবসা, সুযোগ সুবিধা। সবই তারা পাবে। দেখলেন না চীন কিভাবে রাতারাতি পাল্টে গেল। আরও বড় শক্তি? অপেক্ষা করছে। দেখবেন সেটাও ম্যানেজ হয়ে গেছে। বিরোধীরা যে কেন ভোটে এলো না, তা আমি বুঝতে পারি না। তারা এলেই অনেক কিছু পেত। আমি তো সবাইকেই দিয়েছি। গোলমালটা হচ্ছে ইউরোপীয় একটি শক্তিকে নিয়ে। তারা ওয়েস্ট মিনস্টার ধারণার অন্য ব্যাখ্যা মানতে চায় না। তাই তারা আপত্তি করেছে। সংসদে প্রস্তাবও পাস করেছে। আপাতত বৈরী। পরশু সকালে দেখবেন বিলকুল ঠিক। বিরোধীরাও চুপ হয়ে যাবে। সামনে কত যে খেলা অপেক্ষা করছে। উপজেলা যাক না- দেখবেন হিসেব মেলাতে পারছে না। রাজনীতি চার দেয়ালের মধ্যেই বন্দি হয়ে যাবে। মিডিয়া তো কাবু হয়েই গেছে। আমাদের কিছু করতে হয়নি। নিজেরাই ম্যানেজ হয়ে গেছে। নতুন আইন করতে যাচ্ছি তাতে ওয়েব দুনিয়াও ঠাণ্ডা হয়ে যাবে। ক’জনের সাহস আছে আইন অমান্য করে বিপ্লবে যোগ দেয়ার। তার মানে কি? মানে খুবই সোজা। এক নেতা, এক দেশ, স্লোগানটি একসময় শুনতে ভাল লাগতো। মাঝখানে অরুচি ছিল। এখন নয়া মোড়কে মোড়ানো হচ্ছে। ভাল লাগতেও পারে। না লাগলে চলে যান অন্য দেশে। কার কি আপত্তি। কেউ আপত্তি জানাবে না। নিরাপত্তার জন্য, সুশাসনের জন্য প্রজারা নানা সময় নানা কিছু করেছেন। এই ভূখণ্ডেও তাই দেখা গেছে। প্রজারা রাজাকে বসান। আবার হটিয়েও দেন। রাজতন্ত্র আর গণতন্ত্রের মিল খুঁজতে গিয়ে অযথা বাড়তি চিন্তা করছেন কেন? সময় শেষ হয়ে যায়নি। অপেক্ষা করুন, দেখুন। নয়া কিছুর জন্য কষ্ট করতে হয়। রূপকথার গল্প শেষে সব সময় বলা হয়, এরপর তারা সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে লাগল। এটা রূপকথা কিনা তা নিয়ে আপনি বিতর্ক করতে পারেন। আমি অন্তত করছি না। উৎসঃ manabzamin Share on facebook Share on email Share on print 5

পুলিশে যোগ হচ্ছে আরও ২০ হাজার সদস্য
27 Jan, 2014 পুলিশ বাহিনীতে আরও ২০ হাজার সদস্য বাড়ানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। শিগগিরই দুই ধাপে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে। পুলিশের লজিস্টিক সাপোর্টও বাড়ানো হচ্ছে। প্রয়োজনীয় নতুন গাড়ি কেনারও সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশের গ্রেড-১ ও গ্রেড-২ পদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। বর্তমানে পুলিশে গ্রেড-১-এ দুটি পদ রয়েছে।পুলিশে যোগ হচ্ছে আরও ২০ হাজার সদস্য পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত গাড়িগুলো মেরামতের পাশাপাশি নতুন গাড়ি কেনারও সিদ্ধান্ত হয়েছে। গতকাল রোববার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়। প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান, জনপ্রশাসন সচিব আবদুস সোবহান শিকদার, পুলিশের আইজি হাসান মাহমুদ খন্দকার, আইন সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নাজিমুদ্দিন চৌধুরীসহ পুলিশ বিভাগ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম বলেন, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা এ মুহূর্তে পুলিশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। এ জন্য পুলিশ বাহিনীকে আরও যোগ্য করে গড়ে তুলতে সরকার সম্ভাব্য সব কিছু করবে। কার্যক্ষেত্রে পুলিশের সক্ষমতা বাড়ানো হবে। সংঘাত ও সহিংসতা মোকাবেলায় পুলিশকেও প্রস্তুত থাকতেহবে। তাদের সক্ষমতার প্রমাণ দিতে হবে। বৈঠকে উপস্থিত পুলিশ সূত্র জানায়, গুরুত্বপূর্ণ ওই বৈঠকে পুলিশের দীর্ঘদিনের দাবি-দাওয়া নিয়ে আলোচনা হয়। প্রয়োজনীয় নতুন গাড়ি কেনার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। এ ছাড়া আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) ৯টি ইউনিটে লোকবল বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বৈঠকের সিদ্ধান্তের আলোকে শিগগিরই পুলিশে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে। দুই ধাপে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। বৈঠকে পুলিশের পক্ষ থেকে নতুন গাড়ি কেনার প্রস্তাব দেওয়া হয়। এ ছাড়া পুলিশের ভাতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। পুলিশ বাহিনীর প্রস্তাবনা অনুযায়ী বাহিনীতে গ্রেড-১-এ দুটি এবং গ্রেড-২-এ ৫টি পদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। পুলিশ সূত্র জানায়, যুদ্ধাপরাধের দায়ে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায়কে কেন্দ্র করে সারাদেশে সহিংসতা শুরু হয়। ওই সময় থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজনৈতিক সহিংসতায় পুলিশের শতাধিক গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পুড়ে যাওয়া ও ভাংচুরের শিকার ওইসব গাড়ি বর্মতানে অকেজো হয়ে পড়ে থাকায় পুলিশের স্বাভাবিক অভিযান পরিচালনায় ব্যাঘাত ঘটছে। দ্রুত এসব ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ি মেরামত করে কাজের উপযোগী করা হবে। পাশাপাশি প্রয়োজনীয় নতুন গাড়ি কেনার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে। উৎসঃ samakal Share on facebook Share on email Share on print 2

কৌশল রোধে কৌশলী সরকার 26 Jan, 2014
প্রভাবশালী দেশের কূটনীতিক, উন্নয়ন সহযোগী ও বিরোধী দলের নানামুখী কৌশল ঠেকাতে সরকারও কৌশলী অবস্থান নিচ্ছে। নতুন সরকারের সঙ্গে কাজ করার ঘোষণা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যের মতো প্রভাবশালী দেশের কূটনীতিকরা কৌশলী অবস্থান নিয়েছে। তেমনি জামায়াতে ইসলামীর বিষয়েও বিএনপিও অবস্থান পরিষ্কার না করার কৌশল বেছে নিয়েছে। একইভাবে সরকারও আদালতের রায় সাপেক্ষে জামায়াতের রাজনীতির ভবিষ্যত্ নির্ধারণ কথা বলছে। বিএনপি আন্দোলনের ইস্যু বানাতে পারে এমন বিষয়গুলো সরকার হাতে রেখে বিএনপিকে চাপে ফেলার কৌশল নিয়েছে। এছাড়া যুক্তরাজ্যের পর পাকিস্তানে অবস্থানরত যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার প্রক্রিয়া শুরুর তথ্য প্রকাশের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে সরকারের সঙ্গে সম্পৃক্ত করার কৌশল নেয়া হয়েছে। স্বস্তি ফেরাতে আইনশৃঙ্খলার উন্নতি, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ, ব্যবসা খাতের সমস্যা নিরসনে পরামর্শক কমিটি গঠন নানা ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া প্রয়োজনে অন্তর্বর্তী সরকার ব্যবস্থা বৈধতা দেয়ার জন্য সংবিধান সংশোধন, নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের বিষয়টিও বিবেচনায় রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে। অন্তর্বর্তী সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে আইন বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বর্তমানকে টেলিফোনে বলেন, এখন পর্যন্ত বিষয়টি আলোচনায় আসেনি। তবে আলোচনায় এলেই সংবিধান সংশোধনের প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে। এর আগে প্রধানমন্ত্রী নিজে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন জামায়াতের বিষয়ে আদালতে মামলা আছে। সেই মামলার রায় হওয়ার আগে আমি কিছুই বলতে চাই না। যুক্তরাজ্যে অবস্থানরত মানবতাবিরোধী দুই আসামির ফাঁসির রায়ের পর পাকিস্তানে অবস্থানরত যুদ্ধপরাধীদের বিচারের বিষয়টি সক্রিয় আলোচনায় এসেছে। সরকারের নীতিনির্ধারণী সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান সরকার দ্বিতীয় দফায় ক্ষমতায় আসার পর ভারত, রাশিয়া, চীন, সিঙ্গাপুর, শ্রীলংকা, নেপাল, ভুটান মিশনসহ বেশ কিছু দেশ সরকারকে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিন্দন জানিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন সরাসরি কোনো চিঠিতে নতুন সরকারকে অভিনন্দন জানায়নি। এমনকি সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাওয়ার বিষয়টিও তারা চিঠির মাধ্যমে সরকারকে অবহিত করেনি বলে জানা গেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অফিসিয়াল ব্রিফিংয়ে সরকারের কাজ করার বিষয়টি সাংবাদিকদের অবহিত করেন। যুক্তরাজ্য এবং ইইউ প্রতিনিধিরা সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কাজ করে যাওয়ার কথা বলেন। প্রভাবশালী দেশগুলো সরকারের সঙ্গে কাজ করে যাওয়ার মতো কৌশলী ঘোষণা দিয়েছে। অন্যদিকে গত ১৬ জানুয়ারি ইউরোপীয় পার্লামেন্টে গৃহীত প্রস্তাবে বিএনপিকে জামায়াত থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে। কৌশলী অবস্থান নয় জমায়াতের সঙ্গ ত্যাগের বিষয়ে বিএনপিকে স্পষ্ট অবস্থান নেয়ার পরামর্শও দেয়া হয়। সরকারের চেয়ে বিএনপির প্রতি তারা যে বেশি সহানুভূতিশীল এটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এরপরও বিএনপি জামায়াতের সঙ্গ ছাড়ার বিষয়ে স্পষ্ট কোনো বক্তব্য এখন পর্যন্ত দেয়নি। দলের চেয়ারপারসন, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবসহ দলের সিনিয়র নেতারা জামায়াতের সঙ্গ ত্যাগের বিষয়ে যে কৌশলী বক্তব্য দিচ্ছেন তাতে কিছুই পরিষ্কার হয় না। সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের অপর একটি সূত্র জানায়, প্রভাবশালী দেশের কূটনীতিক দাতা সংস্থা এবং বিএনপি যত কৌশলী অবস্থানই গ্রহণ করুক তা রোধ করার সামর্থ্য সরকারের আছে। তার মতে বিএনপি যে বিষয়গুলোকে পুঁজি করে আন্দোলনে যেতে পারে ওই বিষয়গুলোকেই সরকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছে। জনজীবনে স্বস্তি ফেরাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করে দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনা। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখা ব্যবসায়ীদের আস্থায় নিয়ে বিনিয়োগের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা। বিএনপি এই ইস্যুগুলোকে কাজে লাগিয়ে মাঠ গরম করতে পারলে দাতারা মধ্যর্বর্তী নির্বাচন সেই সঙ্গে সংলাপের বিষয়ে চাপ সৃষ্টি সুযোগ পাবে। বিএনপি এর একটি বিষয়ও যাতে ইস্যু বানাতে না পারে সেজন্য নতুন সরকার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানা গেছে। তৃতীয় দফায় প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর শেখ হাসিনা ইতিমধ্যেই কয়েকটি জেলায় সফর করেছেন। বিশেষ করে ভোট দেয়ার অপরাধে যেসব জেলায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পরিবারের ওপর হামলা চালানো হয়েছে প্রধানমন্ত্রী ওইসব জেলায় সফর করছেন। নির্যাতিত পরিবারের সদস্যদের পাশে সরকার আছে বলে তাদের আশ্বাস দিচ্ছেন। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া সারাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরও উন্নতি করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পুলিশ বিভাগকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য খাতের সার্বিক উন্নয়নের জন্য সব ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের নিয়ে পরামর্শক কমিটি গঠনে জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে উদ্যোগ নেয়া হবে। এছাড়া তৈরি পোশাক খাতের শিল্প মালিকদের বেশ কিছু প্রস্তাব সরকার বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিয়েছে। যার সুফল এ খাতে বইতে শুরু করেছে বলে জানা গেছে। বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ব্যবসায়ীরাই দেশের উন্নয়নের চালিকা শক্তি। কিন্তু সাম্প্রতিক রাজনৈতিক কারণে অর্থনৈতিক উন্নয়নের বেশ ভাটা পড়েছে। আর এই ক্ষতি ব্যবসায়ী সম্প্র্রদায় ও বাণিজ্যমন্ত্রণালয় সমন্বিতভাবে কাজ করলেই দ্রুত পুষিয়ে নেয়া সম্ভব। ব্যবাসায়ীরা কোনো রাজনৈতিক দল করেন তা মুখ্য নয়, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিকে তাদের অধিক মনোযোগী হওয়া উচিত্। আর এ ক্ষেত্রে বাণিজ্যমন্ত্রণালয় সবাইকেই সহায়তা করবে বলে তিনি জানান। রাজনৈতিক অস্থিরতা কেটে যাওয়ার পর তৈরি পোশাক খাতে স্বস্তি ফিরে আসছে, বিদেশি ক্রেতারা ফিরতে শুরু করেছে বলে জানা গেছে। নতুন বছরে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিদেশি ক্রেতাদের অনেকেই পুরো বছরের অর্ডার দেয়ার জন্য আলোচনা শুরু করেছেন বলে জানিয়েছেন পোশাক রফতানিকারকরা। তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের নেতা আবদুস সালাম মুর্শেদী বলেন, বাজার হাতছাড়া হওয়ার যে ভয় ছিল তা অনেকটাই কেটে গেছে। নতুনভাবে ভরসা পাচ্ছি আমরা। আশা করছি, এই স্থিতিশীল পরিবেশ বজায় রাখার জন্য সব পক্ষই উদ্যোগী হবে। এখন যে অবস্থা চলছে তা অব্যাহত থাকলে বিশ্ব বাজারে আমাদের তৈরি পোশাকের কদর আরও বাড়বে। বাংলাদেশের অবস্থান আরও দৃঢ় হবে। রফতানি খাতকে উত্সাহিত করতে সরকার এরইমধ্যে বেশ কিছু সুবিধা দিয়েছে বলেও জানান ব্যবসায়ী নেতারা। এসব সুবিধার মধ্যে টিটির মাধ্যমে রফতানিতে ৫ পাঁচ শতাংশ নগদ সহায়তা, রফতানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) সুদহার কমানো, ডাউন পেমেন্ট ছাড়াই অথবা ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিলের সুযোগ এবং শিল্প পণ্য আমদানিতে আগাম মূল্য পরিশোধের ব্যবস্থা অন্যতম। দেশের সব খাতে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে সরকারের পক্ষ থেকে এর বাইরেও অনেক বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এর সব পদক্ষেপকেই ইতিবাচক কৌশল হিসেবেই বর্ণনা করেন সরকারের মন্ত্রী প্রতিমন্ত্রীরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা বলেন, আমাদের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে বিএনপি যাতে আন্দোলনের কোনো ইস্যু হাতে তুলে নিতে না পারে। বিএনপি আন্দোলন করতে না পারলে বিদেশিরা তাদের হয়ে সরকারের ওপর সংলাপ বা মধ্যবর্তী নির্বাচনের বিষয়ে চাপ সৃষ্টি করবে না। বিদেশিরা যদি কোনো কারণেও চাপ দেয়ার চিন্তাভাবনা করে তখন সরকারের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশর পুনর্গঠন এবং সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের বিষয়টি উপস্থাপন করার পরিকল্পনা রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে গেলে সংবিধান সংশোধন করতে হবে। সংবিধান সংশোধন এবং নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন এ দুটি বিষয়টি দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়ে থাকে। সংবিধান সংশোধনের জন্য প্রথম প্রস্তাব তৈরি করতে হবে। এটা মন্ত্রিসভার বৈঠকে নীতিগত অনুমোদন দেয়া হবে। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য আবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে পেশ করা হবে। সেখান থেকে বিল আকারে উপস্থাপন করা হবে জাতীয় সংসদে। সেখান থেকে যাবে সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে। সংসদীয় কমিটি এ লক্ষ্যে আলাদাভাবে সংবিধান সংশোধন সংক্রান্ত জাতীয় কমিটি গঠন করে দিতে পারে। মোট কথা নানা কায়দায় সংবিধান সংশোধন ইস্যুতে সময় ক্ষেপণের সুযোগ সরকারের হাতে আছে। বিএনপির দাবি অনুযায়ী সংবিধান সংশোধন করা হচ্ছে এটা বিদেশিদের বোঝানো সহজ হবে। এই ফাঁকে লম্বা সময় হাতে পাওয়া যাবে। এর আগে কিছু দিন চলবে সংলাপ। সংবিধান সংশোধনের পর আসবে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের প্রসঙ্গ। সেখানে সার্চ কমিটির মাধ্যমে কমিশন গঠনের যে নজির চালু হয়েছে এবারও সে বিষয়টি সামনে আসবে। তখন কমিটির মাধ্যমে যোগ্য লোক খুঁজে কমিশনে নিয়োগ দেয়ার বিষয়টিও সময় সাপেক্ষ। এত সবের পরও চাপ থাকলে তা সামলানো খুব বেশি কঠিন হবে বলে মনে করেন না সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা। উৎসঃ বর্তমান Share on facebook Share on email Share on print