শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০১৩


ভোট ছাড়াই সরকার গঠনের পথে আ.লীগ 14 Dec, 2013 দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হতে যাচ্ছেন ১৪৯ জন প্রার্থী। ফলে ভোট ছাড়াই সরকার গঠনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটের দরকার আর ২টি আসন। সংবিধান অনুযায়ী, জাতীয় সংসদে ৩০০ আসনের মধ্যে কোনো পক্ষ ১৫১ আসন পেলে সরকার গঠন করতে পারবে। শনিবার দুপুর পর্যন্ত নির্বাচন কমিশন যে প্রাথমিক তালিকা তৈরি করেছে তাতে সংসদ নির্বাচনে ১৪৯ আসনে একক প্রার্থী দেখা যায়। এ তালিকা আরও বাড়তে পারে বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে। তবে সরকারিভাবে এখনও এই তালিকা ঘোষণা করা হয়নি। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছে এমন ১৪৯ জন এমপি প্রার্থীর মধ্যে আওয়ামী লীগের ১২০ জন, এরশাদের জাতীয় পার্টির (জাপা) ১৭ জন, জাতীয় পার্টি (মঞ্জু) ১ জন, জাসদের ২ জন এবং ওয়ার্কাস পার্টির ২ জন রয়েছেন বলে জানা গেছে। বাকিদের তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি। যেসব আসনে একজন মাত্র বৈধ প্রার্থী রয়েছেন তাদেরকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী ঘোষণা করবে কমিশন। সারাদেশ থেকে আসা তথ্যের ভিত্তিতেই এই তালিকা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের সংসদ নির্বাচনে এ-ই প্রথম এতো প্রার্থী বিনা প্রতিন্দ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। বিরোধীদল বিএনপির নির্বাচনে না আসায় এবং কোথাও প্রার্থিতা প্রত্যাহার ও মনোয়নপত্র বাতিল হয়ে যাওয়ায় সারাদেশে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এসব প্রার্থী নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন। এছাড়া অনেক এলাকায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদের এবং দলের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আবেদন গ্রহণ করা হয়নি। প্রত্যাহারের আবেদন গ্রহণ করা হলে বিনা ভোটে নির্বাচিত প্রার্থীর সংখ্যা আরো বাড়তো। অবশ্য সরকার গঠন করতে হলে জাতীয় পার্টিকে পাশে পেতে হবে আওয়ামী লীগের। কিন্তু এরশাদ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয়ায় এবং সিদ্ধান্তে এখনো অটল থাকায় তা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এখন জাপার একটি অংশকে নির্বাচনে আনতে জোর তৎপরতা চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ। এরশাদের স্ত্রী রওশনের নেতৃত্বে একটি অংশ তাতে রাজি হয়েছে বলেও খবর পাওয়া যাচ্ছে।গত বৃহস্পতিবার রওশনের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের পর এ গুঞ্জন প্রবল হয়েছে। একই সঙ্গে সবচেয়ে কম সংখ্যক প্রার্থী নিয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দশম জাতীয় সংসদের এ নির্বাচন। যাচাই বাছাই, আপিল ও প্রত্যাহার শেষে এখন পর্যন্ত ৩০০ আসনের বিপরীতে বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা অতীতের সব নির্বাচন থেকেও কম। এবারের নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা পড়ে ১ হাজার ১০৭টি। যাচাই বাছাইয়ে বাদ পড়ে যায় ২৬০ জনের প্রার্থিতা। সে অনুযায়ী বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা ছিল ৮৪৭ জন। পরে নির্বাচন কমিশনে প্রার্থিতা বৈধ চ্যালেঞ্জ করে আপিল করেন ১২৬ প্রার্থী। সেইসঙ্গে বৈধ ১২ প্রার্থীর বিরুদ্ধেও আপিল করা হয় কমিশনে। আপিল শুনানি শেষে ৩৭ জন তাদের প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। বিনা প্রতিন্দ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিতদের তালিকায় মহাজোট সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী ও প্রভাবশালী নেতারাও রয়েছেন। এরা হলেন- সংসদের উপনেতা সাজেদা চৌধুরী, বর্তমান যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, বনমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফ, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও অন্তবর্তীকালীন সরকারের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, মন্ত্রী আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহিউদ্দীন খান আলমগীর, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. দীপু মনি, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, রাজিউদ্দিন রাজু, মেহের আফরোজ চুমকিসহ আরও কয়েকজন রয়েছ্নে। বিরোধীদলকে বাদ দিয়ে ১৯৯৬ সালে নির্বাচন করে তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল বিএনপি। ১৫ ফেব্রুয়ারির সে নির্বাচনেও ৪৯ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়। তবে সে নির্বাচনে মোট প্রার্থী ছিলেন এবারের চেয়ে পাঁচশ’রও বেশি। সে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন ১ হাজার ৪৫০ প্রার্থী। এতো কম প্রার্থীর অংশগ্রহণে নির্বাচন অনুষ্ঠানে কমিশন বদ্ধপরিকর। কিন্তু তারা এ নির্বাচনকে একতরফা বলতে নারাজ। তাদের মতে, সব দলকে অংশ নেয়ার জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ দেয়া হয়েছে। কেউ অংশ না নিলে সেটা তাদেরই ব্যাপার। প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ অবশ্য বারবারই সমঝোতার আশা প্রকাশ করছেন। তিনি একাধিকবার বলেছেন, ‘আমরা সমঝোতার অপেক্ষায় আছি। আশা করছি সবার অংশগ্রহণে সুন্দর একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।’ উৎসঃ বাংলামেইল২৪

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন