জামায়াত আন্তর্জাতিক জঙ্গিবাদেরই শাখা
কালের কণ্ঠ ডেস্ক
শেয়ার - মন্তব্য (0) - প্রিন্ট
অঅ-অ+
বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামী আন্তর্জাতিক মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদেরই যে শাখা, তা মৌলবাদবিরোধী আন্দোলনের নেতা শাহরিয়ার কবীর নির্মিত তথ্যচিত্রে উঠে এসেছে বলে জানিয়েছে ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকা। রবিবার পত্রিকাটিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
'জামায়াত আন্তর্জাতিক জঙ্গিবাদেরই শাখা, বলছে তথ্যচিত্র' শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ নিয়ে মার্কিন নীতির বিরোধিতা করার জন্যই কি দেবযানী খোবরাগাদেকে গ্রেপ্তার করে ভারতকে শিক্ষা দেওয়া ওয়াশিংটনের? বাংলাদেশের একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির সম্পাদক শাহরিয়ার কবীর অন্তত তেমনটাই মনে করেন। তাঁর অভিযোগ, দক্ষিণ এশিয়ায় তালিবানি মৌলবাদকে প্রতিহত করতে জামায়াতকে বাংলাদেশের সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার কেৌশল নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। জামায়াত তাদের চোখে 'নরম ও আধুনিক মৌলবাদী'। কিন্তু সত্যিই কি তাই? পশ্চিমা বিশ্বের 'ভুল' ভাঙাতে নিজের তৈরি তথ্যচিত্রকেই হাতিয়ার করেছেন কবীর।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, তুরস্ক থেকে ইরান, আফগান সীমান্তে পাকিস্তানের বেলুচিস্তান থেকে উত্তর প্রদেশের দেওবন্দ বা নয়াদিল্লি-হায়দরাবাদ-লাহোর-করাচি ঢুঁড়ে কবীর প্রতিষ্ঠা করেছেন মৌলবাদের কোনো নরম-কঠিন, সাবেক-আধুনিক ভেদাভেদ হয় না। মিসর-সিরিয়ার ইসলামী ব্রাদারহুড বা পাকিস্তান-আফগানিস্তানের তালেবানের মতোই আন্তর্জাতিক মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদের শাখা বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামী। আল-কায়েদার সঙ্গেও রয়েছে তাদের নিবিড় যোগাযোগ। বাংলাদেশের জামায়াতকর্মীরা টুপি-দাড়ি ছাড়তে পারে, জোব্বার বদলে জিন্স-টিশার্ট পরে মিছিল করতে পারে, কিন্তু মতাদর্শগতভাবে তারা জঙ্গিই।
আনন্দবাজারের প্রতিবেদন জানায়, কবীরের তথ্যচিত্র বলছে, ইসলামী শাসনবিধি কায়েম করার লক্ষ্যে খুন-ধর্ষণকেও অন্যায় বলে মানে না জামায়াতের মৌলিক মতবাদ। আরবের পেট্রোডলার উপচে পড়ে বাংলাদেশে তাদের শাখা সংগঠনটির প্রসারেও। বাংলাদেশের মাদ্রাসা থেকে আফগানিস্তানে ওসামা বিন লাদেনের দলে যোদ্ধা পাঠায় এই জামায়াতের নেতারাই।
শাহরিয়ার কবীরের প্রযোজনায় 'জিহাদ' সিরিজের তৃতীয় ও আনকোরা ওই তথ্যচিত্রের নাম 'দ্য আলটিমেট জিহাদ'। গত শনিবার কলকাতায় ইন্দো-বাংলাদেশ কালচারাল সেন্টার ও ইন্ডিপেনডেন্ট জার্নালিস্ট সোসাইটির আয়োজনে এক সেমিনারে এ তথ্যচিত্রটি প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানে শাহরিয়ার কবীর বলেন, 'সর্বত্র দিব্যি ছড়িয়ে মৌলবাদীদের শাখা-প্রশাখা। কিন্তু মেৌলবাদবিরোধীদের সমবেত করতে কত যে সমস্যা!'
প্রতিবেদনে জানানো হয়, তথ্যচিত্রটিতে কবীর কথা বলেছেন তুরস্ক-পাকিস্তান-মিসরের মৌলবাদবিরোধীদের সঙ্গে। তাহরির স্কোয়ারের আন্দোলনকারী নেতার সঙ্গে আলাপচারিতায় দেখিয়েছেন, কিভাবে মৌলবাদবিরোধী আন্দোলনকে হাইজ্যাক করে ক্ষমতা দখল করেছে জঙ্গি ইসলামী ব্রাদারহুড। সেখানেও তাদের পেছনে ছিল আমেরিকার সমর্থন। কবীরের কথায়, মিসর থেকে ইন্দোনেশিয়া সর্বত্র আমেরিকার এখন এক নীতি। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ লড়াই করছে। একাত্তরের মতো এবারেও তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে ভারত। কবীর বলেন, 'ওয়াশিংটন গিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব সুজাতা সিং বলে এসেছেন, বাংলাদেশ নিয়ে মার্কিন নীতি ভয়ংকর ভুল। দেবযানী প্রসঙ্গেও মার্কিন ঔদ্ধত্যের জবাব দিয়েছে দিলি্ল। বাংলাদেশের মানুষও এ থেকে লড়াইয়ের অনুপ্রেরণা পাচ্ছে।'
সেমিনারে শাহরিয়ার কবীর বলেন, এই লড়াইয়ে পরাজয়ের অর্থ বাংলাদেশের পাকিস্তানে ফিরে যাওয়া। আর একাত্তরে সেই হারের বদলা নিতেই সন্ত্রাসের রাস্তায় নেমেছে জামায়াত। বাংলাদেশজুড়ে তাদের নাশকতা-হিংসার সঙ্গে নির্বাচনের কোনো সম্পর্ক নেই। কারণ আদালতের নির্দেশে এই নির্বাচনে জামায়াতের অংশ নেওয়ার কোনো সুযোগই নেই।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন