প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে কাদের সিদ্দিকী : ২৪ জানুয়ারির পর ক্ষমতায় থাকতে চাইলে আপনার এবং সংসদের মৃত্যু হবে : দেশের অস্তিত্ব বিলীন হলে প্রধানমন্ত্রী দায়ী থাকবেন - বি. চৌধুরী : নির্বাচন নিয়ে ভানুমতির খেল শুরু হয়েছে - কাজী জাফর আহমদ
স্টাফ রিপোর্টার
« আগের সংবাদ
41
পরের সংবাদ»
দেশের চলমান সঙ্কট সমাধানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ দাবি করেছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী। তিনি বলেছেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন যে নির্বাচনের উদ্যোগ নিয়েছে, তা কারও কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। স্বামী-স্ত্রীর সংসারের বাইরে যে সন্তানের জন্ম হয়, মানুষ তাকে অবৈধ সন্তান বলে। প্রার্থী ছাড়া যে নির্বাচন হচ্ছে, দেশের মানুষ সেই এমপিকে কি বলবে? এই নির্বাচনে কমিশন একটি টাকা খরচ করলেও তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হবে। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, দেশটিকে জাহান্নামের দিকে ঠেলে দেবেন না। পদত্যাগ করলে দেশের অর্ধেক সমস্যা কমে যাবে। যদি ক্ষমতায় আরও কিছুদিন থাকতে চান, তবে ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত থাকতে পারেন। এরপর থাকতে চাইলে আপনি এবং সংসদের মৃত্যু হবে।
গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের ১৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভার উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, জাতীয় পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান কাজী জাফর আহমেদ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের সভাপতি আ স ম আবদুর রব, বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়াকে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেয়ার আবেদন জানিয়ে বলেন, অসহযোগের মতো এমন কোনো কর্মসূচি দিন যাতে লাখ লাখ মানুষ ঘর ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনার ‘দুর্নীতিবাজ’ মন্ত্রীরা তো এরই মধ্যে হলফনামায় স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। তারপরও আপনি গণতন্ত্রের কথা বলেন! আপনার প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা তো অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। স্বীকারোক্তি দেয়ার পরও ‘দুর্নীতিবাজদের’ থেকে ১৫৪ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া প্রধানমন্ত্রীর জন্য বড়া ‘লজ্জা’র বিষয়। দেশের অস্তিত্ব বিলীন হলে এককভাবে প্রধানমন্ত্রী দায়ী থাকবেন বলে অভিযোগ করে বি. চৌধুরী বলেন, ‘পঞ্চদশ সংশোধনী তো আপনাদের নির্বাচনী ইশতেহারে ছিল না। আপনার পাতানো নির্বাচন থেকে একে একে সব দল, সব দেশ প্রত্যাখ্যান করার পরও আপনার লজ্জা হয়নি।’ শেষ বয়সে মানুষের যেমন মতিভ্রম হয়, সরকারেরও তাই হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সরকার নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফের একটি মন্তব্য উল্লেখ করে বি. চৌধুরী বলেন, ‘আপনি বলেছেন ইচ্ছে করলে ছয়শ কোটি টাকার বেশি কামাতে পারতেন। খবর বেরিয়েছে, আপনার শত শত একর জমি আছে। আগে তো জমিদারি ছিল না। তাহলে এত জমি কোথা থেকে এলো? লজ্জাও আপনাদের কাছে লজ্জা পায়।’ নির্বাচন কমিশনকে মেরুদণ্ডহীন উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ্বের সব রাষ্ট্র একে একে নির্বাচন পর্যবেক্ষণে অপারগতা দেখিয়েছে। আপনারা একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে ব্যর্থ হওয়ায় আপনাদের লজ্জা হওয়া উচিত।
কাজী জাফর আহমেদ বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে ভানুমতির খেল শুরু হয়েছে। আগামী ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের যে স্বপ্নে সরকার বিভোর হয়েছে, তা কখনই পূরণ হবে না। আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৫৭টি আসনে নির্বাচিত হয়ে সরকার দেশের অর্ধেকেরও বেশি জনগণের কাছে পরাজয় বরণ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘শুধু জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই নয়, সারা পৃথিবী আজ আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে চলে গেছে। সরকারের দিন ফুরিয়ে আসছে। প্রমাণিত হয়েছে, তারা সম্পদ লুণ্ঠন করেছে। আর আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন বলছে, সম্পদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হবে।’
তিনি বলেন, ‘পরীক্ষা-নিরীক্ষার কী আছে। গণমাধ্যমে তো সবকিছু উন্মোচিত হয়ে গেছে।’ তিনি বলেন, ‘বেগম জিয়া সংবাদ সম্মেলন করবেন। এ সংবাদ সম্মেলনের দিকে তাকিয়ে আছে দেশের জনগণ। আমরা আশা করি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি এমন আন্দোলন কর্মসূচি দেবেন, যেন স্বৈরতান্ত্রিক ক্ষমতার পতন অনিবার্য হয়ে ওঠে এবং দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসে।’
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, সরকার সংলাপ নয়, সংঘাত চায়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন