মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৩
what a game it is ?
সর্বদলীয় সরকারে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন নেই?
19 Nov, 2013
‘নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকারের মন্ত্রিসভা’য় এখনো যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন মিলেনি। যুক্তরাষ্ট্রের ঢাকায় অবস্থিত দূতাবাস থেকে প্রকাশ্যে বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়নি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের গতিবিধি, রাজনৈতিক আচরণ, বিশেষ করে ঢাকায় নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ড্যান মজিনার রহস্যজনক কর্মকাণ্ডে এটা মহাজোটের নীতিনির্ধারকদের কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ‘সরিয়ে দেয়া’, মহাজোট সরকারে রাশিয়াপন্থী বামদের প্রাধান্য থাকা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘গুর্য়াতুমির’ কারণে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের মহাজোটের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক ভালো নয়।
সূত্র জানায়, ‘সর্বদলীয় সরকারের মন্ত্রিসভা’য় বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের জোটের প্রতিনিধিত্ব না থাকায় সদ্য শপথ নেয়া ‘সর্বদলীয় মন্ত্রিসভার’ প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন নেই। ‘আওয়ামী লীগের নির্বাচন পদ্ধতি’তে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না বলেও মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্রের ঢাকাস্থ দূতাবাসের কয়েক কর্মকর্তা। নির্বাচনে বিএনপিসহ ১৮ দলের জোটের অংশ নেয়ার বিষয়ে এখনো নিশ্চয়তা না থাকা, বিরোধী দলকে নির্বাচনের বাইরে রাখতে ক্ষমতাসীদের কৌশলের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন নেই সদ্য গঠিত ‘সর্বদলীয় সরকারের মন্ত্রিসভা’র প্রতি। এছাড়া বিএনপির সঙ্গে গত কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্ক ভালো, রাজনীতি পাড়ায় কথাটা প্রচলিত আছে।
সূত্রমতে, ক্ষমতাসীন মহাজোটের পক্ষ থেকে প্রকাশ্যে যুক্তরাষ্ট্রকে এক ধরনের ‘অগুরুত্বপূর্ণ দেশ’ হিসেবে বার্তা দেয়ার চেষ্টা করা হলেও ভেতরে সরকারের নীতিনির্ধারকরা দেশটির দৃষ্টিভঙ্গিকে বিবেচনায় না এনে পারছেন না। যুক্তরাষ্ট্র আগামী সংসদ নির্বাচনকে সমর্থন না করলে জাতিসংঘ, ইউরোপিয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর অবস্থান কী হবে, এ নিয়ে ক্ষমতাসীনরা চিন্তিত। তাই ‘সর্বদলীয় সরকারের মন্ত্রিসভা’র প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা চলছে।
সূত্রমতে, মহাজোটকে দেশ, বিদেশে বেকায়দায় ফেলতে চাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি ইউরোপিয় ইউনিয়নেও। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র এখন টার্গেট করেছে বাংলাদেশের গামের্ন্ট খাতকে। গার্মেন্ট খাতে অসন্তোষ বাঁধিয়ে বিদেশে বাংলাদেশের বাজার নষ্ট করতে চাচ্ছে। এতে যুক্তরাষ্ট্র সফল হলে ক্ষমতাসীন মহাজোট বেকায়দায় পড়বে। বেতন ভাতা বাড়ানোর পরও প্রতিদিন গামের্ন্টকর্মীদের অন্তোষ, বিক্ষোভ হচ্ছে এরই অংশ হিসেবে। বিদেশি একটি দেশের গোয়েন্দা সংস্থাও এতে যুক্তরাষ্ট্রকে সহায়তা করছে বলে সূত্র উল্লেখ করে। আজ মঙ্গলবারও পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভের কারণে ঢাকার সাভার, আশুলিয়া ও গাজীপুরে ১২০টির মতো পোশাক কারখানা বন্ধ ছিল।
তথ্যমতে, পোশাক কারখানাগুলোতে নিরাপদ কর্মসংস্থান আছে কী না, তা খতিয়ে দেখতে আমেরিকান ও ইউরোপিয় ব্র্যান্ডগুলো নিয়ে গঠিত দুটি জোট গতকাল সোমবার কলহে লিপ্ত হয়েছে। ইউরোপিয় কমিটির এক কর্মকর্তা গতকাল অভিযোগ করেন, বাংলাদেশের কয়েকশ’ কারখানার কর্মপরিবেশ শ্রমিকবান্ধব করতে আমেরিকান জোটটি কোনো ধরনের অর্থ খরচ না করে ইউরোপিয়দের কাঁধে ভর করে পার পেয়ে যেতে চাইছে। ‘দ্য নিউইয়র্ক টাইমস’র আজ মঙ্গলবারের এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে।
রানা প্লাজা ধসে এক হাজার ১৩৪ জন শ্রমিক নিহত, কয়েক হাজার শ্রমিক চিরতরে প্রতিবন্ধী হয়ে যাওয়ার ঘটনার পর আমেরিকা ও ইউরোপের ব্র্যান্ডগুলো কারখানা পরিস্থিতি পরিদর্শনের জন্য দুটি জোট গঠন করে। ‘অ্যাকর্ড অন ফায়ার অ্যান্ড বিল্ডিং সেফটি ইন বাংলাদেশ’ নামের ইউরোপিয় জোটে আছে ‘এইচ অ্যান্ড এম’, ‘কেয়ারফোর’সহ কয়েক শত ব্র্যান্ড ও বিশালাকৃতির খুচরা বিক্রেতা।
অন্যদিকে ‘ওয়ালমার্ট স্টোর্স’, ‘টার্গেট’ ও ‘গ্যাপ’র মতো ২৬টি বিশালাকৃতির খুচরা ব্র্যান্ড আছে আমেরিকান জোটে। উত্তর আমেরিকার কয়েকটি দেশের ব্র্যান্ডগুলো নিয়ে গঠিত এ জোটের নাম ‘অ্যালায়েন্স ফর বাংলাদেশ ওয়ার্কার সেফটি’। শর্তানুযায়ী আমেরিকান জোটটি কারখানাগুলোকে কোনো অর্থ সহায়তা, শর্তসাপেক্ষে ঋণ দিচ্ছে না।
হাসান শান্তনু, ঢাকা।
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন