শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০১৩


সংবাদ >> রাজনীতি আওয়ামী লীগের ইশতেহার ঘোষণা; মন্ত্রী-এমপিদের সম্পদের হিসাব প্রকাশের অঙ্গীকার নেই 29 Dec, 2013 আগামী ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচন উপলে ইশতেহার ঘোষণা করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। গতকাল রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দলটির সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ ইশতেহার তুলে ধরেন। এতে বলা হয়, ২০০৯ সাল থেকে শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে বাংলাদেশ উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির মহাসড়কে উঠে এসেছে। এ পথ ধরেই এগিয়ে যেতে হবে। এ ধারাবাহিকতায় ২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে মধ্যম আয়ের পর্যায় পেরিয়ে শান্তিপূর্ণ সমৃদ্ধ সুখী ও উন্নত জনপদ। সুশাসন ও জনগণের মতায়ন হবে এই অগ্রযাত্রার মূলমন্ত্র। এ ছাড়া দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য হিসেবে ২০৫০ সালের মধ্যে দেশকে বিশ্বের প্রথম সারির দেশে উন্নীত করার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। তবে গণতন্ত্র, আইনের শাসন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকে প্রাধান্য দেয়া হলেও এবারের ইশতেহারে প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রী-এমপিদের সম্পদের হিসাব প্রকাশের কথা বলা হয়নি, যা গত নির্বাচনের ইশতেহারে অঙ্গীকার করা হয়েছিল। ইশতেহার ঘোষণা করতে গিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, দেশবাসী সঙ্ঘাত নয়, শান্তি চায়। তারা অসাংবিধানিক পথে বা স্বৈরশাসনে ফিরে যেতে চায় না। তারা চায় সহিষ্ণু গণতন্ত্রের আলোকোজ্জ্বল অভিযাত্রা। ইশতেহারকে ‘জাতীয় সনদ’ অভিহিত করে সেটিতে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু, দ্বিতীয় যমুনা সেতু, ুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ, এমপিদের জবাবদিহি নিশ্চিত, প্রভাবমুক্ত প্রশাসন গঠন এবং বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন কমিশনকে সংহত করার কথা বলেন তিনি। শেখ হাসিনা দাবি করেছেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে তার দল যেসব অঙ্গীকার করেছিল তা পালন করেছে। সঙ্কট মোচন করে দেশকে এগিয়ে নেয়ার যে কর্মসূচি দিয়েছিল, তা অত্যন্ত সততা ও বিশ্বস্ততার সাথে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। কোনো কোনো েেত্র নির্ধারিত ল্যমাত্রার চেয়েও অনেক বেশি সাফল্য অর্জিত হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন। দেশবাসীর কাছে ভোট চেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, দেশবাসী সঠিক সিদ্ধান্ত নিলে আগামী পাঁচ বছরে বাংলাদেশ খাদ্যে উদ্বৃত্ত হবে, খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত হবে, অপুষ্টির অভিশাপ দূর হবে, দারিদ্র্যের লজ্জা ঘুচে যাবে, নিররতা দূর হবে, শিতি দ মানবসম্পদ গড়ে উঠবে, শিল্প-সভ্যতার ভিত্তি রচিত হবে, প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছাবে, বেকারত্বের অবসান ও কোটি কোটি তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে, সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত হবে, ব্যবসাবাণিজ্যের প্রসার ঘটবে, যোগাযোগব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন হবে, পরিকল্পিত নগর-জনপদ গড়ে উঠবে, রাজধানী ঢাকা যানজটমুক্ত তিলোত্তমা নগরে পরিণত হবে এবং ডিজিটাল বাংলাদেশ সমৃদ্ধির সোপানে পা রাখবে। এ ছাড়া রাজনীতি থেকে হিংসা, হানাহানি, সঙ্ঘাতের অবসান হবে, দুর্নীতি-দুর্বৃত্তায়নের ধারা থেকে বাংলাদেশ বেরিয়ে আসবে। গড়ে উঠবে একটি সহিষ্ণু গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা। ইশতেহারে আওয়ামী লীগ দাবি করেছে, উন্নয়নের ধারাবাহিকতা রতি হলে ২০২১ সাল নাগাদ মাথাপিছু আয় ১০৪৪ ডলার থেকে ১৫০০ ডলার হবে, প্রবৃদ্ধির হার ৬ দশমিক ২ শতাংশ থেকে বেড়ে ১০ শতাংশ, বিদ্যুৎ উৎপাদন ১০ হাজার মেগাওয়াট থেকে ২৪ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত হবে। ইশতেহারে অগ্রাধিকারের তালিকায় রয়েছে শান্তি-স্থিতিশীলতা। বলা হয়েছে, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িকতা দূর করে রাষ্ট্র ও সমাজ জীবনের সব জায়গায় শান্তি, শৃঙ্খলা ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করা হবে। নাগরিকদের জীবনের নিরাপত্তা বিধান, তাদের কাজের ও চলাফেরার মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা হবে। সংসদের ভেতরে ও বাইরে এমপিদের সামষ্টিক ও ব্যক্তিগত কাজের জবাবদিহি, স্বচ্ছতা ও জনগণের কাছে দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় আইনানুগ বিধিবিধান করা হবে। ইশতেহারে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা ও রায় বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। ইশতেহারে দাবি করা হয়েছে, ইতোমধ্যে একটি বিশ্বাসযোগ্য স্থায়ী নির্বাচনব্যবস্থা গড়ে তোলার সূচনা হয়েছে। এটিকে সংহত এবং শক্ত ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করা হবে। নির্বাচন কমিশনকে আরো শক্তিশালী, দ এবং স্বাধীন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। ভবিষ্যতে আরো শক্তিশালী করা হবে। যুগের প্রয়োজনে নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার অব্যাহত থাকবে। শেখ হাসিনা পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দলীয় প্রভাবমুক্ত রাখার ঘোষণা দেন। যোগাযোগ খাতে পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা দিয়ে গেলবার দণিাঞ্চলের ভোটারদের আকৃষ্ট করেছিল আওয়ামী লীগ। এবার ইশতেহারে বলা হয়েছে, এরই মধ্যে শুরু হওয়া পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করা হবে। পাশাপাশি দ্বিতীয় যমুনা সেতু ও দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণের কারিগরি ও অন্যান্য প্রস্তুতি দ্রুত শেষ করে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে এ দু’টি সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হবে। সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ এবং বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। ইশতেহারে আরো বলা হয়েছে, তথ্যপ্রযুক্তির বিপুল বিকাশের ফলে সামাজিক গণমাধ্যম এবং অনলাইন পত্রিকার ভূমিকা বেড়েছে। অনলাইন পত্রিকা এবং সামাজিক গণমাধ্যমের অপব্যবহার রোধ ও দায়িত্বশীল ভূমিকা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে। তবে বলা হয়েছে, সব ধরনের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সংরণ এবং অবাধ তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত করার নীতি অবিচলিতভাবে অব্যাহত রাখা হবে। জনগণের তথ্য জানা এবং সরকারের সর্বস্তরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে প্রণীত তথ্য অধিকার আইন এবং তথ্য কমিশনকে অধিকতর কার্যকর ও ফলপ্রসূ করার জন্য জনসচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ নেয়া হবে। উৎসঃ নতুন দিন Share on facebook Share on email Share on print 3

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন