বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০১৩

দেশজুড়ে গণবিস্ফোরণ : নিহত আরও ৯ : তফসিলের পর সহিংসতায় ১৮ জনের মৃত্যু, ২৫ অক্টোবর থেকে নিহত ৫২ : চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল, সিরাজগঞ্জ, খুলনা, সাতক্ষীরা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর রণক্ষেত্র স্টাফ রিপোর্টার 16 পরের সংবাদ» একতরফা নির্বাচন করার চেষ্টার প্রতিবাদে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধের দ্বিতীয় দিনও সারাদেশ ছিল বিস্ফোরণোন্মুখ। প্রথম দিনের অবরোধের ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয় দিনেও দেশজুড়ে গণঅভ্যুত্থান পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। নজিরবিহীন অবরোধে দ্বিতীয় দিনেও অচল ছিল সারা দেশ। রাজপথ, রেলপথ ছিল বিরোধী দলের নিয়ন্ত্রণে। তবে জনগণের এই বিদ্রোহকে দমন করার জন্য নিরাপত্তা বাহিনী বর্বরতা চালিয়েছে। এদিনও নিরাপত্তা বাহিনী বিরোধী দলের ওপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে। তাদের সহযোগীর ভূমিকায় ছিল আওয়ামী লীগ ক্যাডাররা। নিরাপত্তা বাহিনী ও আওয়ামী লীগের হামলায় সিরাজগঞ্জে বিএনপি-জামায়াতের ২ কর্মী এবং সাতক্ষীরায় জামায়াতের ১ কর্মী নিহত হয়েছে। এছাড়া অবরোধকারীদের হামলায় গাজীপুরে এক আওয়ামী লীগ নেতাসহ গতকাল ৯ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে গত সন্ধ্যায় যশোরে এক জামায়াত নেতাকে নিজ বাড়িতে গুলি করে খুন করেছে দুর্বৃত্তরা। নিহত আবদুল হাই সিদ্দিকী বুলবুল ছিলেন একজন মেরিন ইঞ্জিনিয়ার। জামায়াত নেতাদের দাবি, স্থানীয় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বুলবুলকে খুন করেছে। বুলবুল হত্যার প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার যশোরে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। এছাড়া চট্টগ্রামে এক টেম্পো চালক এবং মঙ্গলবার ঢাকায় ককটেল হামলায় আহত ব্যাংক কর্মচারী আজ ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন। তফসিল ঘোষণার পর অবরোধে এ পর্যন্ত সারাদেশে সহিংসতায় ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে বিএনপি জামায়াতের ৭ নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন। সংঘর্ষে এ সময় আওয়ামী লীগের ৩ নেতাকর্মীরও মৃত্যু হয়েছে। এর আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে গত ২৫ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ১৮ দলের চূড়ান্ত দফার আন্দোলনে গত ৬ নভেম্বর পর্যন্ত নিহত হয় অন্তত ৩৪ জন। ওই সময় নিরাপত্তা বাহিনী ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলায় বিএনপি ও জামায়াতের ২২ নেতাকর্মী নিহত হয়। ফলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বিরোধী দলের আন্দোলনে গত ২৫ অক্টোবর থেকে গতকাল পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫২ জনে। এদিকে গতকালের অবরোধে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল, সিরাজগঞ্জ, সাতক্ষীরা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। অবরোধের দ্বিতীয় দিনে বিভাগীয় শহরগুলোর মধ্যে গতকাল রাজশাহী ও খুলনায় বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায় পুলিশ। রাজশাহীতে সিটি মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলসহ ৫০ নেতাকর্মী আহত হয়। খুলনায় আহত হয় নগর বিএনপি সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু এমপিসহ শতাধিক নেতাকর্মী। এছাড়া বরিশালেও অবরোধকারীদের ওপর পুলিশ হামলা চালালে অনুরূপ সংঘর্ষে রণক্ষেত্র পরিণত হয় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের কাশিপুর এলাকা। সেখানে এমপি মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদসহ ১৮ দলের ৩২ নেতাকর্মী আহত হয়। অবরোধের দ্বিতীয় দিনে গতকাল সারাদেশে অন্তত ৩৫ জেলায় হামলা, সংঘর্ষ, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে পুলিশ ও সাংবাদিকসহ সাত শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়। আহতদের মধ্যে অন্তত ১৪ পুলিশ ও তিন সাংবাদিক রয়েছেন। এদিকে গতকাল রেল যোগাযোগ ছিল প্রায় বন্ধ। অবরোধকারীরা গতকাল ভোরে জয়পুরহাটে রেললাইন উপড়ে ফেলায় চার ঘণ্টা রেল যোগাযোগ ব্যাহত হয়। সিরাজগঞ্জে গভীর রাতে রেললাইন কেটে ফেলায় সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস আন্তঃনগর ট্রেনের তিনটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এখনও সেখানে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়নি। সকালে যশোরের রূপদিয়া স্টেশনের কাছে রেললাইন উপড়ে আগুন দিয়েছে বিএনপি-জামায়াতের কর্মীরা। চাঁদপুরে রেললাইনে আগুন দিয়েছে অবরোধকারীরা। এদিকে আগের রাতে গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুরে লাইনচ্যুত অগ্নিবীণা এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন সরানো গেলেও বগি উদ্ধার শেষ না হওয়ায় ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। সিরাজগঞ্জে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে বিএনপি-জামায়াতের ২ জন নিহত সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে বিএনপি ও জামায়াত নেতাকর্মীদের ওপর আওয়ামী লীগ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর যৌথ হামলা চালাকালে পুলিশের নির্বিচার গুলিতে আবদুল জলিল (৫৫) নামে এক জামায়াত কর্মী ও মাসুম বিল্লাহ (২৮) নামে এক ছাত্রদল কর্মী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় তিনজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত আরও অর্ধশত আহত হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল বেলা ১১টার দিকে বেলকুচির কল্যাণপুর থেকে জামায়াত ও বিএনপি নেতা কর্মীরা প্রায় আট কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে মুকুন্দগাতী বাজারে এসে অবরোধের পক্ষে অবস্থান নেয়। জামায়াত-বিএনপির মিছিলটি মুকন্দগাতি বাজার এলাকার পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের কাছে আসা মাত্র আগে থেকেই অবস্থান নেয়া পুলিশ মিছিলটিকে ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়তে থাকে। একই সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও ওই মিছিলের ওপর গুলি চালায়। এ সময় র্যাব ও বিজিবি ঘটনাস্থলে এসে পুলিশের সঙ্গে যৌথভাবে টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও গুলিবর্ষণ করে। এ সময় মাসুম বিল্লাহ ও আবদুল জলিল গুলিতে নিহত হন। আহত হয় ২৫ জন। নিহতদের মৃতদেহ তাদের পরিবারের সদস্যরা নিয়ে গেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শী জামায়াত ও বিএনপি নেতারা নিশ্চিত করেছেন। আওয়ামী লীগের পক্ষে দাবি করা হয়েছে, জামায়াত বিএনপির হামলায় তাদের অন্তত ২৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। সাতক্ষীরায় গণবিস্ফোরণ, পুলিশের গুলিতে জামায়াত কর্মী নিহত, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতিসহ গ্রেফতার ১১ সাতক্ষীরায় পুলিশ ও গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছে। বুধবার ভোররাতে সদর উপজেলার আগরদাড়ি ইউনিয়নের আবাদের হাটখোলায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত শামসুর রহমান (৩৫) শিয়ালডাঙ্গা গ্রামের আবদুল মাজেদের ছেলে। জানা যায়, বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ধরতে পুলিশ মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে জামায়াত নিয়ন্ত্রিত সদরের আগরদাড়ি মাদরাসা এলাকায় অভিযান চালায়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে শত শত গ্রামবাসী সড়কে নেমে পড়ে। তারা সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে বিক্ষোভ করে। এ অভিযানে জনগণের কাছে পুলিশ ৪ ঘণ্টা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। মঙ্গলবার রাতে খুলনা পুলিশের ডিআইজি মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে র্যাব ও বিজিবির সহায়তায় এ অভিযান চালানো হয়। পুলিশ গ্রামবাসীকে লক্ষ্য করে রাবার বুলেট ও এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকে। এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে গ্রামবাসীও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পুলিশের গুলিতে সড়কে দাঁড়িয়ে থাকা শামসুর রহমান নিহত হয়। এ সময় হাজারো গ্রামবাসী সড়কে বসে পড়ে। সাতক্ষীরা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে অবরুদ্ধ পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে। ভোর ৫টার দিকে পুলিশ জনতার ব্যারিকেড ভেঙে অবরুদ্ধ দশা থেকে মুক্ত হয়। যৌথবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের এক পর্যায়ে জামায়াত-শিবিরক র্মীরা সদর উপজেলা এলাকার আবাদেরহাট বাজারে স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মী কার্তিক সাধু, নূর ইসলাম, শাহ আলমের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান; তাপস আচার্য এবং গোপাল হালদারসহ অন্তত পাঁচজনের বাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাংচুর চালিয়ে আগুন দেয়। সাতক্ষীরা জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আবদুল খালেক মণ্ডল সাংবাদিকদের জানান, ‘যৌথবাহিনীর প্রায় এক হাজার সদস্য ৩৩টি গাড়ি নিয়ে এলাকায় আসে এবং নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালায়। এ সময় এলাকাবাসী মাইকিং করলে লোকজন তাদের অবরুদ্ধ করে ফেলে। সংঘর্ষের মধ্যে পুলিশের গুলিতে শামছুর রহমান নামে আমাদের এক কর্মী মারা গেছে।’ সদর থানার ওসি (তদন্ত) নাসির উদ্দিন বলেন, এ ঘটনায় যৌথবাহিনীর কোনো সদস্য হতাহত হয়নি। সাতক্ষীরা সদর জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আবদুল গফফার জানান, গত ৫ বছরের মধ্যে আগরদাড়িতে এটি পুলিশের সবচেয়ে বড় ধরনের অভিযান। পুলিশের গুলিতে নিহত শামসুর রহমান (৩৫) জামায়াতের কর্মী। এদিকে সাতক্ষীরা জেলা বিএনপি সহ-সভাপতি সদরের আলিপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুর রউফসহ সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ১১ জামায়াত, শিবির ও নিরীহ গ্রামবাসীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদিকে গতকাল ১৮ দলের ৪৮ ঘণ্টা অবরোধের দ্বিতীয় দিনে সকাল থেকে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা শহরের কদমতলা, রামচন্দ্রপুর মোড়, বাকাল ব্রিজ, চালতেতলা মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় সড়ক অবরোধ করে রাখে। কলারোয়ায় অবরোধের গাছচাপায় মহিলার মৃত্যু সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার গোপীনাথপুরে রাস্তা অবরোধ করে রাখা গাছ সরাতে গিয়ে গাছচাপায় এক মহিলা নিহত হয়েছে। গতকাল বেলা ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মহিলা গোপীনাথপুরের হারুনার রশিদের স্ত্রী আম্বিয়া খাতুন (২৪)। প্রত্যক্ষদর্শী ও কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ দারা খান জানান, রাতে বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা একটি গাছ অর্ধেক কেটে রাস্তার ওপর ফেলে সড়ক অবরোধ করে। বেলা ১২টার দিকে আম্বিয়া গাছের ডাল-পালা কাটার জন্য সেখানে গেলে বাকি অর্ধেক গাছের নিচে সে চাপা পড়ে। এ সময় ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। কালীগঞ্জ রণক্ষেত্র, সংঘর্ষে আওয়ামী লীগ নেতা নিহত বিএনপির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ.স.ম. হান্নান শাহকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে আয়োজিত হরতালে গতকাল কালীগঞ্জ ছিল রণক্ষেত্র। এ সময় দফায় দফায় সংঘর্ষ, ককটেল নিক্ষেপ, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় হরতাল সমর্থকরা আওয়ামী লীগ নেতা ও জামালপুর ইউপি সদস্য কামাল হোসেন শেখকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। সংঘর্ষের ঘটনায় কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গতকাল সকালে উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের দোলান বাজারে ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা কালীগঞ্জ-কাপাসিয়া সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে ও গাছের গুঁড়ি ফেলে রাস্তা অবরোধ করে। এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীরা রাস্তায় গাড়ি ভাংচুর করে। দুপুর দেড়টার দিকে আওয়ামী লীগ সমর্থকরা মো. কামাল মেম্বারের নেতৃত্বে দোলান বাজার থেকে একটি হরতালবিরোধী মিছিল নিয়ে চুপাইরের দিকে অগ্রসর হলে দীঘিরপাড়ে হরতাল সমর্থকরা পেছন দিক থেকে তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে কামাল মেম্বার আহত হন। এছাড়াও ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক জুনায়েদ হোসেনসহ (২৪) উভয়পক্ষের ১০ জন আহত হয়। কামাল মেম্বারকে উদ্ধার করে চিকিত্সার জন্য কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডা. মো. মাসুদ রানা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। কামাল মেম্বারের মৃত্যুর সংবাদ দ্রুত এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা দোলান বাজারের প্রায় ১০টি দোকানে অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে দেয় এবং প্রায় ৪০টি দোকানে ভাংচুর করে। অগ্নিসংযোগের খবর পেয়ে নরসিংদীর পলাশ ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এদিকে ঘটনার পরপরই কালীগঞ্জ থানা পুলিশের একটি দল সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার শাহরিয়ার আল মামুনের নেতৃত্বে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে হরতাল সমর্থকরা বাহাদুরশাদী ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক সুব্রত পালের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। অন্যদিকে দুপুর পৌনে ২টার দিকে উপজেলার ব্যস্ততম স্থান সোনালী ব্যাংক মোড়ের মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের এটিএম বুথের সামনে অজ্ঞাত ৩ ব্যক্তি একটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যায়। এর ৫ মিনিট পর ৫০ গজ দূরে পুরাতন ব্যাংকের মোড়ে আরও একটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে। এ সময় ভয়ে পথচারীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে এবং ব্যবসায়ীরা দোকানপাট বন্ধ করে দেন। উপজেলার সর্বত্র থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। যশোরে জামায়াত নেতাকে বাড়িতে ঢুকে গুলি করে হত্যা গতকাল সন্ধ্যায় যশোরে এক জামায়াত নেতাকে নিজ বাড়িতে গুলি করে খুন করেছে দুর্বৃত্তরা। নিহত আবদুল হাই সিদ্দিকী বুলবুল ছিলেন একজন মেরিন ইঞ্জিনিয়ার। কারা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত, সে সম্বন্ধে তাত্ক্ষণিকভাবে জানাতে পারেনি পুলিশ। তবে জামায়াত নেতাদের দাবি, স্থানীয় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বুলবুলকে খুন করেছে। বুলবুল হত্যার প্রতিবাদে আজ যশোরে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। এলাকাবাসী জানায়, রাত সোয়া ৭টার দিকে বুলবুল তার বাড়িতে অবস্থিত কম্পিউটার কোচিং সেন্টারে অবস্থান করছিলেন। এ সময় ৩-৪টি মোটরসাইকেলযোগে কয়েক দুর্বৃত্ত এসে খুব কাছ থেকে বুলবুলের মাথায় গুলি করে পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান বুলবুল। খুনিরা হেলমেট পরিহিত থাকায় তাদের কেউ চিনতে পারেনি। খুনিরা পালিয়ে গেলে এলাকাবাসী বুলবুলকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসে। কিন্তু হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই তিনি মারা যান। সাতকানিয়ায় মাইক্রো উল্টে যুবক নিহত চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় অবরোধকারীদের ধাওয়া খেয়ে মাইক্রোবাস উল্টে এক যুবক নিহত হয়েছেন। তার নাম মো. শাহেদ (২০)। গতরাত ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়কের সাতকানিয়া উপজেলার হাসমতের দোকান এলাকায় অবরোধকারীরা মাইক্রোবাসটিকে ধাওয়া করে। এটি দ্রুতবেগে চলার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। এ সময় গুরুতর আহত শাহেদকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিত্সকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। শাহেদ সাতকানিয়া উপজেলার কেওচিয়া ইউনিয়নের খন্দকারপাড়া গ্রামের বদিউল আলমের ছেলে। চট্টগ্রামে টেম্পো চালক নিহত নির্বাচন কমিশন ঘোষিত কালো তফসিলের বিরুদ্ধে ১৮ দলীয় জোটের অবরোধের দ্বিতীয় দিনে গতকাল চট্টগ্রামে পুলিশ-বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ছিল বেপরোয়া। নগরী ও জেলার বিভিন্ন এলাকায় অবরোধকারী ১৮ দলের নেতাকর্মীদের ওপর নির্বিচারে রাবার বুলেট, টিয়ারশেলের সঙ্গে মুহুর্মুহু গুলি চালিয়েছে পুলিশ। উপর্যুপরি গুলিবর্ষণে অন্তত ২০ নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৭০ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যও রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যুদ্ধংদেহী অবস্থানের পরও রাজপথ দখলে রাখে ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা। দিনভর চলতে থাকা সংঘর্ষ এক পর্যায়ে খণ্ডযুদ্ধে পরিণত হয়। সংঘর্ষের সময় নগরীর নিমতলা ট্রাক টার্মিনাল এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় শতাধিক যানবাহনে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। সংঘর্ষের সময় অলঙ্কার এলাকায় পুলিশের ৪টি মোটরসাইকেলে আগুন দেয়া হয়। জেলার পটিয়ায় পুলিশের সঙ্গে অবরোধ সমর্থকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সময় পালাতে গিয়ে টেম্পো উল্টে মারা যান টেম্পো চালক এরশাদ আলী। ঢাকায় ককটেলে আহত ব্যাংক কর্মচারীর মৃত্যু রাজধানীর খিলগাঁও তিলপাপাড়ায় অবরোধকারীদের ছোড়া ককটেলে আহত এক নারী ব্যাংক কর্মচারী মারা গেছেন। আনোয়ারা বেগম (৪৫) নামের ওই নারী ন্যাশনাল ব্যাংকের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী ছিলেন। গতকাল ভোর ৪টার দিকে হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় আনোয়ারার মৃত্যু হয় বলে নিশ্চিত করেছেন তার স্বজনরা। বিরোধী দলের ৪৮ ঘণ্টা অবরোধের প্রথম দিন মঙ্গলবার বিকালে অফিস থেকে বাসায় ফেরার পথে ককটেল বিস্ফোরণে আহত হন আনোয়ারা। তিনি মাথায় গুরুতর আঘাত পান। এরপর পথচারীরা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। ৩৫ জেলায় সংঘর্ষ সহিংসতা, ১৪ পুলিশ ও তিন সাংবাদিকসহ আহত সাত শতাধিক অবরোধের প্রথম দিনের মতো গতকালও অনুরূপ হামলা, সংঘর্ষ, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে অন্তত ৩৫টি জেলায়। চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেটে, খুলনা, বরিশাল, পিরোজপুর, গাইবান্ধা, নারায়ণগঞ্জ, নাটোর, বগুড়া, নওগাঁ, লক্ষ্মীপুর, কুড়িগ্রাম, পটুয়াখালী, নীলফামারী, কুমিল্লা, হবিগঞ্জ, গাজীপুর, ঝিনাইদহ, জামালপুর, চাঁদপুর, দিনাজপুর, কক্সবাজার, চুয়াডাঙ্গা, সাতক্ষীরা, ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া, ফেনী, চাঁপাইনবাবাগঞ্জ, নোয়াখালী, শরীয়তপুর, নরসিংদী, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ ও যশোরসহ আরও কয়েকটি জেলায় এসব সংঘর্ষ-সহিংস ঘটনা ঘটে। এসব জেলার বিভিন্ন জায়াগায় বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের প্রতি বিভিন্ন স্থানে নির্বিচারে গুলি চালায় পুলিশ। অনেক স্থানে যোগ দেয় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা। সাধারণ জনতাকে নিয়ে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা প্রতিরোধ গড়ে তুললে বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক সংঘর্ষ বাধে। এতে পুলিশ ও সাংবাদিকসহ সাত শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন। আহতদের মধ্যে অন্তত ১৪ পুলিশ ও তিন সাংবাদিক রয়েছেন। বিভাগীয় শহরগুলোর মধ্যে গতকাল রাজশাহী ও খুলনায় বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায় পুলিশ। রাজশাহীতে সিটি মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলসহ ৫০ নেতাকর্মী আহত হন। খুলনায় আহত হন নগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু এমপিসহ শতাধিক নেতাকর্মী। বিভাগীয় শহরগুলোর বাইরে ব্যাপক সংঘর্ষ-সহিংস ঘটনা ঘটে সিরাজগঞ্জ, ঝিনাইদহ, নাটোর, নরসিংদী ও নারায়ণগঞ্জে। এর মধ্যে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি ও পৌর এলাকার একডালায় পুলিশ-আওয়ামী লীগের সঙ্গে অবরোধকারীদের সংঘর্ষে অন্তত ৫০ জন আহত হয়। ঝিনাইদহের খালিশপুরে জামায়াত-শিবিরের মিছিলে গুলি চালায় পুলিশ। এ সময় সংঘর্ষ হলে তিন আওয়ামী লীগ-যুবলীগ নেতাসহ ১০ জন আহত হন। নাটোরে বিএনপি-জামায়াতের ৩ কর্মীকে মারধর করায় ১৮ দলের কর্মীরা আওয়ামী লীগ-যুবলীগের ৩-৪টি বাড়িতে ভাংচুর চালায়। এ সময় সংঘর্ষ বাধলে ১৫ জন আহত হয়। এর আগে বড়াইগ্রামের রাজাকার মোড়ে আওয়ামী লীগ-বিএনপি সংঘর্ষ হলে ২৫ জন আহত হয়। নরসিংদীতে জেলা বিএনিপর মিছিলে হামলা চালায় পুলিশ। এ সময় সংঘর্ষ বাধলে আহত হন পুলিশের কোর্ট ইন্সপেক্টরসহ ১০ নেতাকর্মী। এছাড়া নারায়ণগঞ্জে বিভিন্ন স্থানে অবরোধকারীদের পুলিশ গুলি চালালে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এতে শতাধিক আহত হয়। সোনারগাঁয়ে পুলিশের গাড়িতে আগুন দেয় অবরোধকারীরা। গুলিবিদ্ধ ১০ জনসহ অর্ধশতাধিক আহত হয়। রূপগঞ্জের ভুলতায় যুবদল-ছাত্রদলের ওপর আওয়ামী লীগ-পুলিশ গুলি চালালে ৮ জন গুলিবিদ্ধসহ ৩০ জন আহত হয়। সিদ্ধিরগঞ্জেও পুলিশের লাঠিচার্জে ৫-৬ নেতাকর্মী আহত হন। সেখানে অবরোধকারীদের ছোড়া ইটের আঘাতে আহত হন এক সাংবাদিক। সিরাজগঞ্জে বিএনপি-আওয়ামী লীগ সংঘর্ষ আহত ৫০ সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, অবরোধের দ্বিতীয় দিনে সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে দফায় দফায় সংঘর্ষে অন্তত অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে বেলকুচি উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক গোলাম কিবরিয়া ও যুবদল নেতা রাসেল আহমেদের অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে। সকালে উল্লাপাড়া উপজেলার বোয়ালিয়া বাজারে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষে ফরিদুল, রকি, আলম, রফিকসহ অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে ১০-১৫টি দোকানে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় অর্ধশতাধিক টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। অপর দিকে সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলায় জামায়াত-বিএনপি অবরোধের সমর্থনে দুপুর ১২টার দিকে মিছিল বের করে। মিছিলটি উপজেলার মুকন্দগাতী গার্লস স্কুলের সামনে পৌঁছলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালালে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও পুলিশের টিয়ারশেল এবং রাবার বুলেটে উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক গোলাম কিবরিয়া, যুবদল নেতা রাসেল আহমেদসহ প্রায় ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হন। এদিকে সিরাজগঞ্জ পৌর এলাকার একডালা মহল্লায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে দুখু মিয়া, সনি, বাদশা, জাহাঙ্গীর, রফিক, শওকতসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে ৫টি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করা হয়েছে। পুলিশ প্রায় ২০ রাউন্ড টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অবরোধের সমর্থনে সকালে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা সিরাজগঞ্জ-রায়গঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের তেকুপিতে রাস্তার ওপর গাছের গুঁড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করে। এ সময় তারা সড়কের ওপর আগুন জ্বালিয়ে দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের ধাওয়া দেয়। ঝিনাইদহে জামায়াত-যুবলীগ সংঘর্ষে আহত ১০ কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি জানান, ঝিনাইদহে অবরোধের দ্বিতীয় দিনে সদর উপজেলার বিষয়খালী বাজারে ১৫টি টেম্পো ও দুটি ট্রাক ভাংচুর করেছে পিকেটাররা। মহেশপুর উপজেলার খালিশপুরে জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে যুবলীগের সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়েছে। এছাড়া শৈলকূপা উপজেলার শেখপাড়া বাজারে খুলনা-কুষ্টিয়া মহাসড়ক অবরোধ করে শিবির নেতাকর্মীরা। গতকাল বুধবার সকাল থেকে ঝিনাইদহ-কুষ্টিয়া সড়কের শেখপাড়া, গাড়াগঞ্জ, মহেশপুর উপজেলার খালিশপুর, দারিয়াপুর বাজার, হুদার মোড় এবং কোটচাঁদপুর উপজেলা শহরের জেলা পরিষদ কমিউনিটি সেন্টার থেকে শুরু করে বলুহর বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত রাস্তায় রাস্তায় গাছ ফেলে আগুন জ্বালিয়ে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা সড়ক অবরোধ করে রাখে। এছাড়া ঝিনাইদহ-মাগুরা সড়কের হাটগোপালপুর, গোয়ালপাড়া, কালীগঞ্জ-চুয়াডাঙ্গা সড়কের লাউতলা, ঘিঘাটি, ঝিনাইদহ-যশোর সড়কের মোবারকগঞ্জ সুগার মিল গেট ও খয়েরতলা এলাকায় গাছের গুঁড়ি ফেলে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের পিকেটাররা। ভোর থেকে কর্মীরা এসব সড়কে অবস্থান নেয়। এরপর বিক্ষোভ প্রদর্শনসহ সড়কে গাছ ফেলে অবরোধ করে। পুলিশ টহল থাকলেও মহেশপুরসহ ছয় উপজেলাতেই মারমুখী ভূমিকায় দেখা গেছে অবরোধ সমর্থকদের। জেলার সড়ক-মহাসড়কগুলোতে কোনো রকমের ইঞ্জিনচালিত যানবাহন ছেড়ে যায়নি। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান জানান, জেলার মহেশপুর উপজেলার খালিশপুর বাজারে কালীগঞ্জ-চুয়াডাঙ্গা সড়কে ভোর থেকে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা অবরোধ কর্মসূচিতে বাধা দেয়ার জন্য অবস্থান নেয়। সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ১৮ দলের নেতাকর্মীরা তাদের ধাওয়া দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অবরোধ তুলে দেয়ার জন্য তাদের ধাওয়া করলে তারাও পাল্টা ধাওয়া দেয়। এ সময় পুলিশ ৫ রাউন্ড গুলিবর্ষণ ও ৩ রাউন্ড টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। অবরোধকারীদের হামলায় আওয়ামী লীগ নেতা শন্টু চৌধুরী, এসবিকে ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি শাহজাহান ও যুবলীগ নেতা আব্দুল জলিল বিসুসহ ১০ জন আহত হন। এছাড়া একটি মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ ও ২টি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে শিবির কর্মীরা। সকাল ১১টার দিকে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি পৌঁছলে অবরোধকারীরা পিছু হটে যায়। বড়াইগ্রামে বিএনপি-জামায়াত ও আ.লীগের সংঘর্ষে আহত ২৫ বড়াইগ্রাম (নাটোর) প্রতিনিধি জানান, অবরোধের দ্বিতীয় দিনে জেলার বড়াইগ্রামের রাজাকার মোড়ে বিএনপি-জামায়াত ও আওয়ামী লীগের দফায় দফায় সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে। এর আগে গত রাতে উভয় পক্ষের সংঘর্ষে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকসহ উভয় পক্ষের ১০ নেতাকর্মী আহত হন। আহতদের বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে চিকিত্সাধীন বিএনপি-জামায়াত কর্মীদের আটক করতে পুলিশ হাসপাতালে হানা দিলে ১৮ দলের কর্মীরা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ ৩/-৪ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে। পরে হাসপাতাল থেকে ৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার অবরোধের সমর্থনে সকাল থেকেই বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের বড়াইগ্রামের রাজাকার মোড়ে অবস্থান নেয় বিএনপি-জামায়াতের কর্মীরা। সকাল ১১টার দিকে রাজাকার মোড়ে যাওয়ার পথে গত মঙ্গলবারের সংঘর্ষের জেরে জামায়াত-বিএনপির ৩ কর্মীকে মারপিট করে আওয়ামী লীগ কর্মীরা। এ খবর পেয়ে ১৮ দলের বিক্ষুব্ধ কর্মীরা পুরনো রাজাকার মোড়ে বড়াইগ্রাম কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রবিউল করিমসহ ৫ আওয়ামী লীগ কর্মীর বাড়ি ভাংচুর করে। এ সময় আওয়ামী লীগ কর্মীদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে ৯ জনকে বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এদিকে এ ঘটনার পর ১৮ দলের কর্মীদের ধরতে বড়াইগ্রাম সার্কেল এএসপি মাহফুজ্জামান আশরাফের নেতৃত্বে হাসপাতালে হানা দেয় পুলিশ। এ সময় বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে। পুলিশ এ সময় ৩-৪ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। পরে হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে বড়াইগ্রাম পৌর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আবু বকর সিদ্দিক প্রধানসহ ৭ নেতাকর্মীকে আটক করে। আটক হওয়া অন্যরা হলো শামিম আহম্মেদ (২৫), মনির (২৫), সাইফুল (২৮), শামিম হোসেন (২৮) , রবিউল (৩০) ও আবু হানিফ (৪০)। তবে আটক হওয়াদের অভিযোগ, চিকিত্সারত অবস্থায় তাদের আটক করা হয়েছে। গতকাল বুধবার হাসপাতালে ভর্তিকৃতরা হলো আল আমিন (১৮), ইয়ারুল (২৪), ফিরোজ আহম্মেদ (৩২), হযরত আলী (২৬), মোরসালিন (১৯), হাজী সহির উদ্দিন (৫৬) ও খোরশেদ আলী (৬০)। তার আগে মঙ্গলবার রাতে রাজাকার মোড়ে আওয়ামী লীগ কর্মীরা মিছিলের সময় খালেদা জিয়া, তারেক জিয়া ও দুলুসহ বিএনপি নেতাদের বিলবোর্ড ভাঙলে বিএনপি কর্মীরা এর প্রতিবাদ জানায়। এ সময় উভয়পক্ষের মধ্যে সংর্ঘষ শুরু হলে বড়াইগ্রাম থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল বারী রফিক, বিএনপি কর্মী খোরশেদ, রুপচাদ, বেলাল, রফিক, আনিসুর, হানিফ ও আশরাফসহ ১০ জন আহত হয়। বর্তমানে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ ব্যাপারে এএসপি সার্কেল মাহফুজুজ্জামান আশরাফ বলেন, আটককৃতরা হাসপাতালে গিয়ে আওয়ামী লীগের আহত কর্মীদের ওপর হামলা করবে—এমন তথ্যের ভিত্তিতে তাদের আটক করা হয়েছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে নিয়মিত আইনে মামলা করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এছাড়া ৪৮ ঘণ্টা অবরোধের দ্বিতীয় দিনের শুরুতে ভোর থেকেই মাঠে নেমে আসে ১৮ দলের কর্মীরা। আহম্মেদপুর বাসস্ট্যান্ডে টায়ারে আগুন দিয়ে ও কাঠের গুঁড়ি ফেলে নাটোর-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে পিকেটাররা। উপজেলা ১৮ দলের আহবায়ক সাবেক এমপি অধ্যক্ষ একরামুল আলমের নেতৃত্বে বনপাড়া বাজারে মহাসড়ক অবরোধ করা হয়। এছাড়া ভোর থেকেই বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের রাজ্জাক মোড়, নাটোর-পাবনা মহাসড়কের ধানাইদহ, কদিমচিলান, দাঁইড়পাড়ায় অবরোধ করে ১৮ দল। র্যাব, বিজিবি ও পুলিশি টহল অব্যাহত রয়েছে। শহরে দোকানপাট খোলা থাকলেও জনসমাগম কম। নরসিংদীতে পুলিশের লাঠিচার্জ, ৫ পুলিশসহ আহত ১০ নরসিংদী প্রতিনিধি জানান, গতকাল ভোরে নরসিংদীর মনোহরদীতে ট্রাকে আগুন দিয়েছে অবরোধকারীরা। সকাল ১০টায় জেলা বিএনপির সভাপতি খায়রুল কবির খোকনের নেতৃত্বে চিনিশপুরের ইউসিবি ব্যাংকের সামনে ঢাকা সিলেট মহাসড়কে অবরোধ চলাকালে পুলিশ বেধড়ক লাঠিচার্জ করে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে অবরোধকারীদের সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে পুলিশের কোর্ট ইন্সপেক্টর আবুল কাইয়ুম সহ বিএনপির ১০ নেতাকর্মী আহত হয়। পরে পুলিশ বিএনপির ৫ নেতাকর্মীকে আটক করে। এদিকে জেলার শিবপুর, সদর উপজেলার মাধবদী ও পাঁচদোনায় অবরোধের দ্বিতীয় দিনে সকাল থেকেই অবরোধকারীরা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। এছাড়া পলাশে লাঠি মিছিল করেছে উপজেলা ছাত্রদল। পুলিশ জানায়, অবরোধকারীদের ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও পুলিশের ওপর হামলার দায়ে মনোহরদী ও সদর থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। সোনারগাঁয়ে পুলিশের গাড়িতে আগুন ১০ গুলিবিদ্ধসহ আহত অর্ধশতাধিক সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, ১৮ দলের ডাকা টানা ৪৮ ঘণ্টা অবরোধের দ্বিতীয় দিনে গতকাল বুধবার ভোরে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মেঘনা টোলপ্লাজা, মোগরাপাড়া চৌরাস্তা ও কাঁচপুর চাঁদমহল এলাকায় বিএনপি, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল পৃথকভাবে টায়ারে অগ্নিসংযোগ, মহাসড়ক অবরোধ করে। এ সময় ককটেলের বিস্ফোরণ ও পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে ১০ জন গুলিবিদ্ধসহ বিএনপির অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়। এ সময় পুলিশ মেঘনা এলাকা থেকে বিএনপির ৪ নেতাকর্মীকে আটক করে। সোনারগাঁ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আজহারুল ইসলাম মান্নানের নেতৃত্বে কয়েকশ’ নেতাকর্মী টায়ার জ্বালিয়ে ১ ঘণ্টা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। এ সময় নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মেঘনা টোলপ্লাজা এলাকায় টায়ার জ্বালিয়ে, মহাসড়কে পেট্রোল ঢেলে অগ্নিসংযোগ ও যান চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে। এ সময় অবরোধকারীরা ৮/১০টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করে। এ সময় পুলিশ তাদের বাধা দিলে দফায় দফায় সংঘর্ষে ১০ জন গুলিবিদ্ধ ও অর্ধশতাধিক বিএনপি নেতাকর্মী আহত হয়েছে। উত্তেজিত নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়। এ সময় উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তায় আফিয়া পেট্রোল পাম্পের সামনে বিএনপির কর্মীরা একটি পুলিশ ভ্যানে আগুন দেয়। অবরোধকারীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ শতাধিক রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। একপর্যায়ে টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও গুলিবর্ষণের কারণে নেতাকর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে। এ সময় পুলিশের গুলিতে থানা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রউফ, যুবদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুম, পৌর শ্রমিক দলের সভাপতি আবদুর রাহীম, থানা ছাত্রদল নেতা খায়রুল ইসলাম সজীব, যুবদল নেতা জামাল, সোহেল, জাসাস নেতা আবুল হাসেম রতন, সানাউল্লাহ সানু, সুজন, বাবুল, মোক্তার, শাহ আলী, তানভীর, পারভেজসহ ১০ জন গুলিবিদ্ধ হয় এবং অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে। আহতদের স্থানীয় হাসপাতাল ও বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে এ ঘটনায় পুলিশ মেঘনা টোলপ্লাজা, নিউ টাউন ও বেপারী মার্কেটে অভিযান চালায়। এ সময় পুলিশ খোকন, ওমর ফারুক, তবারক ও শরিফ নামে ৪ জনকে গ্রেফতার করে। মেঘনা এলাকায় পুলিশের রায়ট কার ও বিজিবি মোতায়েন রয়েছে। সোনারগাঁ থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) আতিকুর রহমান খান জানান, বর্তমান পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও জানমালের রক্ষার্থে পুলিশ ফাঁকা গুলিবর্ষণ করেছে। এলাকায় ৪ প্লাটুন পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন রয়েছে। রূপগঞ্জে ৮ গুলিবিদ্ধসহ আহত ৩০ রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতা গাউছিয়া মার্কেট এলাকায় গতকাল বুধবার যুবদল, ছাত্রদল-পুলিশ ও আওয়ামী লীগের ত্রিমুখী সংঘর্ষে ৮ জন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছে ৩০ জন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৩ শতাধিক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এ সময় যুবদলের ২০ কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। যুবদলের কেন্দ্রীয় নেতা মুস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়া দিপু ও নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আনোয়ার সাদাত সায়েম সমর্থকরা রূপগঞ্জের ভুলতা গাউছিয়া মার্কেট এলাকায় টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও ঢাকা বাইপাস সড়ক অবরোধ করে। এ সময় অবরোধকারীরা গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের অফিস ভাংচুর করে ভুলতা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। পরে আওয়ামী লীগের কর্মীরা মুস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়া দিপু মালিকানাধীন গাউছিয়া মার্কেটের ২৬টি দোকান ভাংচুর করে। ৪টি গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে আরও ৫টি গাড়ি ভাংচুর করা হয়। ভুলতা-মুড়াপাড়া সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে ও আগুন দিয়ে সড়ক অবরোধ করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৩ শতাধিক রাউন্ড টিয়ারশেল ও শটগানের গুলি ছোড়ে। এতে নাজমুল, নয়ন, মাসুম, বাপ্পী, মুন্না, আল আমিন, বাদশা, সিয়াম গুলিবিদ্ধ ও যুবদলের দেলোয়ার হোসেন, ফটিক মিয়া, রাশিদুল হক, নুরবক্স, বাসেদ দেওয়ান, আনোয়ার, সালামত উল্লাহ, মিলন, সালাউদ্দিন, আলম, ছাত্রদলের বাদল, রাজিব, খলিল, মনির, আমজাদ, মোফাজ্জল, নবী হোসেনসহ ৩০ জন আহত হয়। সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশ আকতার, লিয়ন, নজরুল, জাকির, পারভেজ, শরীফ, আজহারুল, মামুন, স্বপন, নোমান, করিম, সজল, করিমুল্লাহ, দ্বীন ইসলাম, কবির হোসেন, আলাউদ্দিন, সহিদুল্লাহ, মজিবুর, হাফেজ মিয়াসহ ২০ জন যুবদল ও ছাত্রদল কর্মীকে আটক করেছে। এছাড়াও দিপু সমর্থকরা ভুলতা, মর্তুজাবাদ, কালাদী, জিন্দা, আধুরিয়া, বরপা, মুড়াপাড়া, চনপাড়া, যাত্রামুড়া এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এ সময় পুলিশ ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের সঙ্গে ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই তারিফুজ্জামান জানান, যুবদল-ছাত্রদল মিছিল বের করে। রাস্তা অবরোধ করে যানবাহন ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করলে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ কর্মীরা বাধা দেয়। এতে ত্রিমুখী সংঘর্ষের সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৩ শতাধিক রাউন্ড টিয়ারশেল ও শটগানের গুলি ছোড়ে। কয়েকজন গুলিবিদ্ধসহ বেশ কিছু নেতাকর্মী আহত হয়। পৃথক স্থান থেকে যুবদল ও ছাত্রদলের ২০ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। মুস্তাফিজুর রহমান ভুঁইয়া দিপু বলেন, হামলা-মামলা ও হয়রানি করে বিএনপির আন্দোলন দমানো যাবে না। অবিলম্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের আহবান জানান। সিদ্ধিরগঞ্জে পুলিশের গুলি, সাংবাদিক আহত সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, সিদ্ধিরগঞ্জে অবরোধকারী যুবদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের সময়ে ইটের আঘাতে মারাত্মক আহত হয়েছে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা প্রেস ক্লাবের ফটোসাংবাদিক বিশাল আহমেদ। এছাড়া ভাংচুর করা হয়েছে ইটিভির একটি গাড়িসহ কয়েকটি যানবাহন। সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ বেধড়ক লাঠিচার্জ ও ১১/১২ রাউন্ড গুলি করে। এতে ৫/৬ জন আহত হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক বাসস্ট্যান্ড ও আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে ১০টায় সিদ্ধিরগঞ্জের মৌচাক এলাকায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবদলের ব্যানারে একটি মিছিল বের হয়। এ সময় তারা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এলে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জ ও ১১/১২ রাউন্ড গুলি করে। এ সময় ছবি তোলার সময়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা প্রেস ক্লাবের ফটোসাংবাদিক বিশাল আহমেদ আহত হয়। একই সময় ইটিভির একটি গাড়িসহ বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাংচুর করে পিকেটাররা। আহত বিশাল আহমেদকে সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল হাজী ইব্রাহীম খলিল শপিং কমপ্লেক্সে মা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে ভোরে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়িতে বিএনপি নেতা আলী হোসেন প্রধান ও স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক কামরুল হাছান শরীফের নেতৃত্বে টায়ার জ্বালিয়ে ব্যারিকেড দেয় নেতাকর্মীরা। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কয়েক রাউন্ড গুলি ও লাঠিচার্জ করে তাদের ছাত্রভঙ্গ করে দেয়। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি আবদুল মতিন জানান, পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে অবরোধকারীদের সরিয়ে দেয়। তখন লাঠিচার্জ ও কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করা হয়েছে। আড়াইহাজারে বিএনপি-পুলিশ ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, ককটেল বিস্ফোরণ আড়াইহাজার (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি জানান, অবরোধের দ্বিতীয় দিনে আড়াইহাজার উপজেলার পাঁচরুখী এলাকায় যুবদলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদের নেতৃত্বে মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীরা রাস্তায় টায়ার ও গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ সৃষ্টি করে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে অবরোধকারীদের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। আড়াইহাজার থানার ওসি আলমগীর হোসেন জানান, অবরোধকারীরা রাস্তা অবরোধের চেষ্টা করলে পুলিশ ২০ রাউন্ড শটগানের গুলি ও ৩টি টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় অবরোধকারীরা কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়। এদিকে সকালে ইলুমদী এলাকায় বদরুজ্জামান খসরুর অনুসারী বিএনপি নেতা আনোয়ার হোসেন অনু ও মহিলা দল নেত্রী পারভিন আক্তারের নেতৃত্বে অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হয়।
চট্টগ্রাম ছিল এক যুদ্ধক্ষেত্র : নিহত ২, আহত ৭০ : শতাধিক গাড়ি ভাংচুর-আগুন : আটক ৬০ চট্টগ্রাম ব্যুরো « আগের সংবাদ 11 পরের সংবাদ» নির্বাচন কমিশন ঘোষিত কালো তফসিলের বিরুদ্ধে ১৮ দলীয় জোটের অবরোধের দ্বিতীয় দিনে গতকাল চট্টগ্রামে পুলিশ-বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ছিল বেপরোয়া। নগরী ও জেলার বিভিন্ন এলাকায় অবরোধকারী ১৮ দলের নেতাকর্মীদের ওপর নির্বিচারে রাবার বুলেট, টিয়ারশেলের সঙ্গে সঙ্গে মুহুর্মুহু গুলি চালিয়েছে পুলিশ। উপর্যুপরি গুলিবর্ষণে অন্তত ২০ নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধসহ অন্তত ৭০ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে পুলিশ ও বিজিবির সদস্যও রয়েছে। এদিকে গত রাতে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় পিকেটারদের ধাওয়া খেয়ে একটি মাইক্রোবাস খাদে পড়ে গিয়ে এক যাত্রী নিহত হয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যুদ্ধংদেহী অবস্থানের পরও রাজপথ দখলে রাখেন ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা। দিনভর চলতে থাকা সংঘর্ষে নগরী কার্যত যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষের সময় নগরীর নিমতলা ট্রাক টার্মিনাল এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় শতাধিক যানবাহনে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। অলংকার এলাকায় পুলিশের ৪টি মোটরসাইকেলে আগুন দেয়া হয়। জেলার পটিয়ায় পুলিশের সঙ্গে অবরোধ সমর্থকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সময় পালাতে গিয়ে টেম্পো উল্টে মারা যান টেম্পো চালক এরশাদ আলী। এদিকে অবরোধ সমর্থকদের ওপর পুলিশি হামলার ছবি তুলতে গেলে আমার দেশ পত্রিকার চট্টগ্রাম ব্যুরো অফিসের স্টাফ ফটোগ্রাফারের ক্যামেরা ভেঙে ফেলার হুমকি দেন কোতোয়ালি থানার ওসি। এদিকে নগরীর জামালখান এলাকায় চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন অফিস লক্ষ্য করে পেট্রল বোমা ছুড়েছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্র জানায়, কয়েকজন দুর্বৃত্ত দূর থেকে জেলা নির্বাচন অফিস লক্ষ্য করে একটি পেট্রল বোমা ছুড়ে মারে। বোমাটি অফিস কম্পাউন্ডের ভেতরে পড়ে বিস্ফোরিত হয়। এ সময় আগুন ধরে গেলে পুলিশের বসার একটি কাঠের বেঞ্চ পুড়ে যায়। নির্বাচন অফিসের নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরা গুলি ছুড়লে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। তবে এ ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি। তাত্ক্ষণিকভাবে কেউ আহত হওয়ারও খবর পাওয়া যায়নি। পুলিশ জানায়, কাচের বোতলের ভেতর পেট্রল ও অন্যান্য বিস্ফোরক দিয়ে বোমাটি তৈরি করা হয়েছিল। অবরোধের দ্বিতীয় দিন গতকাল সকাল থেকেই নগরীর এ কে খান গেট থেকে সিটি গেট পর্যন্ত ১ কিলোমিটার এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। এছাড়া নগরীর বন্দর সংলগ্ন নিমতলা, কাজীর দেউড়ি, ওয়াসা, জেলার সীতাকুণ্ডের বটতলা, পটিয়া কলেজ রোড এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ ও পিকেটারদের ধাওয়ায় এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। আটক করা হয়েছে অন্তত ৬০ নেতাকর্মীকে। অবরোধে পার্শ্ববর্তী জেলাগুলো থেকে চট্টগ্রাম নগরী কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে সড়ক ও রেল যোগাযোগ। এ কে খান গেট এলাকায় রেললাইন অবরোধ করে আগুন দেয়ায় বন্ধ হয়ে যায় ট্রেন চলাচল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, মহানগর বিএনপির সভাপতি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি মিছিল কাজীর দেউড়ি এলাকা দিয়ে নাসিমন ভবনের সামনে গেলে পুলিশ বাধা দেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়লে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে মিছিলটি আবার কাজীর দেউড়ি এলাকা দিয়ে আলমাস সিনেমার দিকে চলে যাওয়ার সময় বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা ভিআইপি টাওয়ারে (মার্কেট) হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। এ সময় সেখানে একটি সিএনজি আটোরিকশাতে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিলে যাত্রী আব্দুল আলিম ও তার ভাই মো. মোরশেদ আগুনে ঝলসে যায়। তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ ব্যাপক টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট গুলি চালায় । এ সময় পুলিশের গুলিতে ছাত্রদলের জমির উদ্দিন নাহিদ, ফয়সাল মাহমুদ ও মোটর চালক দলের মো. রফিক আহত হয়। পুলিশ ভিআইপি টাওয়ারের ভেতরে বিভিন্ন দোকানপাট ও অফিসে ঢুকে অন্তত ৩০ জনকে আটক করে নিয়ে যায়। এদিকে একই সময় বন্দর সংলগ্ন নিমতল বিশ্ব রোডে অবরোধকারীদের সঙ্গে পুলিশের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এ সময় ৭ পুলিশসহ ২০ জন আহত হয়। পুলিশ অবরোধকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে ব্যাপক টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও গুলি ছুড়েছে। অবরোধকারীরা নিমতলা ট্রাক টার্মিনাল সংলগ্ন এলাকায় অন্তত ৩৫টি ট্রাক ভাংচুর করে। এখান থেকে বন্দর এবং হালিশহর থানা পুলিশ ১৯ জনকে আটক করে। বন্দর থানার ওসি জাহিদুল ইসলাম জানান, অবরোধকারীরা ব্যাপক ককটেল বিস্ফোরণ ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে ৭ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে ৪ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সকালে বন্দর থানা পুলিশ গোসাইডাঙ্গা বিএনপির সভাপতি জাহিদুল হাসান ও জামায়াত কর্মী নজরুল এবং সি-ম্যান হোস্টেল এলাকা থেকে ছাত্রদল নেতা মো. হোসেন টিটুকে আটক করা হয়েছে বলে শিকার করেন ওসি। এদিকে সকাল ১১টা থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নগরীর কর্নেলহাট ও এ কে খান এলাকায় ১৮ দলের কর্মীদের সঙ্গে র্যাব, পুলিশ ও বিজিবির ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। বিকাল পর্যন্ত চলা এ সংঘর্ষ একপর্যায়ে খণ্ডযুদ্ধে পরিণত হয়। বিকাল পর্যন্ত এখানে অন্তত ৫ জন গুলিবিদ্ধসহ ১৫ জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে যুবদল নেতা আব্দুল হান্নানের অবস্থা আশঙ্কাজনক। কর্নেলহাট সিটি গেট এলাকায় সকাল থেকে থেমে থেমে সংঘর্ষে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ১ কিলোমিটার এলাকা কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সিটি গেট এলাকার পুলিশ বক্সে হামলা চালায় অবরোধকারীরা। এ সময় সেখানে থাকা পুলিশের ৪টি মোটরসাইকেল জ্বালিয়ে দেয়া হয়। এ কে খান এলাকার নেতাকর্মীরা র্যাব পুলিশের তাড়া খেয়ে ইস্পাহানী এলাকায় রেললাইনের ওপর অবস্থান নিয়ে লাইনে আগুন দেয় ও ফিস প্লেট খুলে নিলে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। আটকা পড়ে চট্টগ্রামমুখী সুবর্ণ এক্সপ্রেস ও মহানগর প্রভাতী। এ সময় চট্টগ্রাম স্টেশন থেকেও কোনো ট্রেন ছেড়ে যেতে পারেনি। এদিকে গতকাল সকালে চট্টগ্রাম থেকে শুধু চাঁদপুরগামী সাগরিকা ট্রেনটি নির্ধারিত সময়ের প্রায় ২ ঘণ্টা পরে ছেড়ে গেলেও বিকাল পর্যন্ত আর কোনো ট্রেন ছাড়েনি। অপর দিকে কর্নেলহাট এলাকায় অবরোধকারীরা মহাসড়কের ওপর অবস্থান নিলে সেখানেও যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলার এয়াকুবনগর বটতলা এলাকায় অবরোধকারী ও পুলিশ-বিজিবির মধ্যে সংঘর্ষে দু’জন গুলিবিদ্ধসহ ৮ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় অবরোধকারীদের ইটপাটকেলের আঘাতে ২ পুলিশ ও এক বিজিবি সদস্য আহত হয়। গুলিবিদ্ধরা হলো নাজিম উদ্দিন, আবসার। আহত পুলিশ সদস্যরা হচ্ছেন এসআই মিজান, এসআই আনোয়ার ও বিজিবি সদস্য লুত্ফর। স্থানীয় একটি সূত্র জানিয়েছে, সকালে ১৮ দলের নেতাকর্মীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করলে পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা অবরোধ সরিয়ে নিতে গেলে অবরোধকারীদের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ নির্বিচারে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়লে শিম ক্ষেতে কাজ করা অবস্থায় স্থানীয় বাসিন্দা নাজিম ও আবসার গুলিবিদ্ধ হন। এদিকে সকাল ১১টার দিকে পটিয়ায় অবরোধকারীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সময় পালাতে গিয়ে টেম্পো উল্টে চালক এরশাদ আলী গুরুতর আহত হয়। আহত অবস্থায় তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এলে দুপুর ১২টার দিকে মৃত্যু হয় তার। রেল যোগাযোগ বন্ধ চট্টগ্রামে রেললাইনের ওপর আগুন জ্বালিয় অবরোধ করার কারণে চট্টগ্রামের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। নগরীর পাহাড়তলী ইস্পাহানী গেট এবং সীতাকুণ্ডের বারৈয়াঢালা এলাকায় অবরোধকারীরা সকাল থেকে রেললাইনে অবস্থান নিয়ে রেললাইনের ওপর আগুন দিয়েছে। এ কারণে রেল চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। নগরীর অদূরে ফৌজদারহাট স্টেশনে আটকা পড়ে সুবর্ণ ও মহানগর গোধূলী নামের দুটি আন্তঃনগর ট্রেন। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজান (ডিআরএম) এস এম মুরাদ হোসেন জানান, সকাল সাড়ে ৭টায় চট্টগ্রাম থেকে সাগরিকা এক্সপ্রেস ছাড়া অন্য কোনো ট্রেন গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যেতে পারেনি। তিনি চট্টগ্রামের অদূরে ফৌজদারহাট স্টেশনে পরশু ছেড়ে আসা আন্তঃনগর ট্রেন সুবর্ণ এক্সপ্রেস ও মহানগর গোধূলী অবরোধের কারণে আটকা পড়েছে বলে জানান। তিনি জানান, সীতাকুণ্ডের কাছে এবং নগরীর পাহাড়তলী ইস্পাহানী এলাকায় রেললাইন অবরোধ করে আগুন দেয়ার কারণে আপাতত চট্টগ্রামের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। উল্লেখ্য, অবরোধের প্রথম দিন এবং গতকালও সারাদেশের সঙ্গে চট্টগ্রামের রেল যোগাযোগ বন্ধ ছিল। আমার দেশ-এর ফটোসাংবাদিকের ক্যামেরা ভেঙে ফেলার হুমকি দিলেন ওসি মহিউদ্দিন সেলিম দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার চট্টগ্রাম ব্যুরো অফিসের স্টাফ ফটোগ্রাফার মিনহাজ উদ্দিনের ক্যামেরা ভেঙে ফেলার হুমকি দেন কোতোয়ালি থানার ওসি মহিউদ্দিন সেলিম। গতকাল বুধবার সকালে ১৮ দলের অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে নগরীর কাজীর দেউড়ি এলাকায় বিনা উসকানিতে অবরোধ সমর্থকদের ওপর পুলিশি হামলার ছবি তুলতে গেলে ওসি মহিউদ্দিন সেলিম এই হুমকি দেন। সভা-সমাবেশ অবরোধের দ্বিতীয় দিনে পুলিশি বাধা উপেক্ষা করে ওয়াসা মোড়ে এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, কালো তফসিল স্থগিত না হওয়া পর্যন্ত জনগণ রাজপথ ছাড়বে না। প্রধান বিরোধী দল বিএনপিকে ছাড়া কোনা নির্বাচন এই দেশে হবে না, হতে দেয়া হবে না। প্রশাসন আওয়ামী লীগের নয়, প্রশাসন জনগণের। আশা করব, তারা জনগণের কথা মাথায় রেখে কাজ করবে। নির্দলীয় সরকারের অধীনে ছাড়া কোনো নির্বাচন এই দেশের জনগণ মেনে নেবে না। যতক্ষণ এই সরকার পদত্যাগ না করবে, ততক্ষণ অবরোধ-হরতালসহ কর্মসূচি চলবে। সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, যে কোনো মূল্যে একদলীয় নির্বাচন দেশের জনগণ প্রতিহত করবে। নিয়ন্ত্রিত কোনো নির্বাচন এই দেশে করতে দেয়া হবে না। প্র্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক মন্ত্রী মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন বলেন, অবিলম্বে নির্বাচনের তফসিল বাতিল করতে হবে। আওয়ামী লীগ মার্কা কোনো নির্বাচন এই দেশে হবে না। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আকবর খোন্দকার বলেন, জনগণ অবৈধ নির্বাচনের তফসিল প্রত্যাখ্যান করেছে। চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেনের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতা শামসুল আলম, মাহবুবুর রহমান শামিম, অ্যাডভোকেট আব্দুস ছাত্তার, জাহাঙ্গীর আলম, কাজী বেলাল, শফিকুর রহমান স্বপন, শাহ আলম, হারুন জামান, কাউন্সিলর মনোয়ারা বেগম মণি, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, আব্দুল মান্নান, ফাতেমা বাদশা, জেলী চৌধুরী, শামসুল হক, মোহাম্মদ সাহেদ, জেসমিন খানম প্রমুখ। কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে শাহ্ আমানত সেতুর (নতুন ব্রিজ) উত্তর পাশে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির উদ্যোগে দফায় দফায় মিছিল শেষে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি, সাবেক মন্ত্রী আলহাজ জাফরুল ইসলাম চৌধুরী এমপির সভাপতিত্বে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন ও সরকার বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করার দিবাস্বপ্ন দেখছে। কিন্তু ১৮ দলকে বাদ দিয়ে এদেশে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। সভায় আরও বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যাপক শেখ মুহাম্মদ মহিউদ্দিন, এনামুল হক এনাম, জালাল আহমদ, আলহাজ মোশারফ হোসেন, মঞ্জুর উদ্দিন চৌধুরী, কাউন্সিলর ইসমাইল বালি, মুছা মাহমুদ, অ্যাড. কাশেম চৌধুরী, আবু মোহাম্মদ নিফার, মফজল আহমদ চৌধুরী, শহীদুল ইসলাম, মোর্শেদুল শফি হিরু প্রমুখ। প্রথম পাতা দেশজুড়ে গণবিস্ফোরণ : নিহত আরও ৯ : তফসিলের পর সহিংসতায় ১৮ জনের মৃত্যু, ২৫ অক্টোবর থেকে নিহত ৫২ : চট্টগ্রাম, রাজশাহী, বরিশাল, সিরাজগঞ্জ, খুলনা, সাতক্ষীরা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর রণক্ষেত্র মানুষ হত্যায় হুকুমের আসামি হতে পারেন খালেদা জিয়া : জনগণ বিরোধীদলীয় নেতাদের গাড়ি পুড়িয়ে প্রতিশোধ নিলে কেমন হবে! : আ.লীগের পার্লামেন্টারী বোর্ডের সভায় শেখ হাসিনা এবার টার্গেট ঢাকা, অবরোধ বাড়ল ১২ ঘণ্টা : আসছে টানা কর্মসূচি সচিবালয়ে শোডাউন : বাথরুমে আশ্রয় নিলেন জনপ্রশাসন সচিব সাংবাদিকদের প্রতীকী অনশন : আমার দেশ ও মাহমুদুর রহমান মুক্ত না হওয়া পর্যন্ত কোনো নির্বাচন হতে দেয়া হবে না দেশব্যাপী বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর চালানো হয় ত্রিমুখী আক্রমণ : সান্ধ্য আইন জারি করে ঘরে ঘরে রক্ষীবাহিনীর তল্লাশি বিফল অন্তরালের সংলাপ : বিএনপি ছাড় দিলেও অনড় সরকার সঙ্কট নিরসনের শেষ উদ্যোগ : জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূত তারানকো ঢাকায় আসছেন জনগণকে বিভ্রান্ত করতে সংলাপ সংলাপ খেলছে সরকার - বিএনপি : দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চলবে - রিজভী কুমিল্লা সিটি মেয়রের বাড়িতে তাণ্ডব, র্যাবের বর্বরতার শিকার বিচারক : আদালতে আইনজীবীদের ভাংচুর প্রধানমন্ত্রী চাইলে এক মিনিটেই সরে যেতে পারেন, সংবিধানে কোনো বাধা নেই : ড. কামাল যশোরে জামায়াত নেতা বুলবুলকে বাড়িতে ঢুকে গুলি করে হত্যা : প্রতিবাদে আজ জেলায় হরতালের ডাক পুলিশ-আ.লীগের হামলায় নেতাকর্মী হত্যার প্রতিবাদ : যশোর সিরাজগঞ্জ সাতক্ষীরা কুমিল্লায় ১৮ দলের হরতাল আজ নেতাদের মুক্তির দাবিতে হেফাজতের বিবৃতি : আলেমদের নির্যাতন করে অতীতে কেউ টিকতে পারেনি আপনারাও পারবেন না : ২৪ ডিসেম্বর শাপলা চত্বরের মহাসমাবেশ সফলের আহ্বান পাকিস্তানের নতুন সেনাপ্রধান হলেন রাহিল শরিফ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার হাইকশিনারের বৈঠক : নির্বাচন নিয়ে সংলাপের মাধ্যমে সমাধানে পৌঁছা জরুরি : হেফাজত বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ দল আজকের প্রাথমিক ও ইবতেদায়ী পরীক্ষা শনিবার ‘জাতীয় পার্টি এখন গণতান্ত্রিক ধারায়’ : নিজ দলের নেতা হত্যার জন্য দায়ী এরশাদের দলের প্রশংসায় ইনু! শাবিতে ভিসি ও জাফর ইকবালের বাসা লক্ষ্য করে ককটেলের নিক্ষেপ দুর্ঘটনায় ৫৪ জন নিহতের জের : একটি ভবনের সঙ্গে ধসে গেল লাটভিয়ার সরকারও ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক: মাহমুদুর রহমান। প্রকাশক: আলহাজ্ব মোঃ হাসমত আলী কর্তৃক প্রকাশিত এবং আমার দেশ পাবলিকেশন্স লিঃ ৪৪৬/সি ও ৪৪৬/ডি তেজগাঁও শিল্প এলাকা, ঢাকা-১২০৮ থেকে মুদ্রিত। বার্তা সম্পাদকীয় ও বাণিজ্য বিভাগঃ বিএসইসি ভবন, ১০২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫। পিএবিএক্সঃ ৮১৫৯৫৭৫ (অটোহান্টিং): বিজ্ঞাপন-৮১৫৯৫৮৪, সার্কুলেশন-৮১৫৯৫৮৩, ফ্যাক্সঃ ৮১৫৯৫৮১ ও ৮১৫৯৫৮২ (বার্তা), ৮১৫১৪৪৪ (মফস্বল)। info@amardeshonline.com

মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর, ২০১৩

স্বল্প বসনা এই চিয়ার্সগার্ল কারা ? 27 Nov, 2013 বদলে যাওয়া সময়ের এক নতুন সংস্কৃতি ‘ডিজে পার্টি’। ডিজে শব্দের অর্থ হলো ডিস্কো জকি। বড় বড় অভিজাত হোটলেই এখন কেবল ডিজে পার্টি সীমিত নেই রাজধানীর গুলশান-বনানী-উত্তরাসহ নানা জায়গায় গড়ে উঠেছে ডিজে ক্লাব। এইসব ক্লাব হোটেলের ডিজে পার্টির আকর্ষণ হলো চিয়ার্সগার্লরা। কারা এই চিয়ার্সগার্ল? স্বল্প পোশাকে চেনা-অচেনা পুরুষের বাহুলগ্ন হয়ে নাচানাচি করাটা কি তাদের নেশা নাকি পেশা? ডিজে পার্টিতে পুরুষকে সঙ্গ দেয়ায় কী তাদের কাজ, নাকি অন্য কোন পাঁয়তারাও আছে? এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার আগে ক্লাবে-হোটেলে ডিজে পার্টির চালচিত্র সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক। বিরাট হলরুম – বড় সারাউন্ড স্পিকারগুলোতে বিটের তাল এমনিতেই মন-প্রাণ চঞ্চল করে তোলে। সেখানেই মিনি বারে বিয়ার এবং হার্ডড্রিংসের হরদম সরবরাহ হচ্ছে। গ্লাস বা বিয়ারের ক্যান নিয়ে অনেকেই চলে আসছেন ড্যান্স ফ্লোরে। স্বল্প বসনা উচ্চবিত্ত ঘরের তরুন-তরুনীর উপচে পড়া ভিড় ড্যান্স ফ্লোরে। রাত বাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে জমে উঠছে পার্টি। নগরজীবনের ব্যস্ততা ও নানাবিধ হতাশা ভুলতে অনেকেই ছুটছেন ডিজে ক্লাব পার্টিতে। এখানে মিউজিকের তালে তালে এক মায়ানগরীতে ভাসে সবাই। বিশাল স্পিকার থেকে ভেসে আসে বুক কাঁপানো সুর। কানে হেডফোন, চোখের সামনে রাখা ডিস্ক প্লেয়ারে চলে ডিজেদের দক্ষ হাতের জাদু। আঙুলের নিয়ন্ত্রণে চলে ভিন্ন ধরনের মিউজিকের খেলা। ডিস্কো জকির বাজনার জাদুতে মোহাচ্ছন্ন হয়ে নাচে এক দল মানুষ। এদের বেশিরভাগই তরুণ-তরুণী। চোখ ধাঁধানো আলো-আঁধারির খেলায় হারিয়ে যায় সব বেদনা ও হতাশা। অভিযোগ রয়েছে যে, মাদক পানীয় নির্ভর এসব পার্টিতে অংশগ্রহণের বয়সের কোনো বাছ-বিচার নেই । যে কোনো বয়সের লোকজন, এমনকি কিশোর-কিশোরীরাও অনায়াসেই অংশ নিতে পারে উন্মাতাল পার্টিগুলোতে। এর ফলে সামাজিক অবক্ষয় যেমন বাড়ছে, তেমনি অশানি সংকেত সৃষ্টি হচ্ছে পরিবারের মধ্যে। ড্যান্স পার্টির উদ্যোক্তাদের বেপরোয়া তৎপরতায় অভিজাত এলাকার অভিভাবকরা রীতিমতো উদ্বিগ্ন। এখন অভিজাত পাড়াগুলোর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এই জমজমাট পার্টি ব্যবসা চলছে ঢাকার অনেকে জায়গায়। বহুতল এ্যাপার্টমেন্ট ভবনের কয়েকটি ফ্লোর ভাড়া করে এবং বিভিন্ন গেস্ট হাউসে নিয়মিতই চলছে রাতের জলসা। এরমধ্যে বেশ কিছু চিহ্নিত গেস্ট হাউসকে মিনি পতিতালয় বললেও অতিরিক্ত বলা হবে না । রূপালি জগতের উঠতি চলচ্চিত্র তারকা থেকে টিভি মডেলদের অনেকেই এসবে নিয়মিত অংশ গ্রহণকারী। এবার আসা যাক, ডিজে পার্টির প্রধান আকর্ষণ চিয়ার্সগার্লদের প্রসঙ্গে। মিনি স্কার্ট, টাইট জিন্স, পাতলা টি-শার্ট পড়ে ডিজে পার্টি জমিয়ে রাখা এসব মেয়েদের ক্লাব বা হোটেলের মালিক পক্ষই নিয়োগ করে থাকে। এদের মধ্যে আবার বিভিন্ন ক্লাস আছে। কেউ স্থায়ী, কেউ অস্থায়ী। স্থায়ীরা চুক্তিভিত্তিক টাকা পায়, আর যারা অস্থায়ী তারা ‘পার নাইট’ হিসেবে টাকা নেয়। ডিজে পার্টিতে ড্যান্সের পাশাপাশি চিয়ার্সগার্লরা দেহ ব্যবসা ও মাদক ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত। অনুসন্ধানে জানা গেছে, অভিজাত ও উচ্চবিত্ত পরিবারের ছেলেদের অনেকেই গার্লফ্রেন্ড নিয়ে আনন্দ-ফুর্তি করতে ডিজে পার্টিতে আসে। আবার অনেকে আসে একাকী। একাকী যারা আসে, তাদের জন্যই পার্টিতে থাকে চিয়ার্সগার্লরা। পয়সাওয়ালা পুরুষরাই থাকে চিয়ার্সগার্লদের মূল টার্গেট। আয়োজকরাই ইশারায় চিয়ার্স গার্লদরে চিনিয়ে দেয় মালদার পুরুষকে। ব্যাস, তাকে টার্গেট করেই এগিয়ে যায় একেকজন স্বল্পবসনা চিয়ার্সগার্ল। নাচের নামে একটু একটু করে বাড়ায় ঘনিষ্ঠতা। দেহের বিশেষ বিশেষ জায়গার ছোঁয়া দিয়ে পুরুষটির দেহমনে তৈরি করে পুলক। এরপরই শুরু হয় বেড পার্টনার হওয়ার দর কষাকষি। একই সাথে চিয়ার্সগার্লরা জেনে নেয়, সে বাবা (ইয়াবা) নেয় কিনা? যদি উত্তর পজেটিভ হয় তাহলে তো পোয়াবারো। খুলে গেল তার ব্যবসার নতুন দুয়ার। পেয়ে গেল সে নিয়মিত খদ্দের। অভিযোগ আছে, বেশিরভাগ চিয়ার্সগার্লই ইয়াবা আসক্ত। ফিগার ঠিক রাখা আর ‘নাইট পার্টি’-তে হাজিরা দিতে রাত জাগার জন্য তারা নিয়মিতই ইয়াবা সেবন করে। এদের অনেকেই আবার মাদক সিন্ডিকেটের ডিলার বা এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। ডিজে পার্টির আয়োজকদের অনেকের বিরুদ্ধে মাদক সিন্ডেকেটের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ আছে। ওয়েস্টার্ণ পোশাক পড়ে ডিজে পার্টিতে অংশ নিলেও চিয়ার্সগার্লরা যে উচ্চবিত্ত পরিবার থেকে এসেছে, এটা মনে করার কোন কারণ নেই। বরং উল্টোটা। এদের বেশির ভাগই মফস্বল থেকে আসা অস্বচ্ছল পরিবারের মেয়ে। ঢাকায় এসে তারা ওভারস্মার্ট হওয়ার চেষ্টা করে। অনেকেই আবার স্বপ্ন দেখে মিডিয়ায় জায়গা করে নেয়ার। এ জন্য তারা মর্ডান ড্যান্স শেখার জন্য বিভিন্ন জায়গায় যায়। এসময়ই ডিজে পার্টির আয়োজক বা তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ হয়। মিডিয়ায় সেইভাবে জায়গা করতে না পেরে তারা লুফে নেয় চিয়ার্সগার্ল হওয়ার অফার। পরে ধীরে ধীরে জড়িয়ে পড়ে দেহ ও মাদক ব্যবসায়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন প্রফেশনাল চিয়ার্সগার্ল বলেন, আসলে ইচ্ছে ছিল মিডিয়ায় কাজ করার। তাই মর্ডান ড্যান্স শিখি। স্বপ্ন ছিল মডেলিং করার। এজন্য নিজের অনেক কিছুই বিলিয়ে দিয়েছি। মিডিয়াটা প্রতারকদের আখড়া। আমার সব নেওয়ার পর তারা কোনো কথা রাখে নি। তিনি বলেন, এদিকে মডেল হওয়ার স্বপ্নে পরিবারের নিষেধ না শোনায় আমার হাতখরচ দেওয়া বন্ধ করে দেয়া হয়। পরিবার থেকে আমি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ি। জিদ করে একটা মেয়েদের হোস্টেলে উঠেছিলাম। সেখানেও বিল দিতে না পারায় আমাকে বের করে দেয়া হয়। এরকম একটা সংকটের সময়ে এক ড্যান্স টিচার আমাকে ডিজে পার্টিতে নিয়ে যায়। অস্তিত্বের প্রয়োজনেই আমি চিয়ার্সগার্ল হয়েছি। ওই চিয়ার্সগার্ল আরো বলেন, প্রথম দিকে ডিজে পার্টিতে পার নাইট হাজার-বারো’শ পেতাম। এখন পাই আড়াই থেকে তিন হাজার। ডিজে পার্টি হয় গভীর রাতে। রাত জাগার জন্য আর ফিগার ঠিক রাখার জন্য ইয়াবা খাওয়া শুরু করি। ইয়াবার খরচ যোগাতে আমাকে অনৈতিক কাজও করতে হয়। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, এরকম জীবন আমি চাই নি। এ জীবন আমার ভালো লাগে না। কিন্তু আমার তো বেঁচে থাকতে হবে। মিডিয়ার লোকরাই আমাকে এ জীবনে ঠেলে দিয়েছে। রাতভর চলা ডিজে পার্টির রঙচঙে চিয়ার্সগার্লদের সিংহভাগের জীবন কাহিনী অনেকটা এমনই। উৎসঃ প্রাইমনিউজ

শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০১৩

খোলা আকাশের নিচে প্রশ্রাব-পায়খানা ও ইন্ডিয়ান সংস্কৃতি! ২২ নভেম্বর,২০১৩ 13 আলাউদ্দীন মোহাম্মদ ইন্ডিয়া’র কেন্দ্রীয় রাজধানী নিউ দিল্লী’র ঝকঝকে রাস্তায় নতুন নতুন চলতে গেলে একটি বিষয় দেখে আপনার চোখ আটকে যাবেই। অটোওয়ালা, মোটরবাইকার, প্রাইভেট গাড়ি’র চালক, প্রাইভেট গাড়ির যাত্রী থেকে শুরু করে মার্সিডিজ থামিয়েও যদি কোন ভদ্রলোক রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে শুরু করে তাহলে যেন আপনি ভড়কে না উঠেন! ওদের দিকে আশ্চর্য হয়ে তাকাবেন না যেন! এখানে কেউ ওদের দিকে তাকায় না! এটাই এখানকার কালচার যেটা পর্যবেক্ষণ করে অর্থনৈতিক দার্শনিক অমর্ত্য সেন দুঃখ করে বলেছিলেন ‘ইন্ডিয়ার মেট্রোপলিগুলোতে যে হারে কন্ডোমিনিয়াম গড়ে উঠছে তার সিকিভাগ হারেও যদি গণশৌচাগার গড়ে উঠত!’ স্বভাবতই প্রশ্ন উঠতে পারে তাহলে ইন্ডিয়া যে এগিয়ে যাচ্ছে বলে একটা ধোঁয়া উঠছে অর্থনৈতিক দুনিয়ায় যারা আবার ‘ব্রিক্স’ নামের অর্থনৈতিক জোট গঠন করে সেটার ঢাকও পেটাচ্ছে সে উন্নয়নের নমুনা কই? সেটা কি শুধু বলিউড, বার আর শহরের রাস্তায় সাড়ি উঁচা উঁচা ফ্লাইওভার? সেটাই উন্নয়ন কিনা সে প্রশ্নের সমাধান অবশ্য আগেই হয়ে গিয়েছে। একটা সময় উন্নয়নের সূচক ছিল মোটা দাগে মাথাপিছু উৎপাদন কিংবা আয়ের পরিমাণ কত এবং এই আয় কি হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে সেটার হিসেব-নিকেষ। মানে জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাড়া মানেই উন্নয়ন। সেটা উন্নয়নচিন্তায় অনেক দশক ধরে বিরাজ করলেও গত ৩-৪ দশকে সে চিন্তায় এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটে গিয়েছে। ১৯৭০ সালের আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার ‘কর্মসংস্থান প্রকল্প’ থেকে শুরু করে দারিদ্র ও বৈষম্য দূরীকরণ, মৌলিক চাহিদা এবং সবশেষে অমর্ত্য সেনের ‘সক্ষমতা’র গবেষণা থেকে পাকিস্তানের মাহবুবুল হকের হাত ধরে সেই ১৯৯০ এর দিকে প্রথম যে মানব উন্নয়ন সূচক প্রকাশ করা হয় যেখানে উন্নয়নকে মানুষের মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার জন্য যে বিষয়গুলোতে উন্নয়ন দরকার সে নিরিখে উন্নয়ন দেখা শুরু হয় সেটাই এখন পর্যন্ত সর্বাধিক স্বীকৃত উন্নয়নের মানদণ্ড হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। আর এই মানব উন্নয়নের তিনটি সূচক হল শিক্ষাক্ষেত্রে অর্জন, সাস্থ্যক্ষেত্রে অর্জন এবং মাথাপিছু গড় আয়ের সাধারণ গড়। এই শিক্ষাক্ষেত্রের অর্জন দেখা হয় গড় শিক্ষাজীবন এবং প্রত্যাশিত শিক্ষাজীবনের সমন্বয়ে, আর স্বাস্থ্যক্ষেত্রের অর্জন গড় প্রত্যাশিত আয়ুস্কাল এবং মাথাপিছু আয় সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন মাথাপিছু আয়ের আপেক্ষিক বিচারে। তো এই সময়ে উন্নয়ন মানেই হল, এই সূচকগুলোতে অগ্রগতি। এই প্রবন্ধের বিষয় অবশ্য উন্নয়ন চিন্তার আলোচনা নয়। এটা সাম্প্রতিক একটি রিপোর্টের তথ্যের আলোকে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ইন্ডিয়া’র অর্থনীতির দ্বৈত রূপ কিংবা এর দর্শনের দিকে একটু হালকা নজরমাত্র। ‘স্লামডগ মিলিনিয়ারে’ হয়তো অনেকেই দেখে থেকেছেন শিশুশিল্পী’র মলের জলে পবিত্র হয়ে তার প্রিয় বলিউড তারকার সাক্ষাৎ লাভের চিত্রটি। এটা শুধু একটি চলচ্চিত্রেরই দৃশ্য নয়। এটা যেন ইন্ডিয়ার এক প্রান্তে আয়েশ করে গড়ে উঠা ‘ইনক্রেডিবল ইন্ডিয়া’ আরেক প্রান্তে এর প্রতি ‘স্লামডগ’দের ইনক্রেডিবল সম্মোহন। প্রায় সোয়াশ’ কোটি মানুষের দেশ ভারতে অর্ধেকেরও বেশি মানুষই এই মলজলে (মলজল না হলেও মল-হাওয়া তো বলাই যায়) সিক্ত হওয়ার কাজটি প্রতিদিন সম্পন্ন করে থাকেন পরম আরামপ্রিয়তায় খোলা আকাশের নিচে! প্রশ্ন হল, ইন্ডিয়ার অর্থনীতি যেভাবে বিগত দুই দশক ধরে প্রবৃদ্ধির সূচকে দৌড়াচ্ছে সেখানে কেন এখনো দেশের এত মানুষকে খোলা আকাশের নিচেই শৌচাগারের কাজ সারতে হচ্ছে? এটা কি ইন্ডিয়ার উন্নয়ন দর্শনের কোন সমস্যা নাকি তার সংস্কৃতির মজ্জাতেই লুকিয়ে আছে এ রোগ তা ভাবিয়ে তুলছে স্বয়ং রিপোর্ট প্রকাশক বিশ্ব ব্যাংক এবং সংশ্লিষ্ট তাত্ত্বিক-গবেষকগণদেরও। অবশ্য দিল্লীর পথে-ঘাটে মধ্যবিত্তের বিষয়টি যে অর্থনৈতিক কারণেরও বাইরের কিছু সেটা নিয়ে কারো দ্বিমত থাকার কথা নয়! বিশ্ব ব্যাংকের সাম্প্রতিক প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গোটা দুনিয়ায় আড়াইশ’ কোটিরও বেশি মানুষের কোনো শৌচাগার নেই। আর তার মধ্যে একশো কোটিকেই মলত্যাগ করতে হয় চার দেয়ালের বাইরে। আর এদের মধ্যে অন্তত ষাট কোটিই ভারতে, যা সে দেশের মোট জনসংখ্যার ৫৩ শতাংশ! আরআরইউনিসেফের সাম্প্রতিক রিপোর্টে নেপালের ক্ষেত্রে এই হার ৪৩ শতাংশ, পাকিস্তানের ক্ষেত্রে ২৯ শতাংশ এবং বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই হার মাত্র ৪ শতাংশ। শৌচাগারের অভাবে বাইরে মলত্যাগ করতে যেতে হচ্ছে এটা তো এই দুনিয়ায় আর শুধু ভদ্রলোকী সমস্যা নয় এ সমস্যা ডেকে নিয়ে আনছে বিভিন্ন পানি ও বায়ুবাহিত রোগসহ শিশুমৃত্যুর। আর এ সমস্যার মূল যে অর্থনৈতিক সচ্ছলতা কিংবা আয়ের বিস্তার নয় তা নিয়ে গবেষণা করেছিলেন, সুস্নাত চৌধুরী যিনি দেখিয়েছেন, ‘ভারতে ধনী-দরিদ্র, শহর-গ্রাম নির্বিশেষে সর্বোপরি স্যানিটেশনের প্রতি অনীহা এর পেছনের অর্থনৈতিক কারণকে প্রধান সমস্যা বলে প্রমাণ করে না বরং এটা সমাজের মধ্যে এস্টাব্লিসড একটা কালচারকেই নির্দেশ করে যে কারণে দেখা যায় জরিমানার ভয় দেখিয়ে কিংবা দেব-দেবীর ছবিওয়ালা টাইলস লাগিয়ে টয়লেট ব্যবহার করতে বাধ্য করতে হয়।’ আর ‘ওয়াটার এইডে’র প্রতিবেদন মতে- ‘Religious and societal mindsets have further aggravated the situation।’ এই গবেষক বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মন্তব্য করেন, ‘দেশের প্রত্যন্ত এক জেলার চাষীর হাতে ফসল বেচে কিছু টাকা এলে তিনি হয়তো বাড়িতে শৌচাগার বানানোর আগে একটা রঙিন টিভি কেনার কথাই ভাববেন। তার কারণ আর কিছুই নয়, প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে বাইরে যাওয়াটাই এসব মানুষের অভ্যাস আর বহু বছরের সেই অভ্যাসটা পাল্টানো খুব কঠিন।’ আর ইন্ডিয়া জুড়ে যে বিতর্কটা রাজনৈতিক মহলেও প্রচলিত সেটা হল, ‘শৌচালয় না দেবালয়, শেষ বিচারে প্রতিধ্বনিত হয় দেবালয়, দেবালয়’। রাজনৈতিকভাবে হয়তো দেবালয় প্রতিষ্ঠাতেই ফায়দা বেশি কিংবা জনগণ দেবালয়ে প্রবেশের জন্য শৌচালয়ের প্রয়োজনটা খুব একটা বোধ করেন না। এটা সত্য যে স্যানিটেশন বিষয়টার সাথে সংস্কৃতির একটা বিরাট সম্পর্ক রয়েছে। এমনকি বাংলাদেশের ক্ষেত্রে খোলা আকাশের নিচে মলত্যাগ করার গড় হার শতকরা ৪ শতাংশ হলেও দেখা যায় অঞ্চলভেদে অর্থনৈতিক ব্যবধান আমলে না নিয়েও এই হারের ভিন্নতা রয়েছে। এক গবেষক বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের একটি সমৃদ্ধ জেলার একটি উপজেলার সাথে দক্ষিণাঞ্চলের একটি উপজেলার স্যানিটেশন নিয়ে একটি গবেষণা চালিয়ে দেখেছেন অর্থনৈতিক বিচারে খুব বেশি দূরত্বে অবস্থান না করলেও শেষোক্ত জেলাটির সাথে পূর্বোক্ত জেলাটার ব্যবধান বিস্তর মাত্রার প্রায় ২৩ শতাংশই বটে। কেন এই শৌচালয় বিমুখতা? বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে এর বিভিন্ন কারণ খোঁজা গেলেও আমি এখানে সুস্নাত চৌধুরীর গবেষণার ফলাফলেই সীমাবদ্ধ থাকব আর বেশি যেটা যোগ করব সেটা হল এই সাংস্কৃতিক কারণটা কীভাবে বিবর্তিত কিংবা পরিবর্তিত হতে পারে। এর জন্য খুব দূরে যেতে চাই না বরং প্রথমই তাকাতে চাই, বাংলাদেশের সাথে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের অবস্থার দিকে। এই তুলনার প্রথম কারণ হলো, পশ্চিমবঙ্গের সাথে বাংলাদেশের সমাজের অতীত সাংস্কৃতিক সাযুজ্যতা এবং দ্বিতীয়ত পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের প্রায় কাছাকাছি অর্থনৈতিক অবস্থা যদিও সংখ্যাতাত্বিক বিচারে এর প্রমাণ পাওয়া খুব সরল হবে না যদিও কিন্তু ভারতবর্ষের এককালের রাজধানী এবং হালের প্রথম সারির মেট্রোপলিটন সিটির রাজ্যের সাথে বাংলাদেশের তুলনা খুব স্বাভাবিক কারণেই প্রত্যাশিত। আর এই তুলনার উদ্দেশ্যে হল ভাষা- সংস্কৃতি ও জীবন-যাত্রার অদূর অতীতের অভিন্নতা এবং ইতিহাসের একটি বাকে মূলত ধর্মবিশ্বাস ও ফিউডাল সোসাইটির জটিল হিসেবের মারপ্যাঁচে এর বিভাজন এবং বিভাজনোত্তর এই দুই অংশের সমাজব্যবস্থার মানসিক পরিবর্তন কিংবা সাদামাটাভাবে সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের ধারণার সাথে এই মলত্যাগের সংস্কৃতি কিংবা জীবনপ্রণালীর কোন সম্পর্ক আছে কিনা সে ‘হাইপোথিসিস’ উত্থাপন করা। তো ২০১২ সালের ইন্ডিয়ার সেন্সাসে’র তথ্য অনুযায়ী পশ্চিমবঙ্গের ৩৮.৬ শতাংশ মানুষ খোলা জায়গায় মলত্যাগ করে থাকে আর বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই হার ৪ শতাংশ। এই হাইপোথিসিসে কিন্তু আমি অর্থনৈতিক অবস্থা এবং রাষ্ট্রের নীতিগত বিষয়টা অস্বীকার করছি না শুধু বিকল্প কারণটির প্রভাব পাশাপাশি দুইটি রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে কি ভূমিকা রেখেছে সেটার অস্বিত্ব খুঁজে দেখার চেষ্টা এবং সেক্ষেত্রে প্রথমেই দেখতে হবে বাংলাদেশের সাথে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের অর্থনৈতিক দূরত্ব বাড়ার সাথে সাথে আর সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে কিরূপ দূরত্ব বেড়েছে এবং এই সাংস্কৃতিক দূরত্বের মূলসূত্র কী? আমি মনে করি এই দূরত্বের সূত্র নির্ধারণের মাধ্যমেই অর্থনৈতিকভাবে দূর্বল এবং ভারতের চেয়ে মাথাপিছু আয়সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দরিদ্র হওয়া স্বত্ত্বেও বাংলাদেশ বিশেষ এই ক্ষেত্রের অর্জনকে ব্যখ্যা করা যাবে। সুস্নাত চৌধুরীর গবেষণালব্ধ ফল অন্তত আমাদের সেই ইঙ্গিতটাই দেয়। আলাউদ্দীন মোহাম্মদ, কবি ও প্রাবন্ধিক alauddin0112@gmail.com (প্রকাশিত মত লেখকের নিজস্ব। এর সঙ্গে rtnn.net -এর সম্পাদকীয় অবস্থানের কোনো মিল আছেই এমন হবার কোনো কারণ নেই। লেখকের বক্তব্যের বিষয়বস্তু বা এর যথার্থতা নিয়ে rtnn.net আইনগত বা অন্য কোনো ধরনের কোনো দায় নেবে না।)
পরকীয়া করতে গিয়ে প্রেমিকার বাড়িতে লাশ November 6, 2013 | Filed under: চলতি খবর,ঢাকার বাইরে | Posted by: নিউজ ডেস্ক/মেহা bograনিউজ ইভেন্ট ২৪ডটকম বগুড়া বগুড়া সদরে পরকীয়া প্রেম করতে গিয়ে প্রেমিকার বাড়িতে লাশ হলে এক প্রেমিক। নিহতের নাম রনি (২৩)। পুলিশ বুধবার সকাল ৮টায় রনির লাশ উদ্ধার করেছে। সে একই গ্রামের আব্দুস সামাদ পাইকড় ওরফে টুনু মিয়ার ছেলে। প্রেমিকার নাম ফেন্সি বেগম। তার স্বামীর নাম আফরোজ। সে দুই সন্তানের জননী বলে জানা গেছে। স্থানীয়রা ধারণা করছে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক থেকে এ ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রনির সাথে পার্শ্ববর্তী মালতিনগর দক্ষিণপাড়ার দুই সন্তানের জননী ফেন্সি বেগমের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল বেশ কিছুদিন ধরে। গত মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে ফেন্সি বেগম রনিকে তার বাসায় ডেকে নিয়ে যায়। এ সময় তার স্বামী বাসায় ছিল না। রাত আড়াইটার দিকে ফেন্সি রনির মাকে ফোন করে তার ছেলে আত্মহত্যা করেছে বলে জানায়। ফেন্সি জানায়, রাতে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। মধ্য রাতে ফেন্সি বেগম বাথরুমে গেলে রনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। খবর পেয়ে রনির বাবা-মা রাতেই ফেন্সির বাড়িতে গিয়ে ছেলের লাশ ফাঁসিতে ঝুলতে দেখে। শাজাহানপুর থানার পুলিশ কর্মকর্তা হাসান জানান, ময়না তদন্তের পর রনির মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। নিউজ ইভেন্ট ২৪ডটকম/০৬ নভেম্বর ২০১৩/১০.৩১/মেহেদী হাসান - See more at: http://www.newsevent24.com/2013/11/06/%e0%a6%aa%e0%a6%b0%e0%a6%95%e0%a7%80%e0%a7%9f%e0%a6%be-%e0%a6%95%e0%a6%b0%e0%a6%a4%e0%a7%87-%e0%a6%97%e0%a6%bf%e0%a7%9f%e0%a7%87-%e0%a6%aa%e0%a7%8d%e0%a6%b0%e0%a7%87%e0%a6%ae%e0%a6%bf%e0%a6%95/#sthash.BRXYbU0X.dpuf
কুকর্ম দেখে ফেলায়….. November 4, 2013 | Filed under: অপরাধ,ঢাকার বাইরে | Posted by: নিউজ ডেস্ক/মেহা kopa_kupiনিউজ ইভেন্ট ২৪ডটকম রংপুর অসামাজিক কার্যকলাপ দেখে ফেলায় ধারালো ছুরি দিয়ে চোখ উপড়ে ফেলে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে এক ব্যাক্তিকে। নিহতের নাম দুলাল। তিনি পেশায় মাছ ব্যবসায়ী। রোববার সকালে কোতয়ালী থানা পুলিশ রংপুর মহানগরীর অদূরে একটি ধানক্ষেত থেকে তার ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় পুলিশ একজনকে গ্রেফতার এবং অপর একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে এসেছে। জানা গেছে, নগরীর পূর্ব নাজিরদিগর এলাকার মালয়েশিয়া প্রবাসী আব্দুল মতিনের স্ত্রী ২ সন্তানের জননী বেবী বেগমের সাথে একই এলাকার মোজাম্মেল হোসেনের পুত্র আশরাফুল আলমের সাথে প্রেম চলে আসছিল বেশ কিছুদিন ধরে। এরই ধারাবাহিকতায় গত শনিবার রাতে বেবী ও আশরাফুল আলমকে একটি ধান ক্ষেতে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলে একই এলাকার মাছ ব্যবসায়ী দুলাল মিয়া (৪৫)। এ ঘটনা যাতে প্রকাশ না পায় সেজন্য বেবী ও আশরাফুল দুজনে মিলে ওই রাতেই দুলাল মিয়াকে কৌশলে ডেকে নিয়ে ধারালো ছুরি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে পেটের নাড়িভুঁড়ি বের করে ফেলে। এতেও তারা ক্ষান্ত না হয়ে দুলাল মিয়ার একটি চোখও উপড়ে ফেলে। হত্যার পর তারা লাশটি ধান ক্ষেতের মধ্যে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। কোতয়ালী থানার এসআই আব্দুর রহিম ঘটনাটি প্রাথমিক তদন্তে বেবী বেগমের সম্পৃক্ততার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে তাকে গ্রেফতার করে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সহযোগি হাসিনা বেগম নামে অপর একজনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। নিউজ ইভেন্ট ২৪ডটকম/০৪ নভেম্বর ২০১৩/০৮.২৫/মেহেদী হাসান - See more at: http://www.newsevent24.com/2013/11/04/%e0%a6%95%e0%a7%81%e0%a6%95%e0%a6%b0%e0%a7%8d%e0%a6%ae-%e0%a6%a6%e0%a7%87%e0%a6%96%e0%a7%87-%e0%a6%ab%e0%a7%87%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a7%9f-%e0%a6%9a%e0%a7%8b%e0%a6%96-%e0%a6%89%e0%a6%aa%e0%a7%9c/#sthash.2AxuAyNw.dpuf
শিক্ষিকাকে ধর্ষণের পর হত্যা করেছে ১৪ বছরের ছাত্র! November 23, 2013 | Filed under: রকমারি | Posted by: নিউজ ডেস্ক/মেহা uk_studentনিউজ ইভেন্ট ২৪ ডটকম রকমারি ডেস্ক ইংল্যান্ডের ড্যানভারে ১৪ বছর বয়সী এক স্কুল ছাত্র তার স্কুলেরই এক শিক্ষিকাকে ধর্ষণের পর হত্যা করেছে। ঘটনাটি গত ২২ অক্টোবরে ঘটলেও বৃহস্পতিবার মামলাটি আদালতে তোলা হয়। জানা গেছে, ফিলিপ সিজম নামের এই স্কুলছাত্র তার ২৪ বছর বয়সী গণিতের শিক্ষিকা কলিন রিটজারকে স্কুলের একটি বাথরুমে নিয়ে প্রথমে ধর্ষণ করে ও পরে হত্যা করে। হত্যার আগে তার ওপর নির্যাতনও করা হয় বলে জানা গেছে। বক্স কাটার দিয়ে কুপিয়ে হত্যার পর কলিনের লাশ মুড়িয়ে স্কুলের পেছনে কাঠের একটি স্তুপের মধ্যে ফেলে রাখা হয়। সূত্র: মেইল অনলাইন নিউজ ইভেন্ট ২৪ ডটকম/২৩নভেম্বর ২০১৩/০৯.১৪/মেহেদী হাসান

বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৩

কত কথাই না বলেছিলেন ম খা আলমগীর 22 Nov, 2013 মহীউদ্দীন খান আলমগীর‘দুর্ঘটনার আগে কিছু মৌলবাদী ও বিএনপির ভাড়াটে লোক সাভারের ভবনটির গেট ও বিভিন্ন স্তম্ভ ধরে নাড়াচাড়া করেছিল। ভবনটি ধসে পড়ার পেছনে এটাকেও একটি কারণ হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে’—সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীরের বক্তব্য এটি। গত ১৪ মাসে নিয়মিত বিরতিতে তিনি এমন বক্তব্য দিয়ে সংবাদ ও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম দখল করে রেখেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে মহীউদ্দীন খান আলমগীরের ক্যারিয়ারের শুরু। ছিলেন দুঁদে আমলা, ঝুড়িতে বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির পিএইচডি, তিন তিনটি স্নাতোকোত্তর ডিগ্রি। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিগত সরকারে তিনি একাধিক মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। শুধু যে নাড়াচাড়া তত্ত্ব দিয়ে ‘খ্যাতি’ পেয়েছিলেন মহীউদ্দীন খান আলমগীর তা-ই নয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন এবং দোষীদের শাস্তি দেওয়া হবে বলে বাহবা পেয়েছিলেন। পারেননি। উল্টো এ বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি তিনি নিহত এই সাংবাদিক দম্পতির দাম্পত্য জীবন সম্পর্কে কটূক্তি করেন সাংবাদিক নেতাদের সামনে। পরে অবশ্য তিনি তাঁর বক্তব্য প্রত্যাহার করে নেন। আর ঘটনাস্থলে উপস্থিত স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু তাঁর পক্ষে সাফাই গান এই বলে যে, ‘মন্ত্রী সরল মনে বলেছেন। কৌশলী হলে এভাবে বলতেন না।’ মহীউদ্দীন খান আলমগীর বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুকের ওপর নির্যাতন চালানো পুলিশ কর্মকর্তা হারুন অর রশিদকে রাষ্ট্রপতির পদক দেওয়ার যৌক্তিকতা তুলে ধরে আরেক বিতর্কের জন্ম দেন। তিনি বলেন, ‘তাঁকে পদক দেওয়ার ক্ষেত্রে এ ঘটনাও বিবেচনায় আনা হয়েছে। আপনারা লক্ষ করবেন, তিনি (হারুন) তাঁর ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করেছেন। ওই ভদ্রলোক যাকে আপনাদের ভাষায় দমন করা হয়েছে , তিনি তো মা-বাবা তুলে গালি দিয়েছেন।’ সাবেক এই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর জন্য অবশ্য নোবেল পুরস্কার দাবি করেছিলেন জয়নুল আবদিন ফারুক। কারণ তিনি ‘পেপার স্প্রে’র প্রচলন করেছেন। ওই পেপার স্প্রে ব্যবহার করা হয়েছিল শিক্ষকদের ওপর, বাম সংগঠনগুলোর হরতালেও। পেপার স্প্রে ব্যবহারে উদ্বেগ জানিয়েছিল আইন ও সালিশ কেন্দ্র। উত্তরে চাঁদপুরের কচুয়ায় বঙ্গবন্ধু ডিগ্রি কলেজের এক অনুষ্ঠানে ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী’ মহীউদ্দীন খান আলমগীর বলেছিলেন, ‘যখন নৈরাজ্য বন্ধ করার জন্য নিরাপত্তাকর্মীরা মাঠে যান, তখন অবৈধ সমাবেশ দমন করতে নিশ্চয় ফুলের মালা নিয়ে যাবে না, বরং দমনের উপকরণ নিয়েই যাবে।’ উৎসঃ প্রথম আলো
Home এই মাত্র পাওয়া, শীর্ষ সংবাদ রাজধানীর ব্যাচেলরদের সাত দিনের মধ্যে বাসা ছাড়ার নির্দেশ পুলিশের রাজধানীর ব্যাচেলরদের সাত দিনের মধ্যে বাসা ছাড়ার নির্দেশ পুলিশের নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা : রাজধানীর বাসা বাড়িতে কোনো মেস, কোয়ার্টার থাকবে না, ভাড়া দেয়া যাবে না কোনো ব্যাচেলর ব্যক্তিকে। যারা আছেন তাদের আগামী সাত দিনের মধ্যে বাসা ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ। সম্প্রতি পুলিশের সদর দফতর থেকে ডিএমপির থানাগুলোকে এমন একটি নির্দেশনা দেয়ায় বিপাকে পড়েছেন সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, নগরীর বাসা বাড়িতে মেস কোয়ার্টারগুলো এখন পুলিশের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বেশ কিছু মেস কোয়ার্টার থেকে বিপুল পরিমাণে বিস্ফোরক দ্রব্য এবং বোমা তৈরির কারখানার সন্ধান পাওয়ায় পুলিশের টনক নড়েছে। ওইসব বাসায় আশ্রয় নিয়ে হরতালে নাশকতা সৃষ্টির পরিকল্পনার অভিযোগে জামায়াত-শিবিরের বেশ কিছু নেতাকর্মীকেও গ্রেফতার করেছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এ কারণে নগরীর প্রতিটি থানা এলাকায় কোনো কোনো বাসা বাড়িতে মেস বা ব্যাচেলরদের ভাড়া দেয়া হয়েছে। তার একটি তালিকা ও ইতোমধ্যে তৈরি করেছে নিজ নিজ থানার কর্মকর্তারা। ওই তালিকা অনুযায়ী অনেক বাড়ি মালিককে ব্যাচেলরদের উঠিয়ে দেয়ার নির্দেশও দিয়েছে পুলিশ। এদিকে পুলিশের এমন সিদ্ধান্তের কারণে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে নগরীর মেস কোয়ার্টার বাড়ি মালিকদের মধ্যে। অন্যদিকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর এমন নির্দেশনায় মেস কোয়ার্টারের ব্যাচেলরদের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম ক্ষোভ আর হতাশা। অনেকেই ইতোমধ্যে নিকটস্থ আত্মীয়দের বাসায় ধরনা দিচ্ছেন। এদিকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হঠাৎ এমন সিদ্ধান্তকে আইন বহির্ভুত এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছেন মানবাধিকারের কয়েকটি সংগঠন। মানবাধিকার কর্মকর্তারা বলছেন, জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে বিকল্প চিন্তা করা উচিত। কতিপয় অপরাধীর কারণে এমন ঢালাওভাবে সবাইকে ভোগান্তিতে ফেলা, এটা ঠিক নয়। এতে করে লাখ লাখ ব্যাচেলর গৃহহীন হয়ে রাস্তায় থাকতে হবে। কারণ পুলিশের নিষেধাজ্ঞার কারণে কোনো বাড়ির মালিক ব্যাচেলরদের মেস ভাড়া দেবেন না। এদিকে এক জরিপে দেখা গেছে নগরীতে প্রায় ৪৫ হাজার বাসা-বাড়িতে মেস কোয়ার্টার আছে। এতে প্রায় সাড়ে ১০ লাখ ব্যাচেলর বসবাস করছেন। এরমধ্যে ছোট-বড় প্রায় চার হাজার ৫৫৬টি মেস কোয়ার্টার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নজরদারিতে রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে ওইসব মেস কোয়ার্টারের ব্যাচেলর সদস্যদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলে গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়। গোয়েন্দা সূত্রটি আরো জানায়, সম্প্রতি বিরোধী দলের ডাকা হরতালের আগে ও পরে রাজধানীজুড়ে নাশকতা শুরু করেছে দুষ্কৃতকারীরা। এ সময় রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে, বিচারপতি, মন্ত্রী, এমপি, দুদক চেয়ারম্যান ও ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ নেতাসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বাসার সামনে ককটেল বিস্ফোরণ, বাসে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়ে মারার মতো ঘটনা ঘটিয়েছে। এ সব ঘটনায় গোটা নগরজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আর ওইসব নাশকতার পরিকল্পনা করা হয় নগরীর বিভিন্ন মেসে- এমন তথ্য গোয়েন্দাদের কাছে রয়েছে। তাই জনগণের নিরাপত্তার স্বার্থে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। এ ব্যাপারে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আলমাস প্রাইভেট লিমিটেডের অফিস সহকারী মিরপুর টোলাবাগের একটি মেস বাসার ব্যাচেলর সদস্য ফারুখ আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, গতকাল আমার বাড়ির মালিক মহব্বত আলী আমাকে ডেকে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে মেস ছেড়ে দিতে হবে। কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা পুলিশের নির্দেশ। তিনি হাতাশা ব্যক্ত করে বলেন, এই মুহূর্তে আমি কোথায় যাবো ? আমার কোনো আত্মীয়-স্বজন ঢাকায় নেই, এখন আমাকে থাকার সমস্যার কারণে চাকরি ছেড়ে বাড়ি চলে যেতে হবে। এদিকে পল্লবীর বি ব্লকের ১৩ নম্বর রোডের বাড়ির মালিক আবু বক্কর অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, আমার বাড়িতে তিনটি মেস রুমে ব্যাচেলর ভাড়া থাকেন। পুলিশ এসে আমাকে তাদের উঠিয়ে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এখন আমি কি করবো। তিনি বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর এটা কেমন সিদ্ধান্ত? আমি এখন কোথায় ভাড়াটিয়া পাবো ? এ বিষয়ে মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক এলিনা খান বলেন, এ ধরনের সিদ্ধান্তে চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, এটি কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের হল নয়, যে কোনো সময় বন্ধ এবং খুলে দিতে পারেন। তাছাড়া ব্যাচেলরদের মধ্যে নারী-পুরুষ উভয় আছে। শিক্ষার্থী এবং চাকরিজীবী উভয় আছে। হঠাৎ করে বাসা ছেড়ে দেয়ার কোনো নির্দেশ দেয়া যায় না। এমন নির্দেশনায় সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়বেন চাকরিজীবীরা ও শিক্ষার্থীরা। কারণ একজন শিক্ষার্থীর পরীক্ষা থাকতে পারে। এ সময় বাসা পরিবর্তন করা কি করে সম্ভব। তিনি আরো বলেন, ঘনবসতি এই নগরীতে কোনো ব্যক্তি তার ব্যাচেলর একজন আত্মীয়কে হঠাৎ করে জায়গা দিতে পারবেন না। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর এমন সিদ্ধান্ত আইন বর্হিভূত বলে তিনি মন্তব্য করেন। এ ব্যাপারে পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার ইমতিয়াজ আহমেদ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বাসা বাড়িতে মেস কোয়ার্টার বা ব্যাচেলর থাকতে পারবেন না এমন একটি নির্দেশ দেয়া হয়েছে বাড়ির মালিকদের। তবে সেটি নির্বাচনকালীন সময় পর্যন্ত। এরপর তারা আবার থাকতে পারবে। কারণ সম্প্রতি নগরীর বিভিন্ন এলাকার মেসে পরিচয় গোপন করে আশ্রয় নেয়। পরে সেখানে থেকে দুর্বৃত্তরা হরতালে নাশকতা সৃষ্টির পরিকল্পনা করে থাকে। তখন ওই অপরাধীকে আটক করতে গেলে সেখানে নিরাপরাধ কিছু লোককেও আটক করতে হয়। তিনি বলেন, দেখা গেছে একটি মেস বাসায় পাঁচজনরে মধ্যে চারজনই নিরাপরাধ, কিন্তু একজন ব্যক্তিই তাদের মধ্যে থেকে গুরুতর অপরাধের সঙ্গে জড়িত। তখন জিজ্ঞাসাবাদের স্বার্থে ওই মেসের সবাইকেই পুলিশ আটক করে। তিনি আরো বলেন, ইদানীং নাশকতাকারীরা তাদের পরিচয় গোপন করে বিভিন্ন বাসা বাড়িতে মেস কোয়ার্টার করে ভাড়া থাকেন। ওই ব্যাচেলর ব্যক্তিটি আসলে কি ভালো, না খারাপ এটি লক্ষ্য রাখার দায়িত্ব ওই বাড়ি মালিকের। একটি অপরাধ ঘটে গেলে তখন বাড়ির মালিকদের টনক নড়ে। এ ছাড়া আগে থেকে কোনো বাড়ির মালিক ব্যাচেলর ভাড়া দেয়ার আগে ভাড়াটিয়াদের পরিচয় জানার চেষ্টা করে না। তাই কিছু কিছু সময়ে অপরাধ না করেও বাড়ির মালিকরাও অভিযুক্ত হয়ে পড়েন। এদিকে সম্প্রতি বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের ডাকা বিভিন্ন হরতালের রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মেস থেকে অসংখ্য বোমা তৈরির কারখানার সন্ধান পেয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সেখান থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বোমা তৈরির সরঞ্জামসহ বিভিন্ন বিস্ফোরক দ্রব্য। গত ৬ নভেম্বর হরতাল চলাকালীন ৯/২ নম্বর আদাবর এলাকার একটি ব্যাচেলর ফ্ল্যাট থেকে তিন শিবিরকর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে ল্যাপটপ, কাচের বোতল, ১০টি হেলমেট, লোহার পাইপসহ ১৭ লিটার পেট্রল উদ্ধার করা হয়। তারা তিনজনই ছাত্রশিবিরের সঙ্গে জড়িত। চারতলা ওই ভবনে প্রতিটি ফ্লোরে দুটি করে ফ্ল্যাট রয়েছে। প্রত্যেকটি ফ্ল্যাটে মেস বাসা বানিয়ে ব্যাচেলরদের ভাড়া দেয়া হয়েছে। গত ১৩ নভেম্বর মিরপুরে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক দ্রব্য, ব্যানার, জিহাদি বই, অন্যান্য সামগ্রীসহ ১৫ জন জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীকে আটক করে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে তিনটি পেট্রল বোমা, সাতটি ককটেল, ছয়টি ব্যানার, টাকা সংগ্রহের রশিদ ও জিহাদি বই উদ্ধার করা হয়। পুলিশের দাবি এটি শিবিরের একটি অস্থায়ী ঘাঁটি। এখান থেকে তারা মিরপুরের বিভিন্ন স্থানে নাশকতার পরিকল্পনা করতো। পরে পুলিশ এখান থেকে জামায়াতে ইসলামীর মিরপুর থানা পশ্চিমের সভাপতি আব্দুল মান্নান এবং মিরপুর থানা ছাত্রশিবিরের যুগ্ম সম্পাদক ফারুখ আহমেদসহ ১৫ জনকে আটক করেছে। গত ১৭ নভেম্বর পল্লবীতে তিনটি তাজা ককটেল, বিপুল পরিমাণ ককটেল তৈরির সরঞ্জাম, গান পাউডার ও মার্বেলসহ দুই শিবিরকর্মীকে আটক করে। তারা দুজনই বোমা তৈরির কারিগর বলে পুলিশের দাবি। এ সময় তাদের কাছ থেকে তিনটি তাজা ককটেল, ককটেল তৈরির সরঞ্জাম, দুটি অর্ধেক বানানো ককটেল, পাঁচটি কৌটা, বিভিন্ন সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়াও মৌচাকের একটি পাঁচতলা বাড়ির চারতলা দুটি ফ্ল্যাট থেকে ২০টি ককটেল, ককটেল তৈরির সরঞ্জামসহ ১২ শিবির কর্মীকে আটক করে পুলিশ।
ঢাকায় লিভ টুগেদার বাড়ছে Print Friendly and PDF ঢাকায় লিভ টুগেদার বাড়ছে। মধ্যবিত্ত ঘরের যুবক-যুবতীরা লিভ টুগেদারে আগ্রহী হয়ে উঠছে। এ কারণে বাড়ছে খুনের মতো অপরাধও। গ্রাম থেকে আসা অনেক শিক্ষার্থীও ঢাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে লিভ টুগেদার করছে অনেকে। সমাজবিজ্ঞানীরাও স্বীকার করছেন পাশ্চাত্য দুনিয়ার ওই ধারণা অনেকটা সংক্রামক ব্যাধির মতো ছড়িয়ে পড়ছে ঢাকায়। এ রকম এক জুটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। একই বিভাগে, একই ক্লাসে পড়তেন। গভীর বন্ধুত্ব তখন থেকেই। দু’জনই মেধাবী। রেজাল্টও ভাল। বন্ধুটি এখন ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। বান্ধবী পিএইচডি করছেন, এখনও শেষ হয়নি। থাকছেন বনানী এলাকার একটি অভিজাত ফ্ল্যাটে। ফ্ল্যাটটিও নিজেদের। লিভ টুগেদার করছেন। নিজেরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিয়ে করবেন না। দু’জনই চেষ্টা করছেন ইউরোপের একটি দেশে যেতে। বিত্তবান ঘরের সন্তান তারা। বন্ধুটির বাড়ি ছিল ফেনীতে, বান্ধবীর ঢাকায়। শাহানা তার নতুন নাম। এ নামে কেবল জর্জই তাকে চেনে। জর্জকে ওই নামে অন্য কেউ চেনে না। এটা শাহানার দেয়া নাম। একে অপরকে দেয়া নতুন নামেই তাদের বাড়ি ভাড়া নেয়া উত্তরা এলাকায়। চাকরিজীবী দু’জনই। এক সময়ে চাকরি করতেন এই সংস্থায়। সেখান থেকে পরিচয় ঘনিষ্ঠতা। এখন তারা চাকরি করছেন পৃথক দু’টি বৈদেশিক সাহায্য সংস্থায়। উচ্চ বেতনে চাকরি। অফিসের গাড়ি। শাহানা ইংরেজি সাহিত্যে এমএ করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। জর্জ পড়াশোনা করেছেন ভারতের নৈনিতালে, বিজ্ঞান অনুষদের একটি বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা নিয়েছেন। বছর পাঁচেক আগে ঢাকায় ফিরে চাকরি নিয়েছেন। লিভ টুগেদার করছেন। বিয়ের প্রতি আগ্রহ নেই তাদের। শাহানা ইউরোপ-আমেরিকায় পাড়ি জমাতে চান। সেখানে তার পরিবারের বেশির ভাগ লোক বসবাস করছে। শাহানার চিন্তা বিয়ে মানেই একটি সংসার, ছেলেমেয়ে, স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি। এখনই এগুলোর কথা ভাবতে গেলে তার ক্যারিয়ার হোঁচট খাবে, বিদেশে যাওয়া না-ও হতে পারে। এ কথাগুলো সে খুলে বলেছে জর্জকে। জর্জ রাজি হওয়ায় এক সঙ্গে থাকছেন তারা চার বছর ধরে। খাওয়া-দাওয়ার খরচ দু’জনে মিলে বহন করেন। সব কিছুই হয় দু’জনে শেয়ার করে। মনোমালিন্য হয় না তা নয়, হয় আবার তা মিটেও যায়। এভাবেই চলছে চার বছর ধরে। একটি মেডিকেল কলেজের শেষ বর্ষে পড়াশোনা করছেন তারা। বসবাস করছেন ধানমন্ডির একটি ফ্ল্যাটে। ছেলেমেয়ে দুজনই ধনাঢ্য পরিবারের। দু’বছর ধরে লিভ টুগেদার করছেন। পড়শিরা জানে, স্বামী-স্ত্রী। অন্যদের সঙ্গে সেভাবেই নিজেদের পরিচয় দেন। যশোরের একটি গ্রাম থেকে ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে এসেছেন ওরা। পরিচয় তাদের স্কুল থেকে। ঢাকায় এসে প্রথম দু’বছর দু’জন থাকতেন আলাদা বাড়ি ভাড়া করে। এখন দু’জন মিলে থাকছেন একই বাসায়। ভাড়া দেন দু’জনে শেয়ার করে। গত এক বছর ধরে লিভ টুগেদার করছেন তারা। অনুসন্ধানে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকায় লিভ টুগেদারের সংখ্যা বাড়ছে উল্লেখযোগ্য হারে। ঢাকার প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজগুলোর ছাত্র-শিক্ষক, বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা এমনকি সাধারণ কর্মচারীরা পর্যন্ত লিভ টুগেদার করছে। শোবিজে লিভ টুগেদার এখন সংক্রামক ব্যাধির মতো ছড়িয়ে পড়ছে। জাতীয় ভাবে পরিচিত শোবিজের অনেক স্টার এখন লিভ টুগেদার করছেন। দেশব্যাপী পরিচিত দু’জন নৃত্যশিল্পীর লিভ টুগেদারের বিষয়টি ওপেন সিক্রেট শোবিজে। একজন পরিচিত কণ্ঠশিল্পী গত পাঁচ বছর ধরে লিভ টুগেদারের পর আপাত বিচ্ছেদ ঘটিয়ে এখন থাকছেন আলাদা। শোবিজের নাট্যাঙ্গনের চার জোড়া নতুন মুখ লিভ টুগেদার করছেন বছরখানেক ধরে। তাদের পরিচিত ও নিকটজনরা জানেন তাদের লিভ টুগেদার সম্পর্কে। নিজেদের ক্যারিয়ারের কথা চিন্তা করে তারা কেউ আপাতত বিয়ের কথা ভাবছেন না। শোবিজে ছেলেমেয়ে উভয়ের উচ্চাসনে যাওয়ার পথে বিয়েকে একটি বড় বাধা মনে করেন তারা। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, গত দুই তিন বছরের মধ্যে ঢাকায় লিভ টুগেদারেরও অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আগে লিভ টুগেদারের বেশির ভাগ ছিল সমাজের উচ্চ স্তরের ছেলেমেয়েদের মধ্যে। এখন লিভ টুগেদারের প্রবণতা বেড়েছে মধ্যবিত্ত সমাজে। সদ্য গ্রাম থেকে এসে ঢাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়া ছেলেমেয়েরা লিভ টুগেদার করছে। কেবলমাত্র পড়াশোনা শেষ করে কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করেছে কিন্তু তাদের কাঙিক্ষত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি এমন অনেক মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলেমেয়েরা ঢাকায় লিভ টুগেদার করছে। ঢাকার একটি নামকরা মেডিকেল কলেজের একজন শিক্ষার্থী এই প্রতিবেদককে বলেন, তার জানা মতে তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কম করে হলেও এক শ’ জোড়া ছেলেমেয়ে লিভ টুগেদার করছে। বিষয়টি তাদের কাছে ওপেন সিক্রেট হলেও কেউ কাউকে নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করে না। ওই শিক্ষার্থী লিভ টুগেদারকে খারাপ কিছু মনে করেন না। তার ভাষায় দু’জনের মতের মিলেই তারা লিভ টুগেদার করে। এখানে অপরাধ কিছু নেই। ঢাকার ঐতিহ্যবাহী একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ ক’জন শিক্ষক-শিক্ষিকা লিভ টুগেদার করছেন। তাদের লিভ টুগেদারের কথা জানে তাদের অনেক ছাত্রও। ওই শিক্ষকদের একজন তার এক নিকটজনের কাছে বলেছেন, লিভ টুগেদারকে তিনি বরং গর্বের বিষয় মনে করেন। ঢাকায় লিভ টুগেদার করছেন, বর্তমানে বসবাস করছেন গুলশান এলাকায়। চাকরি করেন একটি বিদেশী সাহায্য সংস্থায়। এর আগে তার কর্মস্থল ছিল পাপুয়া নিউগিনিতে। তিন বছর ধরে ঢাকায় আছেন। লিভ টুগেদার করছেন তারই এক সহকর্মী নারীর সঙ্গে। ওই ভদ্রলোক এই প্রতিবেদককে বলেন, আমরা দু’জনই বাংলাদেশী। তবে আমাদের কর্মক্ষেত্র আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দেশে পোস্টিং হয়। এখন বাংলাদেশে আছি, এক বছর পর অন্য কোথাও যেতে হতে পারে। সে কারণে আমরা দু’জনই ঠিক করেছি লিভ টুগেদার করতে। তাছাড়া, লিভ টুগেদারের ধারণা খারাপ নয়, আমরা কেউ কারও বোঝা নই, আইনি বন্ধনও নেই। কারও ভাল না লাগলে তিনি এক সঙ্গে না-ও থাকতে পারেন। এতে কোন জটিলতা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা নেই। ঢাকায় লিভ টুগেদার করছেন এমন কয়েকজনের সঙ্গে আলাপ করে এ প্রবণতার কিছু কারণ জানা গেছে। তাদের মতে, যে সব মেয়ে নিজেদের ক্যারিয়ার নিয়ে চিন্তা করে, নিজেদেরকে ইউরোপ-আমেরিকা বা দেশের অভ্যন্তরে প্রতিষ্ঠিত করতে চায় তারা এখনই বিয়ে করে ছেলেমেয়ের ভার নিতে চায় না। সংসারের ঘানি টানতে চায় না। ওই সব মেয়ে নিজেদেরকে বিবাহিত বলে পরিচয় দিলে তাদের ক্যারিয়ার গড়তে সমস্যা হতে পারে বলে মনে করে। এমন অনেক ছেলেও আছে যারা ওই সব মেয়ের মতো ধারণা পোষণ করে না তারা কেবলমাত্র জৈবিক কারণে লিভ টুগেদার করছে। অর্থবিত্তে বা চাকরিতে প্রতিষ্ঠিত এমন অনেকে লিভ টুগেদার করছে কেবলমাত্র সমাজে তার একজন সঙ্গীকে দেখানোর জন্য, নিজের একাকিত্ব ও জৈবিক তাড়নায়। অনেকে বিয়ের প্রতি প্রচণ্ড রকম অনাগ্রহ থেকেও লিভ টুগেদার করছে। ঢাকা শহরের একজন প্রতিষ্ঠিত শিল্পপতির কন্যা ঢাকায় লিভ টুগেদার করছেন একজন বিদেশী নাগরিকের সঙ্গে। ওই শিল্পপতির কন্যার প্রথম বিয়ের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকে সংসার জীবনের পাট চুকিয়ে এখন বিদেশী নাগরিকের সঙ্গে লিভ টুগেদার করছেন। সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকায় ব্যাপক হারে বেড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের ছেলেমেয়েদের লিভ টুগদোর। ওয়েস্টার্ন সোসাইটির প্রতি এক ধরনের অন্ধ আবেগ ও অনুকরণের পাশাপাশি জৈবিক চাহিদা মেটাতে তারা লিভ টুগেদার করছেন। আবার ঘন ঘন তাদের লিভ টুগেদারে বিচ্ছেদও ঘটছে। সহসা আলাদা হয়ে যাচ্ছে। ঘটছে খুনের মতো অপরাধ। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, গত এক বছরে রাজধানীতে দশটি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। পুলিশি অনুসন্ধানে শেষ পর্যন্ত বেরিয়ে এসেছে ওইসব হত্যাকাণ্ডের পেছনে ছিল লিভ টুগেদারের বিড়ম্বনা। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে খুনের শিকার হয়েছে মেয়েরা। দেখা গেছে, স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এরা বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করছে। এক পর্যায়ে মনোমালিন্য বা মেয়েটি গর্ভবতী হয়ে পড়লে তাকে খুন করে পালিয়েছে ছেলেটি। চলতি বছর জুলাই মাসে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় খুন হয় সুরাইয়া নামের এক যুবতী। তিনি চাকরি করতেন একটি বেসরকারি সংস্থায়। তাকে খুন করে বাসায় লাশ রেখে বাইরে থেকে তালা বন্ধ করে চলে যায় যুবক সুমন রহমান। পরে জানা যায়, প্রায় বছর খানেক ধরে লিভ টুগেদার করতেন সুমন ও সুরাইয়া। এপ্রিল মাসে এক অজ্ঞাত তরুণীর লাশ পাওয়া যায় গাজীপুরের শালবন এলাকায়। পুলিশ অনুসন্ধানে জানা যায়, উত্তরা এলাকায় একটি বাড়িতে দুই-তিন বছর ধরে এক যুবকের সঙ্গে সে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ভাড়া থাকতো। মে মাসে রাজধানীর গুলশান এলাকায় বাসার ভেতরে এক তরুণীকে খুন করে পালিয়ে যায় ঘাতক। তারাও ভাড়া থাকতো স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে। মে মাসে রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকা থেকে এক তরুণীর গলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে জানা যায়, ঢাকার একটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ওই তরুণী লিভ টুগেদার করতো তারই এক বন্ধুর সঙ্গে। মেয়েটি গর্ভবতী হয়ে পড়লে মনোমালিন্য শুরু হয় তাদের মাঝে। শেষে মেয়েটিকে খুন করে পালিয়ে যায় বন্ধুটি। গত ১লা নভেম্বর রর‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয় ম্যারেজ মিডিয়ার দুই পার্টনার। ফরিদপুর শহরের একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে একই শহরের আরেকটি মধ্যবিত্ত ঘরের ছেলে দীর্ঘ এক বছরেরও বেশি সময় ধরে স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে লিভ টুগেদার করছে। পারভীন নামের মেয়ে ও আরিফ নামের ছেলেটি অকপটে স্বীকার করেছে তারা লিভ টুগেদার করছে এবং এক সঙ্গে ম্যারেজ মিডিয়ার ব্যবসা করছে। ঢাকাতে লিভ টুগেদার বেড়ে যাওয়া সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. শাহ এহসান হাবীব বলেন, বর্তমান গ্লোবালাইজেশনের প্রভাবে নানা ধরনের মুভি সিনেমাডকুমেন্টারি আমাদের সমাজমানসে পাশ্চাত্য জীবনের নানা দিক প্রভাব ফেলছে, অনেকে সেটা গ্রহণ করছে। তার সঙ্গে আমাদের সমাজে ইন্ডিভিজ্যুয়াল বা ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যবাদের সৃষ্টি হয়েছে। মানুষের চিন্তা ব্যক্তিকেন্দ্রিক হয়ে যাচ্ছে। সে কারণে লিভ টুগেদারের সংখ্যা বাড়ছে। এছাড়াও অনেক যুবক-যুবতী এখন ফ্যামিলিকে একটা বার্ডেন মনে করে, বিয়েকে তাদের ক্যারিয়ারের অন্তরায় মনে করে। দেখা যাচ্ছে, এরা বিয়ের চেয়ে লিভ টুগেদারকে বেশি পছন্দ করছে। এতে তাদের জৈবিক চাহিদাও মিটছে আবার সামাজিক নিরাপত্তাও পাচ্ছে। তারা সুখে দুঃখে একজন আরেক জনের সঙ্গী হচ্ছে। মধ্যবিত্তদের লিভ টুগেদারে আগ্রহী হয়ে ওঠা সম্পর্কে তিনি বলেন, ঢাকা শহরে এখন বাড়ি ভাড়া একটি বড় সমস্যা। বাইরে থেকে পড়তে আসা বা চাকরি করতে আসা যুবক বা যুবতীকে বাড়ির মালিক আলাদা আলাদা বাড়ি ভাড়া দিতে চায় না। সে ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, এরা স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বাড়ি ভাড়া নিয়ে এক সঙ্গে থাকছেন, লিভ টুগেদার করছেন। এতে তাদের জৈবিক চাহিদাও মিটছে আবার সামাজিক নিরাপত্তাও থাকছে। আবার অনেক ছেলেমেয়ে মনে করছে লিভ টুগেদার করে কয়েক বছর কাটিয়ে দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়ে তারা আবার অবিবাহিত পরিচয়ে সমাজে ফিরে যাবে যাতে সমাজে তাদের মর্যাদা ঠিক থাকে। তিনি বলেন, তবে এতে সমস্যা হচ্ছে সমাজে এক ধরনের ক্রাইম তৈরি হচ্ছে, কোন কারণে বনিবনা না হলে খুন হয়ে যাচ্ছে মেয়ে বা ছেলেটি। বিডি টুয়েন্টিফোর লাইভ ডট কম/সজিব/স.স. ১:৪৭ এএম
বিয়ের আগেই অন্তঃসত্ত্বা যারা! 21 Nov, 2013 শিক্ষা-দীক্ষা, প্রযুক্তি অনেক ক্ষেত্রেই ভারতের উন্নতির তালিকা বেশ দীর্ঘ। তবে 'সেক্স'র মতো বিতর্কিত কিছু বিষয়ে ভারত কি আসলেই এগিয়েছে? বিয়ের আগেই সেক্স এমনকি গর্ভধারণের বিষয়টি এখনো কি খুব স্বাভাবিক দৃষ্টিতে দেখার সময় এসেছে? আসলে এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করা কষ্টকর। কিন্তু বিয়ের আগেই গর্ভধারণের বিষয়টি সকলের মনেই নাড়া দেয়। আর এটি যদি হয় বলিউডের কোনো তারকার ক্ষেত্রে, তাহলে তো আর কোনো কথাই নেই। বিয়ের আগেই সন্তান ধারণ করেছেন, বলিউডের এমনই কিছু বিউটিদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এসব তারকাদের বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার সময় এবং সন্তান জন্ম দেয়ার সময়ের মধ্যে রয়েছে তারতম্য। এ তালিকায় শুরুতেই রয়েছে শ্রীদেবী। বলিউডের এ বিউটি কুইন এবং বনি কাপুরের বিয়ের ঘোষণা দেয়ার পরেই বিষয়টি সকলের নজরে আসে। এতো তড়িঘড়ি করে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়ার পেছনে কারণ কি হতে পারে, এ প্রশ্নে জবাবে মুখ খোলেননি শ্রীদেবী। কিন্তু বিয়ের সাত মাসের মাথায় সন্তান জন্ম দিয়ে সব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দেন এই বলিউড বিউটি। তখন অনেকেই মুখ চেপে হেসেছিলেন কিন্তু কিছু বলতে পারেননি। কারণ শত হলেও তো তিনি শ্রীদেবী! শ্রীদেবীর পরে এ তালিকায় রয়েছেন সেলিনা জেটলি। বলিউডের এ সেক্সি লেডির সকল সিদ্ধান্তই যেনো অনেক বেশি জলদি। ২০১১ সালের জুলাইতে হঠাৎ করেই বিয়ের ঘোষণা দিয়ে বসেন এ অভিনেত্রী। চটজলদি বিয়ের কারণ জানতে চাইলে সেলিনার উত্তর, তার দাদী শাশুড়ির ইচ্ছাতেই এমনটি হয়েছে। যদিও এসময়ে ইন্ডাস্ট্রিতে তার গর্ভধারণের কথাটি ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু তিনি এটিকে 'রাবিশ' বলে উড়িয়ে দেন। বিয়ের মাত্র তিন মাসের মাথায় সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে এ অভিনেত্রী নিজেই টুইটারে জমজ সন্তানের জন্যে সকলের শুভকামনা প্রত্যাশা করেন। অবশেষে গত বছরের মার্চে ফুটফুটে জমজ সন্তানের জন্ম দেয় সেলিনা। এখন বিয়ে এবং সন্তানের পৃথিবীতে আসার সময়ের হিসাব করে দেখলে আপনি নিজেই উত্তর পেয়ে যাবেন। কঙ্কনা সেন শর্মা হঠাৎ বিয়ের সিদ্ধান্তে সকলে চমকিত হলেও বুঝে নিতে ভুল করেনি কেউ। রণবীর সৌরের সঙ্গে বিয়ের অল্প দিন পরেই এক পার্টিতে তাদের মা-বাবা হওয়ায় খবরটি সকলের সামনে আসে। কিন্তু নাছোড়বান্দা মিডিয়া এর আগেই এ সংক্রান্ত মুখরোচক খবর তৈরিতে মত্ত হয়ে ওঠে। তবে বিয়ের কয়েকমাস পরেই সন্তান জন্ম দিয়ে গুজবকে বাস্তবে পরিণত করেন কঙ্কনা।বলিউডে বিয়ের আগেই সন্তানের মা হয়েছেন এ তালিকায় আরও আছেন মহিমা চৌধুরী এবং নীনা গুপ্তা। গত কয়েক মাসে হঠাৎ করেই বিয়ের পিড়িতে বসেছেন কারিনা, বিদ্যা বালানসহ বেশ কয়েকজন অভিনেত্রী। মাসখানেক পর তাদের নিয়ে আবার কোন রসালো সংবাদ প্রকাশ হয় কিনা সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন এখন অনেকেই। সূত্র: গোমোলো.কম ও টক্কিজ

মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর, ২০১৩

what a game it is ? সর্বদলীয় সরকারে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন নেই? 19 Nov, 2013 ‘নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকারের মন্ত্রিসভা’য় এখনো যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন মিলেনি। যুক্তরাষ্ট্রের ঢাকায় অবস্থিত দূতাবাস থেকে প্রকাশ্যে বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়নি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের গতিবিধি, রাজনৈতিক আচরণ, বিশেষ করে ঢাকায় নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ড্যান মজিনার রহস্যজনক কর্মকাণ্ডে এটা মহাজোটের নীতিনির্ধারকদের কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ‘সরিয়ে দেয়া’, মহাজোট সরকারে রাশিয়াপন্থী বামদের প্রাধান্য থাকা, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ‘গুর্য়াতুমির’ কারণে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের মহাজোটের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক ভালো নয়। সূত্র জানায়, ‘সর্বদলীয় সরকারের মন্ত্রিসভা’য় বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের জোটের প্রতিনিধিত্ব না থাকায় সদ্য শপথ নেয়া ‘সর্বদলীয় মন্ত্রিসভার’ প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন নেই। ‘আওয়ামী লীগের নির্বাচন পদ্ধতি’তে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না বলেও মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্রের ঢাকাস্থ দূতাবাসের কয়েক কর্মকর্তা। নির্বাচনে বিএনপিসহ ১৮ দলের জোটের অংশ নেয়ার বিষয়ে এখনো নিশ্চয়তা না থাকা, বিরোধী দলকে নির্বাচনের বাইরে রাখতে ক্ষমতাসীদের কৌশলের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন নেই সদ্য গঠিত ‘সর্বদলীয় সরকারের মন্ত্রিসভা’র প্রতি। এছাড়া বিএনপির সঙ্গে গত কয়েক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্ক ভালো, রাজনীতি পাড়ায় কথাটা প্রচলিত আছে। সূত্রমতে, ক্ষমতাসীন মহাজোটের পক্ষ থেকে প্রকাশ্যে যুক্তরাষ্ট্রকে এক ধরনের ‘অগুরুত্বপূর্ণ দেশ’ হিসেবে বার্তা দেয়ার চেষ্টা করা হলেও ভেতরে সরকারের নীতিনির্ধারকরা দেশটির দৃষ্টিভঙ্গিকে বিবেচনায় না এনে পারছেন না। যুক্তরাষ্ট্র আগামী সংসদ নির্বাচনকে সমর্থন না করলে জাতিসংঘ, ইউরোপিয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর অবস্থান কী হবে, এ নিয়ে ক্ষমতাসীনরা চিন্তিত। তাই ‘সর্বদলীয় সরকারের মন্ত্রিসভা’র প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা চলছে। সূত্রমতে, মহাজোটকে দেশ, বিদেশে বেকায়দায় ফেলতে চাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি ইউরোপিয় ইউনিয়নেও। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র এখন টার্গেট করেছে বাংলাদেশের গামের্ন্ট খাতকে। গার্মেন্ট খাতে অসন্তোষ বাঁধিয়ে বিদেশে বাংলাদেশের বাজার নষ্ট করতে চাচ্ছে। এতে যুক্তরাষ্ট্র সফল হলে ক্ষমতাসীন মহাজোট বেকায়দায় পড়বে। বেতন ভাতা বাড়ানোর পরও প্রতিদিন গামের্ন্টকর্মীদের অন্তোষ, বিক্ষোভ হচ্ছে এরই অংশ হিসেবে। বিদেশি একটি দেশের গোয়েন্দা সংস্থাও এতে যুক্তরাষ্ট্রকে সহায়তা করছে বলে সূত্র উল্লেখ করে। আজ মঙ্গলবারও পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভের কারণে ঢাকার সাভার, আশুলিয়া ও গাজীপুরে ১২০টির মতো পোশাক কারখানা বন্ধ ছিল। তথ্যমতে, পোশাক কারখানাগুলোতে নিরাপদ কর্মসংস্থান আছে কী না, তা খতিয়ে দেখতে আমেরিকান ও ইউরোপিয় ব্র্যান্ডগুলো নিয়ে গঠিত দুটি জোট গতকাল সোমবার কলহে লিপ্ত হয়েছে। ইউরোপিয় কমিটির এক কর্মকর্তা গতকাল অভিযোগ করেন, বাংলাদেশের কয়েকশ’ কারখানার কর্মপরিবেশ শ্রমিকবান্ধব করতে আমেরিকান জোটটি কোনো ধরনের অর্থ খরচ না করে ইউরোপিয়দের কাঁধে ভর করে পার পেয়ে যেতে চাইছে। ‘দ্য নিউইয়র্ক টাইমস’র আজ মঙ্গলবারের এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। রানা প্লাজা ধসে এক হাজার ১৩৪ জন শ্রমিক নিহত, কয়েক হাজার শ্রমিক চিরতরে প্রতিবন্ধী হয়ে যাওয়ার ঘটনার পর আমেরিকা ও ইউরোপের ব্র্যান্ডগুলো কারখানা পরিস্থিতি পরিদর্শনের জন্য দুটি জোট গঠন করে। ‘অ্যাকর্ড অন ফায়ার অ্যান্ড বিল্ডিং সেফটি ইন বাংলাদেশ’ নামের ইউরোপিয় জোটে আছে ‘এইচ অ্যান্ড এম’, ‘কেয়ারফোর’সহ কয়েক শত ব্র্যান্ড ও বিশালাকৃতির খুচরা বিক্রেতা। অন্যদিকে ‘ওয়ালমার্ট স্টোর্স’, ‘টার্গেট’ ও ‘গ্যাপ’র মতো ২৬টি বিশালাকৃতির খুচরা ব্র্যান্ড আছে আমেরিকান জোটে। উত্তর আমেরিকার কয়েকটি দেশের ব্র্যান্ডগুলো নিয়ে গঠিত এ জোটের নাম ‘অ্যালায়েন্স ফর বাংলাদেশ ওয়ার্কার সেফটি’। শর্তানুযায়ী আমেরিকান জোটটি কারখানাগুলোকে কোনো অর্থ সহায়তা, শর্তসাপেক্ষে ঋণ দিচ্ছে না। হাসান শান্তনু, ঢাকা।
‘নোবেল প্রাইজ শয়তানের সৃষ্টি, ইউরোপ হবে ইসলামের’ 19 Nov, 2013 আজ থেকে ৮৭ বছর আগে ১৯২৬ সালের এই দিনে নোবেল-জয়ী বিখ্যাত আইরিশ চিন্তাবিদ ও সাহিত্যিক জর্জ বার্নার্ড শ নোবেল পুরস্কারের অর্থ গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেছিলেন, আমি ডিনামাইট তৈরির জন্য আলফ্রেড নোবেলকে ক্ষমা করতে পারি, কিন্তু নোবেল পুরস্কারের প্রবর্তনকারীকে ক্ষমা করতে পারি না, কারণ একমাত্র মানুষরূপী শয়তানই এমন পুরস্কার প্রবর্তন করতে পারে। সুইডিশ রসায়ন বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেল ডিনামাইট আবিষ্কারের পর 'মৃত্যুর সওদাগর' হিসেবে নিন্দিত হওয়ায় নোবেল পুরস্কার প্রথা চালু করেছিলেন। কিন্তু এই প্রথা চালু হওয়ার পর বেশি দিন না যেতেই পুরস্কারটিকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে থাকে পাশ্চাত্য। কেবল তাই নয় এই পুরস্কারকে ব্যবহার করা হয় পাশ্চাত্যের আধিপত্যকামী, বিভেদকামী, শোষণকামী ও হত্যাযজ্ঞের নীতি জোরদারের হাতিয়ার হিসেবে। তাই স্পষ্টভাষী সাহিত্যিক ও চিন্তাবিদ জর্জ বার্নার্ড শ (১৮৫৬-১৯৫০) এই পুরস্কারের তীব্র সমালোচনা করতে বাধ্য হয়েছিলেন। পবিত্র ধর্ম ইসলাম ও বিশ্বনবী (সা.) সম্পর্কে নিজের গভীর শ্রদ্ধাবোধের জন্যও খ্যাতি অর্জন করেছেন এই সুনাম-ধন্য মনীষী। তিনি বলেছেন, যদি কোনো ধর্ম ব্রিটেন ও এমনকি গোটা ইউরোপের ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পারে আগামী একশ বছরের মধ্যে তা হলে সেটা হবে ইসলাম। শ আরো বলেছেন, আমি মুহাম্মাদ (সা.)'র ধর্মকে সব সময়ই গভীর শ্রদ্ধার চোখে দেখি, কারণ এর রয়েছে বিস্ময়কর গতিশীলতা বা শক্তি। আমার দৃষ্টিতে এটা হচ্ছে একমাত্র ধর্ম যার রয়েছে অস্তিত্বের জগতের পরিবর্তশীলতার সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেয়ার বা খাপ খাইয়ে নেয়ার ক্ষমতা, আর এ কারণে ইসলাম প্রত্যেক যুগেই মানুষকে নিজের দিকে আকৃষ্ট করতে সক্ষম। আমি মুহাম্মাদকে (সা.)-অধ্যয়ন করেছি, তিনি ছিলেন একজন বিস্ময়কর মানুষ এবং আমার মতে খ্রিস্ট বা ঈসা (আ.)'র বিরোধী হওয়ার ধারে কাছেও তিনি ছিলেন না, মুহাম্মাদকে(সা.) অবশ্যই মানবতার ত্রাণকর্তা বলা উচিত। আমি মুহাম্মাদের (সা.) ধর্ম সম্পর্কে এ ভবিষ্যদ্বাণী করছি যে এই ধর্ম আগামী দিনের ইউরোপে গৃহীত হবে এবং এই ধর্মকে সাদরে বরণ করে নেয়া এখনই শুরু হয়েছে। উৎসঃ নতুন বার্তা
সচিবালয়ে সাংবাদিক প্রবেশ নিষেধ! 19 Nov, 2013 মন্ত্রীদের দপ্তর পুনর্বণ্টনের কাজ চলছে তাই সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টা থেকে এ অবস্থা চলছে। সাংবাদিকরা প্রবেশ করতে গেলে বাধা দিচ্ছে নিরাপত্তাকর্মীরা। ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সচিবালয়ে গেটের নিরাপত্তা রক্ষীরা সাংবাদিকদের আটকে দিচ্ছেন। জানা গেছে, ‘সর্বদলীয়’ সরকারের মন্ত্রীদের মধ্যে দপ্তর বণ্টনের কাজ চলছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে। সারা দেশের মানুষ অধীর আগ্রহ ও উদ্বেগের সঙ্গে সেই খবরের অপেক্ষায় আছে। এদিকে মঙ্গলবার মন্ত্রীদের পদত্যাগ ও দপ্তর পুনর্বণ্টনের প্রজ্ঞাপন জারির কথা থাকলেও তার সম্ভাবনা অত্যন্ত ক্ষীণ বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিবের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব ইফতেখারুল হায়দার। সন্ধ্যায় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘মন্ত্রীদের মধ্যে দপ্তর পুনর্বণ্টন এবং যারা বাদ পড়েছেন তাদের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে এখনো কোনো নির্দেশনা পাইনি। কাজেই আজই প্রজ্ঞাপন জারির সম্ভাবনা ক্ষীণ। আজকে হলেও অনেক রাত হতে পারে। এমনকি আজ নাও হতে পারে।’ উৎসঃ বাংলামেইল২৪
বাংলাদেশের ওপর শকুনের দৃষ্টি রাখছে আমেরিকা: এমাজউদ্দিন 19 Nov, 2013 ‘কৌশলগত অবস্থানের কারণে বাংলাদেশের ওপর শকুনের দৃষ্টি দিয়ে রেখেছে আমেরিকা, ভারত আর ইউরোপীয় ইউনিয়ন’ উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এমাজউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, “দেশের সাধারণ মানুষকে বেকুব ভাবছে সরকার। সর্বদলীয় সরকারের নামে চারটি দলের লোকজন নিয়ে নতুন সরকার গঠন করে সরকার ভাবছে মানুষ কিছুই বোঝে না।” মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভি আই পি লাউঞ্জে দেশের বর্তমান দৃশ্যপটের শেষ কোথায় শীর্ষক রাষ্ট্রীয় পদকপ্রাপ্ত গুণীজনদের গোলটেবিল বৈঠকে এ কথা বলেন তিনি। প্রবীণ এই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী আরো বলেন, জনমতকে উপেক্ষা করে তাদের ওপর অন্যায় করা হয়েছে। সাধারণ মানুষের রায় একেবারেই নির্ভুল উল্লেখ করে তিনি জনস্বার্থ রক্ষায় অচিরেই সমস্যা সমাধানে সরকারকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় উঠার জন্য ত্রয়োদশ সংশোধনীকে মই হিসেবে ব্যবহার করে এখন নিজেই তা ছুড়ে ফেলেছেন অভিযোগ করে তিনি আরো বলেন, ভেতর আর বাহিরের শত্রুদের কবলে চলে যাওয়ার আগেই দেশকে রক্ষা করার জন্য সবার ঐক্যমত্য দরকার। কৌশলগত অবস্থানের কারণে বাংলাদেশের ওপর শকুনের দৃষ্টি দিয়ে রেখেছে আমেরিকা, ভারত আর ইউরোপীয় ইউনিয়ন, তাদের হাত থেকে দেশকে রক্ষায় সাধারণ মানুষের সম্মিলিত প্রচেষ্টা একান্ত প্রয়োজন বলেও জানান এমাজউদ্দিন আহমেদ। জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি চাষী নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন, স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত চিকিৎসক ডা. মুহম্মদ জাফরউল্লাহ চৌধুরী, সঙ্গীতশিল্পী মনির খান, আপেল মাহমুদ, চিত্রনায়ক হেলাল খান, অধ্যাপক আব্দুল গফুর, একুশে পদকপ্রাপ্ত গীতিকার মনিরুজ্জামান মনির, সাংবাদিক রিয়াজউদ্দিন আহমেদ, ছড়াকার আবু সালহে, কবি আল মুজাহিদীসহ সামাজিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বরা। উৎসঃ নতুনবার্তা
রাষ্ট্রপতিকে ১৮-দলীয় জোট যা বললো... (ভিডিও) 19 Nov, 2013 সরকার ক্ষমতায় থেকে একতরফা নির্বাচনের পথে এগিয়ে যাচ্ছে। বিরোধী দল এই নির্বাচনে যাবে না। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ১৮-দলীয় জোটের নেতারা রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদকে আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় একথা জানিয়েছেন। একই সঙ্গে তাঁরা সংকট নিরসনে আলোচনার উদ্যোগ নিতে রাষ্ট্রপতিকে অনুরোধ করেছেন। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিরোধী জোটের ২০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তাঁদের সাক্ষাতের পূর্বনির্ধারিত সময় ছিল। কিন্তু খালেদা জিয়া নির্দিষ্ট সময়ের বেশ কিছু সময় আগেই বঙ্গভবন এলাকায় গিয়ে পৌঁছান। এসময় খালেদা জিয়াকে বঙ্গভবনের বাইরে ২০-২৫ মিনিটের মত সময় গাড়িতে বসে কাটাতে দেখা যায়। ১৮ দলের পক্ষ থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একটি বক্তব্য রাষ্ট্রপতির কাছে তুলে ধরেন। পরে গণমাধ্যমেও ওই বক্তব্যটি দেওয়া হয়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রাষ্ট্রপতিকে বলেন, ‘সরকার তাঁদের জোটের সদস্যদের নিয়ে মন্ত্রিসভা পুনর্গঠন করেছে। বিরোধী দলের শীর্ষ নেতাদের মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করে সংলাপের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। তাই আমরা রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে আজ আপনার কাছে এসেছি।’ মির্জা ফখরুল বলেন, ‘মহামান্য রাষ্ট্রপতি, আপনার কাছে আমাদের সনির্বন্ধ অনুরোধ, আপনি সরকারকে বলুন তারা যেন অবিলম্বে সংঘাত, হানাহানি ও হিংস্রতার পথ পরিহার করে সংলাপের একটি সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করে। তারা যেন অবিলম্বে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সকল দলের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে একটি সমঝোতার পথে অগ্রসর হয়।’ রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা সম্পর্কে ১৮ দল সচেতন রয়েছে উল্লেখ করে ফখরুল বলেন, ‘প্রজাতন্ত্রের সংবিধান থেকে উত্সারিত আপনার ক্ষমতা ও সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে আমরা সচেতন রয়েছি। কিন্তু কখনো কখনো এমন পরিস্থিতি আসে যখন রাজনীতিকদের হাতে প্রণীত এবং সংকীর্ণ স্বার্থে রদবদলকৃত সংবিধানের ধারা-উপধারা জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ থাকে না। তখন তা সংকট নিরসনের পথ নির্দেশনা দিতে সক্ষম হয় না। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ব্যক্তিকে তখন ইতিহাস নির্ধারিত দায়িত্ব পালন করতে হয়।’ ফখরুল বলেন, ‘আমরা মনে করি, আজ জাতীয় জীবনে এমন একটি সময় এসেছে। দেশ জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে জনগণের ঐক্যের প্রতীক হিসেবে আপনি নিজে উদ্যোগী হয়ে এমনি একটি ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করবেন, দেশবাসীর সেটাই প্রত্যাশা।’ মির্জা ফখরুল আরও বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বী পক্ষগুলোর মধ্যে সমঝোতার ও ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা ছাড়া অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন সম্ভব নয়। একতরফা যেকোনো নির্বাচনের উদ্যোগ কেবল সামাজিক শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ব্যাহত করে না, বরং গণতন্ত্রের ভবিষ্যতও অনিশ্চিত করে তোলে। এর আগে সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য বিএনপির চেয়ারপারসন ও বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া জোটের একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে বঙ্গভবনে যান। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ছাড়াও ২০ সদস্যের প্রতিনিধিদলে ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এবং ১৮-দলীয় জোটের নেতাদের মধ্যে নজির আহমদ, অলি আহমদ, আবদুল লতিফ নেজামী, আন্দালিব রহমান, শফিউল আলম প্রধান, শওকত হোসেন, মো. ইব্রাহিম প্রমুখ। উৎসঃ প্রথম আলো

রবিবার, ১৭ নভেম্বর, ২০১৩

শারীরিক মেলামেশার বয়স ১৫বছর করার সুপারিশ! November 18, 2013 | Filed under: রকমারি | Posted by: নিউজ ডেস্ক/মেহা relationshipনিউজ ইভেন্ট ২৪ ডটকম রকমারি ডেস্ক বৃটেনের শীর্ষ এক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বলেছেন, ছেলেমেয়েদের জন্য শারীরিক মেলামেশায় সম্মতি দেয়ার বয়স ১৫তে নামিয়ে আনা উচিত। ফ্যাকাল্টি অব পাবলিক হেলথের প্রেসিডেন্ট প্রফেসর জন অ্যাস্টন বলেছেন, ঠিক কোন বয়সে শারীরিক মেলামেশা করতে ছেলেমেয়েদের অনুমতি দেয়া উচিত সেটা নিয়ে সমাজে বিভ্রান্তি রয়েছে। তাই এ নিয়ে একটি জাতীয় বিতর্ক হওয়া উচিত। সমপ্রতি বৃটেনে এক সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, এক-তৃতীয়াংশ কিশোর-কিশোরী সম্মতি দেয়ার বয়স ১৬তে উপনীত হওয়ার আগেই যৌনকর্মে লিপ্ত হয়। এর প্রেক্ষিতেই প্রফেসর অ্যাস্টন এ প্রস্তাব করেছেন। সানডে টাইমসকে তিনি বলেছেন, সম্মতির বয়স এক বছর কমিয়ে আনার ফলে এক ধরনের সীমারেখা বেঁধে দেয়া যাবে। এর ফলে ১৫ বছর বয়সী যারা ইতিমধ্যেই যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছে তাদের জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ থেকে সেবা আরও সহজলভ্য হবে। নিউজ ইভেন্ট ২৪ ডটকম/১৮নভেম্বর ২০১৩/১০.০১/মেহেদী হাসান - See more at: http://www.newsevent24.com/2013/11/18/%e0%a6%b6%e0%a6%be%e0%a6%b0%e0%a7%80%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%95-%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b2%e0%a6%be%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b6%e0%a6%be%e0%a6%b0-%e0%a6%ac%e0%a7%9f%e0%a6%b8-%e0%a7%a7%e0%a7%ab/#sthash.ZFp3Vp3X.dpuf

শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর, ২০১৩

শীর্ষ জঙ্গিরা দেশে ফিরছে নিচ্ছে নাশকতার প্রস্তুতি 16 Nov, 2013 দেশে ফিরতে শুরু করেছে পলাতক নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের শীর্ষ জঙ্গিরা। নভেম্বরের শেষভাগ থেকে ডিসেম্ভরের শুরুর দিককে টার্গেট করে দেশব্যাপী তারা নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ ছাড়া দীর্ঘদিন ঝিমিয়ে থাকার পর পুনরায় জেগে উঠেছে নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীর। রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আস্তানা গেড়ে পুনরায় তৎপরতা চালাচ্ছে। পরবর্তীতে ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হিযবুত তাহরিরের এক নেতাকে আটক করেছে প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থা। ওই নেতা নাশকতার প্রশিক্ষণ নিতে কয়েক দফা পাকিস্তানে গিয়েছিলেন বলে জানা গেছে। একটি চক্র জঙ্গিদের মদদ দিয়ে এর থেকে ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে বলে ধারণা করছেন গোয়েন্দারা। সম্প্রতি রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সেনাবাহিনীতে অস্থিরতা সৃষ্টির লক্ষ্যে উসকানিমূলক পোস্টার সেঁটেছে এই সংগঠনটি।র‌্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের পরিচালক লে. কর্নেল জিয়াউল আহসান জানান, তফসিল ঘোষণার পর স্বাধীনতাবিরোধী চক্র নাশকতা ঘটাতে পারে। সবকিছুই আমলে নিয়ে তা মোকাবিলা করার জন্য র‌্যাব সদস্যরা প্রস্তুত। তবে পলাতক জঙ্গিদের দেশে ফেরার ব্যাপারে তার কাছে তথ্য না থাকলেও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।একাধিক সূত্রে জানা গেছে, চলতি সপ্তাহে অতি গোপনে দুবাই থেকে সমুদ্র পথে দেশে এসেছেন নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশের (হুজিবি) নেতা মাওলানা আবদুল কুদ্দুস দেশে ফিরেছেন। মাওলানা কুদ্দুস আরাকান হরকাতুল জিহাদের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি মিয়ানমারের নাগরিক। সম্প্রতি বাংলাদেশি পাসপোর্ট সংগ্রহ করে সৌদিতে থাকার বৈধতা নিয়েছেন। তিনি ইন্টারপোলের রেড নোটিসপ্রাপ্ত আসামি। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রামে অবস্থান করছেন। দেশে আসার পর ফটিকছড়ির হেফাজত নেতা জুনায়েদ বাবু নগরীর মাদ্রাসায়ও তিনি দুদিন অতিবাহিত করেছিলেন। সবকটি জঙ্গি সংগঠনের নেতাদের সমন্বয় করে একটি সম্মিলিত প্লাটফরম তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি। এর কিছুদিন আগে সমুদ্র পথে অতি গোপনীয়তায় দেশে ফিরেছিলেন ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি মাওলানা তাজউদ্দীন। এক সপ্তাহেরও বেশি সময় দেশে অবস্থানের পর তিনি পুনরায় দেশ ছেড়েছেন। বর্তমানে তিনি মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন। তবে তাজউদ্দীন চলে যাওয়ার পরই বিষয়টি অাঁচ করতে পারেন গোয়েন্দারা। মাওলানা তাজউদ্দীনও চট্টগ্রামের হেফাজতে ইসলামের একাধিক নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, তাজউদ্দীনের ব্যাপারে তিনি শুনতে পেরেছিলেন। তবে হরতালের মতো রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে তিনি সেদিকে মনোযোগ দিতে পারেননি। তাজউদ্দীন বাবুনগরীসহ কয়েকজন হেফাজতে ইসলামের নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন।সূত্র জানায়, মাওলানা তাজউদ্দিনের সঙ্গে হেফাজতে ইসলামের নেতা মুফতি ইজহারের গোপন যোগাযোগ রয়েছে। চট্টগ্রামের লালখান বাজারে অবস্থিত জমিয়াতুল উলুম আল ইসলামিয়া মাদ্রাসায় বোমা বিস্ফোরণের পর মুফতি ইজহার পলাতক। তাজউদ্দিন দেশে ফেরার পর ওই মাদ্রাসায়ও গিয়েছিলেন। কিছুদিন আগে পুলিশ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুকে গ্রেফতার করে। তাজউদ্দিন তার আপন ভাই। পুলিশ রিমান্ডে টুকুকে তাজউদ্দিনের অবস্থান সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করে। চলমান রাজনৈতিক সহিংসতার মধ্যে তাজউদ্দিনের গোপনে দেশে ফেরার বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে গোয়েন্দাদের। নতুন করে দেশের ভেতর বড় ধরনের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের জন্য তাকে দেশে আনা হয়েছে কি না, এ বিষয়টিও খতিয়ে দেখছেন তারা। এরই মধ্যে তাজউদ্দিনের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হতে চট্টগ্রামে অভিযানও চালিয়েছেন। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার মামলায় তাজউদ্দিন চার্জশিটভুক্ত আসামি। তার আরেক ভাই রাতুল বাবুও একই মামলার আসামি। এ দুই সহোদরের মাথার ওপর ঝুলছে ইন্টারপোলের রেড নোটিস। ২০০৬ সালে মোহাম্মদ বাদ নামে পাসপোর্ট করে তাজউদ্দিন প্রথমে পাকিস্তানে পালিয়ে যান। সেখান থেকে তিনি মালয়েশিয়া চলে যান। দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকা তার ছোট ভাই রাতুলের কাছে তার যাতায়াত রয়েছে। সর্বশেষ মালয়েশিয়া থেকে তিনি সমুদ্র পথে দেশে ফিরেছিলেন। গোয়েন্দা সূত্র জানায়, শিবির, হুজি ও জেএমবির প্রশিক্ষিত বোমা প্রস্তুতকারীরা বোমাগুলো তৈরি করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে উদ্ধারকৃত বোমাগুলো সুদক্ষ হাতে তৈরি। আগামী ডিসেম্বরকে টার্গেট করে বোমাগুলো তৈরি করা হচ্ছে বলে গোয়েন্দাদের তথ্য দিয়েছেন কলাবাগানের একটি মেস থেকে ১৭৯টি বোমাসহ গ্রেফতারকৃত শিবিরের সাত সদস্য। সর্বশেষ লালবাগ থেকে ৪০৭টি বোমা উদ্ধারের পর চোখ কপালে উঠেছে গোয়েন্দাদের। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার কৃষ্ণপদ রায় জানান, একটি চক্র দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে তারা কোনোভাবেই সফল হতে পারবে না। জঙ্গিদের দেশে ফেরার বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে উদ্ধারকৃত বোমাগুলো রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বড় ধরনের নাশকতা চালাতেই মজুদ করা হয়েছিল। গ্রেফতারকৃতরা বোমার প্রস্তুত ও মজুদকারী বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ঢাকায় আরও বোমা তৈরির কারখানা আছে কিনা সে বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে। উৎসঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন Share on facebook Share on email Share on print 1
শীর্ষ জঙ্গিরা দেশে ফিরছে নিচ্ছে নাশকতার প্রস্তুতি 16 Nov, 2013 দেশে ফিরতে শুরু করেছে পলাতক নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের শীর্ষ জঙ্গিরা। নভেম্বরের শেষভাগ থেকে ডিসেম্ভরের শুরুর দিককে টার্গেট করে দেশব্যাপী তারা নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ ছাড়া দীর্ঘদিন ঝিমিয়ে থাকার পর পুনরায় জেগে উঠেছে নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীর। রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আস্তানা গেড়ে পুনরায় তৎপরতা চালাচ্ছে। পরবর্তীতে ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হিযবুত তাহরিরের এক নেতাকে আটক করেছে প্রভাবশালী গোয়েন্দা সংস্থা। ওই নেতা নাশকতার প্রশিক্ষণ নিতে কয়েক দফা পাকিস্তানে গিয়েছিলেন বলে জানা গেছে। একটি চক্র জঙ্গিদের মদদ দিয়ে এর থেকে ফায়দা হাসিলের চেষ্টা করছে বলে ধারণা করছেন গোয়েন্দারা। সম্প্রতি রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সেনাবাহিনীতে অস্থিরতা সৃষ্টির লক্ষ্যে উসকানিমূলক পোস্টার সেঁটেছে এই সংগঠনটি।র‌্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের পরিচালক লে. কর্নেল জিয়াউল আহসান জানান, তফসিল ঘোষণার পর স্বাধীনতাবিরোধী চক্র নাশকতা ঘটাতে পারে। সবকিছুই আমলে নিয়ে তা মোকাবিলা করার জন্য র‌্যাব সদস্যরা প্রস্তুত। তবে পলাতক জঙ্গিদের দেশে ফেরার ব্যাপারে তার কাছে তথ্য না থাকলেও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান তিনি।একাধিক সূত্রে জানা গেছে, চলতি সপ্তাহে অতি গোপনে দুবাই থেকে সমুদ্র পথে দেশে এসেছেন নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশের (হুজিবি) নেতা মাওলানা আবদুল কুদ্দুস দেশে ফিরেছেন। মাওলানা কুদ্দুস আরাকান হরকাতুল জিহাদের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি মিয়ানমারের নাগরিক। সম্প্রতি বাংলাদেশি পাসপোর্ট সংগ্রহ করে সৌদিতে থাকার বৈধতা নিয়েছেন। তিনি ইন্টারপোলের রেড নোটিসপ্রাপ্ত আসামি। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রামে অবস্থান করছেন। দেশে আসার পর ফটিকছড়ির হেফাজত নেতা জুনায়েদ বাবু নগরীর মাদ্রাসায়ও তিনি দুদিন অতিবাহিত করেছিলেন। সবকটি জঙ্গি সংগঠনের নেতাদের সমন্বয় করে একটি সম্মিলিত প্লাটফরম তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছেন তিনি। এর কিছুদিন আগে সমুদ্র পথে অতি গোপনীয়তায় দেশে ফিরেছিলেন ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি মাওলানা তাজউদ্দীন। এক সপ্তাহেরও বেশি সময় দেশে অবস্থানের পর তিনি পুনরায় দেশ ছেড়েছেন। বর্তমানে তিনি মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন। তবে তাজউদ্দীন চলে যাওয়ার পরই বিষয়টি অাঁচ করতে পারেন গোয়েন্দারা। মাওলানা তাজউদ্দীনও চট্টগ্রামের হেফাজতে ইসলামের একাধিক নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, তাজউদ্দীনের ব্যাপারে তিনি শুনতে পেরেছিলেন। তবে হরতালের মতো রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে তিনি সেদিকে মনোযোগ দিতে পারেননি। তাজউদ্দীন বাবুনগরীসহ কয়েকজন হেফাজতে ইসলামের নেতার সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন।সূত্র জানায়, মাওলানা তাজউদ্দিনের সঙ্গে হেফাজতে ইসলামের নেতা মুফতি ইজহারের গোপন যোগাযোগ রয়েছে। চট্টগ্রামের লালখান বাজারে অবস্থিত জমিয়াতুল উলুম আল ইসলামিয়া মাদ্রাসায় বোমা বিস্ফোরণের পর মুফতি ইজহার পলাতক। তাজউদ্দিন দেশে ফেরার পর ওই মাদ্রাসায়ও গিয়েছিলেন। কিছুদিন আগে পুলিশ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুকে গ্রেফতার করে। তাজউদ্দিন তার আপন ভাই। পুলিশ রিমান্ডে টুকুকে তাজউদ্দিনের অবস্থান সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করে। চলমান রাজনৈতিক সহিংসতার মধ্যে তাজউদ্দিনের গোপনে দেশে ফেরার বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে গোয়েন্দাদের। নতুন করে দেশের ভেতর বড় ধরনের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের জন্য তাকে দেশে আনা হয়েছে কি না, এ বিষয়টিও খতিয়ে দেখছেন তারা। এরই মধ্যে তাজউদ্দিনের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হতে চট্টগ্রামে অভিযানও চালিয়েছেন। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার মামলায় তাজউদ্দিন চার্জশিটভুক্ত আসামি। তার আরেক ভাই রাতুল বাবুও একই মামলার আসামি। এ দুই সহোদরের মাথার ওপর ঝুলছে ইন্টারপোলের রেড নোটিস। ২০০৬ সালে মোহাম্মদ বাদ নামে পাসপোর্ট করে তাজউদ্দিন প্রথমে পাকিস্তানে পালিয়ে যান। সেখান থেকে তিনি মালয়েশিয়া চলে যান। দক্ষিণ আফ্রিকায় থাকা তার ছোট ভাই রাতুলের কাছে তার যাতায়াত রয়েছে। সর্বশেষ মালয়েশিয়া থেকে তিনি সমুদ্র পথে দেশে ফিরেছিলেন। গোয়েন্দা সূত্র জানায়, শিবির, হুজি ও জেএমবির প্রশিক্ষিত বোমা প্রস্তুতকারীরা বোমাগুলো তৈরি করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে উদ্ধারকৃত বোমাগুলো সুদক্ষ হাতে তৈরি। আগামী ডিসেম্বরকে টার্গেট করে বোমাগুলো তৈরি করা হচ্ছে বলে গোয়েন্দাদের তথ্য দিয়েছেন কলাবাগানের একটি মেস থেকে ১৭৯টি বোমাসহ গ্রেফতারকৃত শিবিরের সাত সদস্য। সর্বশেষ লালবাগ থেকে ৪০৭টি বোমা উদ্ধারের পর চোখ কপালে উঠেছে গোয়েন্দাদের। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপকমিশনার কৃষ্ণপদ রায় জানান, একটি চক্র দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে তারা কোনোভাবেই সফল হতে পারবে না। জঙ্গিদের দেশে ফেরার বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে উদ্ধারকৃত বোমাগুলো রাজনৈতিক কর্মসূচিতে বড় ধরনের নাশকতা চালাতেই মজুদ করা হয়েছিল। গ্রেফতারকৃতরা বোমার প্রস্তুত ও মজুদকারী বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। ঢাকায় আরও বোমা তৈরির কারখানা আছে কিনা সে বিষয়ে অনুসন্ধান চলছে। উৎসঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন Share on facebook Share on email Share on print 1
বাংলাদেশের সমকামীতা নিয়ে বিবিসির প্রতিবেদন! 16 Nov, 2013 বাংলাদেশে সমকামিতা: এখনো পর্দার আড়ালে ঢাকার একটি অভিজাত এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন সুমন ও পলাশ। এখানে তাদের আসল নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না। চার বছর আগে তাদের বন্ধুত্ব হয়, এবং তারা এক সাথে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। সুন্দর করে গোছানো পরিপাটি একটা একটা সংসার। সুমন বলছিলেন এর আগেও তার আরেকটি ছেলের সাথে সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্কের ভাঙ্গনের পর তিনি বর্তমানে পলাশের সাথে আছেন। সুমন বলছিলেন, সমকামীরা একটা সম্পর্কের মধ্যে দিয়ে যেতে চায়। যেহেতু তারা সম্পর্কটা চালিয়ে যেতে পারে না তাই তারা আরেকটা সম্পর্কে জড়ায়। ''প্রথমে আমার একটা ছেলের সাথে সম্পর্ক ছিল বারো বছর।পরে আমি একটা সম্পর্কে জড়িয়েছি। জানিনা এটা কতদিন চালিয়ে যেতে পারবো। কারণ সমাজ আমাদেরকে সে সুযোগটা দেয় না,'' সুমন বলেন। সুমনের পরিবার তার এই পরুষের প্রতি আকর্ষণের কথা জানেন। এবং পরিবারের মানুষরা এটা মেনে না নেওয়াতেই তিনি আলাদা বাসা নিয়ে থাকেন। আর সুমনের সঙ্গী তার বাবা মায়ের সাথে সপ্তাহের ৫ টি দিন থাকেন আর বাকি দুটি দিনে বন্ধুদের সাথে থাকবেন বলে সুমনের কাছে থাকেন। সমকামি বয়েস অব বাংলাদেশের প্রতিনিধি তানভীর আলীম "আমরা চাচ্ছি সমাজ যেন আমাদেরকে স্বীকৃতি দেয় এবং দেশের আইন সংশোধন করা হয়" তানভীর আলিম কারণ পলাশ তার পরিবারের কাছে কথা গুলো বলতে পারেননি। চট্টগ্রামে ছেলে আরিফ বলছিলেন যখন তিনি স্কুলে পরেন তখনি তিনি তার নিজের মধ্যেকার পরিবর্তন গুলো টের পান। “প্রথমে সবাই আমার বাবাকে নালিশ করতো। আমার বাবা ওদেরকে বলতেন বয়সের সাথে সব ঠিক হয়ে যাবে,'' আরিফ বলেন। আরিফের পরবর্তীতে সম্পর্কের হয় তার বাবার এক বন্ধুর সাথে। দীর্ঘদিন তিনি আরিফের পড়াশোনা সহ সব খরচ বহন করেন। আরিফ বলছিলেন পুরুষের প্রতি আকর্ষণ থাকলে বাবার ঔ বন্ধুর প্রতি তিনি কোন মানসিক টান বা ভালোবাসা বোধ করতে না। পরে তার সম্পর্ক হয় তার স্কুলের এক বন্ধুর সাথে। দীর্ঘদিন তার সাথেই চলে তার সম্পর্ক। তবে বন্ধুটি এক সময় পরিবার ও সমাজের চাপে বিয়ে করেন একটি মেয়েকে। এর পর থেকেই আরিফ একা। সমকামী পুরুষদের সংগঠন শুধু ছেলেরাই যে ছেলেদের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে তাই নয় মেয়েরাও মেয়েদের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে এবং সম্পর্ক তৈরি করছে। এমন বেশ কিছু মেয়ের সাথে আমার কথা হয়েছে কিন্তু তারা এ বিষয়ে গণমাধ্যমে কথা বলতে রাজি নন। বাংলাদেশে সমকামী পুরুষ বা যাদেরকে গে বলা হয় তাদের সমাজে এখন যতটা খোলামেলা ভাবে প্রকাশ হতে দেখা যাচ্ছে মেয়েদের ক্ষেত্রে বিষয়টা অনেকটাই চাপা পরে আছে। কয়েকজন সমকামী পুরুষ মিলে 'বয়েস অফ বা্ংলাদেশ' নামে অনলাইনে একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রথম আত্মপ্রকাশ করে। সমকামি বয়েস অব বাংলাদেশের দশ বছর "প্রথমে সবাই আমার বাবাকে নালিশ করতো। আমার বাবা ওদেরকে বলতেন বয়সের সাথে সব ঠিক হয়ে যাবে" আরিফ এগারো বছর আগে তৈরি করা এই ওয়েবসাইটটি জন্য তাদের অনেক বাধার সম্মুখীন হতে হয়। 'বয়েস অফ বাংলাদেশ' বা বব এর একজন প্রতিনিধি তানভীর আলিম বলছিলেন, এর মাধ্যমে অনেকেই এখন তাদের সঙ্গী খুঁজে নিচ্ছেন আর বব কাজ করছে বাংলাদেশের এই সম্প্রদায়ের অস্তিত্ব ও অধিকারের বিষয়ে কথা বলতে। ''আট বছর আগে, ২০০৫ সালে একটা একটা গেট টুগেদারের ব্যবস্থা করা হয়, সেখানে ব্যাপক সাড়া পাওয়া যায়,'' বলেন মি: আলিম, যিনি নিজেও একজন সমকামী পুরুষ। সেখান থেকে তারা সোশ্যাল অ্যাক্টিভিজমের পথ বেছে নেবার সিদ্ধান্ত নেন। ''এখন আমরা চাচ্ছি সমাজ যেন আমাদের কে স্বীকৃতি দেয়, এবং বাংলাদেশের আইনেও আমাদের সম্পর্কে যা বলা আছে সেটা যাতে সংশোধন করা হয়,'' মি:আলিম বলেন। তানভীর বলছিলেন এখন সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেইসবুকে 'বয়েস অফ বাংলাদেশ'এর পেইজও রয়েছে। ফেইসবুকে তাদেরকে ফলো করেন দুহাজারের মত মানুষ। এছাড়া মাঝে তারা কিছু অনুষ্ঠান করেন সেখানে দু থেকে আড়াইশ মানুষ আসেন। এদের মধ্যে যেমন বিভিন্ন বয়স এবং পেশার ছেলেরা রয়েছেন বলে তিনি উল্লেখ করেন। আইনে দণ্ডনীয় সমকামি মাঝে মাঝে তারা অনুষ্ঠান করে দেখা করেন "বাংলাদেশের দণ্ডবিধিতে এটাকে অস্বাভাবিক অপরাধ হিসেবে গন্য করা হয়েছে" সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী সানায়ইয়া আনসারী কিন্তু তানভীর যে তাদের যে অধিকার বা স্বীকৃতির কথা বললেন সেবিষয়ে বাংলাদেশের আইনে কি বলা আছে। সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী সানায়ইয়া আনসারীর বলছেন, যদিও বাংলাদেশের সংবিধানে বলা আছে আইনের চোখে সবাই সমান এবং সমানভাবে আশ্রয় লাভের অধিকারী, কিন্তু সমকামিদের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ঘটেছে। ''বাংলাদেশের আইনে পরিষ্কার ভাবে বলা আছে সম লিঙ্গের কোন মানুষের সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করা অস্বাভাবিক একটি অপরাধ,'' তিনি বলেন। সমকামিতার জন্য ১০ বছর কারাদণ্ড অথবা অর্থদণ্ডের বিধানও রয়েছে বলে সানয়ইয়া আনসারী জানান। তিনি বলেন, যে মৌলিক অধিকারের ক্ষেত্রে বলা আছে বর্ণ, ধর্ম, গোত্র বা জন্ম স্থানভেদে কারও সাথে বৈষম্য করা যাবে না। তবে বাংলাদেশের দণ্ডবিধি আইনে পরিষ্কার করে বলা আছে কোন ব্যক্তি যদি স্বেচ্ছাকৃত ভাবে প্রাকৃতিক নিয়মের বিরুদ্ধে পুরুষ পুরুষের সাথে, এবং নারী নারীর সাথে যদি কোন যৌন সম্পর্ক স্থাপন করে তবে তিনি অপরাধী হবেন। ''বাংলাদেশের দণ্ডবিধিতে এটাকে অস্বাভাবিক অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে,'' তিনি বলেন। কারণ নিয়ে বিতর্ক একটা পুরুষের সাথে পুরুষের বা একটি মেয়ের সাথে মেয়ের মানসিক ও শারীরিক আকর্ষণবোধকেই সাধারণ অর্থে সমকামীতা হিসেবে ধরা হয়। তবে কোন পুরুষ বা নারী সমকামী হয়, তা নিয়ে বাংলাদেশে বিতর্ক রয়েছে। নারী ও পুরুষের মধ্যে প্রচলিত যে সম্পর্ক তার বাইরে এই ধরনের আকাঙ্ক্ষা কি একটি মানুষের বয়ঃসন্ধিকাল থেকে শুরু হয়, না তারা জন্মগত ভাবে এই বৈশিষ্ট্য নিয়েই জন্মায়? এসব জানতে আমি কথা বলছিলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের শিক্ষক শাহনুর হোসেনের সাথে। মি. হোসেন বলছিলেন, একটা বয়সের পর যখন তারা দেখে তাদের অন্য বন্ধুরা মেয়েদের ব্যাপারে আগ্রহ বোধ করছে, তখন তাদের ক্ষেত্রে হয় উল্টোটা। তারা ছেলেদের ব্যাপারে আগ্রহ বোধ করে। "এটা জন্মগত, না হরমোনাল, না মানসিক সেটা বলা কঠিন" ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের শিক্ষক শাহনুর হোসেন ''তবে এটা জন্মগত, না হরমোনাল, না মানসিক সেটা বলা কঠিন,'' মি: হোসেন বলেন। চরম হতাশা আমার আরেকজন সমকামী পুরুষের সাথে কথা হল যিনি ছোট বেলা থেকেই বুঝতে পারছিলেন তার পরিবর্তন গুলোর কথা। যখন বুঝতে পারলেন তিনি অন্যান্য ছেলেদের থেকে আলাদা তখন নিমজ্জিত হলেন চরম হতাশায়। কাছের বন্ধু, বাবা-মা, বা পরিবারের কোন সদস্যের, কারও কাছেই তিনি আজও বলতে পারেননি তার এই পুরুষের প্রতি আকর্ষণের কথা। ছেলেটি বলছিলেন সবচেয়ে কাছের বন্ধুর কাছে শুধু মাত্র সমকামীতা বিষয়ে আলোচনা করতে যেয়েই তাকে শুনতে হয়েছে নেতিবাচক কথা। ছেলেটি বলছিলেন, বিষয়টি কেও সহজ ও স্বাভাবিক ভাবে মেনে নিতে চাননা। যখন জানতে পারেন তখন তার প্রতিক্রিয়াটা খুব নেতিবাচক থাকে। অনেক সমস্যার মুখে পরতে হয়। ''আমি গে,'' তিনি বললেন। ''তবে আমার খুব কাছের একটা বন্ধুর কাছে শুধু মাত্র সমকামিতার বিষয়টা নিয়ে কথা বলতে গেলে সে আমাকে অনেক খারাপ কথা শুনায়,'' তিনি বলেন। পরে তার আর সাহস হয়নি তকে ব্যাপারটা সরাসরি বলার। "আমি যে গে এটা আজ পর্যন্ত আমি কাওকে বলতে পারিনি" সমকামি একজন ছেলে ''আমাদের অনুভূতিটা কেও বোঝার চেষ্টা করে না, সে ফ্যামিলি হোক বা বন্ধুরা হোক। তাই আমি আজও কাওকে বলিনি,'' তিনি বলেন বাংলাদেশের সমকামিদের নিয়ে অল্প বিস্তর কাজ করছেন বেসরকারি কিছু সংস্থা। মূলত তাদের স্বাস্থ্যের দিক বা এইডস প্রতিরোধে তাদের কাজ বেশি । সংস্থাগুলো বলছে যৌন প্রবণতার ব্যাপারে বাংলাদেশে খোলাখুলি কথা বলাটা সহজ না হওয়াই তাদের কাছে এর সঠিক কোন পরিসংখ্যান নেই। তবে বলা হয় একটি দেশের ১০ শতাংশ মানুষ প্রচলিত যৌনকর্মের বাইরে যৌনসম্পর্ক স্থাপন করে থাকে। বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থায় তাই আরিফ বা পলাশের মত গুটি কয়েক জন পরিবারের বাইরে এসে নিজেদের মত করে বাঁচার একটা ব্যবস্থা করে নিলেও অন্যদের পথ ততটা সহজ নয়। উৎসঃ বিবিসি বাংলা