শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৩


বন্ধের পথে কক্সবাজারের শতাধিক হোটেল মোটেল 29 Dec, 2013 দেশের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় বিপর্যয় নেমে এসেছে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পে। পর্যটন মৌসুমেও ৭-৮ মাস ধরে পর্যটকের দেখা না মেলায় বন্ধের উপক্রম হয়েছে শতাধিক হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউস ও রেস্টুরেন্ট। এদিকে ব্যবসা মন্দা থাকায় এগুলোতে চলছে কর্মচারী ছাঁটাই। অনেক হোটেলে কর্মচারীদের বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। ইতিমধ্যে ১৫টির মতো হোটেল ও গেস্ট হাউস বন্ধ হয়ে গেছে। এতে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতির আশংকা করছেন পর্যটন শিল্পনির্ভর ব্যবসায়ীরা। সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বছর ৩১ ডিসেম্বর থার্টিফার্স্ট নাইটের জন্য ৪-৫ মাস আগে থেকেই পর্যটকরা বুকিং দিয়ে রাখতেন। কিন্তু এবার পর্যটকদের সে রকম আগ্রহ নেই। বিদেশ থেকে অনেকেই ৩-৪ মাস আগে বুকিং দিয়ে রাখলেও এখন তারা তা বাতিল করছেন। ব্যবসায়ীদের মতে, আগামী ৩১ ডিসেম্বর থার্টিফার্স্ট নাইটের আগে যদি রাজনৈতিক অস্থিরতা না কমে তাহলে পথে বসা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না তাদের। বিজয় দিবসের দিন হাতেগোনা কিছু পর্যটক এলেও ২১ ডিসেম্বরের পর থেকে একেবারেই শূন্যতা বিরাজ করছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে। ফলে সৈকতের পাদদেশ ও আশপাশের এলাকার বিপণিবিতান এবং শহরের বার্মিজ মার্কেটের ব্যবসায়ীদের কোনো বেচাবিক্রি নেই। তারা বসে বসে এখন অলস সময় পার করছেন। কক্সবাজার শহরের বার্মিজ মার্কেটের ব্যবসায়ী রাজন জানান, গত কয়েক মাস ধরে মার্কেট একেবারেই ক্রেতাশূন্য। অন্য সময় এই ভর পর্যটন মৌসুমে দৈনিক প্রায় ৩০-৪০ হাজার টাকা বিক্রি হতো। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বাজার একদম মন্দা। কক্সবাজার হোটেল-মোটেল-গেস্ট হাউস মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, গত এক যুগেও পর্যটনে এ ধরনের সংকট হয়নি। রাজনৈতিক অস্থিরতা পর্যটন শিল্পকে একেবারেই ধ্বংস করে দিয়েছে। পর্যটক না থাকায় এরই মধ্যে কক্সবাজারেই শতাধিক হোটেল মোটেল-গেস্ট হাউস বন্ধ করে দেয়ার উপক্রম হয়েছে। এদিকে পর্যটন স্পটগুলোরও করুণ দশা। পুরোপুরি ফাঁকা দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের বেলাভূমি। সৈকতের লাবণী পয়েন্ট, সিগাল, সি ইন পয়েন্ট, লংবিচ পয়েন্ট, পর্যটন শৈবাল পয়েন্ট ও ডায়াবেটিক হাসপাতাল পয়েন্ট থেকে কলাতলি সুইটিস ফিঙ্গার পয়েন্ট পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার সৈকতে হাজারও কিটকট ছাতা-চেয়ার ফাঁকা পড়ে আছে। বিচের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও কাটাচ্ছেন অলস সময়। এছাড়া পর্যটন স্পট দরিয়া নগর, হিমছড়ি ঝর্ণা, পাথুরে বিচ ইনানি, সেন্টমার্টিন, মহেশখালীর আদিনাথ মন্দির, সোনাদিয়ার অবস্থাও করুণ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের অবস্থা আরও করুণ বলে জানিয়েছে বন বিভাগ। কক্সবাজারের তারকা হোটেল সি-গালের নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ ইমরুল ইসলাম হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ২০০২ সালের পর থেকে এ রকম অবস্থা কখনও দেখিনি। বর্তমানে হোটেলে ১৮১টি সিট ফাঁকা। নিয়মিত এ রকম অবস্থা চললে ব্যবসা বন্ধ করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না। উৎসঃ যুগান্তর Share on facebook Share on email Share on print

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন