জীবনবাজি রেখে হলেও সমাবেশ করবে হেফাজত কেউ আঘাত করলে এবার পাল্টা আঘাত
স্টাফ রিপোর্টার : গত কিছু দিনের টানা অবরোধ ও হরতালে দেশ অচল থাকলেও দেশের গণমানুষের সর্ববৃহৎ দেশপ্রেমিক অরাজনৈতিক প্লাটফরম হেফাজতে ইসলামের ডাকে দেশব্যাপী শুরু হয়েছে অভুতপূর্ব নবজাগরণ। রাজনৈতিক সংঘাতময় পরিস্থিতির উত্তরণ ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য দেশের মানুষ যখন কঠিন পরীক্ষা দিয়ে চলেছে। যখন নিজেদের ভোটাধিকার ফিরে পাওয়ার সংগ্রামে দেশবাসী জানমাল ও সম্পদের কোরবানি দিয়ে যাচ্ছে। তখন ৯০ ভাগ মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন অনুভব করে সমঝোতার আহ্বান নিয়ে ২৪ ডিসেম্বর শাপলা চত্বরে মহাসমাবেশ ডেকেছেন আল্লামা শাহ আহমদ শফী। জাতির এ সংকটময় মুহূর্তে সর্বশক্তিমান আল্লাহর দরবারে দোয়া ও ফরিয়াদ করার বিকল্প নেই। ক্রান্তিকালে তৌহিদী জনতা ঈমান ও দেশরক্ষার জিহাদে সর্বশক্তি নিয়োগ করবে, এটাই স্বাভাবিক। যে কোনমূল্যে আগামীকাল ২৪ ডিসেম্বর শাপলা চত্বরে মহাসমাবেশ সফল করা হবে। সরকার ক্যাডার ও পেটোয়া বাহিনী দিয়ে বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে দেশব্যাপী শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে জালেম শক্তির পরাজয় নিশ্চিত করা হবে। ঈমানী আন্দোলন তখন জনগণের রাজনৈতিক আন্দোলনের সাথে একাকারও হয়ে যেতে পারে। তৌহিদী জনতার ঈমান ও দেশ রক্ষার আন্দোলনই তখন সরকার পতনের একদফায় রূপান্তরিত হতে পারে। গতকাল হেফাজতের অন্যতম শীর্ষনেতা আল্লামা রফিকুল ইসলাম মাদানী এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন।
হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী দু’দিন আগে চট্টগ্রামের এক সমাবেশে বলেছেন, বর্তমানে দেশে ঈমানদার ও নাস্তিকশক্তির যুদ্ধ শুরু হয়েছে। এই যুদ্ধে ইসলামের পক্ষশক্তিকে অবশ্যই বিজয়ী হতে হবে। দেশের বিভিন্ন স্থানে ইসলামী সভা সমাবেশে বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে অথচ নাচ-গান ও মঞ্চের নামে গুটিকতক লোকের সুবিধার্থে রাস্তা-ঘাট বন্ধ করে পুলিশ ও র্যাবের পাহারায় অনৈতিক কাজকর্মের সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে। সরকারের কৃতকর্ম ও আচরণেই মানুষ বুঝে গেছে যে, এ সরকার ইসলামবিদ্বেষী। তারা নাস্তিক-মুরতাদদের পক্ষে। এ অবস্থায় ঈমানদারদের প্রতিবাদ ও মহান আল্লাহর দরবারে দোয়া করতেই হবে। ঈমান ও নাস্তিকতার দ্বন্দ্ব চিরদিনই ছিল, ভবিষ্যতেও থাকবে। ঈমানদার নাগরিকদের হেফাজতের ছায়াতলে আমৃত্যু লড়াইয়ে চালিয়ে যাওয়ায় সংকল্প করতে হবে।
হেফাজত ইসলাম চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শাখার অন্যতম নেতা হাফেজ মাওলানা আবদুল মোমিন জানান, গতকাল একটি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা হাটহাজারিতে হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতৃবর্গের সাথে যোগাযোগ করে ২৪ তারিখের সমাবেশ স্থগিত করার কথা বলেন। অন্যান্য সংস্থা ও এজেন্সির লোকেরাও ঢাকা, চট্টগ্রাম ও অন্যান্য স্থানে হেফাজত নেতৃবৃন্দকে নানাভাবে নিরুৎসাহিত করার কাজে ছিলেন বলে খবর পাওয়া গেছে। ঢাকা মহানগর হেফাজতের আহ্বায়ক আল্লাম নূর হোসাইন কাসেমীকে গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন নানাভাবে হয়রানি করে। সারাদিন গুজব ছিল তাকে গ্রেফতারের এবং অজ্ঞাত পরিচয় লোকজন কর্তৃক তুলে নেয়ার। সর্বশেষ আমরা হাটহাজারি থেকে খবর পাই যে, গতকাল সন্ধ্যায় সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার মহাপরিচালক ঢাকার হেফাজত নেতৃবর্গের সাথে বৈঠক করেছেন। সরকারি সংস্থাগুলোর দাবি, হেফাজত যেন ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে কোন কর্মসূচি না দেয়। গভীর রাত পর্যন্ত আল্লামা নূর হোসইন কাসেমী সরকারি চাপ মোকাবেলা করে যান এবং আগামীকালের শাপলা চত্বরের মহাসমাবেশ অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্তে অটল থাকেন।
ঢাকা মহানগর হেফাজতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ জানান, গতকাল সারাদিন আমাদের ৫টি টিম ঢাকা বিভাগের নানা জায়গায় গণসংযোগ করে। সরকারের আইন প্রতিমন্ত্রী কামরুল ইসলামসহ ১৪ দলের নেতারা ২৪ তারিখ শাপলা চত্বরে হেফাজতের সমাবেশে বাধাদানের প্রকাশ্য হুমকি দেয়ায় ঢাকা মহানগরী, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, সাভার, আশুলিয়া, ধামরাই ও মানিকগঞ্জ এলাকার তৌহিদী জনতা বাধা মোকাবেলা করে সমাবেশ অনুষ্ঠানের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। গতকাল ঢাকার ৫টি পরামর্শ সভায় এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। নারায়ণগঞ্জ হেফাজত নেতৃবৃন্দ সমাবেশে লক্ষাধিক জনতার অংশগ্রহণ ও বাধা মোকাবেলার কৌশল সম্পর্কে আলোচনায় মিলিত হন। ফজরের পর থেকেই নির্দিষ্ট গমন পথে সংঘবদ্ধ হয়ে শান্তির পতাকা হাতে তৌহিদী জনতা শাপলা চত্বরের দিকে অগ্রসর হবেন। ঢাকার প্রবেশপথ, সংলগ্ন জেলা সদর, বাজার, উপশহর ও গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে প্রয়োজনে সাধারণ মানুষ, র্যাব, পুলিশ ও মহড়ারত সেনাবাহিনীর সহযোগিতা চাওয়া হবে। অতীতের মত সরকারদলীয় ক্যাডার, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, বিশেষ ধর্মাবম্বী গুন্ডা-মাস্তানরা তৌহিদী জনতার উপর হামলা করলে এবার পাল্টা আঘাত করা হবে, তথা জনগণ উপযুক্ত জবাব দেবে বলেও হেফাজত নেতাদের সূত্রে জানা যায়। সরকারের নেতা মন্ত্রীরা প্রকাশ্যে বিরোধী উষ্কে দিচ্ছেন, ১৪ দল প্রতিরোধের ডাক দিয়েছে মর্মে উল্লেখ করে পুরান ঢাকার হেফাজত নেতা হাজী মনিরুল ইসলাম বলেন, দেশের নাগরিক হিসেবে আমরা রাজনীতিতে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে চাই। সারাদেশ থেকে আলেম-ওলামা, পীর-মাশায়েখ, ধর্মপ্রাণ তৌহিদী জনতা ঈমানী দাবি নিয়ে শান্তি ও সমঝোতার আহ্বান নিয়ে ঢাকায় আসবেন। তারা দেশ ও জাতির সংকটকালে মহান আল্লাহর দরবারে দোয়া করবেন। এতে বাধা দেয়া বা আগত জনতাকে কষ্ট দেয়া কোন ভদ্রলোকের কাজ নয়। যারা বাধাদান বা প্রতিরোধের ঘোষণা দিয়েছেন, কোন অঘটন ঘটলে তারাই দায়ী থাকবেন। আমরা সরকারকে সুবুদ্ধির পরিচয় দিতে বলব। অন্যথায়, এ ঈমানী জাগরণের অনিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ সামাল দেযা এই টলটলায়মান সরকারের পক্ষে সম্ভব হবে না। বিরোধীদলের আন্দোলনে সরকারের পায়ের তলা থেকে এমনিতেই মাটি সরে গেছে। তৌহিদী জনতার শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বাধা দিলে, নিরীহ মানুষের উপর আঘাত এলে সাধারণ মানুষ পাল্টা আঘাত হানবে। সংঘাত বাধলে এ সংঘাত দাবানলের মত দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়বে। অন্তত রাজধানীর বুকে আমাদের মেহমান আলেম হাফেজ ও ধর্মপ্রাণ মানুষের নিরাপত্তা বিঘিœত হলে এবার কোন কুচক্রীকে ক্ষমা করা হবে না। কামরাঙ্গিরচর হেফাজতের শীর্ষনেতা জুলহাস মিজি বলেন, আগামীকালের মহাসমাবেশে আগত ধর্মপ্রাণ মানুষকে কোন সন্ত্রাসী বা ক্যাডার বিরক্ত করলে সর্বস্তরের জনগণ তাদের রুখে দাঁড়াবে। রাজধানীতে নেতৃবৃন্দ নিরাপত্তা, সেবা ও শৃংখলার জন্য কমিটি করে দিয়েছেন। কোন অপশক্তি যদি তৌহিদী জনতার দিকে হাত বাড়ায় তাহলে তাদের হাত ভেঙ্গে দেয়া হবে।
শতবাধা ও কূটকৌশল মোকাবেলা করেই আগামীকাল মহাসমাবেশ করছেন হেফাজত নেতারা। হেফাজত নেতাদের সূত্রে জানা গেছে অবরোধের ভেতরই আল্লামা শাহ্ আহমদ শফীসহ হোফজতের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বিকল্প ব্যবস্থায় হাটহাজারী থেকে যথাসময় রাজধানী ঢাকায় পৌঁছে যাবেন। সারাদেশ থেকে হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতারা নিজ নিজ ব্যবস্থায় এসে ঢাকার আশপাশের ইউনিটসমূহে অবস্থান করছেন। ২৪ তারিখ জনতার কাফেলা নিয়ে ২০ থেকে ৩০ কি.মি. দূরত্বে পায়ে হেঁটে তারা শাপলা চত্বরে পৌঁছবেন। সমাবেশস্থল ও যাতায়াতের পয়েন্টগুলোর শৃংখলা বিধানের জন্য ৪০ হাজার স্বেচ্ছাসেবী দায়িত্ব পালন করবেন বলেও জানান তারা।
র্যাব আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমীকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেয়
স্টাফ রিপোর্টার : আগামী ২৪ ডিসেম্বর শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলাম ঘোষিত মহাসমাবেশ যে কোনো ত্যাগের বিনিময়ে সফল করার জন্য সকল আলেম-ওলামা, ইমাম-খতিব, মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকসহ সর্বস্তরের তৌহিদী জনতার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানানো হয়েছে। ঢাকার শাপলা চত্বরে মহাসমাবেশের সমর্থনে দেশের শীর্ষ স্থানীয় উলামায়ে কেরামগণ যৌথ বিবৃতিতে এবং বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ এ আহ্বান জানান। নেতৃবৃন্দ বলেন, শাপলা চত্বরের মহাসমাবেশ যে কোনো মূল্যে সফল করা হবে। মহাসমাবেশে বাধা দেয়া হলে সকল দায়-দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে। ৯০ ভাগ মুসলমানের বাংলাদেশে ঈমানের দাবি মেনে নিয়েই চলতে হবে। যতদিন মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কটূক্তিকারীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার না হবে ততদিন হেফাজতে ইসলামের ঈমানী আন্দোলন চলবে। নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়ে মুসলমানদের ঈমানী আন্দোলনকে স্তব্ধ করা যাবে না।
এদিকে, গতকাল দুপুরে র্যাব-১ বারিধারাস্থ হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগরী কার্যালয় থেকে মহানগর আহ্বায়ক আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমীকে উত্তরাস্থ কার্যালয়ে নিয়ে প্রায় দু’ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দিয়েছে। র্যাব কর্তৃপক্ষ এসময়ে আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমীকে ২৪ ডিসেম্বরের শাপলা চত্বরের মহাসমাবেশ স্থগিত করার অনুরোধ জানান। তারা আগামী ৫ জানুয়ারি সংসদ নির্বাচনের পরে মহাসমাবেশ করার অনুরোধ জানান। আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী এ অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে বলেন, আল্লামা শাহ আহমদ শফী’র আহ্বানে কেন্দ্রীয় কমিটি’র সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দীর্ঘদিন আগেই এই মহাসমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
শীর্ষস্থানীয় ওলামা মাশায়েখের বিবৃতি
আগামী ২৪ ডিসেম্বর ঢাকার হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশ সফল করার আহ্বান জানিয়েছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় ওলামা-মাশায়েখ। যৌথ বিবৃতিতে বিশিষ্ট ওলামা-মাশায়েখগণ যে কোনো ত্যাগের বিনিময়ে মহাসমাবেশ সফল করার জন্য সকল আলেম-ওলামা, ইমাম-খতিব, মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকসহ সর্বস্তরের তৌহিদী জনতার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস মুসলমানের ঈমানের মৌল স্তম্ভ। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর সম্মান ও শ্রেষ্ঠত্ব সর্বজন বিদিত। মহানবী (সা.)-এর শানে যারা বেয়াদবী ও কটূক্তি করে তারা পশুর চাইতেও নিকৃষ্ট। এক শ্রেণির নাস্তিক্যবাদী গোষ্ঠী দেশে মহান আল্লাহ ও তাঁর প্রিয় রাসুল (সা.)-এর শানে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে মুসলমানদের হৃদয়ে আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে দেশে বিরাজমান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সামাজিক স্থিতিশীলতা বিনষ্ট করতে তৎপর। পাশাপাশি সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ করে ওলামায়ে কেরাম ও মুসলমানদের ঘাড়ে দোষ চাপানোর ঘৃণ্যতর প্রচেষ্টায় লিপ্ত। সজাগ দৃষ্টি রেখে এদের প্রতিহত করা প্রত্যেক মুসলমানের নৈতিক ও ঈমানী দায়িত্ব। এ দায়িত্ব থেকে পিছপা হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাই সর্বস্তরের তৌহিদী জনতাকে তাদের প্রতিরোধকল্পে ২৪ ডিসেম্বর শাপলা চত্বরের সমাবেশকে সফল করার জন্য জীবন বাজি রেখে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, সম্প্রতি সরকার নানা অজুহাত ও ছলছুতো দেখিয়ে দেশের বিভিন্নস্থানে ওয়াজ মাহফিল ও ইসলামী সম্মেলন প্রভৃতি ধর্মীয় কর্মসূচিতে বাধা দিয়ে প্রকাশ্যে ইসলামবিদ্বেষী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। পাশাপাশি চিহ্নিত নাস্তিক-মুরতাদদের দেশদ্রোহী-ধর্মদ্রোহী বিভিন্ন কর্মসূচিতে পৃষ্ঠপোষকতা করে সুস্পষ্টভাবে নাস্তিক-মুরতাদদের দোসরে পরিণত হয়েছে।
বিবৃতিদাতা নেতৃবৃন্দ হলেন, আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী, মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ্ বাবুনগরী, মাওলানা আহমদুল্লাহ আশরাফ, মাওলানা আবদুল মুমিন শাইখে ইমামবারী হবিগঞ্জী, মাওলানা শামসুল আলম হাটহাজারী, মাওলানা হাফেজ তাজুল ইসলাম চট্টগ্রাম, মাওলানা আবদুল কুদ্দুস মুহতামিম ফরিদাবাদ মাদরাসা, মাওলানা আবদুল আউয়াল খতিব নারায়ণগঞ্জ ডিআইটি জামে মসজিদ, মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব, মাওলানা লোকমান হাকিম চট্টগ্রাম, আল্লামা তাফাজ্জুল হক হবিগঞ্জী, মাওলানা মুনীরুজ্জামান সিরাজী, মাওলানা আবদুল হামীদ পীর সাহেব মধুপুর, মাওলানা খলীলুর রহমান মুন্সিগঞ্জ, মাওলানা জিয়াউদ্দীন আঙ্গুরা সিলেট, মাওলানা আবদুল বাসেত বরকতপুরী সিলেট, মাওলানা সাজেদুর রহমান বি-বাড়িয়া, মাওলানা জাফরুল্লাহ খান, মাওলানা মোস্তফা আযাদ আরজাবাদ, মাওলানা আবুল ফাতাহ মোহাম্মাদ ইয়াহইয়া মালিবাগ, মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ফারুক, মাওলানা মাহফুজুল হক রহমানিয়া, মুফতি এনামুল হক বসুন্ধরা, মুফতি তৈয়ব হোসাইন, মাওলানা মুবারকুল্লাহ বি-বাড়িয়া, মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম ইসলামবাগ, মাওলানা মুহিউদ্দীন ইকরাম, মাওলানা নাজমুল হাসান, মাওলানা ফজলুল করীম কাসেমী, মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন খুলনা, মুফতি মুনির হোসাইন কাসেমী না’গঞ্জ, মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী বড়কাটারা, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী লালমাটিয়া, মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, মুফতি মহিউদ্দিন মাসুম সোবহানিয়া, মাওলানা বাহাউদ্দীন জাকারিয়া আরজাবাদ, অধ্যাপক মাওলানা আবদুল করীম, মাওলানা আবুল কাসেম লালবাগ, মাওলানা যুবাইর আহমদ কাকরাইল, মাওলানা আলী আকবর সাভার, মাওলানা আবদুল কুদ্দুস মানিকনগর, মুফতি আবদুল মালেক জামি‘আ কাসিমিয়া, মাওলানা ওয়ালিউল্লাহ আরমান, মাওলানা লোকমান মাজহারী মিরপুর, মুফতি শফিক জামিয়াতু ইবরাহীম, মাওলানা নূরুল হক কুমিল্লা, মাওলনা মুনির আহমদ কুমিল্লা, মাওলানা হাফেজ আনসারুদ্দীন নোয়াখালী, মাওলানা আজিজুল্লাহ নোয়াব নোয়াখালী, মাওলানা আনোয়ারুল্লাহ ফেনী, মাওলানা ওবায়দুর রহমান মাহবুব বরিশাল, মাওলানা হাফেজ কবীর আহমদ ফরিদপুর, মাওলানা আবদুল বাসির সুনামগঞ্জ, মাওলানা আবদুল বাসেত বানিয়াচং, মাওলানা খলীলুর রহমান ফরিদপুর, মাওলানা আবদুল হামীদ কুষ্টিয়া, মাওলানা আবদুল মুমিন কুষ্টিয়া, মাওলানা মুশতাক আহমদ খুলনা, মাওলানা মুফতি গোলামুর রহমান খুলনা, মাওলানা আনওয়ারুল করীম যশোর, মাওলানা মতিউর রহমান দিনাজপুর, মাওলানা হাফেজ ইদরিস আলী রংপুর, মাওলানা ফজলুল করিম রাজু বগুড়া, মাওলানা নজরুল ইসলাম সিরাজগঞ্জ, মাওলানা আবদুর রহমান হাফেজ্জী মোমেনশাহী, মাওলানা আবদুল জলীল টাঙ্গাইল, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ সা‘দী মোমেনশাহী, মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ মোমেনশাহী, মাওলানা শেরজাহান কিশোরগঞ্জ, মাওলানা ইসমাইল নরসিংদী, মাওলানা শওকত হোসাইন সরকার নরসিংদী, মাওলানা আবুল কাদের না’গঞ্জ, মাওলানা মাসউদুল করীম গাজীপুর, মাওলানা সাঈদ নুর মানিকগঞ্জ প্রমুখ।
হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগর
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ আহূত আগামী ২৪ ডিসেম্বর ঢাকার শাপলা চত্বরের মহাসমাবেশ সফল করার লক্ষ্যে গতকাল বারিধারা কার্যালয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব-এর সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সদস্য সচিব মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমী, মাওলানা মাহফুজুল হক, মুফতি তৈয়ব, মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন, মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, মাওলানা মুহিউদ্দীন ইকরাম, মাওলানা মাসউদুল করীম, মুফতি আজহারুল ইসলাম, মাওলানা ফেরদাউস প্রমুখ।
উক্ত বৈঠকে মহাসমাবেশকে সফল করার সার্বিক প্রস্তুতির রূপরেখা প্রণয়ন করা হয় এবং সমাবেশ শান্তি-শৃঙ্খলার সাথে বাস্তবায়নের জন্য একটি মজবুত ভলান্টিয়ার গ্রুপ গঠন করা হয়। নিরাপত্তা বিধানের জন্যও একটি স্বতন্ত্র গ্রুপ গঠন করা হয়।
এছাড়া এই মহাসমাবেশের ব্যাপক প্রচার-প্রসার ও জনবহুল করার জন্য গণসংযোগের অংশ হিসেবে রোববার বেশ কয়েকটি জোনাল মিটিং সম্পন্ন করা হয়।
হেফাজতে ইসলাম ঢাকা জোন-১০
হেফাজতের ১৩ দফা দাবি বাস্তবায়ন, সাবেক মন্ত্রী মুফতি ওয়াক্কাসসহ গ্রেফতারকৃত সকল নেতাকর্মীর মুক্তি, ২৪ ডিসেম্বর মতিঝিলে মহাসমাবেশ সফলের দাবিতে হেফাজতে ইসলাম ঢাকা জোন-১০ এর উদ্যোগে রোববার বিকেলে সাইনবোর্ডের ডগাইর ও মাতুয়াইলস্থ রোডে বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। হেফাজতে ইসলাম ঢাকা জোন-১০ এর নায়েবে আমির ও তৃণমূল খেলাফত আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি মাওলানা ফিরোজ আশরাফীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মিছিল পূর্ব সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন মাওলানা বেলাল হোসেন ফারুকী, তৃণমূল খেলাফত আন্দোলনের প্রচার সম্পাদক মো. কামাল আহমেদ, মাওলানা আব্দুল আলিম, মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মাওলানা নিয়ামত উল্লাহ, মুফতি সুলতান আহমেদ, মাওলানা আবু হানিফ, মাওলানা মুস্তাফিজুর রহমান ও মাওলানা সাঈদ আহমেদ প্রমুখ।
মাওলানা ফিরোজ আশরাফী যে কোনো মূল্যে ২৪ ডিসেম্বর শাপলা চত্বরে হেফাজতের মহাসমাবেশ সফল করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, আজ সারাদেশে ঈমানদারদের যে ঐক্য গড়ে উঠেছে তার বহিঃপ্রকাশ ঘটবে আগামী ২৪ ডিসেম্বর শাপলা চত্বরে। তিনি বলেন, আমরা রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা এনেছি, শাপলা চত্বরেও রক্ত দিয়েছি, নবীর ইজ্জত রক্ষার্থে প্রয়োজনে আমরা বার বার রক্ত দিতে প্রস্তুত।
হেফাজতে ইসলাম মানিকগঞ্জ শাখা
মাওলানা শওকতুল ইসলামের সভাপতিত্বে মাদরাসা আবু হুরায়রাতে হেফাজতে ইসলাম মানিকগঞ্জ শাখার কমিটির সাথে একটি মত বিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে মহানগর কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক মাওলানা মাহফুজুল হক ও যুগ্ম সদস্য সচিব মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন যথাক্রমে প্রধান ও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। আরো উপস্থিত ছিলেন মাওলানা আহসান হাবিব, মাওলানা জাকারিয়া, মাওলানা আশরাফ আলী, মাওলানা সালাউদ্দীন, মাওলানা যুবায়ের প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
এছাড়া ঢাকার কদমতলী থানায় মাওলানা আবদুর রশীদ সাহেবের সভাপতিত্বে সমাবেশ বাস্তবায়নের প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মিরপুর জোনে মাওলানা মোস্তফা আজাদ সাহেবের সভাপতিত্বে একটি প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরের আহ্বায়ক আল্লামা নূর হোসাইন কাসেমী।
উক্ত সভায় আল্লামা কাসেমী বলেন, হেফাজতের আমির আল্লামা আহমদ শফী সাহেব ঘোষণা করেছেন, যে কোনো মূল্যে আগামী ২৪ ডিসেম্বরের সমাবেশকে বাস্তবায়ন করা হবে। কোনো বাধা-বিপত্তি আমাদের সমাবেশকে ব্যাহত করতে পারবে না। হেফাজতের সমাবেশ দেশ ও ঈমান রক্ষার সমাবেশ। এ সমাবেশকে সফল করা আমাদের সকলের নৈতিক ও ঈমানী দায়িত্ব। তাই সর্বস্তরের আলেম-ওলামা ও তৌহিদী জনতাকে এ সমাবেশ বাস্তবায়ন করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।
গাজীপুরের বিশিষ্ট আলেমগণের বিবৃতি
হেফাজতে ইসলাম ঘোষিত ২৪ ডিসেম্বর শাপলা চত্বরের মহাসমাবেশকে সফল করার আহ্বান জানিয়েছেন গাজীপুর জেলার বিভিন্ন মাদরাসার প্রিন্সিপাল, মসজিদের খতিব, ঈমাম ও বিশিষ্ট উলামায়ে কেরামগণ। বিবৃতিতে তারা বলেন, সরকার ২৪ তারিখ সমাবেশ নিয়ে গড়িমসি করছে। যদি সরকার সমাবেশে বাধা দেয় তাহলে এই সরকারের বিরুদ্ধে পতনের আন্দোলন শুরু করতে হবে। বিবৃতিদাতা আলেমগণ হলেন, মুফতি লেহাজ উদ্দিন ভুঞা, মুফতি মাসুদুল করিম, মাওলানা ফজলুর রহমান, মুফতি সিরাজুল ইসলাম, মাওলানা নজির আহমদ, মুফতি আতাউর রহমান, মুফতি নাছির উদ্দিন খান, মাওলানা আশরাফ আলী ফারুকী, মুফতি কামাল উদ্দিন, মাওলানা মুখলিছুর রহমান, মাওলানা ইকবাল মাসুম, মুফতি আ. মান্নান, মাওলানা ফয়জুুল্লাহ, মুফতি এমদাদ, মাওলানা শামীম আহমদ, মাওলানা রুহুল আমিন, মাওলানা আবু বক্র, মাওলানা দেলোয়ার বিন গাজী, মাওলানা আব্দুল্লাহ, মাওলানা মঈনুদ্দিন, মাওলানা জয়নুল আবেদিন, মাওলানা আব্দুল খালেক, মাওলানা সাইফুল ইসলাম, হাফেজ নিজাম উদ্দিন, মাওলানা মেহের উল্লাহ, মাওলানা সাঈদুর রহমান, মাওলানা ফারুক আহমদ, মাওলানা আব্দুর রাকিব প্রমুখ।
ইসলামী দল
বাংলাদেশ ইসলামী দল-এর সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল নাসের ও মহাসচিব অধ্যক্ষ মুফতি শহীদুল ইসলাম আনসারী আগামী ২৪ ডিসেম্বর শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর মহাসমাবেশ সফল করার জন্য নবীপ্রেমিক প্রতিটি মুসলমানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। নেতৃদ্বয় বলেছেন, আজ এক ব্যক্তির ক্ষমতা কুক্ষিগত করার উগ্র বাসনার বলি হচ্ছে সাধারণ মানুষ। আজ দেশে লাশের মিছিল হচ্ছে- এমতাবস্থায় দেশপ্রেমিক কোন মুসলমান ঘরে বসে থাকতে পারে না। তাছাড়া দেশবাসীর সাংবিধানিক অধিকার হরণ করে স্বৈরশাসকের চেয়েও মারাত্মক একদলীয় শাসন চলছে দেশে। যৌথ বাহিনীকে ব্যবহার করা হচ্ছে জনগণের উপর গুলি চালানোর কাজে।
ইসলামী ছাত্রসমাজ
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসমাজ ঢাকা মহানগরীর বিক্ষোভ মিছিল ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ ইলিয়াছ আতহারী বলেছেন, যত বাধা দেয়া হোক না কেন, এদেশের ঈমানদারগণ হেফাজতের ঘোষিত কর্মসূচি সফল করার লক্ষ্যে দেশের সর্বস্তরের জনগণ জানবাজি রেখে শাপলা চত্বরের মহাসমাবেশ সফল করবে। হাতে তসবিহ ও জায়নামাজ নিয়ে আল্লামা আহমদ শফীর নির্দেশে ২৪ ডিসেম্বর রাজপথে শহিদী তামান্না নিয়ে নেমে আসবে।
গতকাল ইসলামী ছাত্রসমাজ ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে রাজধানীতে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ মিছিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন। সংগঠনের ঢাকা মহানগর সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন মহাসচিব সাইফুল ইসলাম, প্রচার সচিব মো. রাসলে হোসেন প্রমুখ।
তৃণমূল খেলাফত আন্দোলন
তৃণমূল খেলাফত আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি মাওলানা ফিরোজ আশরাফী হেফাজতে ইসলাম ঘোষিত ২৪ ডিসেম্বরের শাপলা চত্বরের মহাসমাবেশ সফল করতে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
- See more at: http://www.dailyinqilab.com/2013/12/23/150326.php#sthash.lR879ivO.dpuf
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন