বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর, ২০১৩


ফাঁসি ফাঁসি স্লোগানধারীরা ফরিদপুর ঘুরে আসুন: রনি 12 Dec, 2013 ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার দেয়া চিঠি/চিরকুট নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ার পর কিছু লোকের অশ্লীল আক্রমণের জবাব দিয়েছেন সরকারদলীয় সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি। বৃহস্পতিবার বেলা ২টা ১০ মিনিটের দিকে ফেসবুকে দেয়া তারা ‘অমানুষের পাশবিক নৃশংসতা এবং অশ্লীলতার ইতিবৃত্ত’ শীর্ষক স্ট্যাটাসটি পাঠকের জন্য তুলে ধরা হলো। এই শতাব্দীর সেরা পণ্ডিত শ্রী নিরোদ চন্দ্র চোধুরী বহু বছর আগে লিখেছিলেন, বাঙালি জীবনে রমনী নামের এক অকাট্য প্রামাণ্য দলিল। নিরোদ বাবু চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়েছেন যে- অবহমনে বাংলার গ্রাম-গঞ্জে নারী-পুরুষ কিভাবে অবাধ এবং নীতিহীন যৌনাচারে মেতে ওঠে এবং সমাজ সংসারকে ফাঁকি দিয়ে একের পর এক জারজ সন্তান পয়দা করে। প্রায় ষাঠ বছর হতে চললো- কিন্তু আজ অবাধ নিরোদ বাবুর বইকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কোনো বাঙালি লেখক কোনো বই রচনা করেননি। দেশ-বিদেশের সমাজ বিজ্ঞানী এবং মনো বিজ্ঞানীরা বাবা-মা’র অবৈধ সন্তানদের কতগুলো সাধারণ বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করেছেন। প্রথমত: তারা কথায় কথায় অশ্লীল বাক্য ব্যবহার করে যাকে আমরা সোজা বাংলায় বলি- অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ। এরা খুবই অধৈর্য্য প্রকৃতির এবং সন্দেহপ্রবণ হয়ে থাকে। কখনো কখনো তারা অতিমাত্রায় অত্যাচারী হয়ে ওঠে আবার একই ব্যক্তি প্রতিকূল পরিবেশে- নিজেকে ছোট করতে করতে পশুর পর্যায়ে নিয়ে যায়। তাদের বিবেক বলতে তেমন কিছু থাকে না। ফলে তাবৎ বিশ্বে অনাদীকাল থেকে বাবা-মা’র অবৈধ সন্তানরা সমাজ, রাষ্ট্র এমনকি পরিবার কর্তৃক পরিত্যক্ত হয়ে আসছে। আজ আমর হঠাৎ করেই এসব কথা মনে পড়লো একটি কারণে। গতকাল (বুধবার) ফেইসবুকে যুদ্ধাপরাধের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত কাদের মোল্লার অন্তিম অনুরোধ রাখতে গিয়ে আমি একটি স্ট্যাটাস দেই। এরপর থেকে কিছু অমানুষের অশ্লীল বাক্যবাণে ফেইসবুকের পাতা ভরে যেতে থাকে। ওদের পাশবিক অভিব্যক্তি কেবল তাদের বাবা-মা’র কর্মকেই স্মরণ করিয়ে দেয়। পৃথিবীতে মানুষ আসার পর থেকেই এক মানুষ অন্য মানুষের অন্তিম ইচ্ছার প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান দেখায়। মৃত্যুদণ্ডপ্রান্ত আসামিকে ফাঁসিতে ঝোলানোর আগে তার শেষ ইচ্ছা পূরণ করা হয়। পছন্দমতো খাবার পরিবেশন কিংবা নিকটতম আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাতের ব্যবস্থা করা হয়। আসামী যদি মুসলমান হয় সে ক্ষেত্রে মৌলভী ডেকে দোয়া-দরুদ পড়ানো হয়। কাদের মোল্লার অন্তিম মুহূর্তের একটি অছিয়ত পালন করে মানুষ হিসেবে আমি নিজের কর্তব্যটুকু পালন করেছি মাত্র। যে সব তরুণ বন্ধুরা ফাঁসি চাই ফাঁসি চাই বলে দাবি তুলছেন, তাদেরকে বলবো চলে যান ফরিদপুর জেলার সদরপুর থানার আমিরাবাদ গ্রামে। গ্রামের দীন-দরিদ্র ঘনা মোল্লার ঘরে কাদের মোল্লা কতসালে জন্ম গ্রহণ করেছিল সেই তথ্য নিয়ে কাজ শুরু করুন। তারপর যান- বাইশ রশি শিব সুন্দরী একাডেমিতে সেখানে কাদের মোল্লা প্রথমে ম্যাট্রিক পর্যন্ত পড়েন এবং পরে একই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেন। নিজের দারিদ্র্যতার জন্য তিনি এলাকার সম্ভ্রান্ত মুসলিম পীর ধলামিয়া সাহেবের বাড়ীতে লজিং থাকতেন। এই লজিং থাকার সময়কাল সম্পর্কে এলাকাবাসীর সাক্ষ্য নিন। ধলামীয়া পীর সাহেবের পরিবার- ব্রিটিশ আমল থেকে এলাকার অত্যন্ত সম্ভ্রান্ত এবং সম্মানিত পরিবার হিসেবে পরিচিত। পীর সাহেবের বড় ভাই আবুল হাসানাত ১৯৫৩ সালে পাকিস্তানের আইজি ছিলেন। বঙ্গবন্ধু আইজি সাহেবকে পিতার মতো শ্রদ্ধা করতেন। পীর সাহেবের পরিবার মহান মুক্তিযুদ্ধের সমর্থক ছিলেন এবং তার মেয়ের জামাই গাফফার ইঞ্জিনিয়ার ফরিদপুর জেলার মুক্তিযোদ্ধাদের কমান্ডো বাহিনীর প্রধান ছিলেন। এই গাফ্ফার ইঞ্জিনিয়ারের স্ত্রী ছিলেন কাদের মোল্লার ছাত্রী। ঢাকা প্রেসক্লাবে এসেও তার সর্ম্পকে খোঁজ নিতে পারেন। নির্মল সেন ও সন্তোষ গুপ্তের মতো সাংবাদিকরা যখন দেশের সংবাদিক সমাজকে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন, তখন কাদের মোল্লা ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি হিসেবে কিভাবে দুইবার নির্বাচিত হলেন? তার চাকরী জীবনে উদয়ন স্কুল কিংবা বিডিআর পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে গিয়েও খোঁজ নিতে পারেন। আমি যে তথ্যগুলো দিলাম- তা কিন্তু আমার নয়। প্রসিকিউশনে (ট্রাইব্যুনালে) আসামিপক্ষ উত্থাপন করেছিল। সরকার নিয়োজিত প্রসিকিউটররা একটু চেষ্টা করলেই এগুলোর সত্য-মিথ্যা যাচাই-বাছাই করতে পারতো। কিন্তু তা না করে কেবল ঘটনাস্থল মিরপুরকে কেন্দ্র করে- তথ্য উপাত্ত এবং সাক্ষী-প্রমাণ হাজির করায় সংক্ষুব্ধ পক্ষ তাদের আপত্তি উত্থাপন করার সুযোগ পাচ্ছে। সার্বিক পরিস্থিতিতে এটা আপনার জন্য বিবেকের দায় হয়ে দাড়িয়েছে যে- আপনি সবকিছু শুনবেন না কি কিছু কিছু শুনবেন এবং বাকিগুলো শুনবেনই না। আমি যখন স্ট্যাটাসটি প্রথম লিখেছিলাম, তখন ধরে নিয়েছিলাম রাত ১২ টা ১মিনিটে তা কার্যকর হবে। অন্যদিকে আজ যখন লিখছি তখন খবর এল কাদের মোল্লার রিভিউ আবেদন খারিজ হয়ে গেছে। ধারণা করা যায়, আজ রাতেই তার ফাঁসি কার্যকর হবে। এটা নিয়ে আমার কোনো মাথাব্যাথা বা দায়-দায়িত্ব নেই। আমার দায়িত্ব কেবল ততটুকুই যতটুকু আমি জানি এবং যতটুকু পর্যন্ত আমার ক্ষমতা কার্যকর। আল্লাহ পাক যাদেরকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছেন তারাই ভাল জানবেন কিংবা বলবেন- দুনিয়া এবং আখিরাতে। উৎসঃ আরটিএনএন Share on facebook Share on email Share on print 30

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন