মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৩


ধর্ম প্রচারেও বাধা : পুঠিয়ায় স্থানীয় আ.লীগ নেতাদের প্রভাবে ওয়াজ-মাহফিলে নিষেধাজ্ঞা পুঠিয়া (রাজশাহী) প্রতিনিধি « আগের সংবাদ 1 পরের সংবাদ» রাজশাহীর পুঠিয়ায় প্রতি বছরের ন্যায় চলতি মৌসুমে বিভিন্ন এলাকার মসজিদ ও মাদরাসাগুলোতে ইসলামী জালসা এবং ওয়াজ-মাহফিলের আয়োজন শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানের কমিটির লোকজন। কিন্তু স্থানীয় আ.লীগের নেতাকর্মীদের বিশেষ তদারকিতে সেগুলোতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন পুলিশ-প্রশাসন। এ ঘটনায় চরম ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন মসজিদের ঈমাম ও মাদরাসার হাফেজরা। জানা গেছে প্রতি বছরের ন্যায় চলতি শীত মৌসুমে উপজেলার প্রায় ৩৪টি স্থানে মসজিদ ও মাদরাসা কমিটির লোকজন ইসলামী জালসা ও ওয়াজ-মাহফিলের আয়োজন শুরু করেন। এ আয়োজনগুলো সম্পন্ন করতে কমিটির লোকজনের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতিশ্রুতি দেয়া অনুদানগুলো উত্তোলন করা হয়েছে। আয়োজনকারীরা সব প্রক্রিয়া শেষ করে নিয়ম অনুসারে আইনি সহয়তা চাইতে গেলেই তাদের অনুষ্ঠান করতে বাধা দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় হাফেজ মাওলানা তৌহিদুর রহমান দুঃখ প্রকাশ করে জানান, আমাদের হাফিজিয়া মাদরাসায় প্রতি বছর ৫-৬ করে ৩০ পারা কোরআনের হাফেজদের পাগড়ি প্রদান করা হয়। সে উপলক্ষে প্রতিবারই ৩ দিন করে মাদরাসা প্রাঙ্গণে ইসলামী জালসা ও ওয়াজ-মাহফিলের আয়োজন করা হয়। আর ইসলামের দাওয়াতের প্রচারণা করতে বিভিন্ন জেলা থেকে আসেন মুফতি, আলেমসহ খ্যাতিমান বক্তারা। মুসলিম জাতীকে দ্বীন-দুনিয়ার সম্পর্কে ধ্যান-ধারণার মাধ্যমে ভুল রাস্তা থেকে আলোর পথের দিক-নিদের্শনা দেয়া হয়। কিন্তু স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের হুমকিতে প্রস্তুতির শেষ মুহূর্তে ইসলামী জালসা বন্ধ করতে হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইউনিয়ন আ.লীগের এক নেতা জানান, ইসলামী জালসাগুলোতে আ.লীগ সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক সমালোচনা করা হয়। ধর্ম প্রচারের নামে মাওলানারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করতে গ্রামের লোকজনদের মাঝে ভুল ধারণা সৃষ্টি করতে পারেন। যার ফলে এখন থেকে ইসলামী জালসা এবং ওয়াজ-মাহফিলগুলো বন্ধ রাখতে আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটতে পারে মর্মে পুলিশ-প্রশাসনের মাধ্যমে নিষেধ করা হচ্ছে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ওবায়দা খান জানান, ওয়াজ-মাহফিলের বিষয়ে আমার নিকট কেউ কোনো লিখিতভাবে অনুমতি নিতে আসেনি। তবে দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে এসব আয়োজনের অনুমতি দেয়াও সম্ভব হবে না। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার খোন্দকার ফরহাদ আহমদ জানান, চলতি বছর জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি রক্ষার্থে বর্তমানে কয়েকটি স্থানে জালসা ও ওয়াজ-মাহফিলের আয়োজন করতে নিষেধ করা হয়েছে। তবে নির্বাচনের পর সেগুলো ফের আয়োজন করতে পারবে। তবে এ বিষয়ে পুঠিয়া উপজেলা আ.লীগের সভাপতি ও বর্তমান সাংসদ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) হাজী আবদুল ওয়াদুদ দারার নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান, বর্তমানে ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন চলায় আমি রাজনৈতিকভাবে কোনো ধরনের তদবির-তদারকি করছি না। আর ইসলামী জালসা ও ওয়াজ মাহফিল বন্ধের ব্যাপারে দলীয় কোনো নেতাকর্মীরা জড়িত কিনা সেটা আমার জানা নেই।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন