সোমবার, ৩ মার্চ, ২০১৪


বৃটিশ পার্লামেন্টে বোরকা নিষিদ্ধের বিল রুখে দিলো লেবার পার্টি 04 Mar, 2014
নেকাব নিষিদ্ধের জন্য বৃটিশ পার্লামেন্টে উত্থাপিত বিলটি পাস হয়নি। বর্তমান বিরোধী দল লেবার পার্টির বিরোধিতার কারণে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির এমপি ফিলিপ হলোবোর্ন উত্থাপিত বিলটি পার্লামেন্টে পাস করা সম্ভব হয়নি। গত শুক্রবার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে বিলটি উত্থাপিত হলে লেবার দলীয় বাঙালি এমপি রুশনারা আলীসহ লেবার এমপিরা তীব্র বিরোধিতা করেন। দীর্ঘ বিতর্কে বিলটির পক্ষে তেমন কোন সমর্থন না থাকায় এখানেই থেমে গেল আইন করে নেকাব নিষিদ্ধের প্রচেষ্টা। বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত বৃটিশ এমপি রুশনারা আলী বলেন, নেকাব পরিধান ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং অনুশাসনের অংশ। আমি সবসময়ই নারীদের স্বাধীনতা এবং অধিকার রক্ষায় আন্তরিক। মুসলিম নারীদের অধিকার পরিপন্থি বিল উত্থাপন কনজারভেটিব দলের একটি ভুল। তিনি বলেন, এই বিলটি ছিল একটি প্রাইভেট মেম্বার বিল। এটি ভোটাভুটির পর্যায় পর্যন্ত যায়নি। তার আগেই থামিয়ে দেয়া সম্ভব হয়েছে। রুশনারা আলী বলেন, মুসলিম নারীরা নেকাব পরিধান করবে কী করবে না তা তাদের একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার। এটা কারো চাপিয়ে দেয়ার কোনো বিষয় নয়। তিনি বলেন, একজন মুসলিম হিসেবে তিনি সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় বিশ্বাস করেন । যখন বৃটেনে মুসলমানদের বিরুদ্ধে বর্ণবাদী হামলার ঘটনা বাড়ছে তখন এ ধরনের আইন দেশটিতে ইসলামবিদ্বেষী মনোভাবকে আরও উসকে দেবে বলে তিনি মনে করেন। শ্যাডো জাস্টিস মিনিস্টার সাদিক খান জানান, গত শুক্রবার দ্বিতীয় শুনানিতে লেবার পার্টির তীব্র বিরোধিতার মুখে পার্লামেন্টে বিলটি আর অগ্রসর হয়নি। দ্বিতীয় শুনানীতে দীর্ঘ বিতর্কে কোন সুরাহা না হওয়ায় এবং বিলটির সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় চলতি পার্লামেন্টে এ সংক্রান্ত এই বিল উত্থাপনের আরো কোনো সুযোগ নেই। তিনি নারীর নেকাব পরিধানের বিষয়টিকে অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত করার তীব্র বিরোধিতা করে বলেন, নিকাব পরিধান করা না করার বিষয়টি ব্রিটেনের অধিকাংশ মানুষের কাছে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নয়। তিনি বলেন, আধুনিক ব্রিটিশ সমাজে বৈষম্যের কোনো স্থান নেই। বৃটিশ পার্লামেন্টে দুই ঘণ্টার বিতর্কে এই বিলের বিরুদ্ধে সবচেয়ে জোরালো অবস্থান নেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান লেবার পার্টির ভারতীয় বংশোদ্ভূত এমপি কিথ ভাজ। তিনি তাঁর নির্বাচনী এলাকার মসজিদসমূহের ইমাম ও বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনের পক্ষ থেকে সহস্রাধিক ব্যক্তির আপত্তি জানিয়ে লেখা চিঠির উল্লেখ করে বলেন, এসব মুসলিম নারী ধর্মবিশ্বাসের কারণেই বোরকা পরে থাকেন। প্রস্তাবের বিরোধিতাকারীরা বলেন, এ ধরনের আইন ব্যক্তিস্বাধীনতার পরিপন্থি এবং সামাজিক সম্প্রীতি ক্ষুণœ করবে । তারা বলেন, নগরিকদের পোশাক-পরিচ্ছদ পরিধানের ব্যাপারে রাষ্ট্র কোনো নির্দেশনা চাপিয়ে দিতে পারে না। এই প্রস্তাবের বিপক্ষে বক্তব্য দেন লেবার পার্টির জেরাল্ড কফম্যান, লিন ব্রাউন, জোনাথন অ্যাশওয়ার্থ, মিসেস শ্যারন হজসন ও জেরেমি করবিন এমপি। অন্যদিকে বিলটির পক্ষে উদ্যোক্তা ফিলিপ হলোবোর্ন ছাড়া আর কেউই সমর্থন দেননি। ফিলিপ হলোবোর্ন বিক্ষোভ-সমাবেশে মুখোশ এবং ইসলামি বোরকার ক্রমবর্ধমান ব্যবহার নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণ উল্লেখ করে এগুলোর ব্যবহার নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব করেন। ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে ফ্রান্সে ইতিমধ্যেই মুখ ঢেকে রাখা বোরকা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। উৎসঃ তাজাখবর Share on facebook Share on email Share on print 1

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন