ভয়ানকভাবে বেড়েছে গুম : গুপ্ত বাহিনী সক্রিয়, এক মাসে ৩০০ জন গায়েব
15 Dec, 2013
ভয়ানকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে গুমের ঘটনা। রাজনৈতিক ডামাডোলের আড়ালে এসব ঘটনা চাপা পড়ে যাচ্ছে। যারা গুম হচ্ছেন তাদের অধিকাংশই রাজনৈতিক দলের কর্মী। বাদ যাচ্ছেন না সাংবাদিকরাও। গতকাল স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান সংবাদ সম্মেলন বলেন, সারাদেশে গত এক মাসে ১৮ দলীয় জোটের তিন শতাধিক নেতাকর্মী সাদা পোশাকধারী ও র্যাবের পোশাক পরা কিংবা ডিবি পরিচয়দানকারী লোকদের হাতে গ্রেফতার হয়ে গুম এবং নিখোঁজ হয়েছেন। এর আগে গত ১১ ডিসেম্বর নজরুল ইসলাম খান অপর এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সরকার দেশকে গুমরাজ্যে পরিণত করেছে। ওই সংবাদ সস্মেলনে তিনি হওয়া একত্রিশ জন কর্মী এবং সাংবাদিকের নাম প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, জনমনে প্রশ্ন-এসব গুপ্ত বাহিনী কার নিয়ন্ত্রণে? একটি দক্ষ পেশাদার বাহিনীর নাম ও পোশাক পরে কিভাবে এ ধরনের ন্যক্কারজনক ও গর্হিত কাজ হচ্ছে তা খতিয়ে দেখার দায়িত্ব কার? তিনি গুম অপহরণ বন্ধ করার ব্যবস্থা নিয়ে গুম হওয়া ব্যক্তিদের তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। এসব গুম-নিখোঁজের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংগঠনগুলো। বিগত কয়েক দিনে গুমের কয়েকটি ঘটনা নমুনা হিসেবে পাঠকদের জন্য তুলে ধরছি।
আলতাফ হোসেন
দৈনিক আমার দেশ-এর সাতক্ষীরা প্রতিনিধি ও স্থানীয় দৈনিক আলোর পরশ পত্রিকার সম্পাদক আলতাফ হোসেনকে গুম করা হয়েছে গত ৪ ডিসেম্বর। এ বিষয়ে ৬ ডিসেম্বর শুক্রবার ঢাকার খিলক্ষেত থানায় একটি জিডি করা হয়েছে। পরিবারের দাবি বুধবার সন্ধ্যায় ঢাকার খিলখেত এলাকা থেকে আলতাফ হোসেনকে তুলে নিয়ে যায় ডিবি পুলিশ। এরপর থেকে আলতাফ হোসেনের মোবাইল বন্ধ রয়েছে। আলতাফের পরিবার, আমার দেশ-এর কোনো সংবাদিক ও তার আত্মীয়স্বজনরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিয়েও তার কোনো সন্ধান পাননি।
ইকবাল মাহমুদ জুয়েল
১২ ডিসেম্বর লক্ষ্মীপুরে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাহাবুদ্দীন সাবুর বাসভবনে সাবুর উত্তর বাসস্ট্যান্ডের বাড়িতে হানা দেয়। বাসার গেট না খোলায় তারা গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে সাবুকে গুলি ও তার বাসায় অগ্নিসংযোগ করে। ওইদিন ভোরে শহরের চকবাজার এলাকায় যুবদল একটি মিছিল বের করে। র্যাব সদস্যরা মিছিলে এলোপাতাড়ি গুলি চালালে জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ জুয়েল গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতরও জখম হন। ঘটনাস্থলে তার মাথার মজগ, জুতা ইত্যাদি পড়ে থাকে। কিন্তু র্যাব সদস্যরা তাকে গাড়িতে তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে গেছে। এরপর থেকে গতরাত পর্যন্ত তার কোনো হদিস মেলেনি।
জামাল উদ্দিন
গত ৮ ডিসেম্বর রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় নিজ বাসা থেকে আটকের পর গুম করা হয়েছে সরকারি তিতুমীর কলেজের সমাজকল্যাণ বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ও ছাত্রশিবির নেতা জামালা উদ্দিনকে। জানা গেছে, ৮ ডিসেম্বর রাত ১টায় ভাটারা থানা ছাত্রলীগ সভাপতি মামুন তার দলবল নিয়ে শিবিরকর্মী জামাল উদ্দিনকে ১০৪৮ খিলবাড়ী টেক, বাড্ডার বাসায় আটকে রেখে নির্যাতন করে। পরে পুলিশে খবর দেয়। এরপর পুলিশ এসে তাকে নিয়ে যায়। এরপর থেকে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
তারিকুল ইসলাম ঝন্টু
রাজধানীর দক্ষিণখান এলাকা থেকে গত ৬ ডিসেম্বর গুম হয়েছেন তেজগাঁও কলেজের ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক মো. তরিকুল ইসলাম ঝন্টু। গত ১১ তারিখ জাতীয় প্রেস ক্লাবে তার পরিবারের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে বলা হযেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে ঝন্টুকে আটক করে নেয়ার পর থেকেই নিখোঁজ রয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, সাদা পোশাকে ডিবি পুলিশ পরিচয় দেয়া লোকজন ঝন্টুকে আটকের পর সাদা মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে গেছে। ঝন্টুর মা হাসিনা বেগম বলেন, ৬ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১০টায় দক্ষিণখানের মধ্য মোল্লারটেকের প্রেমবাগান এলাকা থেকে ঝন্টুকে গুম করা হয়। তারা ডিবি কার্যালয়, র্যাব কার্যালয় ও দক্ষিণখান থানায় যোগাযোগ করা হলেও তারা ঝন্টুকে গ্রেফতারের কথা অস্বীকার করছে। এ বিষয়ে গত ৯ ডিসেম্বর সকালে দক্ষিণখান থানায় একটি জিডি করা হয়েছে।
আশিক ও সুমন
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র ও ছাত্রদল নেতা আশিক এবং মুহসীন হল শাখার ছাত্রদল কর্মী জিয়াউর রহমান শাহীন গুম হন গত ৩ ডিসেম্বর। আশিকের ভাই হামিদুর রহমান জানান, ঘটনার দিন রাত সাড়ে ৮টার দিকে আশিকের মোবাইল ফোনে কল দেয়া হয়। তখন অপরিচিত এক ব্যক্তি তা রিসিভ করে। এ সময় হৈচৈ শব্দ শোনা যাচ্ছিল। পরে কোনো কথা না বলেই ওই ব্যক্তি ফোন বন্ধ করে দেয়। এরপর থেকে তার সঙ্গে আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। আশিক নিখোঁজের ঘটনায় পল্লবী থানায় জিডি করা হয়েছে। একইসঙ্গে জিয়াউর রহমান শাহিন নিখোঁজের ঘটনায় মিরপুর থানায় জিডি করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্র জানায়, নিখোঁজের দিন বিকালে ছাত্রদল নেতা আশিকের পল্লবীর বাসায় দেখা করতে যায় শাহিন। এরপর তারা আর ক্যাম্পাসে ফেরেনি। আশিকের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায়। আশিক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এফ রহমান হলের আবাসিক ছাত্র ছিল। আর জিয়াউর রহমান শাহিনের গ্রামের বাড়ি কক্সবাজারে।
সুমন ও লিটন
তেজগাঁও থানার ৩৮ নং ওয়ার্ড বিএনপি সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর ইসলাম সুমন ও শাহবাগ থানাধীন রেলওয়ে কলোনির যুবদল নেতা লিটনকে গুম করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গাছে। সুমনকে ৪ ডিসেম্বর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার আই ব্লক হতে র্যাব সদস্যরা উঠিয়ে নিয়ে যায়। পরে র্যাব অফিস ও বিভিন্ন থানায় খোঁজাখুঁজির পরও তার কোনো সন্ধান মেলেনি।
জবির চার কর্মী
৪ ডিসেম্বর বারিধারার আমেরিকান দূতাবাসের সামনে থেকে র্যাব পরিচয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আসাদুজ্জামান রানা, মাজহারুল ইসলাম রাসেল ও আল আমিন নামের ৪ ছাত্রদল কর্মীকে আটক করে গুম করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত তাদের কোনো সন্ধান মেলেনি।
পুরনো ঢাকার ৫ কর্মী
গত ২৮ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে এক আসামির সঙ্গে দেখা করে ফেরার পথে কারাগারের সামনে থেকে সাদা পোশাকধারী একদল লোক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়ে বিএনপির ৭ কর্মীকে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। এ বিষয়ে চকবাজার থানায় জিডি করা হয়েছে। যার নম্বর ১২৩৫, ২৯ নভেম্বর, ২০১৩। গুমের শিকার ব্যক্তিরা হলেন—সূত্রাপুর, বংশাল এবং কোতোয়ালি থানা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রায়হান সেন্টু, সহ-সভাপতি সোহেল, ৭১ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদল সভাপতি মো. জহির, সাধারণ সম্পাদক মো. পারভেজ, ৭২ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদল সহ-সভাপতি সাব্বির, বংশাল থানা ছাত্রদল সদস্য চঞ্চল ও ৭১ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদল সদস্য মো. কালু। এদের মধ্যে দুজনকে আদালতে হাজির করে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে; অন্যদের হদিস নেই।
কুমিল্লার হিরু ও পারভেজ
গত ২৭ নভেম্বর বিএনপি কুমিল্লার লাকসাম উপজেলা শাখা সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলাম ওরফে হিরু ও লাকসাম পৌর বিএনপি সভাপতি হুমায়ুন কবির পারভেজকে গুম করা হয়েছে। কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম জানান, সাইফুল ইসলাম ও হুমায়ুন কবিরকে র্যাবই তুলে নিয়ে গেছে। কিন্তু র্যাব-পুলিশ তাদের গ্রেফতারের কথা স্বীকার করেনি। এ দুজন লাকসামে সরকারবিরোধী আন্দোলনের মূল সংগঠক ছিলেন। কুমিল্লা থেকে লাকসাম ফেরার পথে কুমিল্লা-নোয়াখালী সড়কের হরিশ্চর এলাকা থেকে গাড়ি থামিয়ে র্যাব তাদের আটক করে নিয়ে যায়।
নীলফামারীর জামাল ও আাামিনুল
নীলফামারী জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জালাল উদ্দিন প্রামাণিক ও সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ড ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি আমিনুল ইসলাম আমিন গুম হওয়ার ক’দিন পর তাদের ক্ষতবিক্ষত লাশের সন্ধান মিলেছে।
হাফেজ জাকির
ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী পশ্চিমের আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাফেজ মো. জাকির হোসেন নিখোঁজ হয়েছেন গত এপ্রিলে। গত ২ এপ্রিল রাতে সাদা পোশাকধারী একদল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও র্যাব-২-এর কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে জাকিরকে তার মোহাম্মদপুরের বাসার সামনে থেকে গুম করা হয়। জাকির হোসেনের বড় ভাই মো. মতিউর রহমান মোহাম্মদপুর থানায় জিডি করেন। যার নম্বর ৩২৮, ৪ এপ্রিল, ২০১৩।
আনোয়ারুল ইসলাম মাসুম
রাজশাহী কলেজের গণিত বিভাগে মাস্টার্সের ছাত্র আনোয়ারুল ইসলাম মাসুম ৪ এপ্রিল রাতে আটক হন। রাত আড়াইটায় তার মামা ফজলুর রহমানের বাসার কলাপসিবল গেটের তালা ও গেটের অংশবিশেষ ভেঙে র্যাব-৫-এর পরিচালক আনোয়ার খান লতিফের নেতৃত্বে নাহিদ ও বুলবুলসহ ৪০-৫০ জনের একটি দল প্রবেশ করে। এক পর্যায়ে ঘরের দরজা ভেঙে ঘুমন্ত অবস্থায় তারা আনোয়ারুল ইসলাম মাসুমকে একটি ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদের নামে নির্যাতন করে তাকে। পরে র্যাব সদস্যরা নিজেদের অস্ত্র মাসুমের সামনে রেখে নিজেরাই ছবি তোলে। মাসুমকে নিয়ে যাওয়ার সময় তার ল্যাপটপ, মোবাইল ফোনসহ কিছু ব্যক্তিগত জিনিসপত্র নিয়ে যায় র্যাব। পরবর্তীতে ৮ থেকে ১০ ডিবি পুলিশসহ র্যাব সদস্যদের ওই দলটি ভোরে সাহাজিপাড়ায় একটি ছাত্রাবাসে অভিযান চালায়। এরপর থেকে মাসুম নিখোঁজ।
তাজাম্মুল ও আজিজ
গত ২৩ জুন রাত সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের মাস্টার্সের ও রাবি শাখা ছাত্রশিবিরের অর্থ সম্পাদক মো. তাজাম্মুল আলী, আরবি বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র রাবি শিবিরের ছাত্র আন্দোলন সম্পাদক মো. আজিজুর রহমান, আরবি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র হবিবুর রহমান, অপর শিবির নেতা ইসমাইল হোসেন চিকিত্সা ও ব্যক্তিগত কাজে হানিফ পরিবহনের একটি বাসে করে ঢাকায় আসেন। ২৪ জুন তারা আজিজুর রহমান ভাইয়ের বন্ধু পিপলস ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষকের সঙ্গে দেখা করে বের হওয়ার পর বিকালে সাদা পোশাকধারী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাজাম্মুল আলী ও আজিজুর রহমানকে আটক করে। এ সময় ইসমাইল দূরে থাকায় দৌড়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। এখন পর্যন্ত তাদের কোনো হদিস মেলেনি।
আবদুস সালাম ও নুরুল ইসলাম
নিখোঁজ তাজাম্মুল আলী ও আজিজুর রহমানকে খোঁজার জন্য এবং থানায় ডিজি করার উদ্দেশ্যে ২৬ জুন নিখোঁজদের পরিবারের সদস্যরা ঢাকায় যান। ওইদিন সঙ্গে আসেন রাবির আইন ও বিচার বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র রাবি শিবিরের ছাত্রকল্যাণ সম্পাদক মো. আবদুস সালাম। তিনি ছাত্রশিবিরের স্থানীয় থানা সভাপতি নূরুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে ২৬ জুন রাত ৮টার দিকে তাজাম্মুল আলী ও আজিজুর রহমানের নিখোঁজ বিষয়ে গুলশান থানায় জিডি করে বেরিয়ে যাওয়ার সময় তাদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এখন পর্যন্ত তাদের কোনো হদিস পাওয়া যায়নি।
নজরুল ইসলাম খানের বক্তব্য
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, বিএনপি নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে দেশে সামাজিক শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা, সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য প্রতিরোধের জন্য ‘র্যাব’ নামক একটি এলিট ফোর্স গঠন করা হয়। ওই সময় অনেক দুঃসাহসিক কাজের মাধ্যমে র্যাব দেশের জনগণের আস্থা ও প্রশংসা অর্জন করেছিল। কিন্তু সেই দক্ষ ও সুশিক্ষিত র্যাব বাহিনীকে গত ৫ বছরে বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকার নগ্নভাবে বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের হত্যা, গুম, অপহরণ ও নির্যাতনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। বর্তমানে র্যাবকে স্বাধীনতা-উত্তর আওয়ামী সরকারের রক্ষীবাহিনীর মতো কলঙ্কিত এবং ভীতিকর বাহিনীতে রূপান্তরিত করে র্যাবের সুনাম ও মর্যাদাকে দেশ-বিদেশে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। দেশি ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো র্যবের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য গভীর উদ্বেগ ও উত্কণ্ঠা প্রকাশ করেছে। গত ক’দিন থেকে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, র্যাবের পোশাক পরে রাতের আঁধারে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশির নামে গ্রেফতার করে অবলীলায় পরবর্তীতে গ্রেফতারের ঘটনা বেমালুম অস্বীকারের মাধ্যমে তাদের গুম করা হচ্ছে। তিনি গত শুক্রবার রাতে র্যাবের গুলিতে লক্ষ্মীপুর জেলা জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. ফয়েজ আহম্মদ নিহত হওয়ারও কঠোর সমালোচনা করেন।
১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, অবরোধসহ সরকারবিরোধী আন্দোলন চলাকালে সারাদেশে তাদের কমপক্ষে ৫০ নেতাকর্মী নিখোঁজ হয়েছেন। এদের কয়েকজনের মৃতদেহও পাওয়া গেছে। নিখোঁজ নেতাকর্মীদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিয়ে আটক করা হয়েছিল। কিন্তু র্যাব, পুলিশ ও গোয়েন্দা সদস্যরা ওইসব অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে।
উৎসঃ আমার দেশ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন