গাছ নিধনকারীরা ২৯ ডিসেম্বর ঢাকায় আসছে খবরে সতর্ক পুলিশ
27 Dec, 2013
পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহমুদ খন্দকার বলেছেন, ‘সারা দেশের রাস্তায় গাছ নিধনকারীরা আগামী ২৯ ডিসেম্বর ঢাকা আসছে এমন গোয়েন্দা তথ্যে পুলিশকে সর্বোচ্চ সতর্ক রাখা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশের কোথাও কোনো গণগ্রেপ্তারের ঘটনা ঘটছে না। যে কোনো নাশকতাকে মাথায় রেখে এ ধরনের অভিযান পুলিশের রুটিন ওয়ার্ক।’
আইজি শুক্রবার সকালে রাজারবাগ পুলিশ লাইনে রাজশাহীতে দুর্বৃত্তের হাতবোমায় নিহত কনস্টেবল সিদ্ধার্থ চন্দ্র সরকারের মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
উল্লেখ্য, গতকাল বৃহস্পতিবার রাজশাহীতে ১৮-দলীয় জোটের বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহীর রাজাহাতা লোকনাথ স্কুলের পাশের মোড়ে পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে হাতবোমা হামলা চালায়। এতে সিদ্ধার্থসহ নয়জন পুলিশ সদস্য আহত হন। সিদ্ধার্থের আঘাত ছিল গুরুতর। চিকিৎকদের পরামর্শে হেলিকপ্টারে করে তাকে ঢাকায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হয়। রাত সাড়ে ৯টার দিকে তিনি মারা যান।
হাসান মাহমুদ বলেন, ‘দেশবাসী এবং রাজধানীতে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা দিতে যৌথ বাহিনী অভিযান পরিচালনা করছে। এ অভিযানে কোনো গণগ্রেপ্তার হচ্ছে না।’
এরপরও কোনো নিরাপরাধ ব্যক্তি গ্রেপ্তার হলে তা তদন্ত করে দেখা হবে জানিয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শক বলেন, ‘পুলিশের আইনানুগ দায়িত্ব পালনের কার্যক্রমকে গণগ্রেপ্তার বলে অন্যভাবে উপস্থাপিত করা হলে সেটি দুঃখজনক।’
তিনি বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃতরা তদন্তে দোষী হলে তাদের বিরুদ্ধে সেই ধরনের আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর তদন্তে নির্দোষ প্রমাণিত হলেও তাদের বিরুদ্ধে যে বিধি রয়েছে, সে মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বিরোধী ১৮-দলীয় জোটের ঢাকা অভিমুখে অভিযাত্রা কর্মসূচির আর বাকি মাঝে একদনি। তাদের আবেদন বিষয়ে এখন পর্যন্ত কিছু জানানো হয়নি- সাংবাদিদের এমন প্রশ্নে হাসান মাহমুদ খন্দকার বলেন, ‘অবশ্যই সময় মত তাদের জানিয়ে দেওয়া হবে। যে ধরনের আইনি প্রক্রিয়ায় জানানোর কথা, সে প্রক্রিয়া অনুসরণ করে সময় মত তাদের জানিয়ে দেওয়া হবে।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘গাছ কেটে রাস্তা অবরোধ, হিংসাত্মক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মানুষের প্রাণ হরণকারীরা আগামী ২৯ ডিসেম্বর ঢাকা আসছেন বলে গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে। এ বিষয়টি পুলিশ ওয়াকিবহাল হওয়ার পর সর্বোচ্চ সতর্কবস্থায় রয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘এ ধরনের প্রেক্ষাপটে যে ধরনের দায়িত্ব পালন করার কথা, সে বিষয়ে আমরা সতর্ক। আমরা ইতোপূর্বে এমন প্রেক্ষাপটে দায়িত্ব পালন করেছি, এখনো করছি, ভবিষ্যতেও করব।’
গত ২৪ অক্টোবরের পরে বিরোধী জোটের কর্মসূচি ঘিরে সারা দেশে ব্যাপক সহিংসতা হয়েছে। এর মধ্যে সাতক্ষীরা ও লক্ষ্মীপুর সহিংসতা চরম আকার ধারণ করে। এ প্রেক্ষাপটে গত সপ্তাহের শুরুতে এই দুই জেলায় পুলিশ, র্যা ব ও বিজিবির সমন্বয়ে যৌথ বাহিনী অভিযান শুরু করে।
সেটি এখন সারা দেশে চলছে। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে রাজধানী ঢাকায় অভিযান শুরু হয়েছে। ২৯ ডিসেম্বর মার্চ ফর ডেমোক্রেসি ঘিরে এ অভিযান ঢাকা ও এর আশপাশের জেলায় জোরদার করা হয়েছে। প্রতিদিন আটক হচ্ছে শ’ শ’ বিরোধী জোটের নেতাকর্মী। আটকের সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না।
বুধবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল ৫ শতাধিক বিরোধী জোটের নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, এই অভিযানে সাধারণ মানুষকেও আটক করা হচ্ছে। তারই জবাব দিলেন পুলিশের মহাপরিদর্শক।
নিহত পুলিশ কনস্টেবল সিদ্ধার্থ চন্দ্র সরকারের মরদেহে সকালে শেষশ্রদ্ধা নিবেদনের সময় পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকরর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে নিহতের মরদেহ নিয়ে নিজ বাড়ি রংপুরের কাউনিয়ার উদ্দেশে একটি দল রওনা হয়।
উৎসঃ আরটিএনএন
Share on facebook Share on email Share on print
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন