তিক্ত কথাও হয়েছে দুই নেত্রীর
28 Oct, 2013
প্রধানমন্ত্রী ও
বিরোধীদলীয় নেতার ৩৭ মিনিটের ফোনালাপের পুরোটা সৌহার্দ্যপূর্ণ ছিল না।
রাজনীতি ও সংলাপ বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি অতীত নিয়ে তিক্ত কথাও হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতার ফোনালাপের সময় তাঁদের কাছাকাছি ছিলেন এবং পরে যাঁদের সঙ্গে ফোনালাপ নিয়ে তাঁরা কথা বলেন—এমন কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে কথোপকথনের আরও কিছু অংশ জানা গেছে। নিচে তা তুলে ধরা হলো।
শেখ হাসিনা: কেমন আছেন? আমি আপনাকে দুপুরে ফোন দিয়েছিলাম। না, আমি নিজ হাতে লাল টেলিফোন থেকে ফোন করেছি। বারবার রিং হয়েছে। আমি দুঃখিত আপনি যেকোনো কারণে ফোন ধরতে পারেননি। আমি কাজ সেরে আগে আগে ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম। আপনাকে তো ২৪ ঘণ্টা পার হওয়ার আগেই ফোন দিয়েছি।
খালেদা জিয়া: লাল টেলিফোনে আপনি ফোন করেছিলেন। কিন্তু ফোনটির সংযোগ অনেক দিন থেকেই বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে।
শেখ হাসিনা: আচ্ছা ঠিক আছে, আমি দুঃখিত। ফোনটা ডেড (বিকল) ছিল বা ডেড করে রাখা হয়েছে কি না, বলতে পারছি না। আগামীকাল এটা আমি দেখব।
খালেদা জিয়া: টিঅ্যান্ডটির এক কর্মকর্তা বলেছেন, ফোনের লাইন নাকি ঠিক আছে। এটা মিথ্যা কথা। ফোনটি ডেড। আপনি তাঁর (টিঅ্যান্ডটি কর্মকর্তা) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন।
শেখ হাসিনা: আপনি তো ১৫ আগস্ট জন্মদিন পালন করেন। আপনি আমাদের ৩২ নম্বরের বাসায় বহুবার এসেছেন। রাসেলকে দেখেছেন। নিষ্পাপ ওই শিশুকে হত্যার দিনে কীভাবে আপনি জন্মদিন পালন করেন, কেক কাটেন! এটা তো আপনার আসল জন্মদিন নয়। আর আমাকে হত্যার উদ্দেশে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করা হয়েছে। আপনার ক্যাবিনেটের লোকজন তো জড়িত ছিল।
খালেদা জিয়া: ১৫ আগস্ট কি কারও জন্মদিন হতে পারে না। সেদিন জন্মদিন হলে তারা কি জন্মদিন পালন করতে পারবে না। আমার দুই ছেলে তো দেশের বাইরে।
শেখ হাসিনা: আগামী নির্বাচন সম্পর্কে গণভবনে এসে কথা বলার জন্য আমি ২৮ তারিখ সন্ধ্যায় আপনাকে দাওয়াত করছি। আপনি জানেন, আমি ইতিমধ্যে অন্যদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা শুরু করেছি। আপনাকে দাওয়াত দিচ্ছি, আমার সঙ্গে রাতের খাবার খাবেন।
খালেদা জিয়া: আপনি নির্দলীয় সরকারের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করুন। আপনার সর্বদলীয় সরকারের প্রস্তাব পেয়েছি। কিন্তু এতে তো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। সবার সুযোগ নিশ্চিত হবে না।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) কীভাবে যাব। ওই দিন তো হরতাল। অন্যদিন আসব। আপনি নির্দলীয় সরকারের দাবি নীতিগতভাবে মেনে নিন। তাহলে আন্দোলন প্রত্যাহার করব।
শেখ হাসিনা: আমি তো আপনার কথা রেখেছি। ৪৮ ঘণ্টা পার হওয়ার আগেই ফোন দিলাম। এখন আসতে সমস্যা কী। হরতাল প্রত্যাহার করে আসেন। আপনি যতজন নিয়ে খুশি আসতে পারেন। হরতালটা প্রত্যাহার করেন। দেশ, জাতি ও জনগণের স্বার্থে হরতালটা আজই প্রত্যাহার করে গণভবনে আসেন।
খালেদা জিয়া: আমার পক্ষে তো এককভাবে হরতাল প্রত্যাহার করা সম্ভব নয়। এটা তো ১৮ দলের হরতাল। জোটের অন্য দলের নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ২৯ তারিখের পর যেকোনো দিন আসা যায়।
শেখ হাসিনা: আপনি অনির্বাচিত লোকদের কথা কেন বলেন? বাইরের লোক কেন? আপনার দলের নির্বাচিতদের ওপর কি আপনার আস্থা নেই? তাঁদের কি আপনি বিশ্বাস করেন না? নির্বাচিতদের ওপর আস্থা রাখেন। আমরা যাঁরা নির্বাচিত, তাঁরাই দেশ চালাই। আপনার দলের নির্বাচিতদের মধ্য থেকে নির্বাচনকালীন সরকারের প্রতিনিধির নাম দেন।
খালেদা জিয়া: আপনি যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকার পছন্দ না করেন, তাহলে ’৯৬-এর নির্বাচনের আগে কেন জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে মিলে আন্দোলন করেছিলেন। তৃতীয় পক্ষের কথা বলছেন। সেটা যদি না-ই চাইতেন, তাহলে ২০০৭ সালে কেন ওই সরকারের শপথ অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। আপনাদের আন্দোলনের ফসল বলেছিলেন। নির্বাচনেই বা গেলেন কেন।
দুই নেত্রীর ফোনালাপের বিষয়ে গতকাল বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সাংবাদিকদের বলেন, অতীতের কিছু বিষয় নিয়ে দুই নেত্রীর মধ্যে আলোচনা হয়েছে। তবে সেই বিষয়গুলো আলোচনার স্বার্থে সামনে আনার প্রয়োজন নেই।
প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, বিরোধীদলীয় নেতার সঙ্গে ফোনালাপের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিছুটা বিরক্ত ছিলেন। ফোনালাপ শেষে তিনি দলের নির্বাচন পরিচালনা পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে তিনি বলেন, আজ তিনি এমন একজনের সঙ্গে কথা বলেছেন, যিনি ছোট্ট শেখ রাসেলের হত্যার দিন নিজের ভুয়া জন্মদিন পালন করেন। যাঁর সরকারের আমলে ২১ আগস্ট তাঁর ওপর গ্রেনেড হামলা হয়।
প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতার ফোনালাপের সময় তাঁদের কাছাকাছি ছিলেন এবং পরে যাঁদের সঙ্গে ফোনালাপ নিয়ে তাঁরা কথা বলেন—এমন কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে কথোপকথনের আরও কিছু অংশ জানা গেছে। নিচে তা তুলে ধরা হলো।
শেখ হাসিনা: কেমন আছেন? আমি আপনাকে দুপুরে ফোন দিয়েছিলাম। না, আমি নিজ হাতে লাল টেলিফোন থেকে ফোন করেছি। বারবার রিং হয়েছে। আমি দুঃখিত আপনি যেকোনো কারণে ফোন ধরতে পারেননি। আমি কাজ সেরে আগে আগে ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম। আপনাকে তো ২৪ ঘণ্টা পার হওয়ার আগেই ফোন দিয়েছি।
খালেদা জিয়া: লাল টেলিফোনে আপনি ফোন করেছিলেন। কিন্তু ফোনটির সংযোগ অনেক দিন থেকেই বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে।
শেখ হাসিনা: আচ্ছা ঠিক আছে, আমি দুঃখিত। ফোনটা ডেড (বিকল) ছিল বা ডেড করে রাখা হয়েছে কি না, বলতে পারছি না। আগামীকাল এটা আমি দেখব।
খালেদা জিয়া: টিঅ্যান্ডটির এক কর্মকর্তা বলেছেন, ফোনের লাইন নাকি ঠিক আছে। এটা মিথ্যা কথা। ফোনটি ডেড। আপনি তাঁর (টিঅ্যান্ডটি কর্মকর্তা) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন।
শেখ হাসিনা: আপনি তো ১৫ আগস্ট জন্মদিন পালন করেন। আপনি আমাদের ৩২ নম্বরের বাসায় বহুবার এসেছেন। রাসেলকে দেখেছেন। নিষ্পাপ ওই শিশুকে হত্যার দিনে কীভাবে আপনি জন্মদিন পালন করেন, কেক কাটেন! এটা তো আপনার আসল জন্মদিন নয়। আর আমাকে হত্যার উদ্দেশে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করা হয়েছে। আপনার ক্যাবিনেটের লোকজন তো জড়িত ছিল।
খালেদা জিয়া: ১৫ আগস্ট কি কারও জন্মদিন হতে পারে না। সেদিন জন্মদিন হলে তারা কি জন্মদিন পালন করতে পারবে না। আমার দুই ছেলে তো দেশের বাইরে।
শেখ হাসিনা: আগামী নির্বাচন সম্পর্কে গণভবনে এসে কথা বলার জন্য আমি ২৮ তারিখ সন্ধ্যায় আপনাকে দাওয়াত করছি। আপনি জানেন, আমি ইতিমধ্যে অন্যদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা শুরু করেছি। আপনাকে দাওয়াত দিচ্ছি, আমার সঙ্গে রাতের খাবার খাবেন।
খালেদা জিয়া: আপনি নির্দলীয় সরকারের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করুন। আপনার সর্বদলীয় সরকারের প্রস্তাব পেয়েছি। কিন্তু এতে তো সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। সবার সুযোগ নিশ্চিত হবে না।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) কীভাবে যাব। ওই দিন তো হরতাল। অন্যদিন আসব। আপনি নির্দলীয় সরকারের দাবি নীতিগতভাবে মেনে নিন। তাহলে আন্দোলন প্রত্যাহার করব।
শেখ হাসিনা: আমি তো আপনার কথা রেখেছি। ৪৮ ঘণ্টা পার হওয়ার আগেই ফোন দিলাম। এখন আসতে সমস্যা কী। হরতাল প্রত্যাহার করে আসেন। আপনি যতজন নিয়ে খুশি আসতে পারেন। হরতালটা প্রত্যাহার করেন। দেশ, জাতি ও জনগণের স্বার্থে হরতালটা আজই প্রত্যাহার করে গণভবনে আসেন।
খালেদা জিয়া: আমার পক্ষে তো এককভাবে হরতাল প্রত্যাহার করা সম্ভব নয়। এটা তো ১৮ দলের হরতাল। জোটের অন্য দলের নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ২৯ তারিখের পর যেকোনো দিন আসা যায়।
শেখ হাসিনা: আপনি অনির্বাচিত লোকদের কথা কেন বলেন? বাইরের লোক কেন? আপনার দলের নির্বাচিতদের ওপর কি আপনার আস্থা নেই? তাঁদের কি আপনি বিশ্বাস করেন না? নির্বাচিতদের ওপর আস্থা রাখেন। আমরা যাঁরা নির্বাচিত, তাঁরাই দেশ চালাই। আপনার দলের নির্বাচিতদের মধ্য থেকে নির্বাচনকালীন সরকারের প্রতিনিধির নাম দেন।
খালেদা জিয়া: আপনি যদি তত্ত্বাবধায়ক সরকার পছন্দ না করেন, তাহলে ’৯৬-এর নির্বাচনের আগে কেন জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে মিলে আন্দোলন করেছিলেন। তৃতীয় পক্ষের কথা বলছেন। সেটা যদি না-ই চাইতেন, তাহলে ২০০৭ সালে কেন ওই সরকারের শপথ অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। আপনাদের আন্দোলনের ফসল বলেছিলেন। নির্বাচনেই বা গেলেন কেন।
দুই নেত্রীর ফোনালাপের বিষয়ে গতকাল বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সাংবাদিকদের বলেন, অতীতের কিছু বিষয় নিয়ে দুই নেত্রীর মধ্যে আলোচনা হয়েছে। তবে সেই বিষয়গুলো আলোচনার স্বার্থে সামনে আনার প্রয়োজন নেই।
প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ সূত্র জানায়, বিরোধীদলীয় নেতার সঙ্গে ফোনালাপের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিছুটা বিরক্ত ছিলেন। ফোনালাপ শেষে তিনি দলের নির্বাচন পরিচালনা পরিষদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে তিনি বলেন, আজ তিনি এমন একজনের সঙ্গে কথা বলেছেন, যিনি ছোট্ট শেখ রাসেলের হত্যার দিন নিজের ভুয়া জন্মদিন পালন করেন। যাঁর সরকারের আমলে ২১ আগস্ট তাঁর ওপর গ্রেনেড হামলা হয়।
উৎসঃ prothom-alo
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন