‘হাঁটা বাবার’ মৃত্যু, কবর নিয়ে ভক্তদের গণ্ডগোল
নিজস্ব প্রতিবেদক, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 2014-03-13 14:17:43.0 BdST Updated: 2014-03-13 20:03:57.0 BdST
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ‘হায়দার বাবা’ বা ‘হাঁটা বাবা’ নামে পরিচিত জুলফিকার হায়দার মারা যাওয়ার পর তার কবরের স্থান নির্ধারণ নিয়ে ভক্তদের মধ্যে গণ্ডগোলের ঘটনা ঘটেছে।
শেষ পর্যন্ত বিপুল সংখ্যক দাঙ্গা পুলিশ ও র্যাবের উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার বিকালে তার গোসল রাতে জানাজা-দাফনের ব্যবস্থা হয়।
ভক্তদের কাছে পীর হিসাবে পরিচিত জুলফিকার হায়দারকে সঙ্গী পরিবেষ্টিত হয়ে রাস্তায় বিরতিহীন হাঁটতে দেখা যেত বলে স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে চেনেন ‘হায়দার বাবা’ বা ‘হাঁটা পীর’ নামে।
তার বড় ছেলে জাবেদ আখতার হায়দার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে মারা যান তার বাবা। তার বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর।
“গত শুক্রবার অসুস্থ হয়ে পড়লে বাবাকে প্রথমে মিরপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে বুধবার বাসায় নেয়ার কিছুক্ষণ পর আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ভর্তি করা হয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউটে। সেখানেই সকালে তিনি মারা যান।”
জুলফিকার হায়দারের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে দুপুরের আগে আট থেকে দশ হাজার ভক্ত ছুটে যান তাজমহল রোড মোহাম্মদপুর ইদগাহ জামে মসসিদ সংলগ্ন মাঠে। তাদেরই একটি অংশ ওই মাঠের মাঝখানে ‘হাঁটা পীরের’ কবর দেয়ার দাবি তোলেন।
কিন্তু মসজিদ কমিটি ওই মাঠের পাশে তাজমহল রোড কবরস্থানে জুলফিকার হায়দারকে কবর দেয়ার ঘোষণা দিলে ভক্তরা হট্টগোল শুরু করে। এক পর্যায়ে কয়েকশ ভক্তের সঙ্গে স্থানীয়দের হাতাহাতিরও উপক্রম হয়। ঘণ্টাখানেক পর পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
মোহাম্মদপুর ইদগাহ জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি শফিকুল ইসলাম সেন্টু দুপুর ১২টার দিকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, মাঠে নয়, কবরস্থানের উত্তর-পূর্ব কোনায় জুলফিকার হায়দারের কবর হবে।
জুলফিকার হায়দারের ছেলে জাবেদ আখতার জানান, রাতে এশার নামাজের পর দাফনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তারা।
কিন্তু এরপর বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ভক্তদের একটি অংশ আবারো হট্টগোল শুরু করেন। অতি উৎসাহী একদল ভক্ত মাঠের মাঝখানে শুরু করেন কবর খোঁড়া।
ভক্তদের আরেকটি অংশ এতে বাধা দিলে শুরু হয় হাতাহাতি। পরে দাঙ্গা পুলিশ এসে পরিস্থিত নিয়ন্ত্রণ করে।
এরপর মাঠে বিপুল সংখ্যক দাঙ্গা পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন করা হয়। তাদের ঘেরাওয়ের মধ্যেই হয় ‘হাঁটা বাবার’ গোসল।
গোসলের পর পরিত্যক্ত পানি মাঠ থেকে সংগ্রহ করতে দেখা যায় অনেক ভক্তকে। কেউ কেউ ওই পানিতে হাত বুলিয়ে নিজেদের গায়ে মাথায় মাখেন।
ভক্তদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, স্বাধীনতার পর ‘হায়দার বাবা’ কাঁটাবন মসজিদের পাশে আশ্রয় নেন। এরপর কিছুদিন মিরপুরে থেকে মোহাম্মদপুরে তাজমহল রোডে একটি বাড়ির নিচতলায় আস্তানা গাড়েন।
বেশ কিছুদিন আগে এক ভক্ত নূরজাহান রোডে পৌনে তিন কাঠা জমিতে তাকে একটি বাড়ি কিনে দেন। তাজমহল রোড ও নূরজাহান রোডে দুটি আস্তানাতেই প্রতি বছর ওরসের আয়োজন করা হয়।
ঢাকা: মোহাম্মদপুরের হায়দার বাবা মারা গেছেন।
বৃহস্সপতিবার সকাল ১০ টায় মোহাম্মদপুরে সলিমুল্লাহ রোডের বাসায় মারা যান তিনি।
মোহাম্মদপুর থানার উপ সহকারী পরিদর্শক (এএসআই) সহকারী আমিনুল ইসলাম এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
গতকাল বুধবার রাত থেকেই তার জ্ঞান ছিল না বলে জানা যায়।
‘হাটা বাবার’ আসল নাম হযরত জুলফিকার আলী হায়দার। তার ভক্তরা তাকে বাবা বলে ডাকে। ঢাকার মোহাম্মদপুরে একটা খানকা রয়েছে তার। এছাড়া ভক্তের দেয়া একটি বিশাল বাড়িও আছে তার । তবে বাড়িটিতে তিনি বেশি সময় অবস্থান করতেন না বলে জানা যায়।
আইএস
- See more at: http://www.bengalinews24.com/citizen-journilism-new-media-journalism/2014/03/13/45959#sthash.eYCnQKtu.dpuf
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন