সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৩


সংবাদ >> জাতীয় গোয়েন্দা নজরদারিতে রাজধানীর মসজিদ 31 Dec, 2013 এবার গোয়েন্দা নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে রাজধানীর মসজিদগুলোকে। পুরান ঢাকা, মতিঝিল, পল্টন, গুলশান, মিরপুর, ধানমন্ডিসহ প্রায় অর্ধ শতাধিক স্পটের মসজিদগুলোকে টার্গেট করেছে দেশের শীর্ষ একটি গোয়েন্দা সংস্থা। তাদের বক্তব্য, মার্চ ফর ডেমোক্রেসিসহ বিরোধী দলের দেয়া রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে রাজধানীতে জমায়েত হয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। এদের বেশির ভাগ আশ্রয় নিয়েছেন রাজধানীর বিভিন্ন মসজিদে। মূলত নাশকতার পরিকল্পনা নিয়েই তারা রাজধানীতে জমায়েত হয়েছেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের হিসাবমতে, শুধু রাজধানীতে মসজিদ রয়েছে প্রায় ৬ হাজার। সর্বশেষ ২০০৮ সালের এক জরিপে এ সংখ্যা বলা হয় ৫৭৭৬টি। ওই জরিপ অনুযায়ী সারা দেশে মসজিদের সংখ্যা ২ লাখ ৫০ হাজার ৩৯৯টি। শীর্ষ এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, রাজধানীর আবাসিক হোটেল, মোটেলগুলোতে অতিরিক্ত নজরদারির কারণে কর্মসূচিতে যোগ দিতে আসা ব্যক্তিরা মসজিদকে বেছে নিচ্ছেন। তারা পরিচয় গোপন করে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের সঙ্গে মিশছেন। ইবাদতে অংশ নিচ্ছেন। দিনের বেলায় কাজের কথা বলে অংশ নিচ্ছেন সহিংস কর্মসূচিতে। গোয়েন্দারা জানান, রাজধানীর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মসজিদকে নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে। বহিরাগত কারা এখানে আসছেন, কি করছেন, তাদের গতিবিধি কি তা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। সন্দেহজনক মনে হলে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন দায়িত্বপালনকারীরা। সন্তোষজনক উত্তর পেলে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। আর সন্দেহভাজন হলে মসজিদ কর্তৃপক্ষের সহায়তা নিচ্ছেন গোয়েন্দারা। একই সঙ্গে তাদেরকে এ বিষয়ে সতর্ক করছেন। তথ্যমতে রাজধানীতে সবচেয়ে বেশি মসজিদ আছে পুরান ঢাকা ও মতিঝিল এলাকায়। এ দুই এলাকায় রয়েছে প্রায় ১ হাজার মসজিদ। গোয়েন্দারা জানান, দু’টি এলাকা রাজধানীর প্রবেশমুখ হিসেবে চিহ্নিত। তাই এখানকার মসজিদগুলোতে বিশেষ নজরদারি করা হচ্ছে। এদিকে নজরদারি বাড়ানো হলেও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোন মসজিদ থেকে বহিরাগত কাউকে আটক করা হয়নি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি থেকেও এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে রাজধানীর ইমামদের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ থাকে। চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি সারা দেশের ৭৮ হাজার ১৪১ জন ইমামকে প্রশিক্ষণ দিয়েছে। এর মধ্যে রাজধানীর ইমাম রয়েছেন প্রায় সাড়ে তিন হাজার। এর আগে গোয়েন্দাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর বিভিন্ন মেসে অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ঢাকা মহানগর পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সন্ধ্যা থেকে রাজধানীর রমনা জোনের বিভিন্ন এলাকা রমনা, ধানমন্ডি, শাহবাগ, হাজারীবাগ, কলাবাগানে অভিযান চালায় যৌথবাহিনী। এর মধ্যে কলাবাগান এলাকার একটি মেস বাসা থেকে ৯৬ জনকে আটক করা হয়। তবে আটককৃতদের অনেকেই বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বিরোধী দলের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে গত কয়েক দিন নগরবাসীকে দিনভর পোহাতে হয়েছে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ। সীমাহীন কষ্ট ভোগ করতে হয়েছে রোগী, শিশু ও নারীদের। নানা প্রয়োজনে মানুষকে দীর্ঘ পথ হেঁটে যেতে হয়েছে। রাজধানীর প্রবেশ পথ কাঁচপুর, সাইনবোর্ড, যাত্রাবাড়ী, সায়েদাবাদ, গাবতলী, আব্দুল্লাহপুর, মহাখালী, সদরঘাট, পোস্তগোলা সর্বত্র একই দৃশ্য দেখা গেছে। তবে রাজধানীর ভেতরে কিছু রিকশা, ইজিবাইক ও ভ্যান চলাচল করলেও দোকানপাট-হোটেল-রেস্তরাঁ, ব্যাংক, বীমাসহ বেশির ভাগ অফিস-আদালত বন্ধ ছিল। নিরাপত্তার কথা বলে পুলিশ ফুটপাথের চা ও পানের দোকান পর্যন্ত বন্ধ করে দেয়। এতে সবচেয়ে বেশি বেকায়দায় পড়ে হকার, ক্ষুদ্র দোকানি ও দিনমজুররা। তল্লাশির নামে হয়রানি করা হয় পথচারীদের। প্রসঙ্গত বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া রোববার ঢাকায় মার্চ ফর ডেমোক্রেসি কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন। পুলিশি বাধার কারণে ওইদিন তিনি বাসা থেকে বের হতে পারেননি। পরে কর্মসূচির মেয়াদ বাড়ানো হয়। উৎসঃ manabzamin

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন