সংবাদ >> রাজনীতি
রাজনৈতিক সহিংসতায় ১৫ দিনে শতাধিক নিহত
15 Dec, 2013
রাজনৈতিক অস্থিরতা তীব্র হওয়ার সাথে সাথে প্রতিদিনই দীর্ঘ হচ্ছে লাশের মিছিল। সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী, গত ১৫ দিনে সারাদেশে প্রায় শতাধিক মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখাগেছে নিরাপরাধ শিশুর লাশও। তারপরও বোধোদয় হচ্ছে না রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের। লাশ দিয়ে প্রশস্ত করা হচ্ছে ক্ষমতায় যাওয়ার পথ।
গত ২৫ নভেম্বর রাতে একতরফা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে প্রথম দফা টানা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ এবং সর্বশেষ কাদের মোল্লার ফাঁসির প্রতিবাদে দেশব্যাপী ব্যাপক সহিংসতা ঘটে। এসময় পুলিশের গুলি, দুর্বৃত্তদের ছোড়া পেট্রোল বোমা, ককটেল বিস্ফোরণ, অগ্নিসংযোগ ও ট্রেনলাইন উৎপাটনের ঘটনায় আহত হয়েছে ৫ সহস্রাধিক মানুষ। দেশের প্রায় প্রতিটি জেলায়ই এই সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এরমধ্যে সাতক্ষীরা, খুলনা, যশোর, রাজশাহী, নাটোর, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, চাঁপাই নবাবগঞ্জ, রংপুর, টাঙ্গাইল, মুন্সীগঞ্জ, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, চাঁদপুর, সিলেট, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চট্টগ্রাম, সীতাকুন্ড, কক্সবাজার, ময়মনসিংহ জেলা ছিল রীতিমত রণক্ষেত্র।
২৬ নভেম্বর অবরোধের প্রথম দিন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য ও সরকারি দলের কর্মীদের সাথে সংঘর্ষে ও সহিংসতায় নিহত হন ৬ জন।
২৭ নভেম্বর প্রথম দফা অবরোধের দ্বিতীয় দিনে সংঘর্ষ ও পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে ৯ জন। এছাড়া রাজধানীতে ককটেল বিস্ফোরণে আহত আনোয়ারা বেগম ও মোজাম্মেল হক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ওই দিন সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগ এলাকায় যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ করলে অগ্নিদগ্ধ হন অন্তত ১৯ যাত্রী।
৩০ নভেম্বর সারাদেশে সহিংসতায় ৫ জন নিহত হয়। ঝিনাইদহে একজন, বগুড়ায় এক যুবক, ঈশ্বরদীতে একজন ও চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় একজন নিহত হন। রাজধানীর মালিবাগে দুর্বৃত্তদের ছোড়া পেট্রোল বোমায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে এক বাসযাত্রী মারা যান।
১ ডিসেম্বর গভীর রাতে সরকার দলের নেতাকর্মীরা চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলা যুবদল সাধারণ সম্পাদক আবদুল গফুরকে গুলি করে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করে বিএনপি।
২ ডিসেম্বর সরকার দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে নিহত হয় ২ জন।
৩ ডিসেম্বর পুলিশ ও বিজিবির গুলিতে চট্টগ্রাম, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় নিহত হয় ১০ জন।
৪ ডিসেম্বর পুলিশ ও বিজিবির সঙ্গে অবরোধকারীদের সংঘর্ষ ও রেল দুর্ঘটনায় নিহত হয় ৯ জন।
৫ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফা অবরোধের শেষ দিনে ফেনীতে ও রাজধানীতে দুই জন নিহত হন।
৮ ডিসেম্বর তৃতীয় দফা অবরোধের দ্বিতীয় দিনে কুমিল্লা, কুষ্টিয়া এবং সুনামগঞ্জে তিনজন নিহত হয়।
৯ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জে এক শিশু এবং যশোরে একজন নিহত হয়।
১০ ডিসেম্বর নওগাঁয় একজন এবং খুলনাতে একজন ২ জন নিহত হন।
১২ ডিসেম্বর তৃতীয় দফা অবরোধের শেষ দিনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে অবরোধকারীদের সংঘর্ষে নিহত হয় ৭ জন। এর মধ্যে লক্ষ্মীপুরে র্যাবের গুলিতে চারজন, ফেনিতে দু’জন এবং কুমিল্লায় একজন।
১৩ ডিসেম্বর জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকরের প্রতিবাদে সারাদেশে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। ওই দিন সারাদেশে নিহত হন অন্তত আরো ৭ জন। এরমধ্যে সাতক্ষীরায় দুইজন, পিরোজপুরে একজন, নোয়াখালীতে একজন, যশোরে একজন এবং খুলনায় একজন।
১৪ ডিসেম্বর সহিংসতায় নিহত হন ১১ জন।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত রোববার (১৫ ডিসেম্বর) লালমনিরহাটে পুলিশের গুলিতে তিনজন নিহত হয়েছেন।
উৎসঃ শীর্ষ নিউজ ডটকম
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন